জাতীয়

মালয়েশিয়ায় এক বছরে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কর্মী নেবে: আসিফ নজরুল


ঢাকাপ্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ :০২ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৩ পিএম

মালয়েশিয়ায় এক বছরে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কর্মী নেবে: আসিফ নজরুল
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থান নিয়ে অতিরঞ্জিত প্রচারণা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আগামী এক বছরে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ হাজার কর্মী নেবে।

বুধবার (২ জুলাই) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাপানের শ্রমবাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান।

আসিফ নজরুল বলেন, “মালয়েশিয়া নিয়ে অনেক বড় রকমের হাইপ তৈরি হয়েছে—বলছে ১০ থেকে ১২ লাখ কর্মী নেবে। কিন্তু আমি মালয়েশিয়া ঘুরে এসে নিশ্চিত হয়েছি, বাস্তবে সেই সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ হাজারের বেশি হবে না।”

তিনি বলেন, “আগের সরকার মালয়েশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে যেখানে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া একটি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দেবে এবং আমরা তা থেকে বেছে নেব। এটা দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত চুক্তি, যেটিকে আমরা ‘সিন্ডিকেট’ বলে থাকি। এখন নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে বলছে সিন্ডিকেট থাকবে না। তাহলে চুক্তি বদলাতে হবে, আর সেটা মালয়েশিয়াকে রাজি করিয়ে করতে হবে—জোর করে নয়। তাই সমঝোতার মাধ্যমে পথ খুঁজতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের সামনে দুটি পথ—এক, ওই সিন্ডিকেট মেনে কিছু নির্দিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো; দুই, কাউকে না পাঠানো। যদি পাঠাই, তাহলে বলা হবে সিন্ডিকেট করছি; না পাঠালে ৪০ হাজার কর্মী যেতে পারবে না, যা এক থেকে দুই লাখ পরিবারকে ক্ষতির মুখে ফেলবে। এটা মালয়েশিয়াও মনে রাখবে।”

জাপানের শ্রমবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জাপানে প্রচুর কর্মীর চাহিদা রয়েছে। তবে আমাদের সমস্যা হচ্ছে—আমাদের কর্মীরা এখনও দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি। ভাষা শেখার উদ্যোগ থাকলেও দক্ষতার ঘাটতি রয়ে গেছে। এজন্য জাপানের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী দক্ষ করে তোলাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।”

তিনি জানান, ইতোমধ্যে ‘জাপান সেল’ গঠন করা হয়েছে এবং শিগগিরই একটি ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট চালু হবে। এখানে সরকারের কোনো মধ্যস্থতা থাকবে না—সব প্রক্রিয়া হবে সরাসরি ও স্বচ্ছভাবে। পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

মন্ত্রণালয়ের নতুন উদ্যোগ নিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পার্টনারশিপ করার চিন্তা করছি। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এখন শুধু প্রবাসীদের ঋণ দিচ্ছে, তবে যারা শিক্ষার্থী ভিসায় বিদেশ যাবে, তাদের জন্যও ঋণের ব্যবস্থা করতে আমরা চেষ্টা করব।”

অনেকেই বলছেন, বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাস্তবতা বিবেচনায় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরির ওপর জোর দিতে হবে। অন্যথায়, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।