রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক খাতের সুশাসন

বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বৈদেশিক চ্যালেঞ্জ আছে। অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলোও প্রতীয়মান হচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টরেরও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাংকের একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। কারণ ব্যাংক হলো যেকোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল চালিকাশক্তি। সেটা সুস্থ থাকলে সব অর্থনৈতিক খাত সুস্থ থাকে। আর্থিক কর্মকাণ্ডগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। এই সময়ে আমরা যদি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও উজ্জীবিত করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে ব্যাংকিং সেক্টরের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

এখন যদি ব্যাংকিং সেক্টরে আমরা সুশাসন নিশ্চিত না করতে পারি, সংস্কার করে এটাকে আরো গতিশীল না করি, দক্ষতা বাড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করি, তাহলে আমাদের অসুবিধা হবে। সুতরাং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শক্তিশালী ব্যাংকব্যবস্থা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিচয় বহন করে। রুগ্ণ ও দুর্বল ব্যাংকব্যবস্থা দুর্বল অর্থনীতির প্রমাণ দেয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক বা ব্যাংকব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রাখা দরকার। আস্থা যদি নষ্ট হয়, তাহলে কিন্তু ব্যাংকিংয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনৈতিক অন্যান্য ব্যবস্থায় ধস নামবে।

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে যদি আমরা তিনটা পর্বে ভাগ করতে পারি-একটা পর্ব হলো ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ সাল। দ্বিতীয় পর্ব হলো ১৯৮০ থেকে ২০০০ এবং তৃতীয় পর্ব হলো ২০০০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত। ১৯৭২ থেকে ১৯৮০-এই সময়ে সব ব্যাংক ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত। তখন তারা সীমাবদ্ধ ছিল সরকারের নির্দেশিত শর্তাবলি পালন করতে। ১৯৮০ সাল থেকে প্রাইভেট ব্যাংক কাজ শুরু করল। শিল্প, কৃষি ও ব্যবসার সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও প্রাইভেট ব্যাংকগুলো কাজ করে। আবার ২০০০ সাল থেকে এখন নানা রকম সংস্কার হচ্ছে। বিভিন্ন পর্বে নানা রকম সমস্যা ছিল। প্রতিটি সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রয়োজন সংস্কার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ ও সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে। সেখানে ব্যাংকগুলোর যথেষ্ট সহযোগিতা রয়েছে। ব্যাংকগুলো যথারীতি তাদের নিজস্ব কর্ম সঠিকভাবে পালন করেছে।

এখন বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নানা রকম সমস্যা তৈরি হয়ে আছে। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা ব্যবস্থাপনা সংকট এবং অনিয়ম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংকের সুশৃঙ্খলা, সুশাসন তেমনভাবে হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে কিন্তু খুব শক্তভাবে এগুলোর প্রতিকার করছে না। তারা যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটা দৃশ্যমান হচ্ছে না।

অনেক সময় অনিয়ম পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তের নামে দীর্ঘসূত্রতা করে অনেক কিছু দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সমস্যার সমাধান হয় না, এতে সমস্যা বাড়ে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দেখতে হবে, যেসব নিয়ম-নীতি আছে, ব্যাংকের আইন আছে, তার বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার আছে, সেগুলো কতটা মানা হচ্ছে। দেশের সাধারণ কতগুলো আইন আছে। আবার আন্তর্জাতিক কতগুলো মান আছে। এর বাইরে আবার বাংলাদেশের ভেতরে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট আছে। সব কিন্তু ব্যাংকিং, আর্থিক অবস্থা, ডিসক্লোজার, নানা খুঁটিনাটি বিষয় নির্দেশ করে। এগুলো আন্তর্জাতিক মানের। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যাংকগুলো এসব পরিপালন করছে কি না। এগুলো পরিপালন করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথা, সেটা কি তারা নিচ্ছে? কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা কি দ্রুত যথাযথ সমাধান দিতে পারছে? এখন আইএমএফ এসেছে। তারা কিছু শর্ত দিয়েছে। সংস্কার করার কথা বলেছে। সংস্কারগুলো বেশির ভাগ ব্যাংকিং খাত নিয়ে। কর ব্যবস্থা কী করতে হবে, জ্বালানি খাতে কী করতে হবে-এসব বিষয়ে আইএমএফ কতগুলো পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটটাকে আরও সুশৃঙ্খল করার কথা বলা হয়েছে।

মোটাদাগে ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার ও আর্থিক সংস্থার উপর বেশি নজর দিতে হবে। এখন যদি আমরা সংস্কার না করি, মানুষের আস্থা কিন্তু কমে যাবে। এবং এই যে অর্থনৈতিক সংকট বা অর্থনৈতিক গতির যে মন্থরতা, এই সংকটের সময়ে আমাদের জনগণের বিশ্বাস, আস্থা এবং অংশগ্রহণমূলক সহযোগিতা পাওয়া দরকার। কিন্তু আস্থা না থাকলে জনগণের সহযোগিতা পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে ব্যাংকিং সেক্টরে এখন যারা আমানত রাখছে, তারা আমানত রাখবে না। একটা ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিলে অন্য ব্যাংকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতএব জনগণের আস্থা বাড়াতে হবে। যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, তাদেরও আস্থা থাকতে হবে। এই বিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে যদি আমরা ঋণ পরিশোধ করি, তাহলে ব্যাংক আমাদের ঋণ দেবে। যারা খেলাপি, তাদের কথা আলাদা। তারা সুযোগ নেয় এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ করে। যারা দুর্নীতি বা নানা রকম বেআইনি কাজ করে তাদের কারণে ক্ষুদ্র, মাঝারি ব্যবসা এবং ভালো উদ্যোক্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অতএব সার্বিকভাবে শৃঙ্খলা আনতে হলে এখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে।

আমরা দেখছি যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কিন্তু নানা রকম আর্থিক বিপর্যয় হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধসে যাচ্ছে। ২০০৭-০৮ সালে আমরা দেখেছি যে যুক্তরাষ্ট্রে বহু ভালো বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বহু ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক, মানে বিনিয়োগকারী ব্যাংকের পতন হয়েছে। মানে তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের বেল আউট করতে সরকারি টাকা ইনভেস্ট করতে হয়েছে। একই ঘটনা ইউরোপে ঘটেছে, অন্যান্য দেশে ঘটেছে; কিন্তু আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। কারণ আমরা সেভাবে কোনো আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়িনি। এখন অনেক দিন পর সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বড় ব্যাংক একবারে বসে গেছে। তাদের আইন অনুযায়ী এদের দায়িত্বভার নিচ্ছে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। এই দুটি ব্যাংক কতগুলো লেনদেন করছিল এবং আইটি ও অন্যান্য বড় খাতে ইনভেস্টমেন্টও করেছিল। অনেক ক্ষেত্রে তাদের ব্যাংকিং ছিল আগ্রাসী। দুটি কারণে তারা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। একটা হলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ঠিকভাবে করতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, তারা নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোভাবে মনিটর করেনি বা তাদের তথ্য তারা ভালোভাবে পায়নি। অন্যদিকে বিনিয়োগ নেওয়া প্রতিষ্ঠানও কিন্তু অনেক সময় তথ্য লুকিয়ে রেখেছে বা তথ্য দেয়নি। ফলে ব্যাংকের ডিপোজিটে চাপ পড়েছে। বড় আমানতকারীরা টাকা তুলে নেওয়ায় ছোটখাটো আমানতকারীরাও টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়। তার মানে, এখানে ব্যাংকের উপর একটা আস্থা কমে গেছে।

এই দুটি ব্যাংক থেকে সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে আমাদের কিছু শেখার আছে। আমি মনে করি যে এই ব্যাংকগুলো নিয়ে প্রচারণা করার প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের পরিস্থিতি আলাদা এবং ওই দুটি ব্যাংকের ইকোনমির ছোট অংশ তারা কাভার করে। এটার প্রভাব অন্য সেক্টরে পড়বে না। অর্থাৎ অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় চাপ সৃষ্টি করবে না।
বাংলাদেশের মানুষ আবার অনেক সময় গুজবে বিশ্বাস করে। অন্যদের কথায় ভাবে যে আমাদের দু-একটা ব্যাংক খারাপ হয়ে যেতে পারে। মানে অন্য ব্যাংকের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে আগ্রাসী বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। কারণ, আমাদের অর্থনীতির তুলনায় ব্যাংক অনেক বেশি। মোটামুটি দু-একটা ব্যাংক যদি ঝামেলা করে এটা কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মানুষের আস্থায় টান পড়বে। এমনিতে মানুষ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে অনেকটা সংশয়ের মধ্যে আছে।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে নানা রকম অনিশ্চয়তা আছে, কোভিড আছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আছে। তারপর নিজস্ব এই সমস্যাগুলো যদি থাকে, তাহলে কিন্তু সামনের দিকে যেতে পারব না। আমাদের উন্নয়ন পিছিয়ে পড়বে। অতএব মানুষের আস্থা রাখতে হবে এবং দৃষ্টি থাকতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটা সুবিধা আছে, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স আড়াই লাখ ডলার। আমাদের আড়াই কোটি টাকার মতো। বাংলাদেশের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স মাত্র দুই লাখ টাকা। যেটা বাংলাদেশ ব্যাংক ম্যানেজ করে। বাংলাদেশের লোক যখন জানবে, তাদের আড়াই কোটি আর আমাদের দুই লাখ টাকা, তাহলে তো সবাই ভয় পাবে। এখনই বাংলাদেশ ডিপোজিট ইনস্যুরেন্সের টাকা আরো বাড়াতে হবে। ডিপোজিটটা ইনস্যুরেন্স করার চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করা একটা ভালো দিক। এর আগে ডিপোজিট যেন বিপদে না পড়ে সে জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, ব্যাংকের সুশাসন ঠিক করতে হবে। সরকারকে ব্যাংকিং খাতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। প্রয়োজনবোধে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্সের জন্য জামানতকারী স্বেচ্ছায় তাদের একটি অংশ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বিমা করার বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে।

আমাদের ছোট অনেক ব্যাংক আছে, যেগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। এগুলো উঠিয়ে আনা কষ্টকর হবে। সরকার যতই কনসেশন দিক, বাংলাদেশ ব্যাংক যতই তাদের উদ্ধার করে আনার চেষ্টা করুক, কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। এখন সময় এসেছে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনার। ছোটখাটো দু-একটা ব্যাংককে আরেকটা ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করে অথবা ভালো কিছু ফিন্যান্সিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে কিংবা বড় ব্যাংকের সঙ্গে যদি মার্জ করা হয়, তাহলে সমস্যা অনেক কমে যাবে। তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকেরও সুপারভাইজ বা মনিটর করা সহজ হবে। শেষ কথা হচ্ছে, আমাদের আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা দরকার।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ: ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন