বেনাপোল কাস্টমসে দ্বিতীয় দিনের মতো কলম বিরতি, স্বাভাবিক আমদানি-রপ্তানি

বেনাপোল কাস্টমস হাউজ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা ‘কলম বিরতি’ কর্মসূচি। এতে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান বেনাপোল কাস্টমস হাউজে রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) কলম বিরতি ছিল সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত। তবে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তা বাড়িয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত করা হয়েছে। এ সময় কাস্টমস হাউজ খোলা থাকলেও কার্যত কোনো দাফতরিক কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন এক রাজস্ব কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আমরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাথে একাত্ম। আমাদের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন রয়েছে আন্দোলনের প্রতি।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেনাপোল কাস্টমস হাউজে অধিকাংশ টেবিল খালি, অনেক কর্মকর্তা বাইরে সময় কাটাচ্ছেন। কিছু কর্মকর্তা নিজ আসনে থাকলেও কোনো কাজ করছেন না। নতুন করে কোনো পণ্যের আইজিএম (Import General Manifest) ইস্যু করা হচ্ছে না, ফলে নতুন পণ্যের ছাড়করণ বন্ধ রয়েছে। তবে আগের ইস্যুকৃত আইজিএম অনুযায়ী পণ্য ছাড় চলছে।

বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, “সকাল ১০টা থেকে হাউজে কোনো ফাইল প্রসেস হয়নি। তবে বিকেল ৩টার পর কাজ শুরুর আশ্বাস পেয়েছি।”
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইব্রাহিম আহমেদ জানিয়েছেন, “কলম বিরতির প্রভাব যাত্রী পারাপারে পড়েনি। দুই দেশের যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছেন।”
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, “কলম বিরতির মধ্যেও বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
বুধবার ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১৭৪ ট্রাক পণ্য, আর আমদানি হয়েছে ৩০৬ ট্রাক পণ্য। বৃহস্পতিবার সকাল ১২টা পর্যন্ত ২৫টি ট্রাকে পণ্য এসেছে, এবং রপ্তানি হয়েছে ১১টি ট্রাক।”
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’-এর খসড়ায় কর্মকর্তাদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য পদ সংরক্ষণ না করে অভিজ্ঞতাহীন কর্মকর্তাদের পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, গতিশীলতা ও কার্যকারিতাকে ব্যাহত করবে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
সংগঠনটি আরও জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব বিভাগকে দুটি আলাদা ইউনিটে বিভক্ত করার উদ্যোগের প্রতিবাদেই এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
