বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কার জরুরি 

বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যে অবস্থা; প্রথমত, আমরা কভিড-১৯ এর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছি। বাংলাদেশ ভালোভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, যদিও গতিটা মন্থর ছিল। এরসঙ্গে হঠাৎ করে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপড়েন; এগুলোর ফলে বিশ্বে আরও নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এসব মিলে বাংলাদেশেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

আমাদের নিজস্ব যে চ্যালেঞ্জগুলো ছিল আর্থিক খাতে সমস্যা, দুর্নীতি, অর্থের অপচয়, মুদ্রাপাচার, কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা এগুলো তো ছিলই। এরসঙ্গে এখন বৈশ্বিক সমস্যাগুলো যেমন জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে; গম, চাল, সয়াবিন তেলসহ খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের বাণিজ্য ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছুটা প্রভাব পড়ছে। এর ফলে আমরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য যেটা একটু ভালো ছিল, আমাদের যে পারফরম্যান্স ছিল, সেটা এখন করা কঠিন হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে আমি চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। তারপর ব্যাংকিং খাতে যে সমস্যা, সেগুলো সম্পর্কে আলাপ করব।বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ দুই ধরনের এক. অভ্যন্তরীণ, দুই. বৈশ্বিক। এখন মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমাদের টাকার বিনিময় হার, সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে আরও প্রকট হয়ে উঠছে। ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো তো আরও প্রকট।

আমাদের যেটা প্রয়োজন, সেটা আমি যদি মোটা দাগে বলি, আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সমন্বিত পদক্ষেপ বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভূমিকা পালন করবে, অন্যরা কেউ কিছু করবে না, তা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক বিষয়ের সঙ্গে জড়িত; এনবিআর আছে, কাস্টমস আছে, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো আছে এদের সবাইকে একযোগে একসঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ, বিদেশি মুদ্রাবাজার দেখবে এগুলোর সমস্যা সমাধান করে চলবে সেইসঙ্গে। রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না, আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না। ইমপোর্টে যথাযথ মাল আসছে কি না, মূল্যটা সঠিক কি না, পরিমাণটা সঠিক কি না এগুলোর সমাধান এককভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে সব মন্ত্রণালয় ও সব সংস্থার একইসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি একটা উদাহরণ দিলাম। সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।  দুঃখজনক হলেও সত্য যেটা, আমাদের সমন্বয়টা হচ্ছে না। অনেকে ভাবে, জিনিস পত্রের দাম বেড়ে গেছে, বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে। তারা দেখবেই। সঙ্গে সঙ্গে যারা পণ্য সরবরাহ করে, যারা পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করে, সেইসঙ্গে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা তাদেরও তো কাজ আছে। অতএব নিজেদের মতো করে যদি সবাই মনে করে আমাদের কাজ চলবে, আমরা করতে থাকব, তাহলে চলবে না।

একসঙ্গে সবাই মিলিত হয়ে সমন্বিতভাবে করবে, সেটা কিন্তু হচ্ছে না।শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, এখানে কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ এনজিও আছে। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদেরও ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে লোকাল লেভেলে যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো কাজ করে, তাদের হেল্পনিতে হবে।উদাহরণ দেওয়া যাক। প্রাইমারি হেলথের টিকা, কলেরা টিকা এসব যে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিয়েছেন, তাদের পাশে রেখে কাজ করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিষ্ঠান আর চেম্বারগুলো সব সমস্যা সমাধানে সরকারকে সুষ্ঠুভাবে সহায়তা করতে পারবে, এটা একটা ভুল ধারণা। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে নীতি-কৌশল অবলম্বন করা দরকার এবং সবার অংশগ্রহণমূলক প্রচেষ্টা নিশ্চিত করতে হবে।এখন আসি আমাদের বর্তমান প্রসঙ্গ নিয়ে। মোটামুটি আমাদের ইতিবাচক দিক আছে। ভবিষ্যতে কী হবে সেটা বলা মুশকিল।

এখানে বেশি দরকার হলো আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এখানে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেটাকে আমরা লিজিং কোম্পানি বলি  সেখানকার নীতিমালা আছে, পুঁজিবাজারের নীতিমালা আছে। আর্থিক খাতে, বিশেষ করে ব্যাংক খাতে নিয়ন্ত্রণ, পরিবীক্ষণ আরও সুদৃঢ় করতে হবে। সময় এসেছে ব্যাংক খাতে সময়োপযোগী সংস্কার করার। বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও শক্তভাবে কাজ করতে হবে। খেলাপিঋণ বেশি, তারপর ব্যাংকিং খাতে নানারকম দুর্নীতি হচ্ছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাইরে অর্থপাচারও হয়ে যাচ্ছে।অন্যদিকে কুটির শিল্প, ছোট ও মাঝারিশিল্পগুলো তাদের চাহিদা অনুপাতে ঋণ পায় না। তাদের বলা হচ্ছে, এই করো, সেই করো, এই কাগজ নিয়ে এসো ইত্যাদি। ইদানীং বাংলাদেশ ব্যাংক ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে। সেটা যথাসময়ে যথাযথভাবে উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বিতরণ করতে হবে।  

কভিড-১৯ এ একটা প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। সেটা কী হলো? বেশির ভাগ টাকা তো ব্যাংকের মাধ্যমে চলে গেছে বড়দের কাছে। বড় বড়গার্মেন্টে, বড় বড় এক্সপোর্টে। ছোট শিল্পগুলো কিন্তু কর্মসংস্থান বেশি করে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা তারা বাড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে পণ্য উৎপাদনে সহায়তা করে। সেটা উৎপাদন খাতে যদি বেশি দেওয়া হয়, তাহলে মূল্যস্ফীতি ও কিছুটা হ্রাস হবে। কারণ মূল্যস্ফীতিটা অনেকটা সরবরাহের ব্যাপার। আমাদের পণ্য সরবরাহ যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমবে।  কুটিরশিল্প, ছোট ও মাঝারি শিল্প সম্পর্কে অনেক কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে মোটেও সঠিক নয়। ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত কনজারভেটিভ। তারা সহজে ছোট শিল্পকে ঋণ দিচ্ছে না। তাদের পেছনে ব্যাংকের সময় ব্যয় হয় বেশি, সুপারভাইজ করা কঠিন, ছোট অঙ্কের টাকায় মুনাফা কম এ সব ব্যাংকের যুক্তি, যেগুলো খোঁড়া যুক্তি। অথচ ছোট ঋণগ্রহণকারীদের পরিশোধের হার অত্যন্ত সন্তোষজনক। অন্যদিকে, বড় বড় ঋণগ্রহীতার অনাদায়ি ঋণের ভারে দেশের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় শিল্পকে নানারকম সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যারা এক্সপোর্ট করে, তাদের আরও বেশি সুবিধা দেওয়া হয়।

অসম একটা উন্নয়নের প্রচেষ্টা বা অসম উন্নয়নের দিকে আমরা চলে যাচ্ছি। এদিকে আবার ডিফল্ট ঋণ শোধ করার জন্য ৯ বছরের সময় দেওয়া হয়েছে। তারপর ঋণ পুনঃতফসিল করার সময়ে ডাউন পেমেন্টের পরিমাণও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অযাচিতভাবে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বড় বড় খেলাপি ঋণ গ্রহীতাকে। এমনিতে অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে, বিশেষ করে আয়ের বৈষম্য। এরসঙ্গে ব্যাংক ঋণের অযাচিত সুবিধা এবং সরকারি প্রণোদনার বিশেষ সুবিধা পেয়ে এক শ্রেণি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে, দিনদিন সম্পদের বৈষম্যও প্রকট হচ্ছে। ২০২২ সালে অর্থনীতিতে তিন জন অর্থনীতিবিদ নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের অবদান ব্যাংকিং খাতের কার্যকলাপ সম্পর্কে। তাদের যুক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে, ব্যাংকিং খাত সমস্যা সংকুলান হলে অর্থনৈতিক মন্দা বেশি প্রকট হবে। আমি বারবার বলেছি, ব্যাংকিং খাত ঠিক করতে হবে, ব্যাংকিং খাত ঠিক না করলে আমাদের অর্থনীতির দ্রুত অগ্রগতি হবে না।

জ্যাঁতি হল, যিনি ২০১৪ সালে নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন, তিনি বাজারের ক্ষমতা এবং আর্থিক নিয়ম বিধির ওপর তার গবেষণার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার কাজ বেশির ভাগ ছিল বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ২০০৭-০৮ সম্পর্কিত। তিনি একটা বই লিখেছিলেন ২০১০ সালে, নাম ব্যালান্সিং দ্য ব্যাংক । বইয়ের মধ্যে তিনি অর্থনৈতিক মন্দার জন্য খেলাপিঋণ, অর্থের অপচয়, করাপশন, অর্থপাচার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন। সবকিছু পর্যালোচনা করে এটাই প্রতীয়মান হয় যে ব্যাংকিং খাতকে যদি যথাযথভাবে পরিচালনা না করা হয়, তাহলে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হবে।

লেখক: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

হিট অ্যালার্ট জারি। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তাপমাত্রার পারদে উঠতি গতার খুব একটা হেরফের না হওয়ায় এখনও অস্বস্তি কমেনি। মাথার ওপর গনগনে সূর্যকে সঙ্গী করেই প্রচণ্ড দাবদাহে নাজেহাল পরিস্থিতি পার করছে মানুষ। যদিও কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা বাতাসের উপস্থিতি থাকলেও পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারাদেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

মো. আজিজুর রহমান বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আর খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিবিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়

ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’ এর পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটন দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল আলবিসেলেস্তারা। তবে শেষমেশ লিওনেল মেসির হাতেই ওঠে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি, এমন বিশ্ব আসরকে সেরা বলতে বাধ্য যে কেউ।

অবিস্মরণীয় এই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ নিয়ে এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু ডকুফিল্ম। যার মধ্যে আলোচিত একটি স্প্যানিশ ভাষায় নির্মিত ডকুফিল্ম ‘মুচাচোস’।

স্প্যানিশ পরিচালক জেসাস ব্র্যাসেরাস নির্মাণ করেছেন ১০০ মিনিটের এই ডকুফিল্ম। গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনায় মুক্তি পাওয়া ‘মুচাচোস’ সেখানকার দর্শকদের মধ্যে দারুণ সাড়া তুলেছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্টার সিনেপ্লেক্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ‘মুচাচোস’ মুক্তি পাবে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়।

বাংলাদেশে ডকুফিল্মটি মুক্তি নিয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার বিপুলসংখ্যক সমর্থক রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলা উপভোগ করেছে কোটি মানুষ। বিশ্বকাপ জয়ের পর ঢাকাসহ সারাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছেন আর্জেন্টিনার মানুষও।

“লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের এই মুহূর্ত নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ ফুরাবে না সহজে। এই ভক্ত-সমর্থকদের জন্যই ‘মুচাচোস’ নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি এই ছবি দেখাটা চমৎকার একটা ব্যাপার হবে দর্শকদের জন্য।’’

‘মুচাচোস’এ অভিনয় করেছেন জেসুস ব্র্যাসেরাস, বসসি অগাস্টিন বসি, হার্নান ক্যাসশিয়ারি, ম্যাক্সিমিলিয়ানো লাসানস্কিসহ আরও অনেকে।

শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার প্রতিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতরা হলেন- শাহাবুদ্দিন সারেং (৩০), মো. আরশাদুল (১১), সৈকত সরদার (১৯), হাজেরা বেগম (৭৫) ও আকাশ হাওলাদার (২৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী এবং তার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত ২৭ মার্চ দুপক্ষের সংঘর্ষে বোমার আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেই ঘটনার সূত্র ধরে আজ আবারও দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এসময় তারা সারেংকান্দি এলাকায় ফসলি জমিতে নেমে একে–অপরকে লক্ষ্য করে হাতবোমা (ককটেল) ছুঁড়তে থাকে। ককটেলের মুহুর্মুহু শব্দে ভারী হয়ে উঠে আশপাশ। এই ঘটনায় শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত, আকাশ ও হাজেরা নামে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহাবুদ্দিন, আরশাদুল, সৈকত ও আকাশকে ঢাকায় পাঠান। এছাড়া দুপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবর অভিযোগ করে বলেন, ‘কুদ্দুস বেপারীর লোকজন গতকাল মঙ্গলবার আমাকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন, ‘‘বাবার জন্মে হয়ে থাকলে সবার সামনে গিয়ে মারামারি করিস। পোলাপান সামনে দিয়ে মারামারি করিস না। আগামীকাল সকালে শুরু হবে।’’ এ বিষয়ে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। পরে আজ কুদ্দুস বেপারীর লোকজন আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

তবে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারী বলেন, ‘জলিল মাদবর মারামারি করার জন্য কয়েক গ্রাম থেকে লোকজন এনে আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন লোক মুমূর্ষু অবস্থায় আছে।’

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর যাবত বিলাসপুর ইউনিয়নে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হামলা-মামলা চলছে। তারই জেরে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জরায়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই দুপক্ষের অন্তত চারজন লোক আহত হয়। তারা বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প আসছে বাংলাদেশের পর্দায়
শরীয়তপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫
মুক্তি পেল ইমতু রাতিশ ও অলংকার এর 'বরিশাইল্লা সং'
জরুরি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিলো ছাত্রলীগ
সাহিত্য চর্চার আড়ালে শিশু পর্নোগ্রাফি বানাতেন টিপু কিবরিয়া
সাজেকে শ্রমিকবাহী ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬
ধাওয়া খেয়ে গরু ও গাড়ি রেখে পালালো চোর, গাড়িতে আগুন দিল জনতা
আর্জেন্টাইন ফুটবলার কার্লোস তেভেজ হাসপাতালে ভর্তি
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে স্কু‌লশিক্ষকের মৃত্যু
প্রসূতির পেটে গজ ও ফুল রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
তাপদাহ কমে গেলে লোডশেডিং থাকবে না: বিদ্যুৎ সচিব
ইন্টারনেট ছাড়াই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি-ভিডিও পাঠাবেন যেভাবে
ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশি নারী বক্সার জিন্নাত ফেরদৌস
নিজে না মেরেও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন রিয়াজ
নারী কর্মীদের বোরকা ও নেকাব পরা নিষিদ্ধ করল চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল
ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
কালশী উড়ালসেতুর নাম বদলে হলো শেখ তামিম মহাসড়ক
ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ