বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

কয়েকদিন পরে কায়রো ফিরে মনে হলো নিজের বাসায় ফিরেছি। একটু রাত করে নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে বেশ বেলা করে যখন উঠেছি তার আগেই সৌরভ অফিসের উদ্দেশে বেরিয়ে গেছে। আমরা ধীরে-সুস্থে ঘরে নাস্তা বানিয়ে খেয়ে কিছুটা সময় আলসেমি করে বাইরে বেরোতে সাড়ে এগারোটা বেজে গেল। হাঁটতে হাঁটতে আল মাদি স্টেশনে যাবার পথে রানা ভাই দুই দুটো ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেন। লুক্সরেও আমাদের একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফলে বুঝলাম মিশরের বেশিরভাগ এটিএম বুথ অনেক সময় খারাপ থাকে। 

এল মাদি থেকে ট্রেনে চেপে দুটো স্টেশন পার হবার পরে রানাভাই বললেন, আমরা তো উল্টো দিকে যাচ্ছি।’ তিনি যেহেতু আগে একবার কায়রো এসে গেছেন, সেই কারণে আমি নিজে কোনো কিছু না দেখে তাকে কেবল অনুসরণ করেছি মাত্র। উল্টো পথের যাত্রা নিশ্চিত হবার পরে পরবর্তী স্টেশন কোজিকায় নেমে গেলাম। ওভার ব্রিজ দিয়ে প্লাটফর্ম বদলে ওপারে যাবার পরপরই সঠিক পথের ট্রেন এসে দাঁড়াল। ট্রেনে উঠেই শূন্য আসনে বসে পড়তে পেরেছি তিনজনই। মহিলাদের জন্য নির্ধারিত কামরা থাকলেও পুরুষের কামরায় মহিলাদের উঠতে মানা নেই।

হিজাব-নিকাব-বোরকার পাশাপাশি টিশার্ট-জিনস কিংবা স্কার্ট-টপস পরিহিতাদেরও একই কামরায় আসা যাওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। যাত্রীদের কেউ কারো দিকে তাকায় বলেও মনে হলো না। বরং আমিই আমাদের উল্টো দিকের সিটে বসা মেরুন রঙের বোরকায় আবৃত এক মহিলাকে আড় চোখে কয়েকবার দেখে নিলাম। কিছুক্ষণ পরপরই তিনি যখন তার বোরকার লম্বা জিহ্বা তুলে একটা করে চকলেট মুখে পুরে দিচ্ছিলেন আমার মনে হচ্ছিল তিনি লেটারবক্সের ঢাকনা তুলে একটা করে চিঠি পোস্ট করছেন। 

একে একে তোরা এল বালাদ, এল মাদি, দার এল সালাম, জগলুল নামের গোটা দশেক স্টেশন পার হয়ে যেখানে এসে আমরা নেমে গেলাম, সেই স্টেশনটির নাম সাদাত এবং পরের স্টেশনই নাসের। আনোয়ার সাদাত বা গামাল আব্দুল নাসেরের লম্বা চওড়া নাম বাদ দিয়ে শুধুই সাদাত এবং নাসের। এতে মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্টদের কোনো ক্ষতি বৃদ্ধি হয়নি, বরং স্টপেজের সংক্ষিপ্ত নামই মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। সাদাত স্টেশনটি এদেশের মেট্রোর সমসাময়িক, অর্থাৎ পঁত্রিশ বছরের পুরোনো। ইওরোপ এবং এশিয়ার যে সব দেশে মেট্রোরেলে আসা যাওয়া করেছি তার সবগুলোই ভীষণ পরিচ্ছন্ন ঝকঝকে। সেই তুলনায় মিশররের মেট্রোরেল এবং স্টেশন অনেকটাই নিষ্প্রভ। আফ্রিকায় অবশ্য কায়রো এবং আলজিয়ার্স ছাড়া আর কোনো শহরে মেট্রো নেই। সেদিক থেকে কায়রো অনেক এগিয়ে আছে। 

বেশ বড় মেট্রো স্টেশন সাদাত থেকে অনেকগুলো বাইরে বেরিয়ে যাবার পথ। পথ খুঁজে বাইরে বেরোতে আমাদের বেশ সময় লেগে গেল। সাদাত থেকে সঠিক পথে বাইরে বেরোতে পারলে মিনিট খানেক পায়ে হেঁটেই তাহরির স্কয়ার পৌঁছানো যায়। আমরা একটু ভুল পথে বেরিয়েও মিনিট পাঁচেক হেঁটে গোটা পাঁচেক বড় রাস্তার সংযোগস্থলের যে বিশাল সড়ক দ্বীপে এসে পৌঁছলাম সেটিই বিখ্যাত তাহরির স্কয়ার।  

তিউনিশিয়ায় ২০১০ সালে স্বৈরশাসকের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আরব বসন্ত নামে যে গণজাগরণ ঘটেছিল তার ঢেউ এসে লেগেছিল মিশরসহ আর বিশ্বের আরও অনেক দেশে। সে সময় মিশরে সমাজের বিভিন্ন আর্থ সামাজিক স্তরের লাখ লাখ বিক্ষুব্ধ মানুষ তাহরির স্কয়ার এবং সংলগ্ন এলাকায় সমবেত হয়ে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবি জানায়। গণ বিরোধী রাষ্ট্রীয় জরুরি আইন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, পুলিশি নির্যাতন, মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব এবং ঘুষ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিভুত ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কায়রো। 

গণ আন্দোলনের মুখে ২০১১ সালের এগারোই ফেব্রুয়ারি হোসনি মোবারক পদত্যাগ করলেও সমস্যা সমাধান হয়নি। সামরিক বাহিনীর সুপ্রিম কাউন্সিল ক্ষমতা দখল করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে। ২০১২ সালে নির্বাচনে জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইসলামিক ব্রাদারহুডের মোহম্মদ মুরসি। একটি ইসলামপন্থী সংবিধান পাশ করানোর চেষ্টা করে মুরসি পার্লামেন্টের ভেতরে বাইরে, জনগণ এবং সামরিক বাহিনীর তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। 
গণরোষকে কাজে লাগিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ এল সিসি সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১৪ সালে আবারো একটি নির্বাচন দিয়ে নিজেই প্রেসিডেন্ট হয়ে বসে পড়েছেন। প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতার রদবদল ছাড়া তাহরির স্কয়ার ঘিরে জনগণের বিক্ষোভ সংগ্রামের ফলাফল একেবারেই শূন্য।  

দুপুরের এই সময়টাতে তাহরির স্কয়ারে খুব একটা জনসমাগম নেই। চত্বরে সবুজ ঘাস এবং ছোট ছোট গাছপালার ভেতরে ভেতরে বেঞ্চ পাতা। পাথরের বেদীতে বসানো ভাস্কর্যটি কার তা না জেনেই ক্যামেরা বের করে ভিউ ফাইন্ডারে চোখ রাখতেই বেঞ্চে বসা নীল পোশাকধারী দুজনের একজন এগিয়ে এসে হাসিহাসি মুখে বললো, লা তসবির, লা তসবির, তসবির মানে ছবি আগে থেকেই জানতাম আর লা মানে যে না অথবা নাই সে তো মুসলমান মাত্রেরই জানা। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ... মানে যদি আল্লাহ ছাড়া উপাস্য নেই হয়, তাহলে লা তসবির মানে ছবি নাই। এই এলাকায় ছবি তোলা যে নিষিদ্ধ, তা কিন্তু কোথাও লেখা নেই। কোনো বোর্ডে-বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জানানো হয়নি। পরে খেয়াল করে দেখলাম তাহরির চত্বরের চারিদিকে নীল রঙের বেসামরিক পোশাক পরা বেশ কিছু সংখ্যক সতর্ক প্রহরী আসলে পুরো স্কয়ারকে ঘিরে রেখেছে। কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, পোশাকধারী কোনো সরকারি বাহিনী নেই অথচ অদৃশ্য প্রহরার বেস্টনি দিয়ে ঘেরা বিদ্রোহ বিপ্লব সংগ্রামের সূতিকাগার তাহরির স্কয়ার। মুরসির কুরসি উল্টে যাবার অভিজ্ঞতা শাসকগোষ্ঠীর মনে এই চত্বর সম্পর্কেই একটা ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে। তাই সিসি মহোদয়ের এই সাবধানতা।  কী মনে করে সতর্ক প্রহরী কাছে এসে বলল তোমরা ইচ্ছে করলে একটা ছবি তুলে রাখতে পারো, তার বেশি নয়।’ আমার ততোক্ষণে ছবি তোলার ইচ্ছে চলে গেছে। 

তাহরির স্কয়ার থেকে বেরিয়ে রাস্তার ওপারে যাবার জন্যে ট্রাফিক সিগনালে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম, তারপরে রাস্তা পেরিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম কায়রোর জাতীয় জাদুঘরের দিকে। তাহরির স্কয়ারের দৃষ্টি সীমার মধ্যে আরব বিশ্বের প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের গোলাপি রঙের ভবনের দিকে এগোতে থাকি। ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ঈজিপ্টশিয়ান অ্যান্টিকুইটি নামে ১৯০২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘর খুব শিগগিরই স্থান্তরিত হয়ে গ্রান্ড ঈজিপ্টশিয়ান মিউজিয়াম নামে গিজায় চলে যাবে। তখন এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর। এরই মধ্যে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবার ফলে জাদুঘরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন চলে গেছে গ্রান্ড মিউজিয়ামে। সম্প্রতি দ্বিতীয় তৃতীয় রামেসেস, প্রথম ও দ্বিতীয় আমেনহোতেপ, নেফারতারি এবং হাতসেপস্যুসহ ফারাও যুগের সম্রাট সম্রাজ্ঞীদের বাইশটি মমি রাজকীয় আনুষ্ঠানিকতায় বাদ্য বাজনা বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে গ্রান্ড ঈজিপ্টশিয়ান মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপরেও কায়রোর পুরোনো মিউজিয়ামে ঢুকে পড়ার ইচ্ছে ছিল। রানাভাই ঘড়ি দেখে বললেন, এখন ২০০ পাউন্ড দিয়ে টিকেট কিনে ঘণ্টা দুয়েকের জন্যে মিউজিয়ামে ঢুকে দেখে শেষ করা সম্ভব হবে না। বরং অন্য কোনো দিন সকালের দিকে আসা যাবে।’ 

বাইরে থেকে মিউজিয়াম ভবন দেখে খানিকটা উল্টো দিকে হেঁটে আমরা মূল সড়ক ছেড়ে একটা অপ্রশস্ত পথে ঢুকে পড়লাম। বেলা প্রায় আড়াইটা বাজে, অতএব লাঞ্চের সময়ও পার হয়ে গেছে বলা যায়। পথে প্রথমেই যে রেস্টুরেন্ট চোখে পড়ল তার ঝকঝকে নাম ফলক এবং কাচের স্যুইংডোর দেখে বিভ্রান্ত হয়ে সেখানে ঢুকে পড়লাম। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হলঘরের ভেতরে তুমুল হৈ হট্টগোল চলছে। এক নজর চারিদিকে তাকিয়ে দ্রুত, বলা যায় ছিটকে বেরিয়ে এলাম। আবার ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে খানিকটা এগিয়ে একটা মোড়ের ওপরে পাওয়া গেল কায়রোর জনপ্রিয় স্ট্রিটফুডের ভ্যান। অনেকটা কলকাতায় রাস্তায় লুচি তরকারি আলুর দম পরিবেশনের মতো পরিবেশিত হচ্ছে রুটির ভেতরে ভাজা মাংসের কিমা পুরে শরমা কিংবা বনরুটির মধ্যে কাবাব জাতীয় কিছু একটা দিয়ে বার্গার। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় আলেক্সাদ্রিয়ান লিভার কিংবা সসেজ স্যান্ডউইচ। সসেজ জিনিসটা আমার পছন্দ নয় বলে পরীক্ষামূলকভাবে লম্বা ব্রেডের ভেতরে কলিজি ভুনার পুর দেয়া আলেক্সাদ্রিয়ান লিভার স্যান্ডউইচ এবং কোল্ডড্রিংকস দিতে বললাম। 

অল্প সময়ে লিভার স্যান্ডউইচ তৈরি হয়ে গেলে রাস্তার ওপার থেকে ঠাণ্ডা পানীয়ের বোতল আনিয়ে নিয়ে আমাদের হাতে ধরিয়ে দিলেন স্ট্রিটফুড কার্টের মধ্য বয়সী মালিক কাম বাবুর্চি। পাশেই একটি বন্ধ ভবনের সিঁড়ি দেখিয়ে দিয়ে বললেন, তোমরা বসে পড়ো না কেন। সত্যিই তো! রাস্তায় বসে না খেলে আর স্ট্রিটফুড খাওয়া কেন। আমরা যখন সিঁড়িতে বসে আলেক্সাদ্রিয়ান লিভার স্যান্ডউইচ সাবাড় করছি তখন স্কুল ড্রেস পরা একদল কিশোরী খাবারের গাড়িটা ঘিরে দাঁড়িয়ে গেছে। একে একে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে কেউ কেউ আমাদের কাছাকাছি এসে বসেও পড়েছে। তারা প্রথমে আমাদের দিকে কৌতূহল নিয়ে তাকাচ্ছিল আর মিট মিট করে হাসছিল। আমি যখন বললাম, তোমরা কি কিছু বলবে? তখন দু তিনজন হাসতে হাসতে এক অন্যজনের গায়ে গড়িয়ে পড়ল। খাবারের দাম মিটিয়ে আমরা যখন আবার হাঁটতে শুরু করেছি, তখন ফুডকার্টের বিশাল ছাতার নিচে ভিড় জমিয়েছে নতুন একদল তরুণ। কে জানে তাদের মূল আকর্ষণ আলেক্সাদ্রিয়ার স্যান্ডুইচ নাকি একঝাঁক রূপবতী কিশোরী! 

রানা ভাই বললেন, এখন এক কাপ কফি হলে ভালো হতো। আমিও ভাবছিলাম, কফি বা চা হলে মন্দ হতো না। একটু সামনে এগোতেই দুই সারি ভবনের মাঝখানে ছোট্ট এক কানাগলিতে দু পাশে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে অস্থায়ী চা কফির আয়োজন। দুপাশে উঁচু ভবন ছাড়াও ভেঙে ফেলা একটা বাড়ির খালি জায়গায় ইট পাথরের স্তূপ। সে অংশটা অবশ্য পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। গোটা  কয়েক টেবিলে কয়েক জোড়া তরুণ-তরুণী কফির কাপ সামনে নিয়ে বসে আছে। বোরকা আবৃত তরুণীদের মুখ খোলা, তারা কথা বলে ফিসফাস করে কিন্তু হাসে উচ্চস্বরে। পথের রেস্তোরায় পথিক নেই কিন্তু চলছে ফেরিওয়ালা নারী পুরুষের বিরতিহীন আসা যাওয়া। মালা, মানিব্যাগ, চিরুনি, রুমাল, টুপিসহ অনেক কিছুই এখানে বসে কিনে ফেলা যায়। এক নারী হাতে কতগুলো তসবিহ ঝুলিয়ে আমাদের সামনে করুণ মুখ করে হাজির হতেই রানা ভাই তসবিহ না কিনেই তার হাতে একটা দশ পাউন্ডের নোট ধরিয়ে দিলেন।  

আমরা যে কফির কাপ সামনে নিয়ে বসেছিলাম, অ্যারাবিয়ান কফি নামের সেই বিস্বাদ কফির তলায় ঘন তলানি জমে, আমার খুব একটা ভালো লাগে না। আমাদের উল্টো দিকের এক টেবিলে বিভিন্ন বয়সের চারজন বসে ডমিনো খেলছেন। বেলা সাড়ে তিনটায় গলিপথের কফিশপে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া বোধহয় মিশরীয়দের পক্ষেই সম্ভব। আমি টেবিল থেকে উঠে ডোমিনো খেলায় মগ্ন মানুষদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি, অনুমতি নিয়ে কয়েকটা ছবিও তুলি। এদের একজন আমাদের পরিচয় জানতে চান, কিন্তু বাকিদের খেলায় বিঘ্ন ঘটবে বলে আমি পরিচয় দিয়ে খুব বেশি কথা না বলেই নিজেদের টেবিলে ফিরে আসি। 

ফেরার পথে সাদাত মেট্রো স্টেশনে এবং ট্রেনে ভিড় বেড়েছে। এবারে তিন চারটে স্টেশন পার হবার পরে বসার জায়গা পেলাম। যাত্রীর ভিড় কমে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই ফেরওিয়ালার ভিড় বেড়েছে। মাস্কের ফেরিওয়ালা ঘোরাঘুরি করলেও বিক্রি হতে দেখিনি একটাও। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই, দুতিনজন তাদের মাস্ক যথারীতি গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন। ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনের বাইরে বেরোতেই ফুটপাথ জুড়ে পসরা সাজিয়ে বসা নানা পণ্যের মাঝখানে জুতা সেলাইয়ের দোকানে সৌমকান্তি বৃদ্ধ লোকটিকে চোখে পড়ে। সাদা চুল দাড়ি মিলিয়ে তাকে চর্মকার নয়, দার্শনিক বলে মনে হয়। রানা ভাই জানালেন কয়েক বছর আগেও তাকে ঠিক একই জায়গায় একইভাবে বসে জুতা স্যান্ডেল মেরামত কিংবা পালিশ করতে দেখেছেন। হয়ত আরও বহু বছর দার্শনিক চর্মকার তার কর্ম করে যাবেন। তার দোকানের উল্টোপাশেই একটি বইপত্রের দোকান। হয়ত একেই বলে জুতা সেলাই থেকে চণ্ডিপাঠ। আমাদের দার্শনিক মুচির তেমন পাঠাভ্যাস আছে কিনা কে জানে! 

চলবে...  

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

 

Header Ad

কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে হিট স্ট্রোকে ফাতেমা বেগম (৫৭) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে বুধবার রাত ১১টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, বুধবার দুপুরে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমণ্ডল কৃষ্ণানন্দবকসী গ্রামে নিজ বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। মৃত নারী ওই ওয়ার্ডের কপুর উদ্দিনের স্ত্রী।

গোরকমণ্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মণ্ডল ও নিহতের স্বজন জাহের আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মণ্ডল জানান, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনে ভুগছিলেন। প্রচণ্ড দাবদাহে তিনি হিট স্ট্রোক করেছেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস

রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফাইল ছবি

তাপপ্রবাহের কারণে এক সপ্তাহ ছুটির পর নতুন করে আর ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। যার ফলে মাউশির আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রবিবার (২৮ এপ্রিল) থেকেই পাঠদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। খোলার পর শনিবারও ক্লাস চালু থাকবে।

তবে, এ বিষয়ে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল-ফিতরের ছুটির ধারাবাহিকতায় তাপদাহের কারণে গত ২০ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ঘোষিত ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।

এতে বলা হয়, আগামী ২৮ এপ্রিল রোববার থেকে যথারীতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে এবং শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শ্রেণি কার্যক্রমের যে অংশ শ্রেণিকক্ষের বাইরে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং যেসব কার্যক্রমে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসতে হয়, সেসব কার্যক্রম সীমিত থাকবে।

তাপদাহ এবং অন্যান্য কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা পূরণ এবং নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন ফল অর্জনের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারও শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।

এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উপ-সচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের সই করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

দেশটির ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি। খবর ডন অনলাইনের।

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর বাঙালিদের এ ভূখণ্ড পাকিস্তানের একটি অংশ হয়ে শাসিত হতে থাকে। কিন্তু সবকিছুতে এ জনপদের মানুষের ওপর ছিল বৈষম্য। পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একসময় মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধের আগের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে শেহবাজ শরিফ বলেন, আমি তখন অনেক তরুণ ছিলাম...তখন আমাদের বলা হতো ওই অঞ্চল (বাংলাদেশ) আমাদের জন্য বোঝা। আজ আপনারা জানেন, সেই ‘বোঝা’ কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে)। তাদের দিকে তাকালে আমি এখন লজ্জিত হই।

অনুষ্ঠানে শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সেদেশের ব্যবসায়ীদের রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এসময় তিনি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়েও কথা বলেন। এছাড়া দেশে ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’র জন্য পিটিআই প্রধান ইমরান খানের প্রতি তার নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশ করেন শেহবাজ।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ। বেশ কিছু বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছে। মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, দুর্নীতিসহ নানা সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন শেহবাজ শরিফ।

সর্বশেষ সংবাদ

কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়
বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থের তথ্য চেয়ে চিঠি দুদকের
ভূমি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেবে ২৩৮ জন
জয়কে আজীবন বয়কট, ২ জনকে সাময়িক বহিষ্কার