জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর অত্যন্ত সফল: গুইন লুইস
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস বলেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিউইয়র্ক সফর ছিল “অত্যন্ত সফল”। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় এসব তথ্য জানান।
গুইন লুইস বলেন, নিউইয়র্ক সফরে ড. ইউনূস একাধিক বৈশ্বিক নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘ আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। এ সফরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ছয় নেতার অংশগ্রহণ জাতীয় ঐক্যের এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাতে উভয়পক্ষই টেকসই সহযোগিতা, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা একমত হন যে, জাতীয় নির্বাচন ও উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে প্রবেশের প্রাক্কালে বাংলাদেশ এখন একটি নতুন অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে।
বিদায়ী বক্তব্যে গুইন লুইস বলেন, “গত সাড়ে তিন বছর বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি সম্মানিত। এখানকার মানুষের স্থিতিস্থাপকতা, সৃজনশীলতা ও উদারতা আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে।”
অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “সামাজিক উদ্ভাবন ও ন্যায়বিচারের প্রতি তার আজীবন নিষ্ঠা বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ধারনাকে তিনি এক নতুন মাত্রা দিয়েছেন।”
গুইন লুইসের দায়িত্বকালে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামোর আওতায় যে সব কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ছিল- অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সমতাভিত্তিক মানবকল্যাণ, পরিবেশগত সহনশীলতা, অংশগ্রহণমূলক শাসন এবং লিঙ্গসমতা।
তিনি জানান, ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনারের কার্যালয় চালু করাও তার দায়িত্বকালীন একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এতে মানবাধিকার কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হয়েছে এবং অধিকারভিত্তিক উন্নয়নে গভীরতা এসেছে।
লুইস বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণে প্রস্তুতি, শ্রম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সংস্কারমূলক উদ্যোগ, এবং জলবায়ু কার্যক্রম এসব খাতেই জাতিসংঘ বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি ও পরিবেশগত টেকসইতায়ও অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, “সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা”, “শিক্ষা রূপান্তর” এবং “খাদ্য ব্যবস্থা সম্মেলনের” মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
শেষে তিনি বলেন, “জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছে অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তিতে। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—কেউ যেন পিছিয়ে না পড়ে। আমাদের সব প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে মানবাধিকার এবং লিঙ্গ সমতা।”