শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

লুক্সর শহরের পথে

লুক্সরের সাজানো গোছানো বাজার থেকে বেরিয়ে আমরা সাধারণ দোকানপাটের পাশ দিয়ে, কখনো ফুটপাত ধরে আবার কখনো গলিপথে হেঁটে শহর সম্পর্কে একটা ধারণা পাবার চেষ্টা করছিলাম। স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহণের মাইক্রোবাস এবং টাঙ্গা চলাচলের মধ্যে পথ করে নিয়ে এগোতে থাকলে আমাদের দেশের যে কোনো বড় শহরের মতো নির্ধারিত বাজারের পাশাপাশি রাস্তার ধারে এবং গলিপথেও নানা ধরনের ফল বা সবজি, মাছ-মাংস এবং কাঁচা বাজারের সঙ্গে রেস্টুরেন্টের দেখা মেলে। জুব্বা এবং পাগড়িধারী পুরুষের পাশাপাশি দোকানি নারীরাও তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন। তাদের বেশিরভাগের আপাদমস্তক কালো বোরকায় ঢাকা থাকলেও মুখের উপরে কোনো আবরণ নেই। কথাবার্তাও বেশ সপ্রতিভ এই নারীদের দেখলে বোঝা যায়, আরব সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পোশাক নির্বাচন করলেও তাদের থেকে উচ্চকিত ইসলামের কোনো আভাস পাওয়া যায় না।      

পচাঁনব্বই শতাংশ মরুভূমির দেশে ফুটপাতে মাছের ডালা সাজিয়ে মাছ ধরার জেলে না হোক, মৎসজীবীদের কেউ মাছ বিক্রি করছেন, লুক্সরের রাস্তায় এটি আমার কাছে চমৎকার একটি দৃশ্য। ছোট আকারের মাছগুলো দেখতে তেলাপিয়া এবং একটু বড়গুলো মনে হলো পাঙ্গাস জাতীয় মাছ। জুব্বাধারী জেলে মাছের পসরা সাজিয়ে নির্বিকার বসে আছেন। ভাষার সমস্যা না থাকলে জিজ্ঞেস করতাম, ‘মাছ কী নীল নদের নাকি সমুদ্রের? রানাভাই এবং হেনা অনিকটা এগিয়ে গেছে। আমি ছবি তুলতে তুলতে পিছিয়ে পড়েছিলাম বলে মাছের বিস্তারিত বিবরণ না জেনেই ছুট দিলাম। আমাদের বারোয়ারি বাজারগুলোতে যেমন, স্নো,পাউডার, কসমেটিক্স, জুতা স্যান্ডেল কিংবা বিভিন্ন ধরনের গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকানের মাঝে দুই একটা চায়ের বা জল খাবারের দোকান থাকে, এমন কি কাপড় চোপড় বা লোহা লক্কড়ের দোকান দেখা যায়, তেমনি বাজার এলাকায় একেবারে কোণার দিকে একটা কাপড়ের দোকানে ঢুকে পড়লেন রানা ভাই। উদ্দেশ্য ছিল মিশরের বিখ্যাত ঈশিপ্টশিয়ান কটনের কাপড় নেড়ে চেড়ে দেখা এবং দামে তেমন সাশ্রয়ী হলে কিছু কিনে ফেলা। দামের দিক থেকে আদৌ পাউন্ডের কোনো সাশ্রয় হলো কিনা বলা কঠিন, কিন্তু যা হলো তা হচ্ছে বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় কাপড় কেনা হয়ে গেল। নাছোড়বান্দা সেলসম্যান তার যাবতীয় কলাকৌশল প্রয়োগ করেছে এবং আমরাও সহজেই তার ফাঁদে পা দিয়েছি। যাই হোক, খোদ লুক্সরে উৎপাদিত তুলা থেকে স্থানীয় বস্ত্র কারখানায় বানানো কাপড় বলে কথা! হোক দাম একটু বেশি, ক্ষতি নেই। কিন্তু কাপড় যদি আসলেই সেই আদি ও আসল মিশরীর বস্ত্রখণ্ড না হয়! যাই হোক, আমরা তো আসলে কাপড় কিনিনি, কিনেছি খানিটা বিশ্বাস!       

                  পথের পাশে বাজার 

লুক্সর শহরটির জীবন যাত্রা একটু ঢিলেঢালা বলেই মনে হয়। অবশ্য মিশরের সর্বত্রই বোধহয় একই অবস্থা। এখানে যাত্রী পরিবহণের মাইক্রোবাসের পাশাপাশি মন্থর গতির ঘোড়ার গাড়ির চলাচল দেখলেই তা খানিকটা অনুমান করা যায়। রাস্তায় ব্যাংককের মতো ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটার প্রতিযোগিতা নেই, আমস্টারডামের মতো মিউজিয়ামের সামনে দীর্ঘ কেউ নেই, হ্যানয়ের মতো রাস্তা ভরা মোটরবাইক নেই, ভেনিসের মতো খাল উপচে পড়া গন্ডোলা নেই, এমনকি রোম, প্যারিস বা মাদ্রিদের মতো লাল ট্যুরিস্ট বাসের আধিক্য নেই। এখানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও জীবন বয়ে যাচ্ছে বেশ ধীর লয়ে। আমরাও সেই ধীর গতির সঙ্গে মিলে মিশে এগিয়ে যাওবার পথে একটা বাদামের দোকানে দাঁড়াই। 

কাঁচা বাদাম-ভাজা বাদাম, কাজু বাদাম-পেস্তা বাদাম, চীনা বাদাম, মুমফলি থেকে শুরু করে বাদাম ছাড়াও শুকনো ফল, সূর্যমুখীর বিচি, মটর ও ভুট্টার দানার মতো বাদাম জাতীয় নানা ধরনের পসরা পূর্ণ দোকানের কিশোর দোকানিকে দুই ধরনের বাদাম দিতে বলে রানা ভাই সাজানো বস্তা থেকে একটা দুটো বাদাম তুলে পরীক্ষামূলকভাবে চিবিয়ে দেখতে থাকেন। ছেলেটি ধীরে সুস্থে বাদাম ঠোঙ্গায় তুলে ওজন করে। ওকে বললাম, ‘তুমি যদি তাড়াতাড়ি বাদামের ঠোঙ্গা হস্তান্তর না করতে পারো, তাহলে কিন্তু তোমার বস্তার অর্ধেক বাদাম আমরা টেস্ট করেই শেষ করে ফেলবো।’ তার হাসি দেখে বুঝলাম সে কথাটা বুঝতে পেরেছে, কিন্তু তার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না। ভাবটা এমন, ‘খাও না কতোটাই বা খাবে!’  

                  লুক্সরের মৎস্যজীবী

বাদামের ঠোঙ্গা ব্যাগে ভরে নিয়ে আমরা উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করি। এবারের লক্ষ সাধারণ মানের একটি রেস্টুরেন্ট। খাবারের স্বাদে গন্ধে কিছুটা রকম ফের থাকলেও তিন তারা থেকে পাঁচ তারা পর্যন্ত হোটেলের নিজস্ব রেস্তোঁরার খাবার এবং পরিবেশন রীতি দেশে বিদেশে প্রায় একই ধরনের। সেই কারণে আমরা চেয়েছিলাম এই শহরের নিজস্ব একটি রেস্টুরেন্ট। শহরের মাঝখানে ভর দুপুরেও রেস্টুরেন্ট প্রায় জনশূন্য। আমরা তিন ক্ষুধার্ত বাংলাদেশি ছাড়া একদিকে এক কোণের টেবিলে দুজনকে দেখা গেল। জন সমাগম কম থাকার কারণে আপ্যায়ন কম হলো না। আমরা মিশরীয় তন্দুর রুটি বালাদি, খিচুড়ি জাতীয় কোশারি, ইজিপ্টশিয়ান চিকেন কাবাব এবং সালাদ দিতে বলেছিলাম। সঙ্গে পানীয় হিসাবে নির্ভেজাল পানি দিতে বললেও টেবিলে যখন অরেঞ্জ জুসের গ্লাস  এলো তখন মনে হয়েছিল এটা হয়তো ভুল করে দিয়েছে। ভুল ভাঙাতে গেলে জবাব এলো বিদেশি মেহমানদের জন্য এটা কপ্লিমেন্টারি। হেনা ধন্যবাদ দিয়ে জানালো স্বাস্থ্যগত কারণে অরেঞ্জ জুস খেতে মানা আছে, আমার গ্লাসটা তুলে নাও।’ কিছু পরেই গ্লাসটা পাইন অ্যাপেল জুসের গ্লাস হয়ে ফিরে এলো। পরিবেশনকারী ছেলেটি বললো, ‘আশাকরি আনারসে আপত্তি নেই।’ আপত্তি থাকলেও এবারে আপত্তি করা কঠিন হতো, তবে আসলেই পাইন-অ্যাপেলে কোনো সমস্যা ছিল না।    

                বাজারের রেস্টুরেন্ট

বাজার থেকে টাঙ্গা স্ট্যান্ডে ফেরার পথে অনেক দূরে থেকে একটা সুদৃশ্য ভবন চোখে পড়ে। ভবনের নির্মাণশৈলীতে ইসলামি স্থাপত্যের ছাপ এবং বহিরাঙ্গণের দেয়ালে ও কয়েকটি ছোট, সম্ভবত বিকল্প প্রবেশ পথের শীর্ষে বড় করে আরবি হরফে লেখা দেখে ধরেই নিয়েছিলাম এটি একটি মসজিদ। খিলান বা ফটকের নির্মাণে ইসলামি ঐতিহ্য থাকলেও কাছে এসে উঁকি দিয়ে চোখে পড়লো ভেতরে প্রভু যিশু স্বমহিমায় বর্তমান। এবারে উপরে তাকিয়ে সেখানেও একটা ক্রসের দেখা পেলাম। আসলে ভবন নয়, আমাকে বিভ্রান্ত করেছিল আরবি ভাষায় বড় অক্ষরে দেয়ালের লিখন। আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যাই আরবি নেহায়েতই আর দশটা ভাষার মতোই একটি ভাষা। আরব বিশ্বের অনেক দেশেই মুসলমানদের পাশাপাশি খ্রিস্টান ইহুদিসহ অমুসলিমদের ভাষা আরবি। কায়রোর বইপত্রের দোকানে এবং ফুটপাতে মূল আরবিতে লেখা ফিচারের সঙ্গে হলিউড-বলিউড মার্কা স্বল্প বসনা সিনেমার নায়িকাদের ছবি দেখতে অভ্যস্ত নই বলে প্রথমে একটু ধাক্কা খেয়েছিলাম। আমাদের কাছে আরবি মানে পবিত্র গ্রন্থের পবিত্র ভাষা। সেই ভাষায় লেখা হচ্ছে কমার্শিয়াল সিনেমার রগরগে প্রেমের কাহিনি, এমন কি পর্নগ্রাফিক উপন্যাস! কী দুঃসাহস আরব দুনিয়ার এইসব অবিচেক লেখকের!

গির্জার সামনে দাঁড়িয়ে প্রভু যিশুর দর্শন লাভের পরে আমরা সামান্য এগিয়ে আমাদের টাঙ্গাওয়ালার দেখা পেয়ে যাই। টাঙ্গাস্ট্যান্ডের এ পারে গির্জা আর ওপারে একটা মসজিদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। মসজিদ চত্বরের বিশাল এলাকা জুড়ে সেই শান্তির প্রতীক হিসাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে অসংখ্য পায়রা। আগে থেকে জানা থাকলে সরিষা বা ছোলা না হলেও কিছু ধান সঙ্গে করে এনে লুস্করের পায়রাদের খাওয়ানো যেত। আমরা অশ্ব-শকটে চড়ে বসার আগে বিস্ময়ের সঙ্গে দেখতে পেলাম মসজিদের অনতি দূরেই মাথা উচুঁ করে অস্তিত্বের ঘোষণা দিচ্ছে ফারাও যুগের সারি সারি পিলার। লুক্সরের মসজিদ-মন্দির-গির্জা পরস্পরকে চোখ না রাঙিয়ে একই সমতলে এসে এক সঙ্গে ইহজাগতিক পর্যটন ও পরলৌকিক প্রার্থনার ব্যবস্থা করে রেখেছে। 

              লুক্সরের মসজিদ চত্বরে পায়রা

আমরা যখন হোটেলে ফিরলাম তখন বেলা গড়িয়ে গেছে। এ সময় আর বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন বা ইচ্ছা কোনোটাই ছিল না, বরং হোটেলের বিছানা ভীষণভাবে টানছিল। ইজিপ্ট এয়ারের ফ্লাইট রাত সাড়ে আটটার দিকে। অভ্যন্তরীণ বিমানে ঘণ্টা খানেক আগে চেক-ইন করলেই চলে। হোটেলে আগে থেকেই লেট-চেক আউটের ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম, অবশ্যই বিনামূল্যে নয় যথাবিহিত মূল্য পরিশোধ করে। অতএব ঘণ্টা দুয়েক ঘুমিয়ে সন্ধ্যা ছটায় বেরোলেই চলবে। যথা সময়ে ঘুমিয়ে আবার জেগে উঠার পরেও যথেষ্ট সময় হাতে রেখেই রওনা দিলাম বিমান বন্দরের উদ্দেশে। ছোট্ট কিন্তু ছিমছাম এয়ারপোর্ট লুক্সরে চেক-ইন কাউন্টারে লাগেজ জমা দিয়ে অপেক্ষায় বসে থাকার সময় মনে মনে হিসাব করে দেখলাম লুক্সর আমার পঞ্চাশতম বিমান বন্দর। আসা যাওয়া পথে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ বিভিন্ন দেশে ছোট বড় আরও যে ঊনপঞ্চাশটি এয়ারপোর্টে পা রেখেছি, সেগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে ঢাকা আমার দেখা নিকৃষ্টতম এয়ারপোর্ট। কেন নিকৃষ্ট সে ব্যাখ্যায় না গেলেও বলা যায় এতো অব্যবস্থাপনা, এতো অনিশ্চয়তা, এতো অবন্ধু সুলভ এবং এতোটা অপরিকল্পিত বিমান বন্দর সম্ভবত পৃথিবীর আর কোথাও নেই।   

ইজিপ্ট এয়ারের বিমান সঠিক সময়ে লুক্সর ছেড়ে উড়ে যাবার সময় নিচে তাকিয়ে চোখে পড়ে আলোকোজ্জ্বল লুক্সর। সোয়া ঘণ্টার এই যাত্রাপথে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছুই ঘটে না। রিফ্রেশমেন্টের ঘোষণা দিয়ে বিমানবালারা যথারীতি ৩৩০ মিলিলিটারের একটা পানির বোতল ধরিয়ে দেয়। অন্ধকারের পথ পাড়ি দিয়ে আলো আঁধারিতে ভরা কায়রো এসে নামলাম রাত দশটার দিকে। এমনিতেই ছোট বিমান বোর্ডিং ব্রিজে নিয়ে লাগানো যায় না, তাছাড়া কায়রো বিমান বন্দরে যথেষ্ট সংখ্যক বোর্ডিং ব্রিজ আছে বলেও মনে হয় না। ফলে অনেক দূরে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরে বাসে করে পৌঁছে দেওয়া হবে টার্মিনালে। 

                    লুক্সর বিমানবন্দর

বিমানের দরজকায় সিঁড়ি লাগাবার সঙ্গে সঙ্গেই হুড়মুড় করে পাঁচ সাতজন যাত্রী সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে পড়লেন। ঠিক এই কজন ব্যস্তবাগিশ যাত্রীর পেছনেই আমরা তিনজন। আমি দরজার কাছে পৌঁছাতেই বিমানের একজন স্টুয়ার্ড সজোরে দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে কাঁধ ঝাঁকুনি দিয়ে একটা মুখভঙ্গি করলেন। আমি জিজ্ঞাসা না করেই পারলাম না, ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড?’ প্রবীণ স্টুয়ার্ড হেসে বললেন, ‘উই আর গোয়িং ব্যাক টু লুক্সর!’ বুঝলাম মজা করছেন। বললাম, ‘রিয়েলি? উই উইল হ্যাভ অ্যানাদার ফ্রি ট্রিপ টু কায়রো?’ এবারে তিনি আসল কারণ বললেন। সিঁড়িটা ঠিকমতো লাগানো হয়নি, তাড়াহুড়ো করে নামতে গেলে এখান থেকে পড়ে হাত পা ভাঙা বিচিত্র নয়। অতএব একটু অপেক্ষা করতে হবে। খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। একটু পরে নতুন করে সিঁড়ি লাগানো হলে ধীরে সুস্থে নেমে দেখলাম আমাদের আগে দৌড়ে নেমে আসা পাবলিকেরা তখনো বাসের দরজা খোলার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।  টার্মিনাল পর্যন্ত পৌঁছবার জন্যে এয়ারপোর্টের ভেতরে দীর্ঘ পথ বাসে চেপে পাড়ি দিতে হলো। প্রথম দিন কায়রো নেমে যেমনটা দেখেছিলাম, আজও দেখলাম বাংলাদেশ বিমানের একটি বোয়িং রানওয়ের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।

রানা ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললাম, ‘বিমানের তো এখন কায়রোতে ফ্লাইট নেই, এই এয়ারক্রাফট এখানে দাঁড়িয়ে আছে কেন?’  রানা ভাই জানালেন এটি ২০১৪ সালে বারশ কোটি টাকা গচ্চা দিয়ে কেনা দুটি বোয়িং-এর একটি। সিভিল অ্যাভিয়েশন সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশের সূত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে দেখা গেছে বারশ কোটি টাকা দিয়ে মিশর থেকে দুটি পুরোনো বিমান লিজ নেওয়ার চেয়ে একই টাকায় দুটি নতুন বোয়িং৭৭৭ কেনা সম্ভব। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শেষ পর্যন্ত টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ইজিপ্ট এয়ার একটা বিমান আটকে দিয়েছিল। অসহায় দাঁড়িয়ে থাকা বিমানটি সেই দুটির একটি। 

গ্রাউন্ডেড বিমান থেকে আমরা খানিকটা দূরে চলে এসেছি। কিন্তু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল গরুর মুখে যেমন গোমাই বাধা থাকে তেমনি করে বিশাল পলিয়েস্টার ক্যানভাস দিয়ে বিমানের মুখ বাধা। মুখটা খোলা থাকলে, হয়তো কে কতো কোটি টাকা ঘুষ খেয়েছে বোয়িং নিজেই সে কথা বলতে পারতো! 

চলবে...

আগের পর্বগুলো...

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ

ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

রাত পোহালেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এরইমধ্যে ডিপজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন সাদিয়া মির্জা নামে এক অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ভিডিও প্রমাণসহ এমন অভিযোগ করেন সাদিয়া মির্জা নামক এক প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডিপজলকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। এদিকে সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বর্তমান নির্বাচন কমিশনার খসরু।

এছাড়াও যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা নিপুণ আক্তারের।

এ নিয়ে মিশা-ডিপজল প্যানেলের চিত্রনায়ক আলেকজান্ডার বোকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমরা এমনটি আভাস পেয়েছি নির্বাচনের আগেই একটি পক্ষ নির্বাচন বাঞ্চালের চেষ্টা করবে। তবে আমরা চাইবো সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। এমন অভিযোগ আমরা অন্য প্যানেল থেকেও অনেক পেয়েছি কিন্তু তাতে আমরা গুরুত্ব দেইনি।

তিনি আরও বলেন, ডিপজল ভাই মহৎ মানুষ এমনিতেই দানবীর, সবাইকে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন। এটা নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে বিষয়টি সুখকর হবে না।

তবে এ বিষয় নিয়ে কলি-নিপুণ প্যানেলের কেউ মুখ খোলেননি। কথা বলতে চাননি মিশা-ডিপজল পরিষদের অন্য সদস্যরাও।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন উপলেক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং- জুয়ারোধ, চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন এবং সর্বাধিক ওয়ারেন্ট তামিল লক্ষ্য পূরণ করাসহ ভালো কাজের বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহসান উল্লাহ্। তিনি জেলার ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ নিয়ে জেলার মধ্যে চতুর্থবারের মতো সেরা ওসি নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসাথে ভূঞাপুর থানাও শ্রেষ্ঠ হয়েছে এবং থানার এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৯ জন ক্রেস্ট সম্মাননা পেয়েছেন। তার এই অর্জনে উপজেলার সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক সংগঠনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত মাসের কল্যাণ সভায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় ওসি আহসান উল্লাহ্’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট (পুরস্কার) তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার (বিপিএম) (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। এতে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন থানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয় (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিয়ে, ইভটিজিংরোধ ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারসহ বিশেষ অবদানের জন্য চতুর্থ বার আমাকে শ্রেষ্ঠ ওসি ও ভূঞাপুর থানাকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।

ওসি আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন- ভূঞাপুর থানার কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য এবং উপজেলার সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ভূঞাপুর থানার এমন এক সাফল্যময় গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সকলের। তাছাড়া জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও থানা নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। ভূঞাপুর থানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো কিছু করতে ভূঞাপুর উপজেলাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাপশন: সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্।

দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি

সড়ক দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

দেশে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফরিদপুরে ঈদের পরদিন সড়কে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ঝালকাঠিতে সড়কে প্রাণ ঝরে আরও ১৪ জনের। গত তিন মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে প্রাণ যাচ্ছে ঝরছে ১৬ জনের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৩০টি। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২০ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৭টি, এতে মৃত্যু হয়েছে ৪০৪ জনের আর আহত হয়েছেন ৫১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬৯টি। এতে মারা গেছেন ৫২৩ জন আরও আহত হয়েছেন ৭২২ জন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে হয় ৬২৪টি। এতে আহত হন ৬৮৪ জন। মারা গেছেন ৫৫০ জন। এপ্রিল মাসের ১৬ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি আর মৃত্যু হয়েছে ২৮৪ জনের। গড়ে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যু হচ্ছে ১৬ জনেরও বেশি।

গত ৩ মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যার সংখ্যা ৫৫৪টি, আর এতে মৃত্যু ৫০৪ জনের। আর সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু চট্টগ্রাম বিভাগে।

বিআরটিএ বলছে, গেল বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু দুটোই এবছর প্রথম তিন মাসে বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি: রিজভী
বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়ল, কমল খোলা তেলের
মুস্তাফিজের বদলে ইংল্যান্ড পেসারকে দলে নিল চেন্নাই!
যে কারণে দুবাইয়ে এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যা
গায়েব হয়ে গেল জোভান-মাহির ফেসবুক ফ্যানপেজ!
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট: চীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি হারালেন ২৮ কর্মী
আইপিএল থেকে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল