জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১১ হাজার ৮৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে ৮ হাজার ৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে আসবে ২ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ধরা হয়েছে ৮১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, ধর্ম, প্রবাসী কল্যাণ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সংযোজন, প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসন এবং শিশু শিক্ষার সম্প্রসারণ।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘আরবান ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ইউসিআরআইপি)’ ও ‘প্রবৃদ্ধি: স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন (এলইডি)’ প্রকল্প দুটি অনুমোদন পেয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘৮টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবন নির্মাণ’, ‘১৫টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধির’ প্রকল্প এবং ‘তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়ন’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
এছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (অষ্টম পর্যায়)’ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘রেইজ: রিইন্টেগ্রেশন অব রিটার্নিং মাইগ্রেন্টস (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পটিও অনুমোদন পেয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘ওজোপাডিকোর জন্য গ্রিড বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নয়ন’ এবং ‘পাওয়ার ট্রান্সমিশন স্ট্রেংথেনিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন অব রিনিউয়েবল এনার্জি’ শীর্ষক প্রকল্প দুটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
এদিকে একনেক সভায় ‘ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার পুনঃনির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের বিষয়েও একনেক সদস্যদের অবহিত করেছেন। এসব প্রকল্প হচ্ছে—কক্সবাজারে শুতলি ক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন, সরকারের ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম শক্তিশালীকরণ, বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ এবং চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প (লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত)।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রবাসী কল্যাণসহ নানা খাতে টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতি সাধিত হবে।