বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ | ১২ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

মহা বিপর্যয়ের মুখে জলবায়ু

জমিসংক্রান্ত মোকদ্দমা বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের মতো বিশ্বের আর কোথাও এতটা ব্যাপকভাবে নজরে পড়ে না। মূলত এর জন্য দায়ী হচ্ছে ভূমি সংকট। এ দেশের ভূমি সংকট দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, বসত-ঘর নির্মাণ, শিল্পকারখানা গড়ে ওঠা, নদীভাঙন ইত্যাদি। এ ছাড়াও হালে যোগ হয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া। যেটি শুধু জলবায়ু সংকটের প্রভাবেই ঘটছে।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ খুব বেশি দায়ী নয়। অথচ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই দেশ। উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উন্নয়নের বলি হচ্ছে বাংলাদেশ তথা এ দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তারা ব্যাপকহারে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলছে পাল্লা দিয়ে। তাতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে গেছে যেমন, তেমনি আবার নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সিএফসি গ্যাসের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। এক কথায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর খামখেয়ালিপনার কারণে সিএফসি গ্যাস, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের নির্গমন বেড়ে গেছে। যে গ্যাস নিঃসরণের কারণে পৃথিবীর ফিল্টার নামে খ্যাত ওজোনস্তর ক্রমশ পাতলা হয়ে ভূপৃষ্ঠ তপ্ত হচ্ছে। যার ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে বছর বছর।

গ্রীষ্মে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে যেমন, তেমনি শীতে তাপমাত্রা মাইনাসের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে কোথাও কোথাও। শীতপ্রধান দেশগুলোর কথা ভিন্ন। তবে শীতপ্রধান দেশ মাইনাসের কারণে নয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার প্রভাবে হিমবাহের চাঁই গলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন, তেমনি সমুদ্রের জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে জলস্ফীতি হয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে ২০১৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার ৯৬৫ বর্গ কিলোমিটারের হিমবাহর চাঁইয়ে চিড় ধরতে দেখেছেন গবেষকরা।

২০২০ সালের এক রিপোর্টে জানা যায়, এক বছরে প্রায় ৫৩২ বিলিয়ন টন বরফ গলেছে গ্রিনল্যান্ড থেকে। ২০১৯ সালে গ্রিনল্যান্ডে তিন কিলোমিটারের বরফের চাঁই ভেঙে পড়েছে। তাতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ শতাংশ জল বৃদ্ধি পেয়েছিল। বরফের চাঁই গলতে শুরু করায় সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে মোড় নিয়েছে। সমুদ্রে প্রতি সেকেন্ডে ৬টি অলিম্পিক সুইমিং পুলের সমপরিমাণ জল পড়ছে। তাতে দেখা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টন জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাঁই গলার পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করে ব্রিটেনের ‘ইউনিভার্সিটি অব লিনকন’ এক গবেষণায় জানিয়েছে, ‘গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলার কারণেই ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বের সমুদ্র স্তরের উচ্চতা ১০-১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাবে।’

অপরদিকে নেচার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা গেছে, আর্কটিক মহাসাগরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বরফ যুগেও দেখা গিয়েছিল। উল্লেখ্য, সমুদ্র জলের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিগত ৪০-১০০ বছরের মধ্যে দেখা গেছে গ্রিনল্যান্ডের তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। আরেকটি দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতেই উত্তর মেরুর পূর্বাঞ্চলের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে, সেখানকার তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে যে হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাবে। আর সেটি হলেই পৃথিবী মহাদুর্যোগের মুখোমুখি পড়বে।

জর্জিয়া ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এভাবে বরফগলা অব্যাহত থাকলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে দ্রুত। ফলে বিশ্বের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হবে ব্যাপকভাবে। সেই তালিকার মধ্যে রয়েছে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের নামও। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং শৈত্যপ্রবাহের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ধরনের দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে। সেটি হতে পারে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, বন্যা, সাইক্লোন, টর্নেডো, ভূমিকম্প ও নদী ভাঙনসহ নানান দুর্যোগ। তার মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে পৃথিবীকে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, লবণাক্ততার কারণে। যার প্রমাণ আমরা বার কয়েক পেয়েছিও।

জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ধারণা থাকা সত্ত্বেও উন্নত দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু কাগজ-কলমের মধ্যেই তাদের উদ্যোগ সীমাবদ্ধ রয়েছে। উন্নত দেশের কর্মকাণ্ডে সমগ্র পৃথিবী আজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সূত্রমতে জানা যায়, বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব প্রান্তসীমা ৩৫০ পিপিএম ছাড়িয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক ৩৯৮.৫৮ পিপিএম ঘনমাত্রায় পৌঁছে গেছে, যা পৃথিবীর অস্তিত্বের প্রতি মারাত্মক হুমকিই বলা যায়।

জাতিসংঘ কর্তৃক জলবায়ুবিষয়ক এবং বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ বন্ধে ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওডি জেনেরোতে কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। সেখানে গঠিত হয় ‘জলবায়ুবিষয়ক জাতিসংঘ কনভেনশন’ (ইউএনএফসিসিসি)। ওই কনভেশনে, ১৫০ দেশকে এই নতুন বিধান মেনে চলতে রাজি করানোর প্রচেষ্টা চালানো হয়। কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ প্রশমনে বাধ্যতামূলক করতে প্রটোকল ঘোষণা করা হয়। মূলত ওই সময় থেকেই সদস্য দেশগুলো প্রতি বছর মিলিত হওয়ার জন্য সম্মত হয় এবং প্রতি বছর মিলিত হচ্ছেও। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছু হচ্ছে না। গাছের গোড়া কেটে জল ঢালার মতো দরিদ্র দেশকে কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে শুধু। অথচ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশের কারণে মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হচ্ছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ইতোমধ্যেই লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের জীবন ও জীবিকায় মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। যার কারণে বাধ্য হয়ে বাস্তুহারা হতে হচ্ছে বিশাল জনগোষ্ঠীকে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ লাখ বাংলাদেশি বাস্তুহারা হয়েছেন, আর তাদের অধিকাংশই এখন শহরমুখী হচ্ছেন। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের অভিমত আর মাত্র ৪৫ সেন্টিমিটার সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেই উপকূলীয় অঞ্চলের ১০ শতাংশ ভূমি জলে তলিয়ে যাবে। তবে এই অভিমত অপ্রতিষ্ঠিত হিসেবে ধরে নিচ্ছেন অন্য গবেষকদল। কারণ ইতোমধ্যে জানা গেছে, ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন জায়গাগুলোতে ভারসাম্য বজায় থাকবে সমুদ্রে উচ্চমাত্রার পলির আগমনে। ইতোমধ্যে তার কিছুটা প্রমাণও মিলেছে। যেমন- হাতিয়া অঞ্চলসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল আয়তনের চর জেগেছেও।

অন্যদিকে ২০০৫ সালে ‘আইপিসিসি’ জানিয়েছে যে, ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ২১ শতাংশ লবণাক্ত জলে সয়লাব হয়ে যাবে। নানা ধরনের তর্ক-বিতর্কের ফলে সর্বশেষ যা আমরা অবগত হয়েছি তা হচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ মহাদুর্যোগের মুখোমুখি হবে, যা অবধারিত সত্যকথা। আর এ মহাদুর্যোগের জন্য দায়ী হচ্ছে শুধু শিল্পোন্নত দেশের খামখেয়ালিপনা। শিল্পোন্নত দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস অধিকহারে নিঃসরণ করে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়িয়ে হিমবাহর চাঁই গলতে ত্বরান্বিত করছে। ফলে বাংলদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আরও কিছু দেশ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। সেই বিপর্যয় থেকে আদৌ উত্তরণ মিলবে কি না তাতে সন্দিহান আমরা। যদি বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয় তবে আমরা এই মহাদুর্যোগ থেকে উত্তরণ পাব হয়ত।

লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলামিস্ট।

এসএন

Header Ad
Header Ad

হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি

দিলজিৎ দোসাঞ্জ ও হানিয়া আমির। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরের সঙ্গে এক সিনেমায় কাজ করায় চরম বিতর্কের মুখে পড়েছেন জনপ্রিয় পাঞ্জাবি গায়ক ও অভিনেতা দিলজিৎ দোসাঞ্জ। তাকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দিয়ে অল ইন্ডিয়া সিনে ওয়ার্কাস অ্যাসোসিয়েশন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঁচ দফা নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ওই চিঠিতে দিলজিতের বিরুদ্ধে যে দাবিগুলো তোলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে— দেশজুড়ে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি বন্ধ, ইউটিউব ও স্পটিফাইসহ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম থেকে গান ও চলচ্চিত্র সরানো, লাইভ কনসার্টে নিষেধাজ্ঞা, সরকারি কোনো ইভেন্টে অংশ নিতে না দেওয়া এবং তার সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘সর্দারজি ৩’-এর অর্থায়নের উৎস তদন্ত করা।

এই বিতর্কের সূত্রপাত ‘সর্দারজি ৩’ সিনেমার ট্রেলার প্রকাশের পর, যেখানে দিলজিতের বিপরীতে দেখা গেছে হানিয়া আমিরকে। এর পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে একাধিক ট্রেন্ড তৈরি হয় এবং বিতর্ক চরমে ওঠে। এমনকি দিলজিতের পাসপোর্ট বাতিলের দাবিও উঠেছে।

উল্লেখ্য, দিলজিৎ এর আগে মাদকসংক্রান্ত ইঙ্গিতপূর্ণ গানের কারণে সমালোচিত হলেও, ভক্তদের মাঝে তার জনপ্রিয়তা অটুট ছিল। তবে এবার সরাসরি পাকিস্তানি শিল্পীর সঙ্গে কাজ করায় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি।

তবে দিলজিৎ নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, একজন শিল্পী হিসেবে তিনি সৃষ্টিশীল স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং সহশিল্পী হানিয়া আমিরের পাশে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ইমতিয়াজ আলির পরিচালনায় ‘অমর সিং চামকিলা’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান দিলজিৎ। একই বছরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্ববৃহৎ পাঞ্জাবি কনসার্ট আয়োজন এবং মেট গালায় উপস্থিতির মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। তবে এবার ভিন্ন এক বিতর্কে তার নাম উঠে এসেছে শিরোনামে।

Header Ad
Header Ad

আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী

বক্তব্য রাখছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন- শেখ হাসিনার পতন ন্যায়ের কাছে অন্যায়ের পতন। শেখ হাসিনার পতনে রাজনৈতিক দলের শ্রম ও ঘাম আছে। শেখ হাসিনার পতনে যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন তাদের ভূমিকা আছে। আল্লাহর রহমতে দেশের জনগণের দ্বারা শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও গুরুতর পতন হবে। অন্য কেউ যদি করেন তারও হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমে স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন- বঙ্গবন্ধুকে কেউ ভাঙতে ও মুছতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধকে ভাঙতে ও মুছতে পারবে না। স্বাধীনতাকেও ভাঙতে ও মুছতে পারবে না। তাই স্বাধীনতা অক্ষয় ও অমর। বঙ্গবন্ধুও তেমন অক্ষয় ও অমর।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি কিন্তু আওয়ামী লীগদের দাওয়াত করতে বলেছিলাম। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হতে পারে। মানুষের অন্তরে তো বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ না। মাওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ না। নিষিদ্ধ আইনের ধারা হতে পারে। মানুষের অন্তরের ধারা না।

তিনি আরও বলেন- স্বাধীনতা আমাদের, স্বাধীনতা বাংলাদেশের। স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ-বিএনপির না। অধ্যাপক ইউনুস ও এনসিপিদের না। স্বাধীনতা এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা। সে জন্য এই স্বাধীনতার প্রতি যারাই হস্তক্ষেপ করবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অন্যকে শিকার করতে হবে। বিরোধীকে সম্মান দিতে হবে। চোর ও ডাকাতকে ইচ্ছে হলেই মেরে ফেললাম এটা চলবে না। তাকেও আইনের আশ্রয় দিতে হবে।

এ সময় সখীপুর উপজেলা শাখার কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি আব্দুস সবুর খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন- সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, বিশেষ অতিথি ছিলেন- কৃষক শ্রমিক জনতালীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মোহাম্মদ হাবীব, কালিহাতী উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনসুর আজাদ সিদ্দিকী, সখীপুর উপজেলা শাখার কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন সজীব প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ বলেছেন, ‘আমরা কোনো জোট গঠন করছি না।’ সম্প্রতি চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় একটি জোট গঠন হয়েছে বলে খবরের প্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে বাংলাদেশ চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গঠন করছে কি না— জানতে চাওয়া হয় উপদেষ্টার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোনো জোট গঠন করছি না। মূলত, উদ্যোগটি চীনের এবং এটি একেবারেই অফিসিয়াল পর্যায়ে, রাজনৈতিক কোনো পর্যায়ে না।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ওখানে একটা প্রদর্শনী হচ্ছিল, সেখানে সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্রসচিব বসে আলাপ-আলোচনা করেছি। আলাপ-আলোচনা পুরোপুরি ছিল কানেক্টিভিটি, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি; এগুলো নিয়ে। আপনারা জোট গঠনের যে কথা বলছেন, এ ধরনের কোনো কিছু ছিল না। এটা নিতান্তই একটি প্র্যাকটিক্যাল সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির ব্যাপার। আমরা মনে হয় না, এটা নিয়ে আর কোনো কিছু হতে দেওয়া উচিত।

কুনমিংয়ের ওই বৈঠকে তিন পক্ষের সহযোগিতা বাস্তবায়নে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লিউজি) গঠনের কথা এসেছে চীন ও পাকিস্তানের দিক থেকে। বৈঠকটি নিয়ে তিন দেশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও মিল ছিল না। তাহলে বাংলাদেশ জোট গঠনের কথা ডিনাই করছে কি না—

এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, কোনোটিই ডিনাই করার প্রয়োজন নেই। আমরা আমাদের যেটুকু উল্লেখ করেছি, এটাতে বোঝা যায় এটাতে স্ট্রাকচারাল বড়সড় কোনো ব্যাপার ছিল না। প্রত্যেকটা দেশ নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখেছে। আমরাও তাই করেছি। যদি ভবিষ্যতে কোনো অগ্রগতি হয় তখন আপনারা জানতে পারবেন।

ত্রিপক্ষীয় যে জোট গঠনের কথা আসছে এটা তৃতীয় কোনো দেশকে লক্ষ্য করে করা হচ্ছে কি না— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই নয়। এটা আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি। টার্গেট করার বিষয় এখানে নেই। এরকম আরও কোনো দেশ যদি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করতে চায় আমি তো কোনো সমস্যা দেখি না। সেটাও আমি করতে রাজি।

তিনি বলেন, ধরুন ভারত যদি করতে চায় কানেক্টিভিটি নিয়ে, নেপাল বা অন্য কোনো দেশকে নিয়ে, আমরা রাজি আছি। এটা হলে আমি কালকেই করতে রাজি। যেহেতু চীন ও পাকিস্তান ছিল যার কারণে হয়তো আপনারা মনে করছেন হঠাৎ করে কেন হলো। এটাকে খুব বেশি স্পেকুলেট করার সুযোগ নেই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার
৪৩ দিন পর নগর ভবনে এলেন ডিএসসিসি প্রশাসক, পেলেন অভ্যর্থনা
ভেঙেই গেল জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা কেটি পেরির সংসার!
সব সরকারি ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
জেলার সব প্রতিষ্ঠানে ডোপ টেস্টের ঘোষণা দিলেন ডিসি
রংপুরে চিকিৎসা অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতালকে ২ লাখ জরিমানা
টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন দায়ে ৫ পর্যটকের কারাদণ্ড
৮৩ লাখ মাদকাসক্ত দেশে, গাঁজা সেবনকারী সবচেয়ে বেশি