গভীর রাতে ৭৫০ জনকে পুশ-ইনের চেষ্টা, বিএসএফকে রুখে দিল বিজিবি-জনতা

ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল সীমান্তে গভীর রাতে বিপুলসংখ্যক মানুষকে বাংলাদেশে ঢোকানোর (পুশ-ইন) চেষ্টা চালায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং স্থানীয় জনগণের দৃঢ় অবস্থানের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় তারা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দিবাগত রাত ২টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বিএসএফের। তবে আগাম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দ্রুত সীমান্তে অবস্থান নেন এবং সম্ভাব্য পুশ-ইন প্রতিরোধে প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে মসজিদে মাইকিং ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত প্রচার চালানো হয়। এতে সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, নলঘরিয়া, মেরাসানী ও নোয়াবাদী গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা রাতেই সীমান্তে জড়ো হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। জনতার এই উপস্থিতি এবং বিজিবির কড়া অবস্থানে হতভম্ব হয়ে যায় বিএসএফ এবং তাদের সঙ্গে থাকা দলটি। শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ছাড়াই তারা পিছু হটে।
সিঙ্গারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাচ্চু মিয়া জানান, “রাতে বিজিবির কাছ থেকে তথ্য পেয়েই আমরা এলাকায় প্রচার করি। গ্রামের মানুষ দ্রুত সাড়া দেয়, তখনই বিএসএফ সরিয়ে নেয় তাদের লোকজন।”
আরেক ইউপি সদস্য মামুন চৌধুরী বলেন, “বিএসএফ একপ্রকার গোপনে পুশ-ইনের চেষ্টা করেছিল। স্থানীয়দের সচেতনতা ও বিজিবির সক্রিয়তা বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছে।”
বিজয়নগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধনা ত্রিপুরা জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, তবে প্রশাসন এবং বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহাম্মেদ বলেন, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা এবং সচেতনতা একটি বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিহত করতে সহায়ক হয়েছে।”
এই ঘটনার পর থেকে সীমান্তে টহল এবং নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এলেও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে।
