শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

শবে বরাত বা নিসফি শাবান’র তাৎপর্য

শাবান মাস একটি মুবারক মাস। বিভিন্ন সহিহ হাদিস থেকে আমার জানতে পারি যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা পালন করতেন। শাবান মাসের সিয়ামই ছিল তার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এ মাসের প্রথম থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এবং কখনো কখনো প্রায় পুরো শাবান মাসই তিনি নফল সিয়াম পালন করতেন। এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ মাসে রাব্বুল আলামিনের কাছে মানুষের কর্ম উঠানো হয়। আর আমি ভালোবাসি যে— রোজা রাখা অবস্থায় আমার আমল উঠানো হোক।’ (নাসাই)

হাদিসে এবং সাহাবি-তাবিয়াদের যুগে ‘লাইলাতুল বারাআত’পরিভাষাটি ছিল না। হাদিসে এ রাতটিকে ‘লাইলাতু নিসফি শাবান’ বা ‘মধ্য শাবানের রাত’ বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবানের রাতে তার সৃষ্টির প্রতি দৃকপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ)

আট জন সাহাবির সূত্রে বিভিন্ন সনদে এ হাদিসটি বর্ণিত। শবে বরাত বিষয়ে এটিই একমাত্র সহিহ হাদিস। এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ রাতটি ফজিলতময় এবং এ রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের ক্ষমা করেন। আর ক্ষমা লাভের শর্ত হলো শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হওয়া। এ দুটি বিষয় থেকে যে ব্যক্তি মুক্ত হতে পারবেন তিনি কোনোরুপ অতিরিক্ত আমল ছাড়াই এ রাতের বরকত ও ক্ষমা লাভ করবেন। আর যদি এ দুটি বিষয় থেকে মুক্ত হতে না পারি, তবে কোনো আমলেই কাজ হবে না। কারণ ক্ষমার শর্ত পূরণ হলো না। দুঃখজনক হলো— আমরা শবে বরাত উপলক্ষে অনেক কিছুই করি, তবে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এ দুটি শর্ত পূরণের চেষ্টা খুব কম মানুষই করেন।

শিরকের ভয়াবহতা আমরা জানি। আরেকটি ভয়ংকর পাপ হিংসা-বিদ্বেষ। মহাপাপ হওয়া ছাড়াও এ পাপের দুটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথমত, তা অন্যন্যা নেক আমল ধ্বংস করে দেয়। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে যে, আগুন যেমন খড়কুটো ও খড়ি পুড়িয়ে ফেলে হিংসাও তেমনি মানুষের নেক আমল পুড়িয়ে ফেলে। এ পাপের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হলো— আল্লাহর সাধারণ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হওয়া। উপরের হাদিস থেকে আমরা তা জেনেছি। এ বিষয়ে অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষদের আমল প্রতি সপ্তাহে দুবার পেশ করা হয়— প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার। তখন সব মুমিন বান্দাকে ক্ষমা করা হয়, কেবলমাত্র যে বান্দার সঙ্গে তার ভাইয়ের বিদ্বেষ-শত্রুতা আছে সে ব্যক্তি বাদে। বলে দেওয়া হয়, এরা যতক্ষণ না ফিরে আসে ততক্ষণ এদের বাদ দাও। (মুসলিম)

মুসলিম ভাইকে ভালোবাসা ও তার কল্যাণ কামনা যেমন ফরজ ইবাদত, তেমনি ভয়ংকর হারাম পাপ হলো মুসলিম ভাইকে শত্রু মনে করা, তার প্রতি হৃদয়ের মধ্যে অশুভকামনা ও শত্রুতা পোষণ করা । কোনো কারণে কাউকে ভালোবাসতে না পারলে অন্তত শত্রুতা ও অশুভকামনার অনুভূতি থেকে হৃদয়কে রক্ষা করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব।

কালামে পাকে এরশাদ হয়েছে— হে আমাদের প্রভু, আপনি আমাদের ক্ষমা করুন এবং ঈমানের ক্ষেত্রে অগ্রণী আমাদের ভাইদের ক্ষমা করুন। আর আপনি আমাদের অন্তরে মুমিনদের বিরুদ্ধে কোনো হিংসা, বিদ্বেষ বা অমঙ্গল ইচ্ছা রাখবেন না। হে আমাদের প্রভু, নিশ্চয় আপনি মহা করুণাময় ও পরম দয়ালু। (সুরা হাশর, আয়াত নম্বর-১০)

আসুন আমরা সবাই আল্লাহর দরবারে এভাবে বারবার প্রার্থনা করে নিজেদের অন্তরকে সব হিংসা, বিদ্বেষ ও অহংবোধ থেকে পবিত্র করি। আসুন আমরা শবে বরাত উপলক্ষে সব প্রকার শিরক, হিংসা ও বিদ্বেষ থেকে তাওবা করি ও হৃদয়কে মুক্ত করি।

জাগতিক কারণে বা ধর্মীয় মতভেদের কারণে যাদের প্রতি শত্রুভাব বা বিদ্বেষ ছিল তাদের জন্য দোয়া করি। তাহলে আমাদের কয়েকটি লাভ হবে। প্রথমত, কঠিন পাপ থেকে তাওবা হলো। দ্বিতীয়ত, শবে বরাতের সাধারণ ক্ষমা লাভের সুযোগ হল। তৃতীয়ত, বিভিন্ন সহিহ হাদিস থেকে আমরা জানি যে, হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত হৃদয় লালন করা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর অন্যতম সুন্নাত। যার মনে হিংসা, বিদ্বেষ বা অমঙ্গল কামনা নেই— তিনি অল্প আমলেই জান্নাত লাভ করবেন এবং জান্নাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সাহচর্য লাভ করবেন।

এক্ষেত্রে শবে বরাত সর্ম্পকে কয়েকটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে। প্রথমত, এ রাতের নামাজের কোনো সুনির্ধারিত নিয়ম হাদিসে বলা হয়নি। অমুক সুরা অতোবার পড়ে, অতো রাকাত সালাত আদায় করলে অতো সাওয়াব ইত্যাদি যা কিছু বলা হয় সবই জাল ও বানোয়াট কথা। মুমিন তার সুবিধামত যে কোনো সুরা দিয়ে যে কয় রাকাত সম্ভব সালাত আদায় করবেন এবং দোয়া করবেন।

দ্বিতীয়ত, জিয়ারত, দোয়া, সালাত সবই একাকী আদায় করাই সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বা সাহাবিরা কেউ কখনোই এ রাতে মসজিদে সমবেত হননি বা সমবেতভাবে কবর জিয়ারত করতে যান নি। সব নফল নামাজ ও তাহাজ্জুদের মতো এ রাতের নামাজও নিজের বাড়িতে পড়া সুন্নত। হাদিস থেকে আমরা জানি যে, এতে বাড়িতে বরকত নাযিল হয়। এ ছাড়া এতে স্ত্রী ও সন্তানরা উৎসাহিত হয়।

শবে বরাত হলো ইবাদত বন্দেগি ও দোয়া-ক্রন্দনের রাত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা একে খাওয়া-দাওয়া ও উৎসবের রাত বানিয়ে ফেলেছি। এ রাতে হালুয়া-রুটি বা ভালো খাবার খাওয়া ও এরুপ করার মধ্যে কোনো সাওয়াব আছে বলে কল্পনা করা ভিত্তিহীন— যা কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়। এ রাতে আলোকসজ্জা, কবর বা গোরস্তানে আলোকসজ্জা, বাজি ফোটানো ইত্যাদি আরও গুরুত্বর অন্যায়। এগুলো মূলত এ রাতের ইবাদত ও আন্তরিকতা নষ্ট করে এবং মুমিনকে বাজে কাজে ব্যস্ত করে।

ফরজ ও নফলের সীমারেখা অনুধাবন করা অত্যন্ত গরুত্বপূর্ণ। অনেকে শবে বরাতের রাত্রিতে কম বেশি কিছু নামাজ পড়েন, কিন্তু সকালে ফযরের নামাজ জামাতে পড়ছেন না বা মোটেই পড়ছেন না। এর চেয়ে কঠিন আত্মপ্রবঞ্চনা আর কিছুই হতে পারে না। শবে বরাত বা অনুরুপ রাত বা দিনগুলোতে আমরা যা কিছু করি না কেন সবই নফল ইবাদত। সারা জীবনের সকল নফল ইবাদতও একটি ফরজ ইবাদতের সমান হতে পারে না। জীবনে যদি কেউ শবে বরাতের নামও না শুনে, কিন্তু ফরজ-ওয়াজিব ইবাদত আদায় করে যায় তবে তার নাজাতের আশা করা যায়। আর যদি জীবনে ১০০টি শবে বরাত পরিপূর্ণ আবেগ নিয়ে ইবাদত করে কাটায়, কিন্তু একটি ফরজ ইবাদত ছেড়ে দেয় তবে তার নাজাতের আশা থাকে না। আল্লাহর ফরজ নির্দেশ অমান্য করে এক রাতে কান্নাকাটি করে তার কাছ থেকে ভাল ভাগ্য লিখিয়ে নেওয়ার মত চিন্তা কি কোনো পাগল ছাড়া কেউ করবে? ফরজ ইলম, আকিদা, নামাজ, যাাকাত, রোজা, হজ্ব, হালাল উপর্জন, সাংসারিক দায়িত্ব, পিতা-মাতা, সন্তান ও স্ত্রীর দায়িত্ব, সামাজিক দায়িত্ব সৎকাজে আদেশ, অসৎকাজ থেকে নিষেধ ইত্যাদি সকল ফরজ ইবাদত, যার ক্ষেত্রে যতটুকু প্রযোজ্য, তাকে ততটুকু অবশ্যই পালন করতে হবে।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, মুমিন যদি একটু আগ্রহী হন তবে প্রতি রাতই তার জন্য শবে বরাত। বুখারি, মুসলিম ও অন্যান্য ইমাম সংকলিত সহিহ হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতি রাতের প্রথম তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হলে আল্লাহ প্রথম আসমানে নেমে বলেন, আমিই রাজাধিরাজ, আমিই রাজাাধিরাজ। আমাকে ডাকার কেউ আছ কি? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। আমার কাছে চাওয়ার কেউ আছ কি? আমি তাকে প্রদান করব। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার কেউ আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। প্রভাতের উন্মেষ হওয়া পর্যন্ত এভাবে তিনি বলতে থাকেন। (মুসলিম)

অন্যন্যা হাদিসে বলা হয়েছে যে, মধ্যরাতের পরে এবং বিশেষত রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পরে তাওবা কবুল, দোয়া কবুল ও হাজত মেটানোর জন্য আল্লাহ বিশেষ সুযোগ দেন।

সুপ্রিয় পাঠক, তাহলে আমরা দেখছি, শবে বরাতের যে ফজিলত ও সুযোগ, তা মূলত প্রতি রাতেই মহান আল্লাহ সকল মুমিনকে প্রদান করেন। শবে বরাত বিষয়ক হাদীসগুলো থেকে বুঝা যায় যে, এ সুযোগ সন্ধ্যা থেকেই। আর উপরের সহিহ হাদিসগুলো থেকে জানা যাায় যে, প্রতি রাতেই এ সুযোগ শুরু হয় রাতের এক তৃতীয়াংশ- অর্থাৎ ৩/৪ ঘণ্টা রাত অতিবাহিত হওয়ার পরে, রাত ১০/১১টা থেকে। কাজেই মুমিনের উচিত শবে বরাতের আবেগ নিয়ে প্রতি রাতেই সম্ভব হলে শেষ রাত্রে, না হলে ঘুমানোর আগে রাত ১০/১১টার দিকে দুচার রাকআত সালাত আদায় করে মহান আল্লাহর দরবারে নিজের সব কষ্ট, হাজত, প্রয়োজন ও অসুবিধা জানিয়ে দোয়া করা, নিজের যা কিছু প্রয়োজন আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং সব পাপ-অন্যায় থেকে ক্ষমা চাওয়া। কয়েকমাস এরুপ আমল করে দেখুন, জীবনটা পাল্টে যাবে। ইনশাআল্লাহ নিজেদের জীবনে আল্লাহর রহমত অনুভব করবেন। আল্লাহ আমাদের তার নির্দেশিত পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ড. মাহবুবা রহমান: সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা

আরএ/

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস শনাক্ত। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ জনে। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৯৪ জনে অবস্থান করছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৯৪ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৮৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৩টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার চার দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ আইসোলেশনে আসেনি এবং আইসোলেশন থেকে কেউ ছাড়পত্র পায়নি। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৬৬ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৭১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৫১ জন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার সময় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপপ্রবাহে শুকিয়ে গেছে পুকুরের পানি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ অ্যালার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে বলা হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে।

দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।

গরম থেকে বাঁচতে পানিতে নেমেছেন শিশু-কিশোররা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনও পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।’

২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।

গাছের ছায়ায় বসে আরাম করছেন ক্লান্ত মানুষজন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আশু মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মাঠে জমিতে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে বেশিক্ষণ মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, সকালে কাজের জন্য অফিসে আসতে হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। সড়ক থেকে গরম উঠে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে বেশি সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না।

উথলী গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, বারবার পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখতে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে প্রতিদিন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট ওয়েভ অ্যালার্ট (তীব্র তাপদাহের সতর্কতা) জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই গণসংযোগ চলবে আগামী ৩ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজপথের আন্দোলনে বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন কেউই আমাদের দাওয়াতের বাইরে থাকবে না। আর সর্ব প্রথম দাওয়াত হবে নিজের নফসের প্রতি। আমাদের কথা ও কাজে যেন অমিল না থাকে। যেটা মানুষকে করতে বলব, সেটা যেন আমি নিজে আগে আমল করি।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি জনশক্তির কথাবার্তা, লেনদেন, সামাজিক কাজকর্ম আল্লাহর দ্বীন বা কোরআন অনুযায়ী হতে হবে। যতই বাঁধা আসুক আমরা ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দাওয়াত কার্যকর হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনলাইন মাধ্যম জুম, ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ-এ ঈদপুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধনে এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে আমাদের জীবনে কাজে লাগাতে হবে। যারা রমজানে তাকওয়া অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন মূলত তাদের জন্যই ঈদের আনন্দ। আমীরে জামায়াতের ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে ১৫ দিনব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ চলবে।

সর্বশেষ সংবাদ

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০
পালিয়ে আসা ২৮৫ সেনা সদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত নেবে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ল বাস, প্রকৌশলী নিহত
১০ হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক লুৎফুলকে শোকজ করল আওয়ামী লীগ
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন