
গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে: চরমোনাই পীর
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৫১ পিএম | আপডেট: ৩০ মে ২০২৩, ১০:২৯ পিএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, জাতীয় স্বার্থবিরোধী পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে সর্বব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব যখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করছে, বেকারত্ব যখন তারুণ্যকে হতাশায় নিমজ্জিত করছে, অর্থনীতি, রাজনীতি যখন অনৈতিকতার চরম খেসারত দিচ্ছে তখন দেশের পাঠ্যপুস্তকে প্রায়োগিক বিজ্ঞান, কর্মমুখী শিক্ষা ও নৈতিকতার প্রাবল্য থাকার কথা ছিল। কিন্তু এই পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি, বিজ্ঞানের নামে ইসলামবিদ্বেষী দর্শন ও নৈতিকতাবিরোধী বিষয়বস্তু সংযোজন করা হয়েছে।
চরমোনাই পীর বলেন, পাঠ্যপুস্তকের প্রধান প্রবণতা হওয়ার কথা দেশীয় ঐতিহ্য, বোধ-বিশ্বাস, সেখানে নতুন পাঠ্যপুস্তকের প্রধান প্রবণতাই হলো দেশের হাজার বছরের বোধ বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও ইসলামবিরোধী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার একটি মাধ্যম হতে পারত নতুন পাঠ্যক্রম, অথচ এই পাঠ্যক্রমেই উল্টো বিবাদের বীজ রোপণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর বিজয়নগরের চুং ওয়া রেস্টুরেন্টে ২০২৩-এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উসকানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্বের অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার টার্ম, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, প্লেজারিজম এবং ধর্ম ও জাতিসত্তাবিরোধী বিষয়বস্তু সংযাজনের মতো নিন্দনীয় ঘটনায় করণীয় সম্পর্কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘গোলটেবিল বৈঠকে’ সভাপতির বক্তব্যে রেজাউল করীম এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, বাঙালি মুসলিমের ঐতিহ্যের অংশ পর্দাকে হেয় করাসহ দেশ ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী বহুরৈখিক অপচেষ্টা করা হয়েছে।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থবিরোধী এই পাঠ্যপুস্তক অবশ্যই বাতিল করতে হবে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের সকল ধারা ও মতের সর্বজনকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলবে, ইনশাআল্লাহ। যার পরিণতিতে জাতীয় স্বার্থবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসররা সমূলে উৎখাত হবে।
এসময় গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, বর্তমান সরকার বিতর্কিত, নিম্নমানের সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে। শিক্ষা কমিশন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য আলেম ও শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে নতুন শিক্ষা কমিশন গঠনের দাবি জানান তিনি।
দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, এবি পার্টির আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব সোলায়মান চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোসেন ফরাজী, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মাওলানা মো. ইউসুফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ, নেজামে ইসলাম পার্টির সহ-সভাপতি মুফতি জিয়াউল হক মজুমদার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মো. তৈয়্যব হোসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. একেএম ইউনুস, মহাখালী কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম মারূফ, জমিয়তের উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. হানিফ খান, দার্শনিক ও কবি মূসা আল হাফিজ, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি