মিঠাপুকুরে প্রবাসীর জমি বেদখলের অপচেষ্টা, বসতঘরে হামলা-লুটপাট

বসতঘরে হামলা-লুটপাট। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায় এক প্রবাসীর জমি দখলের উদ্দেশ্যে বসতঘরে সন্ত্রাসী হামলা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (১২ মে) গভীর রাতে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পুরান বৈরাতির মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর ভাই শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জার্মান প্রবাসী রফিকুল ইসলামের মালিকানাধীন বসতঘরে রাতের আঁধারে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বসতঘর ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান মালামাল লুটপাট করা হয়, যার মূল্য আনুমানিক আরও এক লাখ টাকা বলে দাবি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে স্থানীয় মোতাহার ওরফে মোতালেব পুরান বৈরাতির মোড়ের পাশে ৫১ শতক ডোবা জমি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের নিকট বিক্রির জন্য বায়না গ্রহণ করেন। পরে তিনি গোপনে নিজের ছেলেকে হেবানামা দলিল করে জমি স্থানান্তর করেন এবং পরে আবার সেই জমিই রফিকুল ইসলামের নিকট বিক্রয় করে তাকে দখল বুঝিয়ে দেন। এরপর থেকে রফিকুল ইসলাম ওই জমিতে টিনের ঘর নির্মাণ করে ভোগদখলে ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি মোতাহার, তার ছেলে আনিছুর, সহযোগী আঃ রহিম ও আরও ১৫/১৬ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী মিলে দেশীয় অস্ত্রসহ ওই ঘরে হামলা চালায়। এতে বসতঘর পুড়ে যায় এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবার মিঠাপুকুর থানায় গেলে পুলিশ তাদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে তারা আদালতে মামলা করেন।
শফিকুল ইসলাম আরও জানান, হামলাকারীরা এখনও তাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে প্রবাসী রফিকুল ইসলামের পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম মাস্টার, শফি মিয়া ও সাজু মিয়া জানান, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে ওই জমিতে বসবাস ও ভোগদখলে রয়েছেন। তারা বলেন, মোতাহার প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে প্রথমে জমি ছেলের নামে দলিল করে পরে আবার বিক্রি করেছেন, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।
অভিযুক্ত মোতাহারকে ঘটনার পর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার ছেলে আনিছুর বলেন, "আমার বাবা প্রতারণা করলে তার দায় তার নিজের। আমি আমার জমি ফেরত চাই।"
স্থানীয় চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি মীমাংসার জন্য দুই পক্ষকে ডাকা হয়েছিল, কিন্তু তারা আসেননি।”
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ আদালতে থাকায় আইনগত পরামর্শ অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে আদালতের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকা শান্ত রাখার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ জারি করা হয়েছে।
