শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

সরকারি নিয়মনীতি পাত্তা দেন না ডা. মুজিবুর!

রূপা আক্তার নামে এক মহিলা নিজের নবজাতক শিশুকে নিয়ে মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যান ডা. মুজিবুর রহমাানের কাছে। কিন্তু গেটে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মী মো. সাঈদ তাকে বলেন, ‘মুজিবুর রহমান স্যার তো হসপিটাল থেকে বের হয়ে গেছেন। আগামীকাল সকাল দশটার পর আসেন, তাহলে স্যারকে পাবেন। (এই ঘটনাটি গত সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১টা ১০মিনিটের)।

এ কথা শুনে রূপা যখন চলে যাচ্ছিলেন সাঈদ তখন রূপার স্বামী রহিম মিয়াকে কানে কানে বলেন, জরুরিভাবে দেখাতে চান তাহলে নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও চলে যান, সেখানে স্যার আছেন। মুজিবুর রহমানের মোবাইল নাম্বার রহিমকে দিয়ে সাঈদ বলেন, সেখানে গিয়ে আমার কথা বলবেন। স্যার ভালোভাবে আপনার শিশুকে দেখে দিবেন।

তাসলিমা বেগম নামের আরেক মহিলা তার শিশু কন্যাকে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ মুজিবুর রহমান সাহেবকে দেখাতে এসেছি। দুদিন ধরে আসছি, কিন্তু তাকে পাইনি। তিনি সময় মতো হাসপাতালে থাকছেন না। অনেকে বলছেন, তার সঙ্গে দেখা করতে হলে নারায়ণগঞ্জ অথবা যাত্রাবাড়ীতে যেতে হবে।’

রূপা বা তাছলিমার মতো আরও অনেকে তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আসলেও ডা. মুজিবুর রহমানের দেখা পান না।

বরং মুজিবুর রহমান যেসব হাসপাতালে বসেন সেখানে রোগীদের পাঠিয়ে দেন তার লোকজন। বিনিময়ে তারা কমিশন পান।

মূলত এই হাসপাতালের গার্ডসহ আরও অনেকেই হলেন-ডা. মুজিবুর রহমানের কমিশন দালাল। এই দালালেরা ডা. মুজিবুর রহমানকে বিভিন্ন রোগী ধরে দেন এবং তা থেকে নিয়মিত কমিশন নেন।

ডা. মো. মুজিবুর রহমান মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং নবজাতক (এনআইসিইউ) বিভাগের প্রধান। কিন্তু তিনি সরকারি নিয়মনীতির পাত্তাই দেন না।

কিন্তু শিশু বিভাগের মতো জরুরি একটি বিভাগের প্রধান হলেও তাকে কখনই হাসপাতালে পাওয়া যায় না। বলা যায়, তিনি হাসপাতালে থাকেন না। সকালে এসে হাজিরা দিয়েই তিনি বের হয়ে যান তার নিজের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সেগুলোতে বসেই তিনি রোগী দেখেন। আর মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে তার নিজস্ব লোকজন রোগীদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেন মুজিবুর রহমানের নিজের প্রতিষ্ঠানে।

তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেন ওই হাসপাতালের ড্রাইভার নজরুল ইসলামের ছেলে মো. ইমরান। ডাক্তার মুজিবুর রহমানের কাছে বিষয়ে ইমরানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তবে সম্প্রতি ডা. মজিবুর রহমানের যাত্রাবাড়ী ডেল্টা হেলথ কেয়ার, মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতাল ও যাত্রাবাড়ী ডায়গনস্টিক সেন্টার হাসপাতাল লিমিটেডে খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে উঠা বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

কে এই ডা. মুজিবুর রহমান

ডা. মো. মুজিবুর রহমান মাতুয়াইলে শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি শিশু, কিশোর ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ হিসেবে সেই ইউনিটের ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন। মুজিবুর রহমান সরকারি একজন কর্মকর্তা। কিন্তু সরকারি চাকরি করেও তিনি নিজেই গড়ে তুলেছেন একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক।

সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা. মুজিবুর যাত্রাবাড়ীর ডেল্টা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের একজন প্রভাবশালী পরিচালক। সেখানে প্রতিদিন নিয়মিত রোগী দেখেন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়ায় সোনারগাঁ কমপ্লেক্সের ইশা খাঁ হসপিটালেও নিয়মিত রোগী দেখেন।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইনবোর্ড এলাকায় নিজের স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা আসমাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করে বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন মুজিবুর রহমান। সেই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি নিজে।

এ ছাড়া, ধোলাইপাড় গীত সংগীত সিনেমা হলের উল্টো দিকে নিউ ডেল্টা কেয়ার নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানেও নিয়মিত বসেন ডা. মুজিবুর রহমান।

জানা গেছে, নিজের সরকারি প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখা এবং অন্যান্য কাজ ফেলে মুজিবুর রহমান নিয়মিত তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সময় দেন। যার ফলে তিনি কখনই মাতুয়াইল শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে রোগীদের সময় দেন না। সেখানে তিনি হাজিরা দিয়ে কখনো সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে যান। আবার কখনো থেকে দুই ঘণ্টা থেকে চলে যানে নিজের প্রতিষ্ঠানে।

অভিযোগ উঠেছে, মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে রোগী দেখে আর্থিকভাবে খুব একটা লাভবান হওয়া যায় না। এই কারণে তিনি সেখানে খুব একটা রোগী দেখেন না। বরং এখানে যেসব রোগী তারি কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন তাদেরকে নিজের প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন দালালদের মাধ্যমে।

মো. আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, সরকারি ডাক্তার হয়ে তিনি বেশিরভাগ সময় প্রাইভেট ক্লিনিক এ সময় দেন। তাহলে এসব ডাক্তারদের সরকারি চাকরি নেওয়ার দরকার কী?

নজরুল ইসলাম, নিলুফা বেগম, জয়নাল মিয়া, ও আব্দুস সাত্তারসহ আরও অনেকের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয় মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে। তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই অভিযোগ, সময়মত হসপিটালে না পেয়ে অনেক মানুষ ডা. মুজিবুর রহমানের পার্সোনাল মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমাদের পার্সোনাল চিকিৎসা নেওয়ার মতো টাকা পয়সা নাই, এজন্য আমরা সরকারি হাসপাতালে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছি।

মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিউটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, একজন চিকিৎসক কীভাবে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকতে পারেন তা কোনোভাবেই মিলাতে পারি না।

তিনি বলেন, ডা. মজিবুর রহমান আমার সিনিয়র, তার বিষয়ে আসলে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে, এটা অবশ্যই রহস্যজনক, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তিনি কীভাবে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের মালিক!

ওই চিকিৎসকের অভিযোগ, ডা. মুজিবুর রহমান মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে তেমন একটা সময় দেন না। সকাল দশটার সময় এসে কিছুক্ষণ পরই বের হয়ে পড়েন। যেখানে থাকার কথা বিকাল ৫টা পর্যন্ত। তিনি নিজের হাসপাতালেই বেশি সময় দেন। অনেক সময় দেখা গেছে, তিনি সরকারি হাসপাতাল থাকলেও তার লোকজন রোগীদের পাঠিয়ে দেন তার হাসপাতালের চেম্বারে। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে তিনি অতিরিক্ত টাকাও নিচ্ছেন।

যা বললেন ডা. মুজিবুর

শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সময় না দিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে রোগী দেখছেন, চিকিৎসার নামে বেশি টাকা নিচ্ছেন-এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, আমি হাসপাতালে যথেষ্ট সময় দিয়ে থাকি। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু দিয়ে আমার অন্যান্য জায়গায় সময় দিতে হয়। কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয় তাহলে সেটা ভিত্তিহীন।

নিজের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি একজন চিকিৎসক মানুষকে সেবা দিয়ে থাকি। সরকারি হাসপাতালে রোগীদেরও পর্যাপ্ত সময় দিয়ে থাকি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তবে আমি কারো মাথায় বাড়ি দিয়ে টাকা পয়সা রোজগার করছি না।

নিজের এবং অন্যান্যদের সহযোগিতায় ডায়নাগোস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গড়েছি এসব একদিনে হয়নি। এসবে অনিয়মের কিছু দেখছি না। এর সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, আমারটা অনিয়মের মধ্যে পড়ে। যারা কোটি কোটি টাকা চুরি করে সেটা অনিয়মের মধ্যে পড়ে না? অন্য মানুষ যখন বাসার মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা রেখে দেয় তখন তো কেউ অনিয়ম বলে না ? ব্যাংক থেকে অনেকে ঋণ নিয়ে কয়েক কোটি টাকা মেরে দেয় সেটাকে অনিয়ম বলে না? আমি সামান্য কাজ করছি মানুষকে চিকিৎসা দিচ্ছি এখানেই অনিয়মটা মানুষের চোখে পড়ল।’

এনএইচবি/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

ছবি: সংগৃহীত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ। সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে ৯ দিনব্যাপী শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। এ বছর ঢাকাসহ সারা দেশে ইসকনের ১২৮টি মন্দির ও আশ্রমে এদিন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই রথের উপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

শুভ রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আয়োজিত ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে, হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমে শুক্রবার সকাল ৮টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকায় রথযাত্রার রুট উল্লেখ করে তিনি জানান, স্বামীবাগ আশ্রম থেকে রথযাত্রা শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে পৌঁছবে। পরে আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টোরথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে।

এছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে সমঝোতায় গোপনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা এবং মার্কিনদের কথামতো চালাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নানাভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে চারটি সূত্র সিএনএনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক-শক্তি উৎপাদনকারী পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং বিশ্বব্যাপী ইরানের ফ্রিজ হওয়া তহবিলের বিলিয়ন ডলার মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছে। আর এ সবই করা হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মূল খেলোয়াড়রা গত দুই সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলার মধ্যেও পর্দার আড়ালে ইরানিদের সঙ্গে কথা বলেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই সপ্তাহেও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এগুলো প্রাথমিক ও ক্রমবর্ধমান। তবে একটি অ-আলোচনাযোগ্য শর্ত বহাল রয়েছে। তা হলো, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্য হতে হবে। যদিও ইরান ধারাবাহিকভাবে বলেছে, তাদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হচ্ছে তবুও চাপ প্রয়োগকারীরা এ শর্তে ছাড় দিতে নারাজ। দুটি সূত্র সিএনএনকে অন্তত একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাব সরবরাহ করেছে। এতে ইরানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠকে কিছু বিবরণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। মার্কিন সামরিক হামলার আগের দিন ছিল কয়েক ঘণ্টার সেই বৈঠক সম্পর্কে জানা দুটি সূত্র সিএনএনকে এসব নিশ্চিত করেছে।

আলোচিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরানের একটি নতুন অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এ কেন্দ্র বেসামরিক শক্তি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং প্রস্তাব সম্পর্কে জানা সূত্রগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, অর্থ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না; বরং আরব অংশীদাররা এই বিল পরিশোধ করার পথ খোঁজা হচ্ছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সুবিধাগুলোতে বিনিয়োগের বিষয়টি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পারমাণবিক আলোচনার পূর্ববর্তী রাউন্ডগুলোতেও আলোচিত হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনাগুলোর নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে কারও না কারও অর্থ প্রদান করতে হবে। তবে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।

অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা অপসারণের সম্ভাবনা এবং ইরানকে ৬ বিলিয়ন ডলার ফ্রিজ সম্পদ ব্যবহার করতে দেওয়া, যা বর্তমানে বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে এবং তারা বহু বছর তা অবাধে ব্যবহার করতে পারছে না।

সূত্র সিএনএনকে বলেছে, বিভিন্ন মানুষের দ্বারা অনেক ধারণা উত্থাপিত হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই সৃজনশীল হওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কী ঘটবে, তা সম্পূর্ণরূপে অনিশ্চিত। ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে প্রথম পাঁচ রাউন্ডের আলোচনা সম্পর্কে জানা একটি পৃথক সূত্রও একই তথ্য দিয়েছে।

উইটকফ বুধবার সিএনবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি চুক্তি চায়। সব প্রস্তাব ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি থেকে বিরত রাখার জন্য নকশা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে , ইরান শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখতে পারে। তবে সেই কর্মসূচির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। পরিবর্তে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্বল্প মাত্রায় আমদানি করতে পারবে। কতটুকু খরচ হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষকদের নিয়মিত জানাতে হবে।

উইটকফ বলেন, এখন ইরানের সঙ্গে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা কীভাবে ইরানকে উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখার সুযোগ দেব, সেটিই মুখ্য।

 

Header Ad
Header Ad

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান

ছবি: সংগৃহীত

‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

 

ছবি: সংগৃহীত

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা। তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অন্তত ফেল করিনি।’

 

ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ সিনেমায়ি জাহিদ হাসান ছাড়াও অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মান।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ
ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার