বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা

আরেফিন জ্বরে কাতর। তিনি থরথর করে কাঁপছেন। তিনি নিজের কপালে হাত দিয়ে দেখেছেন, শরীরে জ্বরের মাত্রা একশ’ তিন চারের কম হবে না। জ্বরটা মাপতে পারলে ভালো হত। কিন্তু তার কোনো উপায় নেই। শেষ রাতের দিকে কাঁপিয়ে জ্বর আসে তার। তখনই তিনি বিছানা থেকে উঠে দুটি প্যারাসিটামল খেয়েছেন। কিন্তু তাতে পুরোপুরি জ্বর সারেনি। তাপমাত্রা কিছুটা কমেছিল। এখন আবার বেড়েছে।

জ্বরের কাঁপুনিতে তার ঘুম ভেঙে যায়। জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা শুরু হয়েছে। মাথাটা মনে হচ্ছে ছিড়ে যাচ্ছে। বিছানা থেকে মাথা তুলতে পারছেন না। মাথায় পানি দিতে পারলে হয়ত জ্বরের মাত্রাটা কমতো। সেজন্য তিনি কয়েকবার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু মাথার যন্ত্রণা এমন বেড়েছে যে, বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। তাছাড়া শরীরের কাঁপুনিও অনেক বেড়েছে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হয় তার।

আরেফিন লেপ গায়ে দিয়ে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। তার মাথায় নানা রকম চিন্তা ঢুকেছে। তিনি মনে মনে ভাবেন, এখন জ্বর মানে করোনা। করোনা হলে আপনজনরাই কাছে আসে না। আর হোটেলের লোকজন তো আসবেই না। হোটেল কক্ষেই মরে পড়ে থাকবো! হায় হায়! এ রকম মৃত্যু খোদা-তায়ালা আমার কপালে লিখল! না না! এ রকম মৃত্যু আমি চাই না!

আরেফিন মাকে ডাকছেন। বাবাকে ডাকছেন। মোহিনীর কথাও বার বার মনে পড়ছে। সবাইকে ছেড়ে তিনি চলে যাবেন! পৃথিবী থেকে শেষ বিদায়ের দিনেও প্রিয়জনরা তার মুখ দেখতে পারবেন না! এটা কিছুতেই মানতে পারেন না আরেফিন। বিছানা থেকে উঠার চেষ্টা করেন আরেফিন। উঠতে গিয়েও উঠতে পারেননি তিনি। তার শরীরে এক রতি বলও নেই। তার কাছে মনে হচ্ছে তিনি শূন্যে ভাসছেন। তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। কিন্তু সেই চিৎকারের শব্দ যেভাবে বের হচ্ছে তা খুবই আজব ধরনের। আর তার শব্দ কক্ষের বাইরে কেউ শুনতেও পাবে না। কাউকে ডাকলে হয়ত আসত। তার ভালোমন্দ খোঁজখবর নিত। জ্বরের কথা জানার পর হয়ত চলে যেত। কিন্তু হোটেলের লোকজনকে তো জানতে হবে, আরেফিন গভীর সংকটে পড়েছেন!

আরেফিনের প্রচণ্ড পানির পিপাসা লেগেছে। তার দুই ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে। গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তটা সে দেখতে পাচ্ছে। তার মানে মানুষের জীবনের সবচেয়ে কঠিন মৃত্যুর সময়টা! আর সেই সময়ই কি আরেফিনের সামনে সমাগত! আরেফিনের কাছে তাই মনে হচ্ছে। মৃত্যু চিন্তা তাকে কাতর করে তুলেছে। তার ধারণা, মৃত্যু আসবে বলেই তাকে করোনায় ধরেছে। মৃত্যুদূতের তো একটা অজুহাত লাগবে! তা না হলে জান-কবজ করবে কি করে? এখন তার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। বাঁচার কোনো আশা নেই।

বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন আরেফিন। তিনি যে একদিক থেকে আরেকদিকে ঘুরবেন তাও পারছেন না। শরীর মোটেই সায় দিচ্ছে না। তার মানে কি আজরাইল তার গায়ের উপর চেপে বসেছে? মাথাটা মনে হচ্ছে কেউ লোহার শিক দিয়ে বেঁধে রেখেছে। মোটেই নাড়াতে পারছে না। এটাই কি তার শেষ মুহূর্ত! সে কি মুখে একটু পানিও দিতে পারবে না! বিছানার পাশের টেবিলে পানির বোতল থাকার কথা। পাশ ফিরে না দেখতে পারলে তো বুঝতে পারবে না! অনেক চেষ্টার পর তিনি তার মাথাটা ডানদিকে ঘুরিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য এদিকে কোনো পানির বোতাল নেই। কথায় বলে, অভাগা যেদিকে তাকায় সাগর শুকিয়ে যায়। আরেফিনের অবস্থা সে রকমই হয়েছে। এক ফোটা পানির জন্য তার কাতর অবস্থা। অথচ পানি মুখে দেওয়ার মতো অবস্থায় তিনি নেই।

এবার আরেফিন অন্যদিকে মাথা ঘোরাবে বলে মনস্থির করেছেন। কিন্তু এখন তার শরীরের যে অবস্থা; তাতে মনে হচ্ছে, তার ইচ্ছায় এখন আর শরীর চলে না। শরীরের ইচ্ছায় তাকে চলতে হয়। শরীর সায় দিলে সে চলে। সায় না দিলে তিনি মরার মতো পড়ে থাকে। এখন তিনি মাথা ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। কতক্ষণে পারবেন তা বুঝতে পারছেন না। গলা লোহার মতো শক্ত হয়ে আছে।

আরেফিন মনে মনে ভাবেন, আজরাইলের কি কোনো মায়াদয়া বলতে কিছু নেই! এতো কষ্ট দেয় মানুষকে! অবশ্য মায়াদয়া থাকলে তো জানকবজই করতে পারত না। তাকে দোষ দিয়ে লাভ কি। সৃষ্টিকর্তা তাকে ওভাবেই তৈরি করেছে। সে শুধু আল্লাহর নির্দেশ পালন করবে। কখন তাতে তুলে নিতে হবে তা নির্ধারিত। তাকে রোধ করার সাধ্য কারো নেই। বিজ্ঞানীরা এতো এতো অস্বাভাবিক এবং বিস্ময়কর জিনিস আবিষ্কার করছে। এক গ্রহ থেকে আরেক গ্রহে যাচ্ছে। অন্য গ্রহে বসাবাসের চিন্তা করছে। অথচ তারা মানুষের মৃত্যু রোধ করতে পারছে না। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি ভাইরাস; যা চোখে দেখা যায় না। সেই ভাইরাসের ভয়ে সারাবিশ্বের মানুষ তটস্থ। সে ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে। সন্দেহ করছে। সামাজিকতা, পারিবারিক আচার-অনুষ্ঠান সব বন্ধ হয়ে গেছে। হোটেল রেস্তোরাঁগুলো খাঁ খাঁ করছে। কোথাও কোনো আড্ডা নেই। গল্প নেই। আলোচনা সমালোচনা নেই। মানুষে মানুষে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ। কী এক আজব সময় পার করছি আমরা!

আরেফিন এক দুঃসহ যন্ত্রণার সময় কাটাচ্ছেন। এ যে মৃত্যু যন্ত্রণার চেয়েও কঠিন। মৃত্যু চিন্তা যখন মাথায় ঢোকে তখন সব মানুষই হয়ত এমন যন্ত্রণাদায়ক সময় পার করে। তার মাথায় নেতিবাচক চিন্তাগুলো ঢুকতে থাকে। সেগুলো তাকে সারাক্ষণ খোঁচাতে থাকে। তার অঙ্গপ্রতঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করে।

আরেফিন অনেক চেষ্টার পর অন্যপাশে ফিরেছেন। তিনি খাটের পাশের ছোট্ট টেবিলে একটি পানির বোতল দেখেছেন। বোতলটা হাতের নাগালের বাইরে। দুইতিন হাত সামনে না আগালে তিনি বোতলটা হাতে পাবেন না। তিনি আস্তে আস্তে সামনের দিকে আগানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার শরীর ব্যথায় টুকরো হয়ে আছে। হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। এক রাতের জ্বরের শরীর এতো দুর্বল হয় কী করে! সে ভাবনাও তার মাথায় ঘুরপাক খায়। তিনি কি সত্যিই মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তটা পার করছেন!

টানা দুদিন মৃত্যুদূতের সঙ্গে যুদ্ধ করেন আরেফিন। তার প্রতিটি মুহূর্ত কাটে আশা আর দূরাশার দোলাচলে; বাঁচা আর মরার সঙ্গে যুদ্ধ করে। সে এক কঠিন যুদ্ধ। এক এক করে জীবনের সব আলো যখন নিভে যায় তখন টানেলের এক টুকরো আলোও তার মনে বাঁচার আশা জাগায়। আরেফিন মনে মনে ভাবেন, পৃথিবীর মায়া যেভাবে আমাকে টানছে তাতে হয়ত মরতে মরতে বেঁচে যাব আমি! ফিরে যাব আমার ভালোবাসার কাছে; আমার প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে। ফিরে যাব মা বাবার কাছে। যারা আমাকে এই সুন্দর পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন। তা না হলে হয়ত দেখাই হত। কিংবা দেখা হত অন্যভাবে। অন্য কোনো পরিবেশে। অন্য কোনো পরিবারে। তাতে পৃথিবীকে উপলব্ধি করার মতো কোনো অনুসঙ্গ খুঁজে পেতাম না। এ যাত্রায় বেঁচে গেলে আমি আমার প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যাব। তারা নিশ্চয়ই অধীর আগ্রহে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমাকে যেতেই হবে। তা নাহলে যে সবার স্বপ্নভঙ্গ হবে। আমার নীরব প্রস্থানের মধ্যদিয়ে সবার স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনাশ হবে তা নিশ্চয়ই প্রকৃতি কিংবা বিধাতা কেউই চাইবেন না। যে পৃথিবীকে আমি এতো ভালোবাসি; সেই পৃথিবী আমাকে এভাবে বিদায় দেবে! না না; তা কিছুতেই হতে পারে না।

আরেফিন ঘোরের মধ্যেই তার মা বাবার সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কাছে ক্ষমা চান। ভুলত্রুটির ক্ষমা। তাদের জন্য কিছু না করতে পারার ক্ষমা। তাদের কারণে অকারণে কষ্ট দেওয়ার ক্ষমা। তার প্রিয়তমা স্ত্রী মোহিনীর কাছেও তিনি ক্ষমা চান। তিনি বলেন, এই জীবনে তো তোমার সঙ্গে আমার সময়টা ভালো গেল না! পরজনমে যেন তোমায় পাই। তুমি কথা দাও। পরজনমে তুমি আমারই থাকবে। আমি ছাড়া তোমাকে এতোবেশি ভালোবাসা কেউ দেবে না; কেউ না। তুমি দেখ। আমি যে কত ভালোবেসেছি তোমাকে; তা তুমি টের পাবে। নিশ্চয়ই টের পাবে। আমার শারীরিক উপস্থিতি হয়ত তখন থাকবে না। কিন্তু তোমার জীবনের পরতে পরতে আমার উপস্থিতি টের পাবে।
আরেফিন হয়ত শেষ নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তেই বললেন, বিদায় পৃথিবী; বিদায়!

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আরএ/

ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ

পেপার রাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট আহমেদ সাদ। ছবি: সংগৃহীত

চিরতরে চলে গেলেন পেপার রাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট আহমেদ সাদ। দীর্ঘদিন ধরে মরণব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন। অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার। মৃত্যুকালে ৫২ বছর বয়স হয়েছিল এ সংগীতশিল্পীর।

গায়কের মৃত্যুর বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার স্কুলজীবনের বন্ধু ও পেপার রাইম ব্যান্ডের সদস্য অনিন্দ্য কবির অভিক। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন সাদ। মাঝে কিছুটা সুস্থও হয়েছিলেন। কিন্তু গত কয়েক মাস আগে তার শরীরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসার।

আবার তিনদিন আগেই হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরইমধ্যে মঙ্গলবার সকালে ফের হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন তাকে।

পেপার রাইম ব্যান্ডের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

গায়ক আহমেদ সাদের দাফন বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) হতে পারে বলে জানিয়েছেন তার বন্ধু অভিক। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে তার পরিবার থেকে।

ব্যান্ড পেপার রাইম এবং এর শিল্পী আহমেদ সাদ নব্বই দশকে মাত্র একটি অ্যালবাম প্রকাশের মাধ্যমে শ্রোতাহৃদয়ে জায়গা করে নেন। ব্যান্ডটির হার্ডরক, মেলোরক, সফট রক ঘরণার গানগুলোর কথা ও সংগীত ভীষণ গ্রহণ করে নেয় শ্রোতারা। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘অন্ধকার ঘরে’, ‘আকাশের কী রং’, ‘এলোমেলো’ গানগুলো শ্রোতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।

পেপা রাইম ব্যান্ডের সদস্যদের বিভিন্ন ব্যস্ততার জন্য ওই বছরই কার্যক্রম থমকে যায় ব্যান্ডটির। তবে ২০০৯ সালে সেটি সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ সময় ব্যান্ডে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেন মিরাজ ও লনি। ড্রামার অভিক ২০১১ সালে দেশে ফিরে ব্যান্ডে যোগ দেন। তারপর অনুশীলন করতে থাকেন তারা। নতুন অ্যালবাম প্রকাশেরও কথা চলে। কিন্তু ব্যান্ডটির ভোকালিস্ট সাদের অসুস্থতা সেটি আর হয়ে উঠে না। ফলে ২০১২ সালে পথচলা অনেকটা অনানুষ্ঠানিকভাবে থমকে যায়।

২০১৭ সালে সবশেষ ‘আবার’ নামের একটি মিক্সড অ্যালবাম প্রকাশ হয় পেপার রাইমের। আশিক মিউজিকের ব্যানারে মিক্সড অ্যালবামটির গানটির শিরোনাম ছিল ‘দাঁড়াও বন্ধু’।

গাইবান্ধায় ‘শ্রুতিকটু’ ৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ছবি: সংগৃহীত

শ্রুতিকটু হওয়ায় গাইবান্ধার ৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৩ এপ্রিল প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ২৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে গাইবান্ধার দুটি উপজেলার নয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলার ‘গলাকাটি’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘আনন্দ বাজার’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ‘পাগলার চর’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিবর্তন হয়ে ‘ভোরের পাখি’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ‘নাপিতের হাট’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিবর্তন হয়ে ‘থানাপাড়া আদর্শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ‘বাজে ফুলছড়ি’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিবর্তন হয়ে ‘চর ফুলছড়ি’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ‘কঞ্চিপাড়া ১নং’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘কঞ্চিপাড়া আদর্শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এ ছাড়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার ‘পঁচারকুড়া’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘গিদারী কৃষ্ণচূড়া’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ‘বাজে চিথুলিয়া’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিবর্তন হয়ে ‘পশ্চিম চিথুলিয়া’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ‘ধুতিচোরা’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিবর্তন হয়ে ‘রহমাননগর’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ‘পূর্ব ধুতিচোরা’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘গিদারী আনন্দনগর’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা বোরহানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজাদী হাবিবা সুলতানা বলেন, এমন কিছু বিদ্যালয়ের নাম আছে যেসব নাম উচ্চারণ করতে মুখে বাধে। প্রতিনিয়ত শিশুরা ওইসব নাম নিয়ে ঠাট্টার শিকার হন। সারা দেশের শ্রুতিকটু নামের বিদ্যালয়গুলো চিহ্নিত করে নামগুলো পরিবর্তন জরুরি। ওই সব নেতিবাচক নাম পরিবর্তন করে অর্থপূর্ণ নাম রাখা হলে নরম মনের কোমলমতি শিশুরা তাদের বিদ্যালয়ের নাম নিয়ে লজ্জা না পেয়ে গর্ব করতে পারবে।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, ফুলছড়ি উপজেলার পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পাল্টানো হয়েছে। পাল্টে যাওয়া নামগুলো ছিল শ্রবণকটু। যা শিশুদের মনে খারাপ প্রভাব ফেলত। নাম পাল্টে যাওয়া বিদ্যালয়গুলোর সাইনবোর্ডে নাম পাল্টে দেয়া হবে। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে সকল পেপারসে নাম পরিবর্তনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, অর্থহীন নামগুলো থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকেনা। যার কারণে খুঁজে খুঁজে উজ্জ্বল-সুন্দর এবং অর্থপূর্ণ নাম রাখা হয় সন্তানদের। মানুষ ইতিহাসে যে সব নাম উজ্জ্বল সে সব নাম রাখার চেষ্টা করেন। একই রকম বিদ্যালয়গুলোর নামের বেলাতেও। তবে যেকোনো কারণে হোক সারা দেশের কিছু বিদ্যালয়ের ‘শ্রুতিকটু’ নাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ওইসব নাম পরিবর্তনের উদ্যোগটি একটি ভাল দিক। আমি মনে করি পরিবর্তন করা এসব অর্থপূর্ণ, শ্রুতিমধুর এবং ইতিহাস সমৃদ্ধ নাম কোমলমতি শিশুদের মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একই সঙ্গে শিশুরা গর্বের সঙ্গে তারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম উচ্চারণ করবে।

গাইবান্ধায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৬ টি। এসব বিদ্যালয়ের বিপরীতে শিক্ষকের সংখ্যা ৮ হাজার ২১৩ জন এবং এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৪৭৩ জন।

হিটস্ট্রোকে প্রাণ হারালেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশতিয়াক

ইশতিয়াক ওয়ারেছ তূর্য। ছবি: সংগৃহীত

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক ওয়ারেছ তূর্য মারা গেছেন। তীব্র তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন তার স্বজনরা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক আসিফ বিন আলী গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক ওয়ারেছ তূর্য বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় থাকতেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন বলে তার পরিবার ও স্বজনরা ধারণা করছেন। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।

ইশতিয়াক ওয়ারেছ তূর্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ২০২তম ব্যাচের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে। তূর্যের বাবা ওয়াহিদুজ্জামান মিনু আফজাল হোসেন মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন তূর্য।

এদিকে, মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় তূর্যের মৃত্যুর পর বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে তার মরদেহ নিজ জেলা সিরাজগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাদ জোহর সিরাজগঞ্জ আলিয়া মাদরাসা মাঠে তার জানাজা হবে।

তীব্র তাপপ্রবাহে গত ২১ এপ্রিল থেকে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির অনলাইন ক্লাসই চলমান থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তূর্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী এসময়ে বাসায় বসে অনলাইনে ক্লাস করছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

ক্যান্সারে না ফেরার দেশে পেপার রাইম ব্যান্ডের সাদ
গাইবান্ধায় ‘শ্রুতিকটু’ ৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন
হিটস্ট্রোকে প্রাণ হারালেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশতিয়াক
মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন থেকে না সরলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেললাইনে বাস, পুলিশের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচল ট্রেনের যাত্রীরা
ইনশাল্লাহ স্পিন বিভাগে পার্থক্য গড়ব : বাংলাদেশের নতুন কোচ
ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
এফডিসিতে সাংবাদিক-শিল্পীদের মারামারি, কী ঘটেছিল?
তীব্র গরমের মধ্যে ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়াল লোডশেডিং
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপির আরও এক নেতা বহিষ্কার
যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না আজ
ছয় দিনের সফরে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর
পুলিশ সদস্যদের পদমর্যাদাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন
গোবিন্দগঞ্জে ১৪ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা
রাজধানীতে ছাদ থেকে লাফিয়ে ট্রান্সজেন্ডার নারীর আত্মহত্যা
ভাড়া বাড়াইনি, শুধু ভর্তুকি প্রত্যাহার করেছি: রেলমন্ত্রী
নবাবগঞ্জে জাল দলিলে জমি দখলের চেষ্টা, সাবেক ও বতর্মান চেয়ারম্যান জেলহাজতে
ঢাকা ছাড়লেন কাতারের আমির, গেলেন নেপাল
নওগাঁর মান্দায় বিদ্যুতের আগুনে পুড়ল ৮ বসতবাড়ি