মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

জাতির পিতার জন্মদিনে তারুণ্যের ভাবনা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তারুণ্যের আঁতুড়ঘর। দেশ ও দেশের জনগণের জন্য ন্যায় সংগত সংগ্রামে ভরপুর তাঁর জীবনের ঘটনা প্রবাহ। কখনোই তিনি আত্মস্বার্থের কথা ভাবেননি। ভেবেছেন নির্যাতিত, শোষিত ও বঞ্চিতের কথা আর ভেবেছেন বাংলার স্বাধীনতার কথা তারুণ্য শক্তির ধারক-বাহক হয়ে।

বঙ্গবন্ধু এক অবিসংবাদিত আদর্শের নাম। স্বার্থহীনভাবে অপরের জন্য কাজ করার এক অনুপ্রেরণার নাম। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কারিগর, উদার ব্যক্তিত্ব, জনমানুষের নেতা, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি, সফল রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রনায়ক। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম দিয়ে শুরুর পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত মোট ৪৬৮২ দিন কারাগারেই কাটিয়েছেন তাঁর ২০২৩৬ দিনের জীবনে।

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির চেতনার এক অনির্বাণ শিখা। তিনি তরুণদের নাড়ির স্পন্দন, আবেগ ও আকাঙ্ক্ষা সঠিকভাবে বুঝতে পারতেন। তাই তরুণ সহযোগীদের নিয়ে ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে গঠন করেছিলেন ‘গণতান্ত্রিক যুবলীগ’। আর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠন করেন ‘ছাত্রলীগ’। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, দেশের মানুষকে না গড়ে দেশের মানুষকে মবিলাইজ না করে পরিষ্কার আদর্শ নিয়ে চলা যায় না। তাই তরুণদের চিন্তা-চেতনায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন মুক্তিবার্তা। তাঁর লেখা বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ আজকের তরুণদের কাছেও মুক্তির বার্তা ও প্রতিবাদের ভাষা। তাঁর আপোষহীন সংগ্রামী জীবন, অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে সদা প্রতিবাদী উচ্চারণ; আজও তরুণদের সঞ্জীবনী শক্তি। তারুণ্যের প্রতি বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস ছিল অবিচল। যার অন্তরঙ্গ প্রমাণ এই বই তিনটি। তিনি তরুণদের বলছেন, "যেখানে অন্যায় অবিচার সেখানে প্রতিবাদ করো; মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ক্ষমতার ও স্বার্থের ঘর বড় করে তাদের প্রতিরোধ করো। তিনি বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে ঘৃণা করতেন। মানুষে মানুষে বিভাজনকে ঘৃণা করতেন। তার দর্শন ছিল এক বহুত্ববাদী সংস্কৃতি ও ধর্মনিরপেক্ষতায় আদর্শ মানবতার উদ্দীপনা। আজকের তরুণদের জন্য বিশ্বমানব হিসেবে গড়ে ওঠার এক অনন্য অবিসংবাদিত আদর্শ।

ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে ১৯৭২ সালের ৭ জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্ম নিরপেক্ষ মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমান মুসলমানের ধর্ম পালন করবে। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে। খ্রিস্টান তার ধর্ম পালন করবে। বৌদ্ধও তার নিজের ধর্ম পালন করবে। এ মাটিতে ধর্মহীনতা নাই, ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। এখানে ধর্মের নামে ব্যবসা চলবে না। ধর্মের নামে মানুষকে লুট করে খাওয়া চলবে না। ধর্মের নামে রাজনীতি করে রাজাকার, আলবদর পয়দা করা বাংলার বুকে আর চলবে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’ যা আজকের তরুণ সমাজের অসম্প্রদায়িক ভাতৃত্ববোধের এক অমোঘ আদর্শ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের এক অসাধারণ মন্ত্র।

বঙ্গবন্ধু অবিসংবাদিত নেতা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের আগে থেকেই তিনি তরুণদের কাছে প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন। তারুণ্যের স্বপ্ন ও প্রত্যাশাকে তিনি নিজের ভেতর ধারণ করতেন। তাই যখন জেলে বন্দী থাকতেন তখনও তাঁর স্বক্রিয়তা তিনি তরুণদের ভেতর সঞ্চারিত করতে পারতেন। তরুণ রাজনৈতিক হিসেবে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার অনন্য সাধারণ ক্ষমতা ছিল তাঁর। আর এর প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে; যেখানে তরুণদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে সংঘটিত সকল ন্যায় সংগত আন্দোলন ও প্রতিটি ছাত্র আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অনন্য উচ্চতার। যার ফলে পাকিস্তানি সেনাশাসকের ভিত্তি কেঁপে ওঠে ছিল। আর এর পেছনে ছিল বাংলার তারুণ্যের জাগরণ। এই জাগরণের কারিগর ছিলেন বঙ্গবন্ধু। এই জাগরণ ছিল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং স্বাধীনতাকামী।

বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মেলনে বাঙালির মুক্তির সনদ ‘ছয় দফা’ পেশ করেন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। যা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করেন ২৩ মার্চ । এরপর তিনি তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগান। সারাদেশব্যাপী জনসভা, জনসংযোগ শুরু করেন। তিনি যেখানে যেতেন সেখানেই ভিড় জমে যেত তাঁকে এক নজর দেখার জন্য ও তাঁর কথা শোনার জন্য। তরুণরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতো ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে। তাঁর ঐ সময়কার প্রতিটি সমাবেশে একটি বিশেষ কোট ব্যবহার করতেন যেটা ‘মুজিবকোট’ নামে পরিচিতি পায়। সেই কোটের মাধ্যমে ছয় দফার লালন ও প্রচার করে বাঙালি জনসাধারণকে মুক্তির পথ দেখান। সেই কোটে ছিল ছয় দফার ছয়টি বোতাম, দেশীয় কাপড়ে তৈরি এবং রং ছিল কালো। বাংলা জনসাধারণ বিশেষ করে বাংলার তরুণ সমাজ সেদিন জেগেছিল তাঁর উদ্দীপনায়। যার প্রমাণ ছাত্রদের ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান।

বঙ্গবন্ধুর সামগ্রিক জীবন রাজনৈতিক আদর্শে জড়ানো থাকলেও তিনি অরাজনৈতিক বঙ্গবন্ধু। তাই তো বঙ্গবন্ধু ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানে কারাগার থেকে মুক্তি পেলে ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’-এর সভাপতি ও ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমেদ রেসকোর্স তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবর্ধনা সভায় তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। সেদিন তরুণরা বুঝে গিয়েছিল শেখ মুজিবই বাংলার ত্রাণকর্তা। বাংলার স্বাধীনতার নায়ক।

বঙ্গবন্ধু ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমির নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে তারুণ্যের শক্তিতে বলিয়ান বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এই সবই ছিল বঙ্গবন্ধুর গণজাগরণের ফল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরের তালবাহানা করে। বঙ্গবন্ধু ৩ মার্চ ১৯৭১ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। এই আন্দোলনে সর্বশ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত এই আন্দোলন চলে। এরপর শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। ‘অপারেশন বিগ বার্ড’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক গ্রেফতারের পূর্বে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

বঙ্গবন্ধু এমন একজন নেতা যিনি তরুণ সমাজকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তরুণদের সঙ্গী করেছেন। তাঁর আদর্শে উজ্জীবিত তরুণরা দূরদর্শীতায় দীক্ষিত ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে ‘জাতির পিতা ও বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক’ ঘোষণা করে পল্টন ময়দানের সমাবেশে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যখন ঢাকার রেসকোর্স তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দেন, তখন দেশের সব মানুষের কাছে এই বার্তা তরুণরাই পৌঁছে দেয় সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে। বাংলার প্রতিটি ঘর হয়ে উঠল এক একটি দুর্গ। তরুণদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অন্তরের সম্পর্ক থাকায় অসহযোগ আন্দোলন ও স্বাধীনতার বার্তা সহজেই পৌঁছে যায় বাংলার প্রতিটি ঘরে। সচেতন হয় বাংলার মানুষ এবং সর্বতোভাবে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধে তরুণরা বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করেছিল স্বাধীনতার জন্য। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজও তরুণ সমাজকে নতুন করে ভাবতে শেখায়।

বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর কর্মময় জীবন ও আদর্শ তরুণদের এগিয়ে চলার পাথেয়। বঙ্গবন্ধুই বাংলার তরুণদের সঞ্জীবনী শক্তি। বঙ্গবন্ধু কোন নির্দিষ্ট দলের আদর্শ নন, তিনি বাঙালির আদর্শ। তিনি নেতা, বাঙালি জাতির পিতা, স্বাধীনতার ঘোষক ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বিশ্বসভায় রাজনীতির কবি ও বিশ্ববন্ধু–কিংবদন্তি মহানায়ক। তাঁর সাথে কারো তুলনা চলে না। তাঁর তুলনা শুধুই তিনি। বঙ্গবন্ধু দল মত নির্বিশেষে সকলের। তিনি নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার নন। তিনি স্বতন্ত্র। প্রজন্ম জানুক বঙ্গবন্ধুই তারুণ্য। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ। তাঁর জন্মবার্ষিকীতে প্রতিটি তরুণের স্লোগান হোক–জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

এমএসবি নাজনীন লাকী
সাহিত্য ও সমাজকর্মী, ময়মনসিংহ

এসএ/

Header Ad
Header Ad

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়, নিয়েছেন শপথ

সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এখন আর শুধু একজন বাংলাদেশি নাগরিক নন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস সিটিজেনশিপ সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক নাগরিকত্ব শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং পরে নাগরিকত্ব সনদপত্র গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টের জন্য আবেদনও করেছেন।

জানা গেছে, ওই অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ২২ জন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি ছিলেন। এদের একজন ছিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়, যিনি শপথ নেওয়ার সময় একজন আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। অনুষ্ঠানে ‘বি’ অক্ষরে বাংলাদেশের নাম ডাকার পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে জয় শপথ নেন।

তবে এর আগে, ২৪ এপ্রিল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছিলেন, “আমার কোনো বিদেশি পাসপোর্ট নেই। যুক্তরাষ্ট্রে আমার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি আছে। গর্বের সঙ্গে আমার সবুজ বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়েই আমি যাতায়াত করি।”

তাঁর ওই পোস্ট এবং সাম্প্রতিক নাগরিকত্ব গ্রহণের মধ্যে বৈপরীত্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে।

Header Ad
Header Ad

জাতির উদ্দেশে মোদির ২২ মিনিটের ভাষণ: কী বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত না দিলে, জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়—এই কঠোর বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুদ্ধবিরতির পর শনিবার (২২ এপ্রিল) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ২২ মিনিটের ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ভাষণে মোদি স্পষ্টভাবে বলেন, পাকিস্তানের সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস না হলে সন্ত্রাসবিরোধী ইস্যুতেও কোনো আলোচনা হবে না। তিনি ‘সন্ত্রাসবাদে’ সমর্থন দেওয়ার জন্য পাক সেনাবাহিনী এবং সরকারের কঠোর সমালোচনা করে সতর্ক করেন—এ ধারা একদিন পাকিস্তানকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

মোদি বলেন, “সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না, সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না, রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, “যদি কখনো পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা কথা বলি, তাহলে সেটা হবে শুধু সন্ত্রাস ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর বিষয়েই।”

এদিকে, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির সঙ্গে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে বলে দাবি করে ভারত। এর মধ্যে রয়েছে—পহেলগামের হামলার পর ভারতের স্থগিত করা সিন্ধু পানি চুক্তি পুনরায় সক্রিয় করার দাবি। তবে ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে, ৬৫ বছর পুরনো ওই পানিবণ্টন চুক্তিতে ভারতের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কোনো শর্তে সম্মত হয়নি ভারত।

ভারত বহুদিন ধরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্তে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। পাকিস্তানের মাটি থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য জঙ্গিদের অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় বা অর্থায়ন করে না।

উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল জম্মু কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে তার মাটিতে “অপারেশন সিন্দুর” চালায় ভারত। পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তানও, ফলে দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ভারত ও পাকিস্তান শিগগিরই আলোচনায় বসতে পারে। সোমবার দুই দেশের সামরিক মহাপরিচালকদের মধ্যে টেলিফোনে কথাও হয়।

Header Ad
Header Ad

রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ঢাবিতে প্রথম ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স’ ২২ জুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে কথা বলেন ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স’র অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ক প্রথমবারের মতো ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২২ জুন। “গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে রাষ্ট্র সংস্কার” শীর্ষক এ কনফারেন্সে দেশি-বিদেশি শিক্ষক ও গবেষকদের কাছ থেকে গবেষণা প্রবন্ধ আহ্বান করা হয়েছে।

সোমবার (১২ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কনফারেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টায় শুরু হবে এই কনফারেন্স। যৌথভাবে আয়োজন করছে ‘শ্যাডো রিফর্ম কমিশনস’ এবং ‘পলিটিক্যাল অ্যান্ড পলিসি সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন’।

২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে ১১টি ছায়া সংস্কার কমিশন। দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এতে যুক্ত থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুপারিশমালা তৈরি করেছেন। কনফারেন্সে এসব কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবেন, তাদের জন্য এই রিপোর্টগুলো হতে পারে একটি দিকনির্দেশনা। আমাদের প্রতিবেদনগুলো বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে রিভিউ করা হয়েছে এবং জনমত নেওয়া হয়েছে। এখন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।”

ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. নাছিমা খাতুন বলেন, “এই আয়োজন বিভাগকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।” অন্যদিকে অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “ছায়া সংস্কার কমিশনের এই উদ্যোগ অ্যাকাডেমিক প্রচেষ্টা, যেখানে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব নেই।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মেজবা-উল-আযম সওদাগর বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্পৃক্ততা জরুরি। তরুণ প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়েই এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”

কনফারেন্স বাস্তবায়নের জন্য ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি জাতীয় কনফারেন্স কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে রয়েছেন– অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, অধ্যাপক ড. নাছিমা খাতুন, অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. স ম আলী রেজা, অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান, অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, মেজবা-উল-আযম সওদাগর, সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান সোহাগ, সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ান হোসাইন এবং সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া আফরিন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়, নিয়েছেন শপথ
জাতির উদ্দেশে মোদির ২২ মিনিটের ভাষণ: কী বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী?
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ঢাবিতে প্রথম ‘পলিটিক্যাল সায়েন্স কনফারেন্স’ ২২ জুন
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত: নির্বাচন কমিশন
রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ব্রাজিলের হেড কোচ হচ্ছেন কার্লো আনচেলত্তি
৮৪ বছর পর নাৎসি ইতিহাসের গোপন দলিল মিলল আর্জেন্টিনায়
যমজ সন্তানের মা হয়েছেন অ্যাম্বার হার্ড, বাবার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা
শাহবাগ-যমুনার সামনে বসে যা তা বলা যাবে না: এ্যানি চৌধুরী
পুলিশের হাতে থাকবে না মারণাস্ত্র, র‍্যাব পুনর্গঠনে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন
চুয়াডাঙ্গায় কিশোর রিশাদকে কুপিয়ে হত্যা, ঘাতক পলাতক
কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ
‘যুদ্ধবিরতির অনুরোধ ভারতই করেছে, পাকিস্তান করেনি’
টাঙ্গাইলে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ দলের নতুন পেস বোলিং কোচ শন টেইট
চুয়াডাঙ্গায় কমেছে তাপমাত্রা, স্বস্তিতে জনজীবন
বুর্জ খলিফায় বেনজীরে স্ত্রীর ফ্ল্যাট ক্রোক, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ
আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি
ফেসবুক-ইউটিউবে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বললেই গ্রেপ্তার: আসিফ মাহমুদ
আ.লীগ নিষিদ্ধের উল্লাসে শাহবাগে নেতাদের নাম দিয়ে গরু-ছাগল জবাই
সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে মোদির জরুরি বৈঠক, উপস্থিত শীর্ষ কর্মকর্তারা