শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

বাংলা নববর্ষের অর্থনীতি

বাংলা নববর্ষকে ঘিরে সকল উদযাপনের মূল কথা বাঙালির আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধান এবং অসাম্প্রদায়িকতার মর্মবাণী তুলে ধরা। করোনার আক্রমণের আগের বছরগুলোতে নগরে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ব্যপ্তি বেশ বাড়ছিল। পার্কে-উদ্যানে, পাড়ায় মহল্লায়, হাতিরঝিলে, রবীন্দ্র সরোবরে নানা অনুষ্ঠানে বিশেষ করে তরুণরা বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেবার যেন প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছিল।

সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসি বাঙালিরাও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাংলাদেশ তৈরি করার আনন্দে মেতেছিল। কিন্তু কভিড-১৯ হঠাৎ করে বাঙালির এই আনন্দযজ্ঞে বাধ সাধে। তাদেরকে ঘরবন্দি করে ফেলে। আর অসময়ে প্রাণ ঝরে যাবার আশঙ্কা তো ছিলোই। তবে বিজ্ঞানের কৃপায় দ্রুত টিকা আবিষ্কারের ফলে মানবজাতি এই যাত্রায় রক্ষা পায়। পর্যটন শিল্প আবার মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। বিদেশে থাকা ছেলে-মেয়েরা দেশে ফিরে আসছে। এমনি এক প্রেক্ষাপটে আসছে এবারের বাংলা নববর্ষ। নিঃসন্দেহে সময় অনেকটাই বদলে গেছে। তাই এবারের বাংলা নববর্ষ উদযাপনেও নতুন নতুন ফ্যাশন পণ্য ও সাংস্কৃতিক আয়োজন লক্ষ করা যাবে বলে আশা করা যায়।

আর উৎসবের এই রকমফের বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনীতিতেও নতুন নতুন প্রভাব নিশ্চয় ফেলবে। তবে সম্প্রতি বঙ্গবাজার পুড়ে যাবার কারণে অনেক ক্ষুদে ব্যবসায়ীর পুঁজি ও স্বপ্ন দুইই পুড়ে গেছে। প্রায় পঞ্চাশ হাজারের মতো কর্মীর আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ এরা ঈদের বাজারে খুবই সক্রিয় থাকার কথা ছিল। তাই এই ঈদে তাদের আনন্দ উঠে গেছে। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অন্যান্যদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

নিঃসন্দেহে আমাদের সাংস্কৃতিক লড়াই-এ পয়লা বৈশাখ বরণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। এর শুরুটা এমন এক সময়ে হয়েছিল যখন নিজেদের বাঙালি হিসেবে দাবি করাটাই সাহসের কাজ ছিল। ১৯৬১ সালে একদিকে পাকিস্তান আমলের দমবন্ধ পরিবেশ, আর অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলনের মধ্যেই এসেছিল রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ। স্বৈরাচারি ও গণবিরোধী পাকিস্তান সরকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করে এই উদযাপনের উপর। এর প্রতিবাদে গণমুখী আঙ্গিকে সুর ও সংগীতকে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে সন্জীদা খাতুন, ওয়াহিদুল হক, মোখলেসুর রহমান (সিধু ভাই), আহমেদুর রহমান (‘ভিমরুল’) সহ আরও অনেকেই সম্মিলিত উদ্যোগ নেন। এভাবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। মূলত ছায়ানট সংগঠকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক, হাইকোর্টের বিচারপতি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক গুণীজনেরা ঐক্যবদ্ধভাবে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে এগিয়ে আসেন। ‘আমরা রবীন্দ্র সংগীত গাইবই’ বলে সেদিন জোর সংকল্প প্রকাশ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। একই সঙ্গে তিনি নজরুলকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপনেরও বিরুদ্ধে ছিলেন। আর সে কারণেই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্রবোধ মিলে মিশে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে পোক্ত করা সম্ভব হয়েছিল পাকিস্তানি সেই আঁধার যুগেও। তবে সাংস্কৃতিক আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠার ধারা-বিবরণীটি ঠিক সেভাবে আমাদের সন্তানদের বলে উঠতে পারিনি আমরা। তাই বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন নির্মাণের রাজনৈতিক যুদ্ধের ভিত গড়তে, সংস্কৃতি কর্মীরা, বিশেষ করে ‘ছায়ানট’ সংগঠক ও কর্মীদের অবিস্মরণীয় ভূমিকা আজকের তরুণ প্রজন্মকে জানানোর প্রয়োজন রয়েছে। সুর দিয়ে মানুষের মনের গভীরতর স্বপ্নকে প্রভাবিত করার এই প্রচেষ্টাকে আরও সক্রিয় করার অভিপ্রায়েই ১৯৬৭ সালে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেন ছায়ানট সংগঠকরা। প্রয়াত ড. নওয়াজেশ আহমদ ছিলেন প্রকৃতি প্রেমিক একজন বিজ্ঞানী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এক স্মারক বক্তৃতায় (২০০৭) তিনি বলেছিলেন কীভাবে রমনা বটমূলের পয়লা বৈশাখের সূত্রপাত হয়। সন্জীদা আপার মুখেও এ কথা বহুবার শুনেছি। ড. নওয়াজেশ সেদিন বলেন, ‘১৯৬৭ সনে ওয়াহিদুল এবং সন্জীদা আমাকে বলল, ‘এবার আমরা বাংলা নববর্ষ বাইরে করব। তুমি একটা গাছ দ্যাখো’। আমার উপর ভার দিল ওয়াহিদুল। আমি ওয়াহিদুলকে রমনা বটমূলের কথা বললাম।’

রমনা বটমূলে আজ যেখানে অনুষ্ঠান হয় সেটা আসলে বট নয়। অশ্বত্থ। আমরা বট বলেই চালিযে দিয়েছিলাম। জায়গাটা এখন যেমন তখন তেমনটা ছিল না। চারদিকে শুধু জঙ্গল আর ঘাসে ভর্তি। তবু আমি ওয়াহিদুলকে বললাম জায়গটা কিন্তু খুব শান্ত। কোলাহলমুক্ত। ছায়ানটের ছেলে-মেয়েদের ভালোই লাগবে। ও রাজি হয়ে গেল। সারারাত আলো জ্বেলে ছায়ানটের কর্মীরা সেই ঘাস কাটল, জঙ্গল পরিষ্কার করল। এভাবেই ছায়ানটের বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন শুরু হলো। আজ এই অনুষ্ঠান যে জাতীয় পর্যায়ে চলে গেছে তাতে আমার খুব ভালো লাগে।’ (দেখুন, আতিউর রহমান, রবীন্দ্রসাধক ওয়াহিদুল হক, দিপ্তী প্রকাশনী ২০১১, পৃ. ৩১১)। সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বছরে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। রমনা বটমূলের এই নববর্ষ উদ্যাপন এখন সারা দেশ এবং বাঙালি অধ্যুষিত বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ বাঙালি বাংলা নববর্ষে পথে নেমে পড়ে। নুতন জামা-কাপড় পড়ে এক উজ্জ্বল সকালে তাদের আনন্দঘন উপস্থিতি বাঙালির অস্তিত্বের জানান দেয়। পাশাপাশি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশের এক অসাধরণ অগ্রযাত্রার প্রতীক বাঙালির এসব আয়োজন।

তাই করোনা-পরবর্তীকালে বাংলা নববর্ষের পুরোদমে উদযাপন নিশ্চয়ই আবারও আমাদের সাহস জোগাবে আগামীর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এগুনোর জন্য। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে নববর্ষের এই উদযাপনের সাংস্কৃতিক গুরুত্বের পাশাপাশি রয়েছে অর্থনৈতিক গুরুত্বও। ভেবে দেখুন এই সর্বজনীন সাংস্কৃতিক উদযাপনকে কেন্দ্র করে করোনাজনিত অর্থনৈতিক অচলাবস্থায় ঝিমিয়ে পড়া খাতগুলোতে গতি সঞ্চার করে অর্থনীতির জন্য কতোটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বাঙালির এই সর্বজনিন উৎসব। মধ্য ও উচ্চ বিত্তের কথা না হয় নাই বা বললাম, শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ যারা, ধরা যাক গার্মেন্ট শ্রমিকদের কথা, তারা সকলেই কিন্তু পরিবারের জন্য নববর্ষ উপলক্ষে কিছু কেনাকাটা করেছেন। লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস কন্যারা নতুন শাড়ি কিনছেন। তরুণরাও নতুন রঙিন পোষাক কিনছেন। ফল কেনার হিড়িক পড়ে যায় নববর্ষের ভোরে। ফ্যাশনের এই জোয়ারের বিরাট প্রভাব পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতে। উৎসবের এই অর্থনীতি পাশ্চাত্যের বড় দিনের অর্থনীতির মতোই দিন দিন বাঙালির মনে ঠাঁই করে নিচ্ছে। এই উৎসবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার কথা। গ্রামেও তো এখন সেবাখাতের ব্যাপ্তি বিরাট। গ্রামীণ আয়ের ষাট শতাংশই আসছে অ-কৃষি খাত থেকে। কাজেই নববর্ষকে কেন্দ্র করে গ্রামের অ-কৃষি খাতের উদ্যোক্তারাও বাড়তি বেচাকেনার মুখ দেখবেন। দেশব্যাপী টাকার এই লেনদেনের ফলে সংশ্লিষ্ট কর্মীদেরও আয়-রোজগার বাড়বে। তাদের জন্য নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধির চাপ মোকাবিলা কিছুটা হলেও সহজতর তো হবেই। করোনার দুর্দশা কাটিয়ে দুই বছর বাদে পুরো মাত্রায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন অর্থনীতির জন্য সুখবরই বটে।

দশ-পনেরো বছর আগেও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে পোশাক কেনা অত বেশি ছিল না। কিন্তু করোনা আসার আগে আগে ২০১৯ সালের পয়লা বৈশাখকে ঘিরে পনেরো হাজার কোটি টাকার পোশাক বিক্রি হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন অভ্যন্তরীণ পোশাক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতি। এই পোশাক কিন্তু কেবল বিপণি বিতানে বিক্রি হয়েছে এমনটি নয়। বরং ফুটপাতের বিক্রেতাসহ অনানুষ্ঠানিক বিক্রয়কেন্দ্র থেকেও এর একটি বড় অংশ বিক্রি হয়েছে। ২০১৯ সালের আগের হিসাব বলছে এই বিক্রির পরিমাণ বছরে গড়ে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। করোনাকালে এই প্রবৃদ্ধি নিশ্চয়ই ধাক্কা খেয়েছিল। তবে গত বছরের নববর্ষে আমরা পুরোপুরি আগের ধারায় ফিরে আসার পথ খুজে পেয়েছি। এর আবার দুই বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পোশাক এবং ভোগ্যপণ্য বিক্রি বাড়তে দেখেছি গত বছর। এ বছর নিশ্চয় বিকিকিনির হার আরও বাড়বে। তবে মূল্যস্ফীতি বাড়ন্ত বলে সাধারণ মানুষের কেনাকাটার পরিমাণ যতোটা আশা করা গিয়েছিল ততটা হয়তো হবে না। তবে অর্থনীতি মোটেও ঝিমিয়ে পড়েনি। এখনো বেশ সচল। সবল। ফলে অর্থনীতির গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় বাংলা নববর্ষের এই সময়টা যে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

ড. আতিউর রহমান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

Header Ad
Header Ad

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের চূড়াইন গ্রামে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হলো এলাকাবাসী। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন মৃধা (৪৮) গোলাপ জলে গোসল করে জনসমক্ষে ঘোষণা দিলেন— তিনি রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিচ্ছেন।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে নিজ বাড়ির উঠানে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেন তিনি। এই ঘোষণার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন, অন্যদিকে নিজ গ্রামে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আলী হোসেন মৃধা ছিলেন বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি ওই ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চূড়াইন গ্রামের প্রয়াত আব্দুল খালেক মৃধার সন্তান আলী হোসেন মূলত পেশায় একজন ডেকোরেটিং ব্যবসায়ী।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তখনই আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে আলী হোসেন মৃধা বলেন, “আমি মূলত ব্যবসায়ী মানুষ। রাজনীতি আমাকে কখনো খুব টানেনি। তবে এলাকার মানুষের অনুরোধে ও সময়ের প্রেক্ষাপটে আমি যুক্ত হয়েছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতনের পর আমার ভেতরে একটি পরিবর্তন আসে। আমার মনে হয়েছে, রাজনীতি আমার পথ নয়। অনেকেই পালিয়ে গেছেন, কিন্তু আমি এলাকায় থেকে গেছি। আমি কখনো দুর্নীতি বা অনিয়মে জড়াইনি।”

আলী হোসেন মৃধার ভাষায়, এটি ছিল তাঁর ‘বোধোদয়’—একটি আত্মচিন্তার ফল। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “আমি আর রাজনীতি করবো না। আওয়ামী লীগও করবো না। এখন থেকে শুধু ব্যবসা নিয়েই থাকতে চাই।”

স্থানীয়ভাবে এই ঘোষণা বেশ আলোড়ন তুলেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি হয়তো রাজনৈতিক কৌশল, আবার কেউ বলছেন এটি একজন সাধারণ কর্মীর বিবেকের জাগরণ।

অনেকেই মনে করছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি পর্যায়ে এমন অবস্থান নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার ঘটনা হয়তো বিরল, কিন্তু তা কেবল এক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়—বরং এটি একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যেখানে রাজনীতি নিয়ে মানুষের দ্বিধা, আস্থা ও প্রত্যাশার জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন

ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন ছয় বছর বিলম্বে উদ্বোধন করলেন দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প— ওনসান কালমা সমুদ্র সৈকত রিসোর্ট। পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই বিলাসবহুল রিসোর্টটি আগামী জুলাই মাস থেকে দেশীয় পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ। তবে বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কবে উন্মুক্ত হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

গত ২৪ জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী রি সল জু এবং কন্যা কিম জু এ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে এটি ছিল রি সল জুর প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যাটসেগোরাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও, যা উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক বার্তাও বহন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এক সময় ওনসান শহরটি পরিচিত ছিল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘাঁটি হিসেবে। কিন্তু কিম জং উন এখন সেই শহরকেই রূপ দিচ্ছেন পর্যটন নগরীতে। নিজের শৈশব কাটানো এলাকা ওনসানে অভিজাতদের ব্যক্তিগত বাড়ি থাকলেও এবার সাধারণ পর্যটকদের জন্যও খুলে দেওয়া হলো সমুদ্রতীরবর্তী বিলাসবহুল রিসোর্টটি।

কেসিএনএর দাবি অনুযায়ী, রিসোর্টটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার এবং এতে প্রতিদিন ২০ হাজার পর্যটক অবস্থান করতে পারবেন। এতে থাকছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ওয়াটার পার্ক, শপিং মলসহ নানা বিনোদন সুবিধা। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওনসান রিসোর্টের উদ্বোধন কিম সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন কৌশলের অংশ হতে পারে। যদিও উত্তর কোরিয়ায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের কড়াকড়ি রয়েছে, তবুও বিদেশি পর্যটক বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া থেকে আসা পর্যটকদের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটি।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পিয়ংইয়ং। প্রায় তিন বছর পর, ২০২৩ সালে কিছুটা শিথিলতা আসে এবং ২০২৪ সালে রাশিয়ার পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলা হয়। তবে ইউরোপীয় ও অস্ট্রেলিয়ান পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলার ঘোষণা এলেও কিছু সপ্তাহ পরেই সেটি আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা উত্তর কোরিয়ার পর্যটন নীতির অনিশ্চয়তা ও অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেয়।

কেসিএনএ জানিয়েছে, ওনসান রিসোর্ট উদ্বোধন “সমগ্র দেশের জন্য একটি মহান ও শুভ ঘটনা” এবং এটি উত্তর কোরিয়ার পর্যটনে “একটি নতুন যুগের সূচনা”।

প্রথমে ২০১৯ সালের অক্টোবরে এই রিসোর্ট খোলার কথা থাকলেও, নির্মাণে বিলম্ব ও কোভিডের অভিঘাতের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

ওনসান কালমা রিসোর্টের উদ্বোধন কেবল পর্যটকদের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টিতে উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত অর্থনৈতিক মনোযোগেরও প্রতিফলন। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কতটা সহজলভ্য হবে এবং আদৌ কি তা বৈদেশিক রাজস্বে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে— তা সময়ই বলে দেবে। তবে রিসোর্টের ছায়ায় লুকিয়ে থাকা রাষ্ট্রীয় ‘নিয়ন্ত্রণ’ ও ‘গোপনতা’ এখনো উত্তর কোরিয়ার পর্যটনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়ে গেছে।

সূত্র: ইনসাইডার, কেসিএনএ

Header Ad
Header Ad

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২

ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ২৬২ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া একজন পুরুষ। আর আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২১৪ জনই ঢাকার বাইরের।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪১ জন, যাদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী।

এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ৪৮৪ জন, যার মধ্যে পাঁচ হাজার ৫৮৩ জন পুরুষ ও তিন হাজার ৯০১ জন নারী।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা
সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২
কূটনৈতিক অস্ত্র পানি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান, শঙ্কায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান
পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে তোলপাড়
দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: উপদেষ্টা ফরিদা
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনা নিহত
ছায়ানটের সভাপতি হলেন ডা. সারওয়ার আলী, কার্যনির্বাহী কমিটিতে নতুন মুখ
জুলাই যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে চাই: রিজভী
৮ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে হেগে পাকিস্তানের আইনি জয়, রায় প্রত্যাখ্যান করল ভারত
আগস্টে ঢাকার ৩ এলাকায় চালু হবে ই-রিকশা
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডার নতুন ওয়েবসাইট চালু
টাঙ্গাইলে যৌনপল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ১২টি ঘর পুড়ে ছাই
আবাসিক হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারীদের খুশির খবর দিল সৌদি আরব
চীন সফর অত্যন্ত ‘সফল’ ও ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ইরানে আবারও বোমা হামলার হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ইনিংস ব্যবধানে হারের পরই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত
৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া মারা গেছেন (ভিডিও)