মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

আর্থ-রাজনৈতিক 'লৌহ ত্রিভুজ' ভাঙতে হবে

আমাদের শুধু সামষ্টিক অর্থনীতির দিকে তাকালে হবে না; সামষ্টিক, মধ্যম ও ব্যষ্টিক- তিনটি পর্যায়েই মনোযোগ দেওয়া দরকার। মধ্যম ও ব্যষ্টিক অর্থনীতি উপেক্ষা করে সামষ্টিক অর্থনীতির সংকট মোকাবিলা করা কঠিন।

এটা পরিষ্কার যে, সামষ্টিক অর্থনীতিতে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে নানা আলোচনাও হচ্ছে। সম্প্রতি সিপিডি আয়োজিত 'সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: কতটা ঝুঁকিপূর্ণ' শীর্ষক আলোচনা সভায় অনেকে এ বিষয়ে জোর দিয়েছেন। আমিও সেখানে কথা বলেছি। যে বিষয়টি আরও জোর দিয়ে বলা দরকার তা হলো, মধ্যম অর্থনীতিতে সংস্কারের বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কভিড-১৯-এর ধাক্কা থেকে আমাদের এক ধরনের উত্তরণ ঘটেছে বটে, তবে সে উত্তরণ পুরোপুরি হয়নি। পিপিআরসি-বিআইজিডির ২০২২-এর মে মাসের গবেষণায় আমরা দেখেছি, মহামারির দুই বছর পরও জরিপ করা পরিবারগুলোর গড় আয় মহামারি-পূর্ব আয়ের ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ নিচে।

ব্যষ্টিক পর্যায়ে অবিচারের অর্থনীতিও আলোকপাত করা দরকার। অবিচারের অর্থনীতির তিনটি চেহারা জোরালোভাবে সামনে আসছে। প্রথমটি হলো নতুন দারিদ্র্য। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, কভিড থেকে উত্তরণের পরও তিন কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যে পড়েছে। সাম্প্রতিক মূল্যস্ম্ফীতির প্রভাবও এক্ষেত্রে প্রভাবক ভূমিকা পালন করেছে। দ্বিতীয়টি আরও দুশ্চিন্তার বিষয়। কারণ আমরা সব আলোচনা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতা নিয়েই করছি। অথচ আমাদের অন্যতম লক্ষ্য এসডিজি বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। এ ক্ষেত্রে তিনটি লক্ষ্যমাত্রা গতিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। একটি হলো অপুষ্টি। এই খাতে আমাদের অবস্থার উন্নতি ঘটছিল। কিন্তু এখন পারিবারিক খাদ্য তালিকায় পুষ্টির বদলে উল্টোদিকে যাত্রার প্রবণতা স্পষ্ট। পরিস্থিতি এই উল্টোযাত্রায় বাধ্য করছে। অপরদিকে কোভিড-পরবর্তী সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে চাকরির বাজারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও। গৃহায়ন আরেকটি বিষয়। আমরা দেখেছি, কোভিডকালে অনেক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, নগরে থাকা-খাওয়ার খরচের বোঝা টানতে না পেরে। অবিচারের অর্থনীতির তৃতীয় চেহারা হচ্ছে, চলমান প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক উন্নয়ননীতি কর্মসংস্থানমুখী হচ্ছে না। এর ফলে যুব বেকারত্ব আরও গভীর হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকারত্ব।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমাদের নজর থাকে তাৎক্ষণিক বিষয় সামাল দিতে। জরুরি বিষয় আগে সামাল দিতে হবে, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু এই মুহূর্তের সংকট যে শুধু বর্তমানে সংকট তৈরি করছে, তা নয়; একই সঙ্গে তা আমাদের নিম্নস্তরে তথা ব্যষ্টিক ও মধ্যম পর্যায়ের সমস্যাগুলোও সামনে নিয়ে আসছে। তাই এই মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ সামাল দেওয়ার পাশাপাশি সামনে চলে আসা মধ্যমেয়াদি সমস্যার দিকেও নজর দেওয়া জরুরি।

অর্থনৈতিক এসব সংকটের কারণে সামাজিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি রয়েছে। এ ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি মানুষের সার্বিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে কি না, সেটাও দেখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার কথা বলতেই হবে। এখানে শুধু অব্যবস্থাপনার বিষয়ই নয়, বরং কী ধরনের ব্যবস্থাপনা চলমান, তার চরিত্রও বোঝা দরকার।

আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় এক ধরনের লৌহ ত্রিভুজ গেড়ে বসেছে। এখানে শুধু ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীই নয়, আরও অনেকে এর অন্তর্ভুক্ত। আমাদের অর্থনৈতিক শাসনে কাঠামোগত ঘাটতি সব সময় কিছু না কিছু থেকেই যায়। কিন্তু ঘাটতিগুলো যখন গভীরে পৌঁছে, সেটাও একটা কাঠামোগত আকার ধারণ করে। সেটাই লৌহ ত্রিভুজের মতো গেড়ে বসেছে।

প্রথমটি হলো একমাত্রিক উন্নয়ন দর্শন। অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিতে গিয়ে আমরা সামাজিক উন্নয়নের বিষয়গুলোকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে। লৌহ ত্রিভুজের দ্বিতীয়টি হলো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় 'কনফ্লিক্ট অব ইন্টারঅ্যাক্ট' বা নিয়ম ও স্বজনতোষী ব্যক্তিস্বার্থের দ্বন্দ্বকে নিরন্তরভাবে উপেক্ষা করা শুধু নয়, রীতিমতো প্রশ্রয় দেওয়া। আর্থিক, জ্বালানি ও পরিবহন- অর্থনীতির এ মূল খাতগুলোর মধ্যে ব্যক্তিস্বার্থের সুবিধার্থে অনিয়মকে নিরন্তর প্রশ্রয় দেওয়াই কার্যত 'নিয়ম' পর্যায়ে উপনীত।

কয়েকটি খাতের উদাহরণ দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। যেমন বিদ্যুৎ খাত। এখানে সাময়িকভাবে 'কুইক রেন্টাল' শুরু হয়েছিল। এরপর কেন এটি চলমান রাখতে হলো? ব্যক্তিস্বার্থের সুবিধা নিশ্চিত করা ছাড়া এর কোনো অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা নেই। যেমন পরিবহন খাত। কেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএ অচল? কেন সড়ক নিরাপত্তায় কিছুই করা যাচ্ছে না? নিরাপদ সড়কের জন্য ১০১টি সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে পারছি না। এখানেও ব্যক্তিস্বার্থে অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়াই মুখ্য। যেমন ব্যাংকিং খাত। এখানেও নিয়ম করে অনিয়মের বিষয়টি ব্যাপক। আমাদের উন্নয়ন খাত বা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও এই প্রবণতার বাইরে নয়। কেন খরচ বাড়ে, কেন সময় বাড়ানো হয়? ব্যক্তি স্বার্থের সুবিধা নিশ্চিত করাটাই যেন বৃহত্তর উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লৌহ ত্রিভুজের তৃতীয় বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। এটি হচ্ছে অবিচারের অর্থনীতি, যার বোঝা সাধারণ মানুষের ওপর অব্যাহতভাবে বর্তাচ্ছে। সাধারণ মানুষ অবিরাম সংগ্রাম করছে নিজের এবং তার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে। বিনিময়ে তার মূল প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে অবিচারের খাটুনি ও ন্যূনতম স্বস্তির অনুপস্থিতি। অবিচারের খাটুনি আমরা জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি। সব সুখ ভোগ করছে ওপরের দিকের মানুষ, আর চাপের বোঝাটা দিচ্ছি সাধারণ মানুষের ওপর। এখানে শুধু স্বল্প আয়ের মানুষ নয়; মধ্যম আয়ের মানুষের ওপরেও চাপ বাড়ছে।

লৌহ ত্রিভুজ এই অর্থে বলছি- এ তিনটি একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত; কিংবা বলা যায় একে অন্যকে প্রভাবিত করছে। একমাত্রিক উন্নয়ন দর্শন ও নিয়মের ব্যত্যয়কে প্রশ্রয় দিয়েই যখন নীতি তৈরি ও বাস্তবায়ন হচ্ছে, তখন অবধারিত ফল হিসেবে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে। এই লৌহ ত্রিভুজ ভাঙতে হলে একটি বড় ধাক্কার প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞ কমিটির কিছু সুপারিশ দিয়ে এর সমাধান হবে না। এর সঙ্গে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, উদ্যোগ ও উপলব্ধি জরুরি। তা না হলে এটা ভাঙা সম্ভব হবে না। এ সময়ে আমরা ক্রোনি ক্যাপিটালিজম বা স্বজনতোষী পুঁজিবাদ বলে একটা পরিভাষা ব্যবহার করি। কিন্তু আমি যে লৌহ ত্রিভুজের কথা বলছি, তা এই 'ক্রোনি ক্যাপিটালিজম' ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। একে আরও বৃহত্তর চিন্তার মধ্যে আনতে হবে।

রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে- আমরা লৌহ ত্রিভুজ ভাঙতে পারব কি পারব না। আর বড় ধাক্কা ছাড়া লৌহ ত্রিভুজ ভাঙবে না। ছোট ছোট ধাক্কায় এ ত্রিভুজ নড়াচড়া করলেও আবার গেড়ে বসবে। এমনটা হলে আমাদের এসডিজির আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না। ২০২৬ সালে আমাদের এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে বটে, কিন্তু আমরা যে ধরনের মধ্যম আয়ের কথা চিন্তা করছি, ওই ধরনের দেশে পরিণত হতে পারব না। এসডিজি ও কাঙ্ক্ষিত মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হতে লৌহ ত্রিভুজ ভাঙার সময় এখনই।

লেখক: অর্থনীতিবিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান, পিপিআরসি

এসএন

Header Ad
Header Ad

যে বিশেষ গুণেই তাপসের হৃদয়ে জায়গা করে নেন বুবলী!

তাপস, বুবলী। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রে নিজের অভিনয় দক্ষতা ও বৈচিত্র্যময় উপস্থিতি দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। ‘দেয়ালের দেশ’, ‘প্রহেলিকা’র মতো গল্পনির্ভর সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, তিনি কেবল বাণিজ্যিক ধারার নায়িকাই নন, বরং একজন পরিপূর্ণ অভিনয়শিল্পী। পাশাপাশি মডেলিংয়েও রয়েছে তার সরব উপস্থিতি।

তবে সিনেমার বাইরেও এক সময় আলোচনায় আসে বুবলীর ব্যক্তিজীবন। গুঞ্জন ওঠে—গানবাংলা টিভির প্রধান নির্বাহী ও সংগীতব্যক্তিত্ব কৌশিক হোসেন তাপসের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েছেন বুবলী। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ও আলোচনা ছড়ায়।

সম্প্রতি উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি সাক্ষাৎকারে তাপসকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, বুবলীর সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর কারণ কী? উত্তরে তাপস বলেন, “প্রেমটাকে অস্বীকার না করে বরং কাজের প্রতি প্রেম বলা ভালো হবে। বুবলী একজন মেধাবী অভিনেত্রী, তার মধ্যে একটি ‘ম্যাজিক’ আছে, যা প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ করে। ভবিষ্যতেও তাকে নিয়ে কাজ করতে আমি আগ্রহী ও আনন্দিত থাকবো।”

তবে এই প্রেমের গুঞ্জনকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন বুবলী। এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “গানবাংলায় আমন্ত্রণ পাওয়ার পরই নানা ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ানো শুরু হয়। আমার কাজ বা সিনেমা আলোচনায় এলেই এসব নোংরামি শুরু হয়। আমি আমার কাজ আর পরিবার নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাপস ভাই ও মুন্নি ভাবির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই স্বাভাবিক, সৌজন্যপূর্ণ এবং পেশাদার। আমাকে কোথাও বাজে আড্ডায় পাওয়া যাবে না।”

 

বুবলী, তাপস। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বুবলী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নতুন সিনেমা ও মডেলিং নিয়ে। অন্যদিকে, কিছুদিন ধরে গানবাংলা টিভির সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।

এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়, দুই পক্ষই তাদের সম্পর্ককে কাজ ও পারস্পরিক সম্মানের জায়গায় রাখতেই সচেষ্ট। গুঞ্জনের বাইরে তারা একে অন্যের প্রতি পেশাদার শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির কথাই জানিয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে অবহিত করেছেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ টেলিফোনালাপে এ বিষয়টি উঠে আসে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, মার্কো রুবিও বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কর্মসূচি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য ও রেমিট্যান্সের অন্যতম শীর্ষ উৎস, ফলে দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় করা সময়ের দাবি।

দুই নেতার মধ্যে এই টেলিফোন আলোচনা চলে প্রায় ১৫ মিনিট। আলোচনায় উঠে আসে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রক্রিয়া, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, রোহিঙ্গা সংকট এবং নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও নিশ্চিত করেছে, ফোনালাপে উভয় পক্ষ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচন কমিশন বর্তমানে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে, যা আগের সরকার সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছিল। আগামী নির্বাচনে আমাদের অনেক তরুণই প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনের আগে মার্কো রুবিওর বাংলাদেশ সফর তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের স্পষ্ট বার্তা পৌঁছাবে।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে সফল বৈঠক করেছেন। দুই দেশই সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী। এছাড়া পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়ে সম্মত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।

রোহিঙ্গা ইস্যুতেও যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সর্ববৃহৎ দাতা হিসেবে কাজ করছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বাস্তব সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বল।”

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ফোনালাপের বিস্তারিত তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।”

এই সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই দেশের গভীর সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

Header Ad
Header Ad

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ক্রীড়া সাংবাদিক ও উপস্থাপক সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। মঙ্গলবার (১ জুলাই) নিজের ফেসবুক পোস্টে এই দায়িত্ব পালন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে আবেগঘন বক্তব্য দেন তিনি।

সামি জানান, তিনি নিজের উদ্যোগে নয়, বরং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আহ্বানে উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এটি ছিল সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী পদ। কোনো সম্মানি বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নয়, শুধুমাত্র ক্রিকেটের উন্নয়নে সহযোগিতার উদ্দেশ্যেই এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটি বিশেষ গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। সামির ভাষায়, “সেদিনই (দায়িত্ব ঘোষণার দিন) থেকে একটা মহল আমার রেপুটেশন খারাপ করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। কেন, তা আমি জানি না। আমি তো প্রেসিডেন্টের চাওয়াতেই এসেছিলাম।”

 

সামি জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেন। অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট কার্নিভাল নিয়ে প্রথম বৈঠকে অংশ নিয়ে বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রস্তাব দেন—যেমন পেসার হান্ট প্রতিযোগিতা, প্যারেন্টাল কোচিং গাইডলাইন, শিশুদের জন্য টেস্ট ক্রিকেটভিত্তিক চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি। পরবর্তীতে দেশের চারটি বিভাগে ঘুরে গিয়ে মাঠ পর্যায়ের সমস্যা চিহ্নিত করে তা বিসিবির বিভিন্ন বিভাগে জমাও দেন।

তবে মাঠপর্যায়ের কাজের পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। সামি জানান, তার পেশা হচ্ছে কনটেন্ট তৈরি, আর সেটাই বিসিবি জানত। তবুও একটি গোষ্ঠী তার কাজকে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বলে প্রচার করতে থাকে। অথচ, তিনি নিজ খরচে ক্যামেরাম্যানসহ কনটেন্ট তৈরি করেছেন এবং এর জন্য বিসিবির কোনো অর্থও গ্রহণ করেননি।

এই বিতর্কে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিসিবি সভাপতি নিজেই—এমন মন্তব্য করে সামি বলেন, “একটা সফল কার্যক্রমের দিনশেষে প্রেসিডেন্টের মুখ থেকে হাসি উড়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আমাকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি কৃত্রিম সংকট তাকে ডিস্ট্র্যাক্ট করছে।”

সামি আক্ষেপ করে লেখেন, “আমি রাজনীতিবিদ নই, বড় ব্যবসায়ী নই, বড় কোনো ব্যাকআপও নেই। ডার্টি পলিটিক্স আমার কাজ না। আমি শুধু কাজটাই করতে পারি—রিসার্চ, হোমওয়ার্ক, ডে রিপোর্ট, মাঠপর্যায়ে ঘুরে ঘুরে সমস্যা চিহ্নিত করা, সমাধানের চেষ্টা করা।”

তিনি বলেন, তার এই কাজের মনোভাবই গত ১০ বছর যমুনা টেলিভিশনে স্থিতিশীল ক্যারিয়ারের পেছনে মূল কারণ। সব টিভি চ্যানেল তাকে স্পোর্টস প্রোগ্রামে রাখে তার হোমওয়ার্ক ও এফোর্টের কারণে।

 

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। ছবি: সংগৃহীত

নিজের সরে দাঁড়ানোর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে সামি দেখান বিসিবি সভাপতির স্বচ্ছ, দেশপ্রেমিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি না করাই। তিনি বলেন, “বুলবুল ভাই দেশের ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। আমি থাকলে হয়তো উনার পথ আরো কঠিন হয়ে যাবে। আমি বিতর্কের কারণ হতে চাই না।”

ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে সামি লেখেন, “একটা বাস্তবতার শিক্ষা আমার স্ত্রী আমাকে বারবার দিতেন—‘বাংলাদেশে শুধু মেধা বা ট্যালেন্ট দিয়েই সব হয় না।’ আজ আবার মনে হলো, Wife is always right।”

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যে বিশেষ গুণেই তাপসের হৃদয়ে জায়গা করে নেন বুবলী!
আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ
বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল