শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

 অত বড় প্রেমিক আমি নই

স্যার বলেন তো, ঈশ্বর প্রথমে পুরুষ সৃস্টি করেছেন , পরে নারী সৃস্টি করেছেন কেন?
ছাত্রীর প্রশ্নের জবাবে বললাম,ঈশ্বরের ইচ্ছা মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। পড়ায় মন দাও।
গ্রাহ্য না করেই বিদ্যাবতী বলল, স্যার ধাঁধাঁটা অনেক সহজ ছিল।
বিরক্ত হয়ে বললাম, থামবে ? বুত্তের এক্সট্রা আবার ভুল করেছ?
বিদ্যাবতী : স্যার যারা ম্যাথসে ভাল হয় তারা লজিকে কাঁচা হয়। আমার লজিক ভাল , তাই ম্যাথসে কাঁচা। আমার ধাঁধাঁর উত্তর দেন।
কপট রাগ দেখিয়ে বললাম, ঊঁহ ! থামলে ভাল লাগে।
বিদ্যাবতী : স্যার এইটা কিন্তু টিভি নাটকের সংলাপ। মানে হচ্ছে, আপনি ম্যাথসে ভাল তাই আপনার লজিক খারাপ। কারন এই সিরিয়ালটা এখনো শেষ হয়নি। আপনি পুরনো সময়ের নাটকের সংলাপ বলতে পারতেন। তাহলে , আমি মনে করতাম , এটা আপনার নিজের , কারো কাছ থেকে ধার করেননি।
এবার ধমকের স্বরে বললাম, একটা প্রাসঙ্গিক কথা ধার করা হলে ক্ষতি কি?
বিদ্যাবতী : লাভ- ক্ষতির বিষয় না স্যার। এইটা হচ্ছে স্মার্টনেস। অন্যের কথা কিন্তু কেউ ধরতে পারল না।
এভাবে চলতে থাকলে আজ আর পড়বেই না, উদ্দেশ্য ধরে ফেললাম। তাই একটু আপোষের সুরেই বললাম, ঠিক আছে ধাঁধাঁর উত্তর বল। এরপর আর একটা কথাও নয়। অংকে মন দাও।
বিদ্যাবতী : ওকে গুরুর আদেশ শিরোধার্য। উত্তরটা হচ্ছে, রাফ কপির পরেই ফ্রেশ কপি করা হয়। অর্থাৎ ছেলেরা রাফ কপি আর মেয়েরা ফ্রেশ কপি। ঠিক না স্যার ?
ক্লাস টেন পড়–য়া ছাত্রী। আর দুমাস বাদে টেস্ট পরীক্ষা। বিচিত্র সব বিষয নিয়ে ওর আগ্রহ। আমি ওকে ডাকি বিদ্যবতী বলে।
বিদ্যাবতীকে কত বছর পড়িয়েছি এটা হিষাব কষাটা কঠিন। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পরও ছুটিতে বাড়ী যাওয়া মানেই ওকে পড়ানো। ভার্সিটিতে পড়াশুনার চাপ বাড়তে থাকল। বিদ্যাবতীকে পড়ানোটাও বন্ধ হয়ে গেল। এরই মধ্যে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি হল বিদ্যবর্তী। যোগাযোগ চিঠি পত্রে। দুই ঈদ ছাড়া দেখাও হয় না।
মেডিক্যালে চান্স পাওয়ার পর , বিদ্যবতীকে অভিনন্দন জানিয়ে কার্ড পাঠালাম। লিখলাম, সোনালী জীবনকে সামনে রেখে সোনালী পণ্যে ভরা স্বর্ণ - শকট বেয়ে আরোহণ কর সাফল্যের স্বর্ণশিখরে - হও রাজে্শ্বরী। উত্তরে লিখেছে, আমি তো স্বর্ণ মোড়ানো রাজে্শ্বরী। আপনার স্থান কোথায় ? কবি গুরু থেকে উদ্ধৃতি টেনে লিখলাম, আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।

বিদ্যাবতী খুব সুন্দর চিঠি লেখে। একটি চিঠিও নীল খামের নয়। ওর চিঠির ভাষা কখনো খুবই হেয়ালীপুর্ণ , আবার কখনো শিশুর সারল্যে মাখামাখি। ন্যাকামো নাই। তবে জ্যাঠামো - পাগলামো - দুস্টুমি ভরা।
একবার চিঠিতে লিখল , স্যার প্রেমের চিঠি কেমন হতে পারে ? আপনি অনেক সাহিত্য পড়েন। তবে আমি চাইব , নিজের কথা লিখবেন। কাউকে উদ্ধৃত করবেন না। আর কোন তাত্বিক কথা লিখবেন না। বিদ্যাবতীর এই চিঠির ভাষা আমার দ্ব্যর্থবোধক বলে মনে হল। তবে কি ? আশা দোলাও দিয়ে গেল মনে। বেয়াড়া ভাবনাটাকে জোর করে তাড়িয়ে দিলাম।
আমি সাধারন পরিবারের সাধারন ছেলে। পড়াশুনায় গড়পড়তা। চোখে পড়ার মত তেমন কিছুই নাই। সেভাবে লিখতে না পারলেও , প্রচুর সাহিত্য পড়ি। পড়াশুনা শেষ করে একটা ছোট খাটো চাকরী পেলেই আমি বর্তে যাই। বিত্ত - বিদ্যা, সামাজিক পরিচয় সবদিক থেকেই বিদ্যবতী অনেক এগিয়ে। আবেগ বশে রাখি , মন শান্ত রাখি।
এসব সাঁত পাঁচ ভেবে কয়েকদিন পর চিঠির উত্তর লিখলাম -
প্রেমের চিঠি বলতে আমি বুঝি সরল আবেগের প্রকাশ। এভাবে লেখা যেতে পারে,
আমি শাজাহান তুমি মমতাজ
স্বপ্নের তাজমহল গড়ি এসো আজ।
জবাবে বিদ্যবতী লিখেছে, আপনি মেল ভার্সনে লিখেছেন।
এইটার ফিমেল ভার্সন হতে পারে,
‘আমি মমতাজ তুমি শাজাহান
তোমার অনেক প্রেমিকা - আমার স্বপ্ন ভেঙে খান খান’।
একনিষ্ঠ প্রেমের অনুসারী ছেলেরা হতে পারে না, খুব সহজ করেই বুঝিয়ে দিয়েছে বিদ্যাবতী। একবার এক চিঠিতে লিখল , স্যার মেডিকেলে না পড়ে আমি ভার্সিটিতে পড়লে খুব ভাল হত ? ধরেন আপনি ভার্সিটিতে আপনার প্রেমিকাকে নিয়ে হাঁটছেন। আপনার সামনেই আপনার প্রেমিকাকে বলতাম, আপনার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। কিন্তু ভার্সিটিতে আসার পর আমাকে ভুলে গেছেন। কাঁদো কাঁদো হয়ে আপনার প্রেমিকাকে বলতাম, আপনি মায়াবিনী আপনি আমার স্বপ্ন আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন !

এভাবেই চলছে। তবে চিঠির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। আমার মাস্টার্স শেষের পথে। বিদ্যাবতীর চিঠি। লিখেছে, একটা ভাল সংবাদ আছে। ইয়ার ফাইনালে খুব ভাল ফল করেছি। এতটা ভাল করব ভাবিনি। এটা আপনার জন্য ভাল সংবাদ। আমার জন্য ভাল সংবাদটা আপনি দেবেন। মাস্টার্সের পর কি করবেন ? ঠিক করেছেন কিছ ু? আমি কিন্তু আপনাকে খুব বেশি সময় দিতে পারব না। বাবা -মা’র একমাত্র সন্তান আমি। ইন্টার্নি করা পর্যন্ত বড় জোর আটকে রাখতে পারব। আর একটা কথা , আপনি তো খুব ভালভাবেই জানেন , আমি অনেক সাহসী। নেক্সট চিঠিতে আপনাকে ‘ তুমি’ সম্বোধন করব। হা হাহাহা ..। আপনার ভাষাতেই বলি , আমি কিন্তু রাজেশ্বরী। সো যথা আজ্ঞা বলে , যা বলছি মেনে ‘নাও’।

মাস্টার্স শেষ হয়েছে দু বছর। চাকরী যোগাড় করতে পারিনি। চিঠির ভাষায় আবেগের জায়গাগুলো দখল করে নিচ্ছে বাস্তবতা। এভাবে চলল আরো কিছুদিন। বিদ্যাবতীর ইন্টার্নি শেষের পথে। চিঠি পেলাম। যেন সতর্কবার্তা। লিখেছে, ইন্টার্নি শেষ হতে আর অল্প কিছুদিন বাকি। পাত্র দেখা চলছে। যা করার খুব দ্রæত কর।’
ততদিনে বুঝে গেছি, সবার জন্য সবকিছু নয়।
চিঠি লিখলাম।
চিঠিতে সিতা বিসর্জনের আধুনিক কাহিনি ফাঁদলাম --
আমরা ঘুমাই। ঘুমালে সাভাবিক কারনেই স্বপ্ন দেখি। একটা বিষয় খেয়াল করেছি । স্বপ্নে কারো সঙ্গে শারিরীক স্পর্শ ঘটলেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। তোমার - আমার সম্পর্কটা স্বপ্নের মত। আর স্বপ্নে ছোঁয়াছুঁয়ি মানেই তো অনিবার্য স্বপ্নভঙ্গ। তোমার - আমার একসঙ্গে থাকা মানেই তো স্বপ্ন ভঙ্গ। বরঞ্চ আমরা স্বপ্নটাকেই বাঁচিয়ে রাখি। দুরত্বই হোক আমাদেও বড় প্রেমের স্মারক।’

উত্তরে বিদ্যাবতী লিখেছে, শোন, আলগা বড় প্রেমিক সাজবা না। আমরা খুবই সাধারন। বড় প্রেমের নাগাল আমরা কখনোই পাবো না। তুমিই তো একবার বলেছিলে, এক শিল্পীর কথা। যিনি তার প্রেমিকাকে বলেছিলেন, তোমার চেয়ে সুন্দর পৃখিবীতে আর কিছুই হতে পারে না। একবার ওই শিল্পী গেলেন সমুদ্রে। জোছনায় সমুদ্র স্নান করছে। অপার্থিব সৌন্দর্যে মুগ্ধ হযে গেলেন শিল্পী। অস্ফুটে বলে উঠলেন, এত সুন্দর। তারপরই তার মনে পড়ল তার প্রেমিকার কথা। তার মনে হল , প্রেমিকার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ঝাপিয়ে পড়লেন সমুদ্রে। প্রেম বেঁচে থাকল। সলিল সমাধি হলেন শিল্পী। এরা অন্য ঘরানার। এদের বোধ অনেক বিশাল। যেটা তুমি - আমি নই। আর আমার সঙ্গে অকারণ ভাব ধরবা না। তোমাকে কিছু করতে হবে না। যা করার আমি করছি।

বাসর রাত। বিদ্যাবতীকে জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কিভাবে সম্ভব করলে! জবাবে বলল, আমি বাবা- মার একমাত্র সস্তান। দুদিনের হাঙ্গার স্টাইক। দরজা আটকে ঘরবন্দী থাকলাম। কি আর করবেন আম্মু –- আব্বু।
বললাম, তোমার এই পদ্ধতি যদি কাজ না করত ? বিদ্যবতী জানাল, বলতাম, আমার শরীরে তোমার বেবি। আমি আর্ত - চীৎকার করে উঠলাম মানে! নির্লিপ্ত বিদ্যাবতীর উত্তর, ভাঙা স্বপ্নে ঘুম ভাঙবে। আবার জেগে ওঠার পর সেই স্বপ্ন জোড়া লাগবে। এই ভাঙা - গড়ার খেলা চলতেই থাকবে জীবনভর। তবে অত বড় প্রেমিক কিন্তু তুমি নও।


ডিএসএস/ 

Header Ad

জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল।

১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ রান তুলতেই লিটনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। এরপর ধীর গতির ব্যাট করেন নাজমুল শান্ত। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৪ বলে ২১ রান করেন। এরপর তানজিদ তামিম ও তাওহীদ হৃদয় ঝড়ো ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত তানজিদ তামিম ৪৭ বলে ৬৭ রান করেন ও তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে করেন ৩৩ রান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মাহেদী নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে (০)। এরপর শরিফুল ইসলাম এক ওভারে তিন বাউন্ডারি সহ হজম করেন ১৩ রান। কিন্তু তাসকিন আহমেদ এসে রানের চাকায় লাগাম টানেন। যার ফল তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাইফউদ্দিন।

ওভারের শেষ বলে তিনি জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত ব্যাটার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৪) বিদায় করেন। উইকেট পতনের মিছিল এরপর চলতেই থাকে। ষষ্ঠ ওভারে ফের বল হাতে নেন মাহেদী। এবার প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হন একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্রায়ান বেনেট (১৬)।

পরের বলে এসেই ডাক মারেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। মাহেদীর লেন্থ বলে প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাজা। ১ উইকেটে ৩৬ রান করা জিম্বাবুয়ে আর কোনো রান যোগ করার আগেই হারায় আরও ৩ উইকেট।

এখানেই শেষ নয়। তাসকিন পরের ওভারে তুলে নেন জোড়া উইকেট। ওভারের প্রথম দুই বলেই তিনি বিদায় করেন শন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্লকে। দু’জনেই বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর অষ্টম ওভারে লুক জঙওয়ে (২) বিদায় নেন সাইফউদ্দিনের বলে।

৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে সঙ্গে নিয়ে ক্লিভে মাদানদে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন। শুরুতে তারা ধীরস্থিরভাবেই খেলছিলেন। কিন্তু শেষদিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তারা।

শরিফুলের করা ১৭তম ওভারে ১১ ও রিশাদ হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন মাসাকাদজা ও মাদানদে। এরপর ১৮তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকেও ছক্কা হাঁকান মাসাকাদজা। এক বল পরই অবশ্য তার সঙ্গী মাদানদেকে বোল্ড করেন তাসকিন।

তার ইয়র্কার মাদানদের দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। অষ্টম উইকেটে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড ৬৫ বলে ৭৫ রানের জুটি ভেঙে যায় এতে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪৩ রান করে আউট হন মাদানদে। তার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের রান হয়নি খুব একটা। শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা।

বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। সমান ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান সাইফউদ্দিনও।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক

ছবি: সংগৃহীত

গত ছয়মাস ধরে দখলদার ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩৮ হাজারের বেশি ফলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন লাখ লাখ। বাস্তহারা করেছে ২০ লাখের বেশি মানুষকে। এই হত্যার বিরুদ্ধে সারাবিশ্বে চলছে প্রতিবাদ। তুরস্কে লাগাতার বিক্ষোভ মুখে ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ ও বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার তুরস্ক জানিয়ে দিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ রাখছে।

বলা হয়েছে, গাজায় যতদিন পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন মানবিক ত্রাণ দিতে না দেয়া হচ্ছে, ততদিন বাণিজ্য বন্ধ রাখবে তুরস্ক।

তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ''ইসরায়েলের সঙ্গে সব পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ থাকছে।''

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় ৭৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

এর আগে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান সমঝোতা ভেঙে ইসরায়েলের সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছেন।

সামাজিক মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ''এভাবেই একজন ডিক্টেটর কাজ করেন। তুরস্কের মানুষ, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ তিনি দেখলেন না। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিও অবহেলা করলেন।''

তিনি বলেছেন, ''ইসরায়েল বিকল্প খুঁজে নেবে। অন্য দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাড়াবে।''

তুরস্ক গতমাসে জানিয়েছিল, তারা ইসরায়েল থেকে বাণিজ্যে কাটছাঁট করছে। সেসময় তুরস্কের অভিযোগ ছিল, তাদের বিমান গাজায় মানবিক ত্রাণ দিতে গিয়েছিল। ইসরায়েল তা করতে দেয়নি। তুরস্কে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছে তুরস্ক। এর্দোয়ান তো ইসরায়েলকে 'সন্ত্রাসী রাষ্ট্র' পর্যন্ত বলেছেন।

অন্যদিকে এক বিবৃতিতে তুরস্ক জানিয়েছে, এই বাণিজ্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত সব ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তুরস্ক কঠোরভাবে ও সন্দেহাতীতভাবেই নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে যতদিন পর্যন্ত ইসরাইল সরকার গাজায় বাধাহীন ও পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবাহের অনুমোদন না দেয়।’

১৯৪৯ সালে প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় তুরস্ক। তবে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশ দু’টির মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

২০১০ সালে গাজায় তুরস্ক মালিকানাধীন জাহাজ ইসরাইলের সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন করার সময় ইসরাইলি কমান্ডোদের সাথে সংঘর্ষে ১০ জন ফিলিস্তিনপন্থী তুর্কি কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় তুরস্ক কূটনৈতিক সম্পর্কও ছিন্ন করেছিল।

পরে ২০১৬ সালে আবার দেশ দু’টির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন হয়। কিন্তু এর দু’বছরের মাথায় উভয় দেশ একে অন্যের শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে গাজা সীমান্তে ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায়।

এরদোগান গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর ইসরাইলের তীব্র সমালোচনা করে আসছেন।

গত জানুয়ারিতে তিনি বলেন, ‘হামাসের হামলার জবাবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যে সামরিক অভিযান চালিয়েছেন তা হিটলার যা করেছিল তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।’

জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এরদোগান, যিনি কুর্দিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সঙ্ঘটিত করেন এবং যিনি তার শাসনের বিরোধিতা করায় সাংবাদিক বন্দীর ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড করেন, তিনিই হলেন শেষ ব্যক্তি যিনি আমাদের নৈতিকতা শেখাচ্ছেন।’

গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়ছে। জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে গত মাসে ১১ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় জর্জরিত ছিল এবং এ মাসের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস বলেছে, গাজা উপকূলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী যে বন্দর নির্মাণ করেছে ত্রাণ প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সেটি কয়েক দিনের মধ্যেই উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

ভাসমান ওই বন্দরে নৌযান ও লোকজনের কাজের ছবিও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার কাছেই নৌবাহিনীর জাহাজ ছিল।

যদিও জাতিসঙ্ঘ বলেন, সামুদ্রিক করিডোর কখনো স্থলপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারে না। আর সড়কপথ হলো একমাত্র উপায় যেখানে একসাথে অনেক পরিমাণ ত্রাণ নেয়া যায়।

এর আগে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বারবার অনুরোধের প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহে গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ইসরাইল ইরেয ক্রসিং আবার খুলে দিয়েছে।

তবে জর্ডান বলেছে, তাদের কিছু ত্রানবাহী লরি ওই ক্রসিং পার হওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘের রিপোর্ট বলছে, গাজার মানবিক বিপর্যয় একটি মানব সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা ভলকার তুর্ক বলেন, এটা এখন ‘বিশ্বাসযোগ্য’ যে ইসরাইল ক্ষুধাকে গাজা যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

ইসরাইল ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটি গাজায় যাদের প্রয়োজন তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছে জাতিসঙ্ঘের বিরুদ্ধে।

৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় ইসরাইল যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তাতে ৩৪ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে, হামাসের হামলায় ইসরাইলে এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছিল এবং তারা আরো ২৫৩ জনকে পণবন্দী করেছিল।

মধ্যস্থতাকারীরা এখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে সবশেষ আসা প্রস্তাবের বিষয়ে হামাসের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

খবর অনুযায়ী, এবারের প্রস্তাবে ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে এবং এর বিনিময়ে ইসরাইলি বন্দী ও ফিলিস্তিনি কিছু বন্দী মুক্তি পাবে। সূত্র : বিবিসি

বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি

ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছন, বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না, যেকোনো মূল্যে খাড়িয়া সম্প্রদায়ের মাতৃ (পার্সী)-ভাষাকে রক্ষা করতে হবে। এর জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের গেস্ট হাউসে খাড়িয়া জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সাক্ষাতের সময় এ কথা জানান তিনি।

এ সময় খারিয়া জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সাক্ষাতে শ্রীমঙ্গল বর্মা ছড়ার খাড়িয়া সম্প্রদায়ের দুই বোন ভেরোনিকা কেরকেটা ও খ্রিস্টিনা কেরকেটা তাদের ভাষায় কথা বলেন এবং তাদের সম্প্রদায়ের জহরলাল ইন্দোয়া নামের একজন তা বাংলায় বর্ণনা করেন।

সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আল-মাহমুদ ফায়জুল কবির, জেলা পুলিশ সুপার মো. মঞ্জুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আবু তালেব ও শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষণ রায়।

প্রধান বিচারপতি জানান, ভাষা বৈচিত্রের দেশ আমাদের বাংলাদেশ। তিনি গণমাধ্যমের সূত্রে জেনেছেন, খাড়িয়া সম্প্রদায়ের দুজন লোকই বেঁচে আছেন। যারা তাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে পারেন। তারা মারা গেলে বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে এই ভাষা। এই বিষয়টি তাকে ভাবান্বিত করেছে। তাই নিজ উদ্যোগেই এই দুজন মহিলার সঙ্গে তিনি দেখা করতে এসেছেন। তিনি আস্বস্ত হয়েছেন শুধু দুজন নয়, এই ভাষায় কথা বলতে পারেন আরও কয়েকজন আছেন এবং খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করছেন। তবে এই ভাষাটি রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণের ওপর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে উদ্যোগ নিতে বলেন।

এর আগে তিনি বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত চায়ের জাত ও তৈরি চায়ের গুণগত মান যাচাই করেন। এ সময় তিনি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চায়ের গুণগত মান ধরে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান করেন।

সর্বশেষ সংবাদ

জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক
বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস
ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
কাল থেকে বাড়তি ভাড়ায় চড়তে হবে ট্রেনে, কোন রুটে ভাড়া কত
সবসময় আস্থা রাখায় ধোনিকে ধন্যবাদ জানালেন মোস্তাফিজ
সুষ্ঠু ভোটের আয়োজনে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রয়েছে : ইসি রাশেদা
টাঙ্গাইলে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ
গণতন্ত্রের জন্য লড়াইকারীদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে : রিজভী
সরকারকে যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারা নিজেরাই চাপে আছে : ওবায়দুল কাদের
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ২ হাজার
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন পুলিশ কর্মকর্তা
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার
যেসব অভিযোগে ১১১০ দিন কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক
শনিবার যেসব জেলার স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা বন্ধ থাকবে
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি!
নওগাঁয় আ.লীগ নেতার প্রচারে যাওয়া ছাত্রদলের ২ নেতাকে শোকজ
বলিউডের ছবিতে গাইলেন আসিফ আকবর
যাত্রীবাহী বাস উল্টে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ২০