শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সমঝোতার লক্ষণ নেই, মাঠে থাকবে বিএনপি

আপাতত বিএনপির লক্ষ্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়। বিএনপি নেতারা বলছেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার কোনো লক্ষণ দেখছেন না তারা।

বিএনপি নেতারা এখন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা ও রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফার ভিত্তিতে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চলমান পরিস্থিতিতে দলের কর্মীদের সাংগঠনিকভাবে চাঙা মনোভাব ধরে রাখতে চলতি বছর ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিতে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত বিএনপি নেতৃত্বের। আপাতত এর বাইরে কিছু ভাবছে না— বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ চায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। কোনো কারণে বিএনপি যদি ভোটে নাও আসে সে ক্ষেত্রে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দলকে ভোটে এনে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বিএনপি নির্বাচনীমুখী দল। নির্বাচনের জন্য আলাদা কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়ে না। এখন কথা হচ্ছে নির্বাচনটা কীভাবে হবে? কার অধীনে হবে? শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাবো না বলেই তো আমরা আন্দোলন করছি, মামলা হামলার শিকার হচ্ছি, গ্রেপ্তার হচ্ছি। ইতোমধ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে বেশকয়েকজন প্রাণ দিয়েছে। যদি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই বিএনপি নির্বাচনে যায় তাহলে তো আন্দোলন করার প্রয়োজন পড়ে না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন আমরা বর্জন করেছি আবার অংশগ্রহণও করেছি। অতীত অভিজ্ঞতা বলে দিচ্ছে যে, দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান বাধা শেখ হাসিনা। সেই কারণেই আমরা বলছি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ হলো আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের পূর্বশর্ত। এই পূর্বশর্ত পূরণ হলে আমাদের সব শর্তই পূরণ হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আশা করছি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে এই সরকারের পতন করে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেব। তারপর দেশের মানুষ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। এ লক্ষ্যে আমরা আন্দোলনে রয়েছি। আশা করি আমরা এই আন্দোলনে জয়লাভ করব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির নেতৃত্বে এই মুহূর্তে কোনো জোট নেই। আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও তাদের ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যজোট বিলুপ্ত। দলটি যুগপৎ কর্মসূচির মাধ্যমে সমমনাদের নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির পথে হাঁটছে। সেক্ষেত্রে বিতর্কিত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটে না থাকতে কৌশল নিয়েছে বিএনপি। যাতে জামায়াতের কারণে অন্য কয়েকটি দলের যুগপৎ আন্দোলনে আসতে সমস্যা না হয়।

চলতি বছর রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় থাকবে জাতীয় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম। নির্বাচনের বাকি এক বছর। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখন নিজেদের অবস্থান পুনরায় পাকাপোক্ত করতে এবং বিএনপি পনেরো বছরের খরা কাটাতে মরিয়া। গত বছর দেশব্যাপী গণ-সমাবেশ, গণ-মিছিলের মতো নানা কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের দাবি আদায়ের আন্দোলন চালিয়েছে বিএনপি। চলতি বছরও ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচিতে মাঠে থাকবে দলটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বিএনপির ১০ দফা দাবি ও ২৭ দফা রূপরেখার সঙ্গে ইতোমধ্যে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ৩৩টি রাজনৈতিক দল। দাবি আদায়ে তারা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দিয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনে আসার জন্য বিএনপি সব দলকেই আহ্বান জানাচ্ছে। সমমনা অনেক দলই সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন করছে। তারাও যুগপৎ আন্দোলনে নেমে আসুক সেটেই চায় বিএনপি।

তৃণমূলে বিএনপি নেতারা

গত সোমবার (২ জানুয়ারি) থেকে শুরু করে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী ৭১টি জেলা ও মহানগরে এই কর্মসূচি চলবে।

১০ দফা দাবি ও রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান করতে গত ৩ জানুয়ারি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ঠাকুরগাঁও, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জামালপুর, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ফেনী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ঝিনাইদহ, ৪ জানুয়ারি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নীলফামারী ও সৈয়দপুর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিরাজগঞ্জ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নওগাঁ এবং সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স শেরপুরের কর্মসূচিতে যোগ দেন।

এ ছাড়া ৫ জানুয়ারি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান মানিকগঞ্জ, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বগুড়া, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল-নোমান নরসিংদী, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান টাঙ্গাইল, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন দিনাজপুর, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বরগুনা, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া খাগড়াছড়ি, ৬ জানুয়ারি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন হবিগঞ্জ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম পটুয়াখালী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান গাজীপুর মহানগর, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মিজানুর রহমান মিনু নাটোর, ইসমাইল জবিউল্লাহ রাজবাড়ী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মুন্সিগঞ্জ, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী-খান সোহেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নড়াইলের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন।

অন্যান্য জেলা ও মহানগরে ৭ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হবে এবং কেন্দ্রীয় নেতারা সে সব কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এনএইচবি/আরএ/

Header Ad

অপরাধটা কী করেছি, দেশবাসীর কাছে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনাদের কাছে আমি বিচার চাই, অপরাধটা কী করেছি? মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ আর কেউ যেন এই দেশে চালাতে না পারে, সে জন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কি এটাই অপরাধ যে আমি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছি। আর সেই জায়গাগুলোতেই হামলা করতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে ২০০৮ সালের বাংলাদেশ আর ২০২৪ এর বাংলাদেশ তো এক নয়। দেশের মানুষের জীবনমান তো উন্নত হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি আজ কত ওপরে উঠে গিয়েছিল। মনে হলো এটা আর কিছু নয়, অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ পঙ্গু করে দিয়ে দেশকে ভিক্ষুকের জাতি করে দেওয়ার জন্যই এ ষড়যন্ত্র। সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুঃখজনক।

শেখ হাসিনা বলেন, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যখন দেশকে একটা জায়গায় নিয়ে এলাম। আজ দেখি যে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষকে সেবা দেয় সেখানে জ্বালাও-পোড়াও।

জনগণের সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ মেট্রোরেলে মানুষ কত অল্প সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারতো, আবার ফিরতে পারতো। সেই স্টেশনগুলো পুড়িয়ে এখন ট্রাফিক জ্যাম, মানুষের কষ্ট। আমি তো কষ্ট লাঘব করেছি। কিন্তু যারা এভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষকে আবার কষ্টে ফেলে দিলো তাদের বিচার এ দেশের মানুষকেই করতে হবে। আমি সবার সহযোগিতা চাই।

সাম্প্রতিক সংঘাতে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতির দায়-দায়িত্ব কার এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, কোটা তো আমি বাতিলই করে দিয়েছি। আমি আহ্বান করেছিলাম, বলেছিলাম একটু ধৈর্য ধরো। হাইকোর্টে শুনানি হবে, হাইকোর্ট যে রায় দেন। না তারপরেও এ আন্দোলন, আজ এতগুলো মানুষের জীবনের ক্ষতি হলো, এতগুলো পরিবারের ক্ষতি হলো। এর দায়দায়িত্ব কাদের?

সংঘাতে যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় আবেগাপ্লুত শেখ হাসিনা বলেন, আর এভাবে মায়ের কোল খালি হোক এটা আমি চাই না। কারণ আমি তো বাবা-মা সব হারিয়েছি, আমি তো জানি হারাবার ব্যথা কত কষ্টের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বজন হারানোর কষ্ট বুকে নিয়েই তো ফিরে এসেছি এ দেশের মানুষের জন্য। এখানে আমার তো কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমি তো ছেলে-মেয়ের জন্যও কিছু করিনি। শুধু তাদের লেখাপড়া, নিজেরাই চাকরি করেছে, নিজেরাই লেখাপড়া করেছে, আমি কতটুকু করতে পেরেছি। কিন্তু আমি দেশের মানুষের জন্য করেছি।’

‘আজ অন্তত মানুষের ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, তাদের কাজের ব্যবস্থা। সবই তো করে দিচ্ছিলাম। যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি তখনই এ তাণ্ডব।’

আহতদের সুচিকিৎসা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পা হারিয়েছেন, হাত হারিয়েছেন, আমরা কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দেবো। যাতে তারা আবার সুস্থ মানুষের মতো চলতে পারে, নিজের কাজ করতে পারে।’

বিভিন্ন দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আর তার ফলাফল আজ এ অবস্থা। সব দাবি মেনে নেওয়ার পরেও শাটডাউন শেষ হয় না। সম্পূর্ণ দাবিই মেনে নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘একটা মানলে আরেকটা, আরেকটা মানলে আরও একটা। এর ফল আজকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে সব দিকে ছারখার। আর আজ কত মানুষ জীবন হারালো। কতগুলো মানুষ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে।’ ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটও এ রকম তাণ্ডব চালিয়েছিল।

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সংঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। আহতদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রীকে আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়। আহতদের তিনি যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

নিটোর পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী শামীম উজ্জামান আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনকারীদের ৮ দফার যৌক্তিক দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রী মেনে নেবেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: সংগৃহীত

একটি মহল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন যে ৮ দফা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার মধ্যে যৌক্তিক দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে মেনে নেওয়া হবে।

শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে গত কয়েকদিনে দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

এক‌টি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে গুজব ছ‌ড়ি‌য়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রা‌ন্ত করছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের জঙ্গি ও দুষ্কৃতকারীরা যারা সারা দেশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে, নরসিংদীর কারাগারসহ বিভিন্ন থানায় অস্ত্র লুট করেছে; তাদের চিহ্নিত করে শিগগিরই আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আক্রমণকারীদের প্রধান আক্রোশই ছিল পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের প্রতি। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে যে পুলিশ তাদের ওপর নির্মমভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের দেশপ্রেমিক বিজিবির ওপরও হামলা করা হয়েছে। আমাদের র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি যখন একত্রে পারছিল না তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। খুব শিগগিরই আমরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাব।

তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি, ছাত্রদের মিসগাইড করে যে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে; আমাদের ছাত্রলীগের অনেকেই শাহাদাত বরণ করেছে। তিনজন পুলিশ মারা গেছেন। একজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এদিকে বর্তমানে এক‌টি মহল সোশ্যাল মি‌ডিয়ার মাধ‌্যমে গুজব ছ‌ড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রা‌ন্ত করছে। সাংবাদিকদের দায়িত্ব এইসব গুজব থেকে দেশকে রক্ষা করা।

কোটা আ‌ন্দোল‌নের সন্বয়কারী তিনজ‌ন‌কে নিরাপত্ত‌া হেফজ‌তে রাখা হ‌য়ে‌ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কারা তা‌দের আক্রমণ কর‌তে চায় সে বিষ‌য়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত ক‌রে ব‌্যবস্থা নেয়া হ‌বে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নূরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আমরা ইন্টারনেট বন্ধ করিনি, বন্ধ হয়ে গেছে: প্রতিমন্ত্রী পলক

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি: সংগৃহীত

ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি, নাশকতাকারীদের হামলার ডাটা সেন্টার পুড়িয়ে ফেলায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

শনিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাক ভবনে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে সারাদেশে এক লাখ গাছের চারা রোপণে ‘শান্তির জন্য বৃক্ষ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

পলক বলেন, শিগগিরই মোবাইল ইন্টারনেট খুলে দেওয়া হবে। রোববার সকাল ৯টায় আমরা এমটবের সঙ্গে বৈঠক করব। বৈঠকে সন্তুষ্ট হলে মোবাইলের ফোরজি নেটওয়ার্ক খুলে দেওয়া হবে। আমরা ইন্টারনেট শাটডাউন করিনি। ইন্টারনেট বন্ধ হয়েছিল তিনটি ডেটা সেন্টার ও শত শত কিলোমিটার তার পুড়িয়ে দেওয়ার কারণে। এজন্য শুধু টেলিকম খাতে ৫০০ কোটি টাকা এবং সব মিলিয়ে শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৮ জুলাইয়ের মোবাইল অপারেটরদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকার উত্তরা, রামপুরা, মোহাম্মাদপুর, যাত্রাবাড়ী ও গাজীপুরে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ নতুন সিম কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া ডাক বিভাগের ১৭টি জায়গায় হামলা হয়েছে। মহাখালীতে তিনটি ডেটা সেন্টারে ১৮টি আইআইজির সিস্টেম রয়েছে। সেখানে থাকা আইএসপির ৭০ শতাংশ সার্ভার থাকে। তাই ইন্টারনেট একা একাই বন্ধ হয়েছে। আমরা বন্ধ করিনি।

অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতে আঘাত আসায় এখনো কিছু ক্যাশ সার্ভার মেরামতের কাজ চলছে। হয়তো দুই চার দিনের মধ্যে টেলিযোগাযোগ পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ইন্টারনেট এখন আমাদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু দুর্বৃত্তদের হামলায় মহাখালীতে সার্ভার ও তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছিল। এই সেবা এখন ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে।

ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি সিকদার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি সচিব মো. সামসুল আরেফিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান এবং অন্যান্যরা।

সর্বশেষ সংবাদ

অপরাধটা কী করেছি, দেশবাসীর কাছে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
আন্দোলনকারীদের ৮ দফার যৌক্তিক দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রী মেনে নেবেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আমরা ইন্টারনেট বন্ধ করিনি, বন্ধ হয়ে গেছে: প্রতিমন্ত্রী পলক
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৮ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
সরকার পতনের দাবি নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির
কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়কারীকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মালয়েশিয়ায় ২২ বাংলাদেশিসহ ৫৯ অভিবাসী আটক
দেশবিরোধী জামায়াত, বিএনপি, ইউনূস গঙকে রুখে দিতে হবে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
অলিম্পিক ইতিহাসে ভিন্নধর্মী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপহার দিল ফ্রান্স
ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে কারাগারে আশ্রয় ফিলিস্তিনিদের
ইসরায়েল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের, চাপে নেতানিয়াহু
সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৪তম জন্মদিন আজ
বাংলাদেশে নতুন নির্বাচনের দাবি ড. ইউনূসের
জালিমদের ব্যাপারে ইসলাম যা বলে
ডিবি হেফাজতে নাহিদসহ কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক
আগামীকাল চালু হতে পারে মোবাইল ইন্টারনেট
'আমাকে নিয়ম শেখানোর দরকার নেই, ওরাই শিখে নিক'
‘দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা’
দুর্নীতির দায়ে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেপ্তার
আজও ঢাকাসহ চার জেলায় কারফিউ শিথিল