মুফতি স্বামীর বিরুদ্ধে হ্যাপির মামলা, ৯ বিয়ে ও নির্যাতনের অভিযোগ

স্বামী মুফতি তালহা ইসলামের সঙ্গে সাবেক মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আলোচনায় আসা সাবেক মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি আবারও শিরোনামে। তবে এবার কারণ ভিন্ন—স্বামী মুফতি তালহা ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন তিনি।
সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর একটি থানায় মামলা দায়েরের পর বুধবার (১৫ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান হ্যাপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস।
সংবাদ সম্মেলনে আবেগঘন কণ্ঠে হ্যাপি বলেন, “এতদিন চুপ ছিলাম শুধু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে। কিন্তু দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই আজ মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি।” তিনি আরও জানান, “আমার স্বামী তালহা ইসলাম আমার ওপর দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। কথায় কথায় মারধর করতেন। এমনকি সন্তানকেও ছাড়েননি।”

হ্যাপির আইনজীবী জানান, সাত বছর আগে নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট আলেম মুফতি শহিদুল ইসলামের ছেলে তালহা ইসলামের সঙ্গে হ্যাপির বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামীর আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন হ্যাপি। তিনি বলেন, “তালহা ইসলামের নারীদের প্রতি আগ্রহ সীমাহীন। সম্পর্কের একপর্যায়ে তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে স্বল্পমেয়াদী বিয়েতে জড়িয়েছেন। এখন পর্যন্ত তার ৯টি বিয়ের প্রমাণ রয়েছে।”
এছাড়া, যৌতুকের দাবিতে হ্যাপিকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে হ্যাপি অভিযোগ করে বলেন, “তালাক চাইলে আমাকে বলা হয়, এক কোটি টাকা দিয়ে যেতে হবে কিংবা সন্তানকে আজীবনের জন্য দিয়ে যেতে হবে। এতটাই নির্মম মানসিক চাপ ছিল যে বারবার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।”
মামলা করার পর থেকেই হ্যাপি ও তার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, “মামলার পরপরই তালহা লোকজন নিয়ে আমার বাসায় এসে ব্যবসার ৫০-৬০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছেন। এখন মামলা তুলে নিতে নানা হুমকি দিচ্ছেন।”
তালহা ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন।
২০১৩ সালে ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ চলচ্চিত্র দিয়ে শোবিজে পা রাখেন হ্যাপি। তবে ২০১৪ সালে জাতীয় ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে তুমুল আলোচনায় আসেন তিনি।
রুবেল সেই সময় দাবি করেন, তিনি ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়েছেন। পরে আদালতেও অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। বিশ্বকাপের আগে জামিনে মুক্তি পেয়ে খেলেন রুবেল। পরে হ্যাপি নিজেই অভিযোগ তুলে নেন এবং ক্ষমা করে দেন। এরপর হ্যাপি পর্দার জগৎ ছেড়ে ইসলামি অনুশাসন অনুযায়ী জীবন শুরু করেন। তিনি নিজের ফেসবুক থেকেও শোবিজের সব ছবি ও কনটেন্ট সরিয়ে নেন।
