শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সরকারবিরোধী দলগুলোকে কাছে টানার চেষ্টায় ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’

দ্বাদশ নির্বাচনের আগে দেশের রাজনীতিতে নানান পরিবর্তন আসবে। এমনটা ধরে নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে কাছে টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গেও অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ চলছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে নেই এমন বাম-গণতান্ত্রিক ধারার দলগুলোর সঙ্গেও মতবিনিময় শুরু করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। শুরুতেই মতবিনিময় করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে। মঙ্গলবার মোস্তফা মোহসীন মন্টু নেতৃত্বাধীন গণফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে গণতন্ত্র মঞ্চের

সূত্র জানায়, নির্দলীয় সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে ‘যুগপৎ আন্দোলনে’ যুক্ত হওয়ার কথা ভাবছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

মঞ্চের নেতারা বলছেন, গণতন্ত্র মঞ্চ যে প্রক্রিয়ায় যুক্ত যুগপৎ আন্দোলনে হতে চাচ্ছে, সে বিষয়ে অন্যদলগুলোর সঙ্গে তারা মতবিনিময় করছেন। তারা দলগুলোকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন।

যদিও বিএনপি বলেছিল ‘যুগপৎ আন্দোলনের’ রূপরেখা তৈরি করার জন্য ফের সবার সঙ্গে বসবে। গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে এখনো আলোচনা শুরু না করলেও তাদের জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে রূপরেখা দেওয়ার কথা সেটাও এখনো ঘোষণা করতে পারেনি বিএনপি।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলছে, বর্তমান সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে শুধু সরকারের বিদায় এবং একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানই যথেষ্ট নয়। বিদ্যমান শাসনব্যবস্থাও বদলাতে হবে। সে লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কী ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতা বা চুক্তিতে তারা পৌঁছেছেন, মতবিনিময়ে সে বিষয়গুলো খোলাসা করবেন মঞ্চের নেতারা। তারা চাচ্ছেন যুগপৎ আন্দোলনে আরও বেশি সংখ্যক দলকে যুক্ত করা এবং আন্দোলনের শক্তি বাড়ানো।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যেসব দলের সঙ্গে মতবিনিময় করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত দুই পর্যায়ের দলই রয়েছে। অনিবন্ধিত হলেও কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমাজে গুরুত্ব ও প্রভাব রয়েছে। তাই সরকারবিরোধী বৃহত্তর আন্দোলনে যত দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করা যায়, সে চেষ্টার অংশ হিসেবে তারা বিএনপির বাইরে আলাদা করে এই রাজনৈতিক আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনসহ কিছু সাংবিধানিক ও শাসনতান্ত্রিক সংস্কারে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দলগুলো বিএনপির সঙ্গে ‘যুগপৎ আন্দোলনে’ নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।

প্রথম দফায় বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠক হলেও এবার তারা বিএনপির সঙ্গে পাল্টা বৈঠকে বসবেন। যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্য ও ভিত্তি কী হবে, আন্দোলনের ধরন কী হবে? বৈঠকে এসব চূড়ান্ত করা হবে। তবে এ বৈঠকের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন,‘যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি নির্ধারণে গণতন্ত্র মঞ্চ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে। কারণ, ক্ষমতাসীন সরকার আরেকটি ব্যর্থ ও অকার্যকর নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে, যা দেশকে গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে। অথচ আরেকটা ব্যর্থ ও অকার্যকর নির্বাচনের দায় বহন করা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপি মতবিনিময়ে এগিয়ে এসেছে। এবার গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে মতবিনিময় শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাসদ ও গণফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। রাজপথে গণজাগরণের মধ্যে দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করা হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক, মানবিক, জবাবদিহিতার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। সরকার দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে ভুলে গিয়ে আওয়ামী লীগ একটা সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে।’

৮ আগস্ট (সোমবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র মঞ্চ’র আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। গণতন্ত্র মঞ্চের দলগুলো হলো; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এই সাতটি দলের মধ্যে পাঁচটি দল বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনের জন্য সংলাপে অংশ নিয়েছে। জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির শরিক হিসেবে ঐক্যফ্রন্টেও ছিল। গণতন্ত্র মঞ্চের ঘোষণা দিয়ে আ স ম আবদুর রব বলেছেন, গণতন্ত্র মঞ্চ হলো জনগণের সমস্ত অধিকার আদায়ের মঞ্চ। আজকে দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই জোট নানা ইস্যুতে সরকার বিরোধি আন্দালনে মাঠে নামবে।

অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের বিরুদ্ধে সবর থেকে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও গণতন্ত্র মঞ্চের কার্যক্রম এখন অনেকটা ধীরে চলো নীতিতে চলছে। যদিও সাতটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গড়ে উঠা নতুন এই রাজনৈতিক জোটের অধিকাংশ দলের নিবন্ধন নেই। তাই কর্মসূচির পাশাপাশি নিবন্ধন ইস্যুতে ব্যস্ত সময় কাটছে দলগুলোর। অবশ্য নিবন্ধন পাওয়ার বিষয়ে দলগুলোর নেতারা কোনো প্রকার নিশ্চিয়তা পাননি । আ স ম আবদুর রবের জেএসডি এবং সাইফুল হকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ছাড়া কারো নিবন্ধন নেই। নাগরিক ঐক্যকে নিবন্ধন দিয়েও আবার বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন। জোনায়েদ সাকি নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকলেও কমিশন সেটা তোয়াক্কা করেনি।

ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হকদের গণঅধিকার পরিষদও নিবন্ধনের জন্য গত রবিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করেছে। তবে দলটির নেতারা বলছেন; রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে যে সমস্ত ক্যাটাগরি/শর্ত থাকে সবকিছু পরিপূর্ণ করেই তারা অগ্রসর হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারপরও নিবন্ধন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী সংশ্লিষ্টদলগুলোর নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক গণতন্ত্র মঞ্চের দায়িত্বশীল একজন নেতা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমরা মুখের কথায় যাই বলি না কেন; সরকারবিরোধী আন্দোলনে এককভাবে রাজপথে দাঁড়ানোর কোনো উপায় বা শক্তি নেই। তাই ইচ্ছা না থাকলেও আমাদেরকে আন্দোলনের জন্য বিএনপির দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। বেশ কয়েকবার রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিল। তাদের যতটুকু সক্ষমতা আছে গণতন্ত্র মঞ্চের সেটা নেই। জোটে টানতে সংসদে থাকা বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সঙ্গেও যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’

বাংলাদেশ জাসদ কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, বর্তমান সরকারের সীমাহীন লুটপাট-অর্থ পাচারের ফলে জনগণের যে নাভিশ্বাস উঠেছে, তার বিরুদ্ধে ঐক্য ও আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন তারা।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন করার জন্য যে সমস্ত অবস্থা তৈরি করা দরকার আমার সেভাবেই কাজ করছি। শর্ত হচ্ছে-এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, এই নির্বাচন কমিশন থাকতে পারবে না, এই সংসদ বাতিল করতে হবে এবং ইভিএম চলবে না। এই কয়টা শর্তের কোনোটার সঙ্গে কোনো ছাড় নাই। আমরা প্রশাসনকে ঢেলে সাজাব, নির্বাচন করবার উপযুক্ত করব এবং দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি বলব, গণতান্ত্রিক জনতার জয় হবেই হবে। বিএনপি বলেছিল ‘যুগপৎ আন্দোলনের’ রূপরেখা তৈরি করার জন্য সবার সঙ্গে বসবে। এর আগে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেওয়ার কথা। সেটা এখনো ঘোষণা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গণতন্ত্র মঞ্চ সারাদেশে বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মী সম্মেলন ও সুধী সমাবেশের কর্মসূচি শুরু করবে। নভেম্বর মাসেই তা শুরু হবে বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন। এ মুহূর্তে তাদের লক্ষ্য যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে সমমনা অন্য দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়া বাড়িয়ে তোলা এবং তাদের আন্দোলনে যুক্ত করে সরকারবিরোধী ঐক্যমঞ্চকে বিস্তৃত করা।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি চলছে, একইসঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেই আমরা আলোচনা করব। সরকারবিরোধী আন্দোলনকে একটি যৌক্তিক অবস্থানে নিয়ে যেতে ভিত্তি তৈরিতেই আলোচনা করা হচ্ছে।’

এনএইচবি/এমএমএ/

 

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস শনাক্ত। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ জনে। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৯৪ জনে অবস্থান করছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৯৪ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৮৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৩টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার চার দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ আইসোলেশনে আসেনি এবং আইসোলেশন থেকে কেউ ছাড়পত্র পায়নি। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৬৬ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৭১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৫১ জন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার সময় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপপ্রবাহে শুকিয়ে গেছে পুকুরের পানি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ অ্যালার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে বলা হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে।

দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।

গরম থেকে বাঁচতে পানিতে নেমেছেন শিশু-কিশোররা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনও পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।’

২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।

গাছের ছায়ায় বসে আরাম করছেন ক্লান্ত মানুষজন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আশু মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মাঠে জমিতে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে বেশিক্ষণ মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, সকালে কাজের জন্য অফিসে আসতে হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। সড়ক থেকে গরম উঠে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে বেশি সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না।

উথলী গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, বারবার পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখতে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে প্রতিদিন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট ওয়েভ অ্যালার্ট (তীব্র তাপদাহের সতর্কতা) জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই গণসংযোগ চলবে আগামী ৩ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজপথের আন্দোলনে বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন কেউই আমাদের দাওয়াতের বাইরে থাকবে না। আর সর্ব প্রথম দাওয়াত হবে নিজের নফসের প্রতি। আমাদের কথা ও কাজে যেন অমিল না থাকে। যেটা মানুষকে করতে বলব, সেটা যেন আমি নিজে আগে আমল করি।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি জনশক্তির কথাবার্তা, লেনদেন, সামাজিক কাজকর্ম আল্লাহর দ্বীন বা কোরআন অনুযায়ী হতে হবে। যতই বাঁধা আসুক আমরা ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দাওয়াত কার্যকর হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনলাইন মাধ্যম জুম, ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ-এ ঈদপুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধনে এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে আমাদের জীবনে কাজে লাগাতে হবে। যারা রমজানে তাকওয়া অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন মূলত তাদের জন্যই ঈদের আনন্দ। আমীরে জামায়াতের ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে ১৫ দিনব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ চলবে।

সর্বশেষ সংবাদ

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০
পালিয়ে আসা ২৮৫ সেনা সদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত নেবে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ল বাস, প্রকৌশলী নিহত
১০ হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক লুৎফুলকে শোকজ করল আওয়ামী লীগ
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন