সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

জৈব জ্বালানি নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রয়োজন

যে শক্তির উৎস নিঃশেষ হয়ে যায় না, অল্প সময়ের মধ্যেই পুনরায় ব্যবহার করা যায়; তা-ই হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এই জ্বালানির উৎস হচ্ছে, সৌর শক্তি, ভূ-তাপ, বায়ু প্রবাহ, জল প্রবাহ, সমুদ্র ঢেউ, সমুদ্র তাপ, জোয়ার-ভাটা, বায়োগ্যাস, বায়োফুয়েল, আবর্জনা ইত্যাদি। এসব উৎসকে আমরা কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি অনায়েসেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেও। তাতে করে খনিজ জ্বালানির উপর চাপ কমে আসছে অনেকটাই। উল্লেখ্য, বায়োগ্যাস এবং আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। অনুমোদিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে, নচেৎ মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়ে পরিবেশের বিপর্য ঘটবে।

আমরা জানি, বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়েছে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা করতে। পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য হিসেবে ঠিক রাখতে তারা কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার চেষ্টায় আন্দোলন করে যাচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানি অথবা খনিজ জ্বালানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরশীল হতে পরামর্শ দিচ্ছে।

বলে রাখা ভালো, বিশ্বে খনিজ জ্বালানির অধিকাংশই বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে। ফলে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে প্রবল বেগে। তাতে জলবায়ুর ওপর মারাত্মক ভাবে প্রভাব পড়ছে। দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে। ঋতুবৈচিত্র্যে হেরফের দেখা দিয়েছে। নতুন রোগ-বেরামের আবির্ভাব ঘটছে। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনতে হলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরশীল হতে হবে আমাদের।

ভালো বিষয় হচ্ছে, ব্যাপক ভাবে না হলেও বাংলাদেশ সৌর শক্তিকে ক্ষুদ্রভাবে কাজে লাগিয়েছেও ইতোমধ্যে, যা বাংলাদেশে ‘সোলার প্ল্যান্ট’ নামে পরিচিত। সোলার প্ল্যান্টের ব্যবহারে সফলতাও এসেছে ব্যাপক। দুর্গম অঞ্চলে পাহাড় কিংবা চরাঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে সোলার প্ল্যান্ট। ভারতেও সোলার প্ল্যান্ট ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোলার প্ল্যান্টের অবস্থান ভারতেই। প্রায় ৬৪৮ মেগাওয়াট (কমবেশি হতে পারে) বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে ভারত।

অপরদিকে, চীন শতাধিক কয়লা বিদ্যুৎ বন্ধ করে বায়ু বিদ্যুৎ ও প্রচুর সোলার প্ল্যান্ট কেন্দ্র চালু করেছে। বলা যায়, এ ক্ষেত্রে দুটি দেশ মোটামুটি সফলতা অর্জন করতে সক্ষমও হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সোলার প্ল্যান্ট মরক্কোতে অবস্থিত। তারা মরুভুমির বুকে বিশাল সোলার প্ল্যান্ট বসাতে সক্ষম হয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে বিদ্যুৎ রপ্তানির পরিকল্পনা করছে মরক্কো। আমরাও ইচ্ছে করলেই সোলার প্ল্যান্টের মতো অন্যান্য শক্তিগুলোকেও কাজে লাগাতে পারি। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে আমরা বায়ু প্রবাহকে প্রাধান্য দিতে পারি। বিশ্বের কয়েকটি উন্নত রাষ্ট্রেও বায়ু প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। যেমন-অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব ও ভারত বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে।

এ ছাড়াও বিশ্বব্যাপী উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশেই এ পলিসি গ্রহণ করেছে এবং তা জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে। কারণ, পরিবেশের ভারসাম্য বজায়ের জন্য এ নিখাদ প্রযুক্তি আর দ্বিতীয়টি নেইও। অপরদিকে বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশ্বের জন্য একটি সম্ভাবনাময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেই ক্ষেত্র আছেও প্রচুর। যেহেতু বিশ্বের প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লার মওজুদ ফুরিয়ে আসছে তাতে করে দেশগুলো বায়ু শক্তির উপর নির্ভরশীল হতে পারে। যার ফলে পরিবেশ দুষণ থেকে যেমন রেহাই পাবে বিশ্ববাসী, তেমনি নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় দিকও আছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭২৪ কিলোমিটার। যেখানে অনবরত বায়ু প্রবাহ থাকে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এ প্রবাহকে কাজে লাগাতে পারলে ২০০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বায়ু প্রবাহের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো হচ্ছে, হাতিয়া, সন্দীপ, মহেশখালী ও কতুবদিয়া। এ ছাড়া, পদ্মা-মেঘনা-যুমনার চরে বায়ুকল স্থাপন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আগে বায়ু প্রবাহের গতিবিধির উপর নজর রাখতে হবে। অন্তত মাস তিনেকের বায়ু প্রবাহের গতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে টারবাইন বসানোর উপযোগী কি না।

 বাংলাদেশ সরকার বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনেক আগেই। ইতোমধ্যে কক্সবাজার, ইনানী, চাঁদপুরের কচুয়াতে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আগ্রহী হয়েছে। শুধু বায়ু প্রবাহ নয়; সমুদ্র ঢেউ, সমুদ্রের তাপ, জোয়ার-ভাটার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার সম্ভব। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জল প্রবাহকে (কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ) কাজে লাগিয়েছেও। কাজে লাগিয়েছে বায়োগ্যাসকেও। এটিও বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। গ্রামাঞ্চলে এ গ্যাসের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। রান্না-বান্না এবং বাতি জ্বালানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এভাবে ময়লা-আবর্জনা রিসাইকেল করে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন মিথেন গ্যাস উৎপন্ন না হয়, তাহলে আবার হিতে বিপরীত ঘটবে।

 আরেকটি শক্তি পাওয়া যাচ্ছে জৈব জ্বালানি থেকে। সেটাকে পরিবেশবিদরা নিরুৎসাহিত করছেন বিভিন্ন কারণেই। তার মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে, দরিদ্র দেশের মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছে জৈব জ্বালানি। জৈব জ্বালানি সম্পর্কে বলতে গেলে বিষয়টির সামান্য ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছি আমরা। জৈব জ্বালানি সম্পর্কে সর্বসাধারণের তেমন একটা ধারণা নেই। জৈব জ্বালানি বা ‘বায়োফুয়েল’ হচ্ছে এক ধরনের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর দিকটি চিন্তা করেই জৈব জ্বালানির সম্প্রসারণের সুপারিশ করেছিলেন এক সময় পরিবেশবিদরা। সেই পরামর্শ থেকে পরবর্তী সময়ে সরে এসেছেন তারা।

জৈব জ্বালানি হচ্ছে, ইথানল ও ডিজেলের সমন্বয়ে তৈরি নতুন ধরনের জ্বালানি। যার উপাদান চাল, ডাল, গম, ভুট্টা ও তেলবীজ জাতীয় খাদ্যশস্য। এ সব খাদ্যশস্যকে বিশেষ উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে জৈব জ্বালানি প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর ভালো-মন্দ দুটিই বিদ্যমান রয়েছে। তবে সার্বিক বিবেচনায় পরিলক্ষিত হচ্ছে জৈব জ্বালানির ব্যবহার হিতের চেয়ে ক্ষতিই বেশি বয়ে আনছে। এটি বর্তমানে শুধু উন্নত বিশ্বেই ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে তাদের অনুসরণ করেছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। তারা তাদের দেশে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ পামবীজ দিয়ে জৈব জ্বালানি প্রস্তুত করছে। যেহেতু আমাদের সে সামর্থ নেই, সেক্ষেত্রে আমাদের জন্য বায়ু বিদ্যুৎ এবং সোলার প্ল্যান্টের উপর প্রাধান্য দিতে হবে, তাতে জ্বালানী তেলের উপর চাপ কমে যাবে, কমে আসবে লোডশেডিং-এর মাত্রাও। এতে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশও দূষণমুক্ত থাকবে।

লেখক: কথাসাহিত্যক ও জলবায়ু বিষয়ক কলামিস্ট

 

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন