শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫ | ৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

মাতৃভাষার বিকৃতি রোধের অপরিহার্যতা

একুশ মানে মাথা নোয়াবার নয়, একুশ মানে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। আমরা সেই একমাত্র জাতি, যারা রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে উনিশ শ বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রাণ দিয়েছি। প্রাণ দিয়েছে বাঙালি তরুণ ছাত্র-জনতা। বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। আমরা জাতি হিসেবে সাহসী আপোসহীন প্রতিবাদী। মাতৃভাষায় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে আমাদের অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেওয়া পৃথিবীতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। সর্বোপরি বাঙালির এই মহান আত্মত্যাগকে গোটা বিশ্ব স্মরণ করে এ দিবস পালনের মাধ্যমে। সারা বিশ্বে একযোগে এক কণ্ঠে গেয়ে বেড়ায় একুশে ফেব্রুয়ারির গান। পৃথিবীর সকল প্রজন্ম জানবে বাঙালির ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা, জানবে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন জাতিসত্তার কথা। এটি আমাদের গর্ব, বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির গর্ব।

বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। অর্থনৈতিক ভিত্তি দিন দিন নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছে। পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই মোটেও, আর উন্নতির এই সোপানে এগিয়ে যেতে অমর একুশ এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন প্রতি বছর আমাদের বিশেষভাবে উজ্জীবিত করে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, অমর একুশের আজ ৭০ বছর হলেও, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রধান স্লোগান ‘সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রয়োগ হোক’ তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বাংলা ভাষা ব্যবহারে আমাদের যত্ন নেই। শুদ্ধ বাংলায় কথা বলা, বাংলায় শুদ্ধতা বজায় রাখা, এমনকি নব্য প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষা শেখার প্রতি অনাগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এখনো রায় লেখা হয় ঔপনিবেশিক ভাষা ইংরেজিতে। প্রশাসন থেকে শুরু করে দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও দিন দিন ইংরেজি ভাষার আধিপত্য বাড়ছে, আর বাড়ছে বাংলার প্রতি অবজ্ঞা ঔদাসীন্য। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলা ভাষার অপমৃত্যু দেখতে পাচ্ছেন ভাষাবিদরা।

এছাড়াও দেশের মাটিতে বড়ো হওয়া প্রজন্ম ইংরেজি টোনে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ভাষাকে বিকৃত করে অনায়াসে। তার কারণ; তারা মনপ্রাণে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, ভিন্ন ভাষা না শিখলে উন্নত হ‌ওয়া যাবে না। এই জন্যে তারা চরমভাবে ইংরেজির প্রতি ঝুঁকছে, এবং রাষ্ট্রও পরোক্ষভাবে তাদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে- সবচেয়ে আকর্ষণীয় চাকরি, ব্যবসা বা অন্যান্য সুযোগ ভোগ করাটা সহজ করে দিয়ে। অন্যদিকে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সাধারণ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমন বৈষম্য থেকে রক্ষা পেতে সাধারণ শ্রেণির মানুষের মধ্যেও ইংরেজির প্রতি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে এবং পক্ষান্তরে বাংলার প্রতি তৈরি হচ্ছে অবহেলা ও উপেক্ষা। আমরা কি জাপানি, জার্মানি, চাইনিজ জাতিদের দিকে তাকাতে পারি না, তারা তো ভাষার জন্যে রক্ত দেয়নি। আজ তারা নিজ ভাষা চর্চার করে, নিজ ভাষায় কথা বলেই নিজেদেরকে বিশ্বে সব থেকে উন্নত জাতি হিসাবে গড়ে তুলেছে। চীনা বা জাপানির মতো জটিল চিত্রলিপির ভাষায় যদি উন্নত জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তির চর্চা চলতে পারে, মহাকাশ গবেষণা ও আণবিক গবেষণা চলতে পারে, তাহলে বাংলার মতো উন্নত ভাষায় তা চলবে না কেন? সেখানে মাতৃভাষার বদলে বিজাতীয় ভাষা ইংরেজির প্রয়োজন হবে কেন? মূলত, সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রয়োগের বিষয় আসলেই একশ্রেণীর কাছে বড়ো অনীহা কাজ করে। কোথায় যেন এক ধরনের হীনমন্যতা। কেন এমন করা হয়? এসব প্রশ্নের কোনো জবাব নেই!

১৯৭৮ সালের আইন অনুযায়ী সরকারি অফিস, আদালত, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন ছাড়া অন্য যে কোনো নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলি বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়। এমনকি উল্লিখিত কর্মস্থলে যদি কোনো ব্যক্তি বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় আবেদন বা আপিল করেন, সেটা বেআইনি ও অকার্যকর বলে গণ্য হবে। কিন্তু তার বাস্তবায়নের নযির এই পর্যন্ত কোথাও মিলেনি। বিপরীতে ঢাকা রাজধানীর অলিগলি সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, ব্যানার, পোস্টারেও বানানরীতি যত্ন নেই। কোথাও বিদেশি শব্দ লেখা হয়েছে বাংলায়। আবার কোথাও অহেতুক বাংলা শব্দকে ইংরেজিতে লেখা হয়েছে। আবার ইংরেজি নাম লেখা হয়েছে বাংলা হরফে। স্টাইল শো, স্টার ফ্যাশন, সেঞ্চুরি, টপ ফ্যাশন, ক্যাটস আই, মনসুন, চাংপাই, ইয়ামী-ইয়ামী ইত্যাদি। ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর পরও ভুল বানানের ছড়াছড়ি সর্বত্র। যুগের পর যুগ নানাভাবে এ বিষয়ে কথা উঠলেও বিপরীতে বাংলার অবমাননা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে।

এ ছাড়া এখন ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রীর বাংলা শুনলে এটা যে তাদের মাতৃভাষা তা মনে হয় না। কোনো কোনো গণমাধ্যম বা বিজ্ঞাপনে এখন ইংরেজি-বাংলা-হিন্দি-আঞ্চলিক ভাষা মিশিয়ে যে কী বলা হচ্ছে, তার সংজ্ঞা দেওয়া দুষ্কর। তরুণেরা এখন যে ভাষার দিকে ঝুঁকছে, তা না প্রমিত, না বিশেষ কোনো আঞ্চলিক ভাষা। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এসএমএস এবং ই-মেইলের অসম্পূর্ণ শব্দ ও বাক্যের যথেচ্ছ ব্যবহার। ব্যাকরণ, বানান ও প্রথাকে তুচ্ছ করার এই প্রবণতা আত্মহননের সমতুল্য বলে ভাবছেন প্রবীণ বাণীসাধকেরা। মূলত মায়ের ভাষার চর্চাটা পরিবার থেকে উৎসাহিত করতে হবে। এই একুশ আমাদের কেবল গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে মনে করিয়ে দেয়না, দেয় সাবধান বাণীও। মনে করিয়ে দেয় ভাষার স্বাভাবিক মৃত্যুর ইতিহাস। ভাষাবিদেরা লক্ষ করেছেন যে গত শতাব্দী থেকে বিপন্ন কিংবা মৃত ভাষার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট ৪২ হাজার ১৯২টি ভাষার মধ্যে পৃথিবীতে এখন মাত্র ছয় হাজার ভাষা জীবিত। এবং এখন যে হারে ভাষা অবলুপ্ত হচ্ছে, তাতে আগামী ১০০ বছরে ৫০ শতাংশ ভাষা হারিয়ে যাবে। অর্থাৎ, প্রতি দুই সপ্তাহে মৃত্যু হবে অন্তত একটি ভাষা।

সুতরাং বিশ্বায়নের এই যুগে বাইরের আক্রমণ সম্পর্কে যেমন সজাগ থাকতে হয়, তেমনি ঔদাসীন্য ঝেড়ে মাতৃভাষা পরিচর্যায় আরও অনেক বেশি যত্নশীল হওয়ারও কোনো বিকল্প নেই। মানবদেহ যেমন প্রতিদিন খাদ্য ও যত্ন দাবি করে, ভাষাও তেমনি কেবল হৃদয়ে সীমাবদ্ধ নয়, কথায়, কাজে সর্ব হালতে জড়িয়ে নিতে হবে। অনতিবিলম্বে বাংলা ভাষা চর্চা না করার দীনতা পরিহার করতে হবে সবার। কেবল ফেব্রুয়ারি মাস নয়,মায়ের ভাষা বাঁচানোর তাগিদ বছর জুড়ে থাকতে হবে। ভিনদেশী ভাষা চর্চা সংকুচিত করতে হবে। যদি ভাষার প্রতি আমাদের এমন অপ্রত্যাশিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না আনি সামনে পুরা জাতির জন্যে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। যদি বাঙালি জাতি তার মাতৃভাষা হারিয়ে ফেলে, তাহলে তার পূর্বপুরুষের অর্জিত অমূল্য সেই ভান্ডারের দ্বার শুধু তার জন্যই নয়, পুরো মানবজাতির জন্য চিরতরে রুদ্ধ হয়ে যাবে। পরিশেষে বলি, একুশের শীর্ষ দাবি সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন হোক। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বমহলে নেওয়া হোক মাতৃভাষা বিকৃতি রোধের অঙ্গীকার।

লেখক: এম. আতহার নূর
শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এসএ/

Header Ad
Header Ad

গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী পাশে না দাঁড়ালে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হতো: নুর    

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ছবিঃ সংগৃহীত

২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী যদি জনগণের পাশে এসে না দাঁড়াত তাহলে দেশে একটি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতো বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, কিছু বুদ্ধিজীবী কৌশলে গণঅভ্যুত্থানে সেনা কর্মকর্তাদের অবদান অস্বীকার করে বিভাজন তৈরি করতে চায়। এতে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে সবাইকে এই বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশ শেষে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে একটি গণমিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি পল্টন থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ও জাতীয় প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে আবার গণ অধিকারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

সমাবেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, নতুন করে এটা নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজন নেই। আওয়ামী লীগের রাজনীতি বন্ধে ৫ আগস্টেই জনগণ রায় দিয়েছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা।

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফারুক হাসান, হাসান আল-মামুন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকারের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

Header Ad
Header Ad

সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের ঘোষণা সেনাবাহিনীর  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ফের প্যারালিমিটারি বাহিনীর হাত থেকে দখলে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ব্যাকফুটে ছিল। তবে সম্প্রতি সাফল্য অর্জন করতে শুরু করে এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছ থেকে দেশের কেন্দ্রস্থল পুনরুদ্ধার করেছে।

এদিকে আরএসএফ পশ্চিমাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করেছে, যুদ্ধে তাদের অবস্থান শক্ত করেছে এবং দেশকে কার্যত বিভক্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আরএসএফ তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে একটি সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে।

যদিও তারা বড় আকারে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা মধ্য খার্তুমের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সামরিক সূত্র জানিয়েছে, আরএসএফ যোদ্ধারা প্রায় ৪০০ মিটার দূরে সরে গেছে।

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে সেনা সদস্যদের উল্লাস করার ভিডিও শেয়ার করেছে সেনাবাহিনী। ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের জানালার কাচ ভেঙে গেছে এবং দেওয়াল বুলেটের দাগে ভরা।রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাবিল আবদাল্লাহ জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েছে।

আবদাল্লাহ জানিয়েছেন, আমাদের বাহিনী শত্রু যোদ্ধাদের পুরো সরিয়ে দিয়েছে এবং তাদের বিরাট অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জয় পুরোপুরি না আসা পর্যন্ত এই লড়াই চলবে। তবে এনিয়ে আরএসএফে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে সশস্ত্র বাহিনীতে আধাসামরিক বাহিনীর একীকরণকে কেন্দ্র করে ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আরএসএফ দ্রুত খার্তুমের প্রাসাদসহ শহরের বাকি অংশও দখল করে নেয়।

Header Ad
Header Ad

আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন নিয়ে আমার সাথে আলোচনা হয়নি : সোহেল তাজ

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। ছবিঃ সংগৃহীত

আমি রাজনীতিতে নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। তিনি বলেন, নোংরা, পচা রাজনীতিতে আমার আগ্রহ নেই। আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন হলে নেতৃত্ব দেবেন সাবের হোসেন চৌধুরী ও সোহেল তাজ- লেখক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্যের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন সোহেল তাজ।

শুক্রবার (২১ মার্চ) গণমাধ্যমকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন সোহেল তাজ।

আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন হলে নেতৃত্ব দেবেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন নিয়ে কারও সাথে আমার কোনো আলোচনা হয়নি। আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানি না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতা আর জনগণের নীতি-আদর্শভিত্তিক দল ছিল আওয়ামী লীগ। বাকশালে সেই আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত হয়। আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করতে হলে একাত্তরের আগের আদর্শে ফিরে যেতে হবে।

নতুন করে নতুন দল নিয়ে রাজনীতিতে ফিরে আসবেন কিনা জানতে চাইলে সোহেল তাজ সরাসরি এর উত্তর দেননি। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মই দেশ গড়বে। তারাই হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক। নতুন প্রজন্ম যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পিওর হার্ট নিয়ে দেশ গড়তে এগিয়ে আসে তবে তাদের পাশে থাকবেন সোহেল তাজ।

এর আগে বৃহস্পতিবার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরী সভাপতি আর বডি সোহেলকে সাধারণ সম্পাদক এইভাবে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হবে। এই পুনর্গঠিত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যাবে। এইটা যৌথ সিদ্ধান্ত। এতে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ব্রিটেনের সমর্থন আছে। এই কারণেই সাবের হোসেন চৌধুরীকে জেলে রাখা যায়নি।

পিনাকীর এই বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়েছেন সোহেল তাজ। শুক্রবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পিনাকী ভট্টাচার্যের বক্তব্য সংবলিত একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে পোস্ট দেন তিনি। ওই পোস্টে পিনাকীর দাবিকে মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

পিনাকী ভট্টাচার্য ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, সাবের হোসেন চৌধুরী সভাপতি আর বডি সোহেলকে সাধারণ সম্পাদক এইভাবে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হবে। এই পুনর্গঠিত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যাবে। এইটা যৌথ সিদ্ধান্ত। এতে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ব্রিটেনের সমর্থন আছে। এই কারণেই সাবের হোসেন চৌধুরীকে জেলে রাখা যায়নি।

পিনাকী আরও লিখেন, ১৯৭৫ এর পনোরোই আগস্টের বিপ্লবীদের দেশ ছাড়তে হয়েছিল। তারা বিভক্ত হতে হতে শক্তিহীন হয়ে পড়ে। যারা ১৯৭৫ এর বেনিফিসিয়ারি তারা বিপ্লবীদের বাঁচায়নি। একাংশ রাজনৈতিক দল তৈরি করলো ফ্রিডম পার্টি। আরেক অংশ খন্দকার মুশতাককে মাঝে রেখে দল গড়তে চেয়ে ব্যর্থ হলো। হাসিনা ফিরে এলো। ২০২৪ এ আবার ১৯৭৫ এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। সেই একই ব্যবস্থা সেই একই কাঠামো অবিকৃত রেখে রাষ্ট্র চলবে। লুটপাট চলবে, ভারতের কর্তৃত্ব চলবে। ২৪ এর নায়কেরা ভুল আর বিভেদের পঙ্কিল আবর্তে ডুবে যাবে। আর এখন শুরু হয়েছে একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে লড়িয়ে দেওয়া।

পিনাকী ভট্টাচার্যের এই অভিযোগকে সরাসরি ভুয়া/ফেইক নিউজ বলে আখ্যা দিয়েছেন সোহেল তাজ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী পাশে না দাঁড়ালে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি হতো: নুর    
সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের ঘোষণা সেনাবাহিনীর  
আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন নিয়ে আমার সাথে আলোচনা হয়নি : সোহেল তাজ
দুপুরের মধ্যে তিন বিভাগে কালবৈশাখী আঘাত হানবে  
গাজার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতালও ধ্বংস করে দিল ইসরায়েল  
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক এনসিপির
ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ: নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ
শেখ হাসিনার মতো নব্য ফ্যাসিবাদীরা জাতীয় পার্টিকে ব্ল্যাকমেইল করছে: জি এম কাদের
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের মিছিল, যুবলীগ নেত্রীসহ আটক ৩
তাসকিনের আইপিএল অভিষেকের সম্ভাবনা, যোগাযোগে মিলেছে ইতিবাচক সাড়া!
স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাসনের সুযোগ পায়, এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না: তারেক রহমান
ট্রেনের ১৩০ টিকিটসহ নৌবাহিনী কর্মচারী আটক
জনগণ সুযোগ দিলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিএনপির কিছু বলার নেই: রিজভী
বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সুযোগ নেই : মামুনুল হক
টাঙ্গাইলে আগুনে পুড়ল ২১ দোকান, ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি
ব্যাংককে ড. ইউনূস-মোদির মধ্যে বৈঠক হচ্ছে না
রাত ১টার মধ্যে ৯ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা
পৃথিবীর সর্বত্র আজ দিন-রাত সমান
নরসিংদীতে আ. লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে নিহত ২, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০
বাতিল হচ্ছে শেখ মুজিবসহ চার শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি