বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করেছেন, নির্বাচন যত বিলম্বিত হচ্ছে, দেশ ততই অস্থিরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। রবিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল সারিনায় সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন, সরকার কার্যত এমনভাবে পরিচালিত হচ্ছে যেন তারা একটি নির্বাচিত সরকার। তারা বারবার ‘সংস্কার’ ও ‘ঐক্যমত্য’র কথা বললেও বাস্তবে কোথাও সেই ঐক্যমতের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। এই সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হওয়ায় তাদের দায়িত্ব ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সবাই মিলে একসময় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করেছিল, অথচ এখন সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে দেশ সরে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাতি আজ গভীর শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। নির্বাচন না দিয়ে সরকার নানা ইস্যুতে মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে— করিডর, বিনিয়োগ সম্মেলন, বন্দর ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের কে দিয়েছে?
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সংক্রান্ত প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের লোককে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তারা কারা— এ প্রশ্ন ওঠে জনমনে।
সংস্কার প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, এটি হতে হবে জনগণের মতামত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে। দলীয় পর্যায়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ নিয়ে তিনি বলেন, নতুন সদস্য নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা তার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা সংঘাত নয়, বরং একটি স্থিতিশীল ও সহাবস্থানের রাজনীতি চাই। যারা এই রাজনৈতিক ধারা থেকে আমাদের বিচ্যুত করতে চান, তাদের আমরা প্রতিহত করব।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন যেন নিয়মিত রুটিন কার্যক্রমে পরিণত হয় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের প্রতি আস্থার অভাব জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, দুই মাস আগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এরপরও সরকার যে নাটক করছে, তা মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।
সবশেষে তিনি বলেন, বন্দরে বিদেশি অপারেটর আনার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে জনমত নেওয়া উচিত ছিল। বিনিয়োগের বিষয় ছাড়াও এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব জড়িত। সরকার নির্বাচন বাদে সবকিছু করছে, অথচ তাদের এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কে দিয়েছে— এই প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির এই নেতা।