শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ | ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মি’রাজ মহানবী (স.) এর ঊর্ধ্বজগত ভ্রমণ

মি’রাজ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। পরিভাষায় মিরাজ হলো, মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় হজরত জিবরাঈল (আ.) ও হযরত মীকাঈল (আ.) সমবিব্যাহারে বুরাক বাহন মাধ্যমে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে, প্রথম আসমান থেকে একে একে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুন্তাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আযীম পর্যন্ত ভ্রমণ; মহান রব্বুল আলামীনের সাথে দীদার লাভ ও জান্নাত জাহান্নাম পরিদর্শন করে ফিরে আসা। 

মি’রাজের একটা অংশ হলো ইসরা। ইসরা অর্থ রাত্রিকালীন ভ্রমণ। যেহেতু নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মি’রাজ রাত্রিকালে হয়েছিলো তাই এটিকে ইসরা বলা হয়। বিশেষত বাইতুল্লাহ শরীফ থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফরকে ইসরা বলা হয়ে থাকে। কোরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেন: “তিনি পবিত্র (আল্লাহ) যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার আসপাশ আমি বরকতময় করেছি। যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনসমূহ দেখাতে পারি। নিশ্চয় তিনিই সর্বস্রোতা সর্বদ্রষ্টা।” (সূরা-১৭ ইসরা- বনী ইসরাঈল, আয়াত: ১)। 

মি’রাজ সংঘটিত হয়েছিলো নবুওয়াতের এগারোতম বছর সাতাইশ রজব। তখন নবীজির বয়স একান্ন বছর। এবছর নবীজির চাচা আবুতালিব মৃত্যু বরণ করেন এবং আবু তালিবের মৃত্যুর একসপ্তাহের মধ্যে নবীজির সহধর্মিনী হযরত খাদীজাতুল কুবরা (রা.) এর ওফাত হয়। ঘরে বাইরে এদু’জন নবীজির অতি প্রিয় ও জীবনের বড় অবলম্বন ছিলেন। একই বছর প্রধান দুই প্রিয়ভাজন ও অবলম্বন হারিয়ে নবীজি খুবই বিচলিত হন। তাই এবছরকে আমুল হুযন বা দুশ্চিন্তার বছর বলা হয়। প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে শান্তনা দেওয়ার জন্য ও স্বীয় রহস্যলোক দেখানোর জন্য আল্লাহ তাআলা স্বীয় হাবীবকে মি’রাজে নিয়ে যান। 

মি’রাজ হয়েছিলো সশরীরে জাগ্রত অবস্থায়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকদের অস্বীকৃতি ও অবিশ্বাস। যদি আধ্যাত্মিক বা রূহানীভাবে অথবা স্বপ যোগে হওয়া কথা বলা হতো, তাহলে তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিলো না। মি’রাজের বিবরণ কোরআন কারীমে সূরা নাজমে সূরা ইসরায় বিবৃত হয়েছে। হাদীস শরীফে বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ ও সিহাহ সিত্তাসহ অন্যান্য কিতাবে এই ইসরা ও মি’রাজের বিষয়টি নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ সূত্রে সবিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। 

আল্লাহ তাআলা বলেন: “শপথ নক্ষত্রের যখন তা বিলীন হয়। তোমাদের সাথী (মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিপথগামী হননি এবং বিভ্রান্ত হননি। আর তিনি মনখোদ কথা লেন না। (বরং তিনি যা বলেন) তা প্রদত্ত ওহী (ভিন্ন অন্য কিছু) নয়। তাকে শিখিয়েছেন মহাশক্তিধর (জিবরাঈল আ.)। সে (জিবরাঈল আ.) পাখাবিশিষ্ট, সে স্থিত হয়েছে দূর উর্ধে। অতপর নিকটবর্তী হলো, পরে নির্দেশ করলো। তারপর হলো দুই ধনুকের প্রান্তবর্তী বা আরো নিকট। পুনরায় তিনি ওহী করলেন তাঁর বান্দার প্রতি যা তিনি ওহী করেছেন। ভুল করেনি অন্তর যা দেখেছে। তোমরা কি সন্দেহ করছো তাকে, যা তিনি দেখেছেন সে বিষয়ে। আর অবশ্যই দেখেছেন তিনি তাকে দ্বিতীয় অবতরণ স্থলে; ছিদরাতুল মুন্তাহার কাছে; তার নিকটেই জান্নাতুল মাওয়া। যখন ঢেকেগেলো ছিদরা যা ঢেকেছে; না দৃষ্টিভ্রম হয়েছে আর না তিনি বিভ্রান্ত হয়েছেন; অবশ্যই তিনি দেখেছেন তাঁর রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ।” (সূরা-৫৩ নাজম, আয়াত: ১-১৮)। 

মি’রাজ সফরে যাঁদের সাথে দেখা হলো: 

প্রথম আসমানে হজরত আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে হজরত ইয়াহইয়া (আ.) ও হজরত ঈসা (আ.), তৃতীয় আসমানে হজরত ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে হজরত ইদরীস (আ.), পঞ্চম আসমানে হজরত হারূন (আ.), ষষ্ঠ আসমানে হজরত মূসা (আ.), সপ্তম আসমানে হজরত ইব্রাহীম (আ.)। প্রত্যেকের সাথে সালাম কালাম ও কুশল বিনিময় হয়েছে। তিনি বাইতুল মামুর গেলেন, যেখানে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসেন ও প্রস্থান করেন; তারা দ্বিতীয়বার আসার সুযোগ পান না। অতঃপর সিদরাতুল মুন্তাহার নিকটে গেলেন। সেখানে চারটি নদী দেখলেন; দুটি প্রকাশ্য ও দুটি অপ্রকাশ্য। অপ্রকাশ্য দুটি নদী জান্নাতের আর প্রকাশ্য নদী দুটি হলো নীল ও ফোরাত। তারপর বাইতুল মামুরে পৌঁছলে এক পেয়ালা শরাব, এক পেয়ালা দুধ ও এক পেয়ালা মধু পেশ করা হলো। তিনি (স.) দুধ পান করলেন, এটাই স¦ভাব সুলভ (ইসলাম)। (বুখারী শরীফ: ৩৬৭৪, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৫৪৮-৫৫০)। 

মি’রাজের সিদ্ধান্তাবলী: 

মি’রা রজনীতে হাবীব ও মাহবূবের এ একান্ত সাক্ষাতে চৌদ্দটি বিষয় ঘোষণা হয়েছে। যথা: (১) আল্লাহকে তাঁকে ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না, (২) পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যাবহার করবে, (৩) নিকট স্বজনদের তাদের অধিকার দাও; (৪) মিসকীনদের ও পথসন্তানদের (তাদের অধিকার দাও); (৫) অপচয় করো না, অপচয়কারী শয়তানের ভাই, (৬) কৃপণতা করো না, (৭) সন্তানদের হত্যা করবে না, (৮) ব্যভিচারের নিকটেও যেয়ো না, (৯) মানব হত্যা করো না, (১০) এতিমের সম্পদের কাছেও যেয়ো না, (১১) প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো, (১২) মাপে পূর্ণ দাও, (১৩) অবস্থান করো না যাতে তোমার জ্ঞান নেই, (১৪) পৃথিবীতে গর্বভরে চলো না। এসবই মন্দ, তোমার রবের কাছে অপছন্দ। (সূরা-১৭ ইসরা- বনী ইসরাঈল, আয়াত: ২২-৪৪,)। নবীজি (স.) জান্নাত জাহান্নামও পরিদর্শন করেছেন। 


কি পাপে, কি শাস্তি? 

বেনামাজীর শাস্তি দেখলেন, বড় পাথর দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হচ্ছে, আঘাতে মাথা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে, পুনরায় ভালো হয়ে যাচ্ছে, আবার আঘাত করা হচ্ছে। 

জাকাত না দেওয়ার শাস্তি দেখলেন। তাদের সমুখে ও পশ্চাতে পাওণাদারেরা থাকবে। তারা পশুবৎ চরবে এবং নোংরা আর্জনা ময়লা ও পুঁজ এবং কাঁটাযুক্ত আঠালো বিষাক্ত ফল, জাহান্নামের উত্তপ্ত পাথর ভক্ষণ করবে। 

এই উম্মতের চোগলখোরের শাস্তি দেখলেন, তাদের পাশ্বদেশ হতে গোস্ত কেটে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে; আর বলা হচ্ছে, যেভাবে তোমার ভাইয়ের গোস্ত খেতে সেভাবে এটা ভক্ষণ করো। অনুরূপ দেখলেন গীবতকারীদের শাস্তি। তাদের অগ্নময় লোহার নখর দিয়ে তারা তাদের চেহারা ও বক্ষ বিদীর্ণ করছে। বললেন, হে জিবরীল! (আ.) এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো সেসব লোক যারা পশ্চাতে মানুষের গোস্ত খেতো (আড়ালে সমালোচনা করতো)। 

দেখলেন সুদখোরদের বড় বড় পেট, যার কারণে তারা তাদের অবস্থান থেকে নড়াচড়া করতে পারছে না। তাদের সাথে রয়েছে ফেরাউন সম্প্রদায়, তাদেরকে অগ্নিতে প্রবিষ্ট করানো হচ্ছে। 

জেনাকার বদকার নারী, যারা ব্যভিচার করেছে এবং ভ্রুণ ও সন্তান হত্যা করেছে, তাদের দেখলেন স্তনদ্বয়ে আংটা লাগিয়ে কাউকে পায়ে আংটা লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে; তারা অর্তচিৎকার করছে।  

ব্যভিচারী জেনাকার পুরুষের শাস্তি দেখলেন। এক সম্প্রদায় তাদের সামনে একটি উত্তম পাত্রে উপাদেয় তাজা ভূনা গোস্ত এবং অন্য নোংরা একটি পাত্রে পঁচা মাংস। তারা উত্তম পাত্রের উন্নত তাজা সুস্বাদু গোস্ত রেখে নোংরা পাত্রের পঁচা মাংস ভক্ষণ করছে। বললেন, হে জিবরীল! (আ.) এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো ঐসব পুরুষ যারা স্বীয় বৈধ স্ত্রী রেখে অন্য নারী গমন করেছে এবং ঐসব নারী যারা স্বীয় বৈধ স্বামী রেখে পর পুরুষ গামিনী হয়েছে। 


দেখলেন এক লোক বিশাল লাকড়ির বোঝা একত্র করেছে, যা সে উঠাতে পারছে না; কিন্তু আরো লাকড়ি তাতে বৃদ্ধি করছে। বললেন, হে জিবরীল! (আ.) এটা কি? তিনি বললেন, এ হলো আপনাপর উম্মতের সে ব্যক্তি যে মানুষের আমানত আদায় করেনি; বরং আরো অধিক গ্রহণ করেছে। 

দেখলেন অশ্লীল বাক্য ব্যবহারকারী ফেতনা সৃষ্টিকারীদের শাস্তি। তাদের জিহবা ও ঠোঁট লোহার কাঁচি দ্বারা কর্তন করা হচ্ছে, পুনরায় তা পূর্বানুরূপ হয়ে যাচ্ছে এবং আবার কাটা হচ্ছে; এভাবেই চলছে। 

দেখলেন ছোট্ট একটি পাথর হতে বিশাল এক ষাঁড় বের হলো; পুনরায় ঐ ষাঁড় সে পাথরের ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলো; কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছিলো না। বললেন, হে জিবরীল! (আ.) এটা কি? তিনি বললেন, এটা হলো সেসব লোকের দৃষ্টান্ত যারা বড় বড় দাম্ভিকতাপূর্ণ কথা বলে লজ্জিত হয়, পরে আর তা ফিরিয়ে নিতে পারে না।  এতিমের সম্পদ আত্মসাতকারীদের দেখলেন। তাদের ওষ্ঠ অধর যেনো উঠের ঠোঁটের মতো। তাদের মুখে আগুনের জ্বলন্ত কয়লা প্রবিষ্ট করানো হচ্ছে এবং তা তাদের পায়ূপথ দিয়ে বের হয়ে আসছে।  

মদ মাদক ও নেশা গ্রহণকারীদের শাস্তি দেখলেন। তারা জাহান্নামীদের শরীর থেকে নির্গত বিষাক্ত নোংরা পুঁজ পান করছে। অনুরূপ তিনি দেখলেন ফেরাউন কন্যা মাশতা এর সমাধি। সেখানে পেলেন সুবাতাস। বললেন, হে জিবরীল! (আ.) এ সুঘ্রাণ কিসের? বললেন, এহলো ফেরাউন কন্যা মাশতা ও তার সন্তানদের সুঘ্রাণ।

নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মালিক নামে জাহান্নামের রক্ষী ফেরেশতাকে দেখলেন। সে মলিন মুখ, হাঁসি নেই, বলা হলো জাহান্নাম সৃষ্টির পর থেকে সে কখনো হাঁসে না। (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)। 

 

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি: শেখ ছাদী (র.) ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ 

E-Mail: smusmangonee@gmail.com, usmangonee9@gmail.com

 

Header Ad
Header Ad

ঢাবি উপাচার্যের দাপ্তরিক ফোন হ্যাকড, বিকাশে চাওয়া হচ্ছে টাকা

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের দাপ্তরিক মোবাইল নম্বর হ্যাক করে হ্যাকাররা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্নজনের কাছে বিকাশে টাকা দাবি করেছে। শনিবার (২৪ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দীন আহমেদ।

তিনি জানান, হ্যাকিংয়ের বিষয়টি জানার পরপরই নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)কে অবহিত করা হয়েছে।

হ্যাক হওয়া নম্বরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সময় থেকে দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পরে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল এবং বর্তমানে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান একই নম্বরটি দাপ্তরিক যোগাযোগে ব্যবহার করছিলেন।

শনিবার দুপুরে হ্যাকার ওই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একাধিক ব্যক্তিকে ‘জরুরি প্রয়োজন’ উল্লেখ করে ১৫ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। বার্তায় বলা হয়, “বিকাশে ১৫ হাজার টাকা হবে? আমার আর্জেন্ট লাগবে। এখন পাঠিয়ে দেওয়া যাবে?” আরেকটি বার্তায় লেখা ছিল, “আমি কালকে ব্যাংক থেকে তুলে দিয়ে দিব, সমস্যা নেই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদকসহ বেশ কয়েকজন এই ধরনের বার্তা পেয়েছেন। তবে অনেকে সন্দেহজনক বার্তা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।

প্রক্টর বলেন, “এটি একটি গুরুতর বিষয়। উপাচার্য স্যারের দাপ্তরিক নম্বর হ্যাক করে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা আইনি সহায়তা চেয়েছি। নম্বরটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে উপাচার্যের ব্যক্তিগত নম্বর নিরাপদ আছে।”

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিল, প্রমাণ পেল দুদক

টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিলের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করা ও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসায় নানা ভোগান্তি আর হতাশ হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভুক্তভোগী ডিজিটাল বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের গড়মিলের নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু কতিপয় কিছু মিটার রিডারদের এই ভূতুড়ে বিল ও অনিয়ম বন্ধে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি অসংখ্য ভুক্তভোগী গ্রাহক।

শুধু তাই নয়, বিল সংশোধন করতে গেলেও পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তি আর বিলম্বনায় । গ্রাহকদের অভিযোগ সময়ের বিল সময়ে না করে মিটার রিডিং না দেখেই বিল করছে মিটার রিডার। এছাড়াও গ্রাহকদের থেকে বাড়তি সুবিধাও নেন রিডাররা। ফলে বছরের পর বছর এমন ভূতুড়ে বিল দিচ্ছে তারা।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিল ও মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে মিল না থাকায় তার প্রতিকার চেয়ে জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামের ভুক্তভোগী আলতাফ হোসেন নামে এক বিদ্যুৎ গ্রাহক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আলতাফ হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার (২৪ মে) দিনব্যাপি উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগীসহ অন্যান্য গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ও মিটার রিডিং সরেজমিনে দেখে টাঙ্গাইলের দুদক। পরে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের গড়মিলের সত্যতা পান তারা।

অভিযোগকারী আলতাফ হোসেন বলেন, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলের মিল নেই। প্রতি মাসেই অতিরিক্ত বিলের ঘানি টানতে হচ্ছে। মিটার রিডিংম্যান কোমল ও জাহিদকে বললেও তারা মিটার না দেখেই ভুয়া বিল করে। এনিয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি। পরে বাধ্য হয়ে ভূতুড়ে বিলের প্রতিকার চেয়ে দুদকে অভিযোগ করি।

এসময় আরও শতাধিক গ্রাহক তাদের এমন সমস্যা নিয়ে দুদকের কাছে ভূতুড়ে বিলের কাগজ নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ তুলে ধরে। ভুক্তভোগীরা বলেন, কোমল ও জাহিদ মিটারগুলো দেখভালের দায়িত্বে। তাদের টাকা দিলে বিল কমিয়ে দেয় আর টাকা না দিলে পরের মাসে অতিরিক্ত বিল করে। বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার ব্যাপারে কথা বলেও তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

একই গ্রামের রায়হান মাস্টার নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিলের কয়েকশো ইউনিটের গড়মিল রয়েছে। প্রতিমাসেই অতিরিক্ত বিল প্রদান করে আসছি। মিটার রিডারদের বার বার মিটার দেখে বিল করতে বললেও তারা মিটার না দেখেই মনগড়া অতিরিক্ত ইউনিট বেশি লিখে বিল করে। শুধু আমি একা নই, জিগাতলা গ্রামের প্রতিটা ডিজিটাল মিটারের বিদ্যুৎ গ্রাহক এমন ভূতুড়ে বিলের শিকার।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. নুর আলম বলেন, ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভূঞাপুরের জিগাতলা গ্রামের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে শনিবার দিনব্যাপি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মিটার রিডিং ও বিদ্যুৎ বিলের কাগজের গড়মিলের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিউবো) খন্দকার কামরুজ্জামান বলেন, একজন গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা দুদক অভিযানে আসে। যেগুলো মিটারে সমস্যা সেগুলো পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হবে এবং মিটার পাঠক বা রিডারের বিরুদ্ধে কোনো বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সঠিকভাবে পেলে অফিসিয়ালভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের তথ্যমতে ভূঞাপুরে প্রায় ৫৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। তারমধ্যে প্রিপেইড মিটার রয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার এবং ডিজিটাল মিটার (পুরাতন) রয়েছে প্রায় ১৯ হাজার। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল, কালিহাতী ও গোপালপুর উপজেলার আংশিক কিছু এলাকাজুড়ে ভূঞাপুরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণের আওতায় এই ৪টি উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চায় না, বরং উপদেষ্টা পরিষদের বিতর্কিত তিন সদস্যের অপসারণ চায় দলটি—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শনিবার (২৪ মে) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করিনি, এখনো তা চাই না। আমরা বরং তাঁর কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ চাই, যাতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।”

তিনি আরও জানান, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপদেষ্টা পরিষদে যারা বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে দলটি একটি লিখিত বক্তব্যও প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দিয়েছে।

বিএনপি নেতা বলেন, “নির্বাচনের বিলম্ব মানে স্বৈরাচারের ফেরার সম্ভাবনা বাড়ানো। তাই অবিলম্বে নির্বাচনকালীন রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। আমরা চাই সংস্কার চলুক, আর সে সংস্কার বিএনপি ক্ষমতায় এলেও অব্যাহত থাকবে।”

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা কারও প্রতি প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে আইনের শাসনের পক্ষে। যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে—কিন্তু সেটা হতে হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে।”

প্রসঙ্গত, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ড. ইউনূসের পদত্যাগ সম্ভাবনা নিয়ে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তার পটভূমিতে বিএনপি এই বৈঠকে বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান এবং সালাহউদ্দিন আহমদ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাবি উপাচার্যের দাপ্তরিক ফোন হ্যাকড, বিকাশে চাওয়া হচ্ছে টাকা
টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের ব্যাপক গড়মিল, প্রমাণ পেল দুদক
প্রধান উপদেষ্টা নয়, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ চায় বিএনপি
একনেকে ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
বিয়ের পর আমার ভাগ্য খুলে গেছে: মেহজাবীন
দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত
পুলিশকে হুমকি দিয়েছে নুর: পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন
বিরামপুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার
সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশ জারি
সালমানের বাংলোতে ঢুকতে লাগবে পরিচয়পত্র, ছাড় পাবেন না তারকারাও
ড. ইউনূস জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নাটক মঞ্চস্থ করছেন: রুমিন ফারহানা
রোববার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সর্বদলীয় বৈঠক
লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার ১৪৭৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ (ভিডিও)
বিয়ের অল্পদিনের মধ্যেই বিচ্ছেদ, রাগে ঘটককে ছুরিকাঘাতে হত্যা
বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: আমীর খসরু
বলিউড অভিনেতা মুকুল দেব মারা গেছেন
ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুভমান গিল
বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান ও পরিবারের ৩৮ ব্যাংক হিসাব জব্দ
ঈদে আসছে নতুন নোট, থাকছেনা কোনো ব্যক্তির ছবি: গভর্নর
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না