শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান

যে রাতে জ্যাক ওই ঘটনার বর্ণনা শুনেছিল সে রাতে বিছানার একপাশে গুটিশুটি মেরে পড়েছিল যাতে তার ভাইয়ের গায়ের সঙ্গে ছোঁয়া না লাগে। তখনকার দিনে তারা দুভাই এক বিছানায় ঘুমাত। বমনভাব এবং ভীতি ঠেকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হয়েছিল তাকে। ঘটনার বর্ণনা শুনে কল্পনায় যেসব চিত্র আসত সেগুলো তার কাছে ভীতিকর মনে হতো। সারা জীবনই ওইসব প্রতিমূর্তি তাকে তাড়া করেছে, তার ঘুমের মধ্যেও; কখনও কখনও মাঝে মধ্যে, কখনও কখনও নিয়মিতভাবে। বিভিন্ন রূপ ধরে দুঃম্বপ্ন তাকে তাড়া করে বেড়াত। তবে সব সময় ওইসব দুঃস্বপ্নের বিষয়বস্তু একটাই থাকত: তাকে ওই প্রতিমূর্তিগুলো ফাঁসি দেওয়ার জন্য নিতে এসেছে।

জেগে উঠে অনেক সময় ধরে চেষ্টা করার পরে তবে সেই ভয়জাগানিয়া মানসিক অবস্থা থেকে সে বের হয়ে আসতে পারত যেখানে সত্যি কোনো আশঙ্কা নেই তার ফাঁসি হয়ে যাওয়ার। বড় হওয়ার পর তার চারপাশে পৃথিবীর ঘটনাবলী এমনভাবে ঘটেছে তার ফাঁসি যেন আর খুব বেশি অসম্ভব ঘটনা থাকেনি। বাস্তবতা তার স্বপ্নকে আর প্রশমন করতেও পারেনি। বরং তার ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন বেশ কিছু বছর ধরে তার বাস্ততবাকে যেন হৃষ্টপুষ্ট করেছে। যে দুঃস্বপ্ন তার বাবাকে তাড়া করেছে সেটাই যেন তিনি তার ছেলের জন্য রেখে গেছেন একমাত্র সুস্পষ্ট এবং নিশ্চিত উত্তরাধিকার হিসেবে। এই রহস্যময় বন্ধন তাকে সেন্ট ব্রিউকের ওই অচেনা মানুষটির সঙ্গে সম্পর্কের সুতোয় বেঁধেছে যে মানুষটি হয়তো ধারণাই করতে পারেননি, তার এরকম অপঘাতী মৃত্যু হবে। এই বন্ধন তার মায়ের বোধগম্যতার বাইরে; কেননা তিনি ওই ফাঁসির রাতের ঘটনার বর্ণনা শুনেছিলেন, জ্যাকের বাবার বমি করা দেখেছেন এবং সকালবেলা ভুলেও গেছেন। সেভাবেই পরবর্তীতে তিনি অনুভব করতে অক্ষম থেকেছেন সময় বদলে গেছে সেকথাও। তার কাছে সময় একই রকম রয়ে গেছে: তিনি মনে করেছেন, কোনো রকম পূর্বাভাস ছাড়াই যে কোনো মুহূর্তে বিপর্যয় ঘটতে পারে।

অন্যদিকে, জ্যাকের নানির সবকিছু সম্পর্কে অনেকটা সঠিক ধারণা ছিল: জ্যাককে তিনি প্রায়ই বলতেন, তোর শেষ পরিণতি হবে ফাঁসিকাঠ। কেন হবে না? এরকম আশঙ্কা একদম যে অস্বাভাবিক ছিল তাও নয়। তিনি পরিষ্কারভাবে তেমন কোনো আশঙ্কার কথা জানতেন না। তবে তার চারিত্রিক গঠন যেমন ছিল তাতে জ্যাকের ভাগ্যে সেরকম কিছু ঘটে গেলে তিনি বিস্মিত হতেন না মোটেও। কালো পোশাক পরিহিত দীর্ঘদেহী নানিকে দেখাত মহিলা পয়গম্বরের মতো। অনেক বিষয় সম্পর্কেই বেখবর এবং একগুঁয়ে ছিলেন বলে কী করে সবকিছু বিনা প্রতিবাদে মেনে নেওয়া যায় সে জ্ঞান তার ছিল না। জ্যাকের ছেলেবেলার অধিকাংশ অভিজ্ঞতা জুড়ে অন্য আর কারো থেকে সবচেয়ে বেশি তার উপস্থিতি। মাহুন থেকে আগত বাবা মা তাকে বড় করেছিলেন ছোট একটা খামার এলাকায় এবং অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়েছিলেন মাহুন থেকে আগত হালকা পাতলা কোমল গড়নের একজন মানুষের সঙ্গে। তার স্বামীর ভাইয়েরা ১৮৪৮ সালের দিকে তাদের দাদার মৃত্যুর পরে আলজেরিয়ায় বসতি স্থাপন করেছিলেন।

তাদের দাদা জীবনের একটা সময় জুড়ে ছিলেন কবি: গাধার পিঠে চড়ে গোটা দ্বীপের সব্জি বাগানগুলোর দেয়ালের পাশ দিয়ে ঘুরে বেড়াতেন আর কাব্য রচনা করতেন। এরকম কাব্য রচনা চলার এক পর্যায়ে হঠাৎ তিনি কাব্য রচনা ছেড়ে দিলেন: তার বিশ্বাস হয়েছিল, তিনি একজন প্রেমিককে শাস্তি দিচ্ছেন। কিন্তু সামনের ওই ছায়াচিত্র এবং বৃহৎ প্রান্তভাগঅলা কালো টুপির কাছে তিনি প্রতারিত হয়েছিলেন এবং এভাবেই পরিবারিকসূত্রে পাওয়া কাব্যগুণকে হত্যা করেছিলেন। শেষে তার সন্তানদের জন্য কিছুই রেখে যেতে পারেননি। একজন কবির প্রতারিত হওয়ার মতো এরকম ট্র্যাজিক পরিণতির মধ্যেই তার বংশধরদের আলজেরীয় উপকূলে বছর বছর সংখ্যায় বেড়ে ওঠা নিরক্ষর লোকদের মাঝে বসবাসের শুরু। আশেপাশে কোনো স্কুল ছিল না। প্রখর সূর্যের নিচে শ্রম ঢেলে শেষ হয়ে যাওয়া জীবনের সঙ্গেই তাদের অস্তিত্বের বন্ধন। কিন্তু জ্যাকের নানার ফটো দেখে বোঝা যায়, তার কবি দাদার উৎসাহের কিছু একটা রেশ তার মধ্যে ছিল।

তবে সরু মুখমণ্ডল, উঁচু ভ্রু রাশির নিচে তার সুস্পষ্ট চাহনি এবং চোখে স্বপ্নবাজের প্রকাশভঙ্গি দেখে মনে করার কোনো কারণ নেই, তিনি তার অল্পবয়সী, সুদর্শনা এবং শক্তিমতি স্ত্রীর সামনে নিজস্ব মূর্তি রক্ষা করতে পারবেন। নানি তার স্বামীকে নয় জন সন্তান উপহার দিয়েছিলেন: দুজন শৈশবেই মারা যায়। একজন প্রতিবন্ধী হয়ে রক্ষা পায়; শেষের জন জন্মের সময় থেকেই আধা বোবা এবং বধির। তার সন্তানদের তিনি বড় করেছেন একটা ছোট খামারের নিরানন্দ পরিবেশে এবং একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে নিজের ভাগের কঠিন কায়িক শ্রমের কাজকর্মও করেছেন। খাবার সময় টেবিলের এক কোণে লম্বা একটা লাঠি হাতে বসে থাকতেন। তাতে মুখের কথায় কাউকে শাসন করার মতো প্ররিশ্রমের হাত থেকে রেহাই মিলত। কারো দোষ পেলে সঙ্গে সঙ্গে মাথার ওপর বাড়ি মারতেন।

ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে তিনি নিজের জন্য এবং তার স্বামীর জন্য শ্রদ্ধা আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করতেন: ছেলেমেয়েদের তিনি নির্দেশ দিতেন তারা যেন কথা বলার সময় বাবার সঙ্গে নম্র ভদ্রভাবে স্পেনীয় কায়দায় কথা বলে। তার স্বামী অবশ্য এই শ্রদ্ধা উপভোগ করেননি; অল্প বয়সেই তিনি মারা যান। রোদে পুড়ে, কঠিন পরিশ্রমের ফলে এবং সম্ভবত দাম্পত্য জীবনের কারণে তিনি মারা গেছেন; জ্যাক জানতে পারেনি, কী রোগে তিনি মারা গেছেন। একা হয়ে যাওয়ায় নানি খামার ছেড়ে তার ছোট সন্তানদের নিয়ে আলজিয়ার্সে বসবাসের জন্য চলে যান। বাকিরা কাজেকর্মে ব্যস্ত ছিল। কারণ সামান্য নবিশ হওয়ার মতো বয়স হতেই তাদেরকে কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

তাকে বোঝার মতো বয়স হলে জ্যাক দেখতে পেয়েছে, না দারিদ্র, না অন্য কোনো বিরূপ পরিস্থিতি তাকে কাবু করতে পেরেছে। তখন শুধু তিন সন্তান তার সঙ্গে ছিল: ক্যাথরিন, যোসেফ এবং প্রতিবন্দ্বী এতিয়েনে। জ্যাকের মায়ের আরেক নাম ক্যাথরিন, তাকেও অন্য লোকদের বাড়ির কাজে লাগিয়ে দেয়া হয়েছিল; প্রতিবন্দ্বী ছোট ছেলে, পরবর্তীতে উদ্যমী: টব, পিপে ইত্যাদি নির্মাতা হয়েছিল। যোসেফ তখনও বিয়ে করেনি এবং রেলওয়ের কাজ করত। তাদের তিন জনের রোজগার একত্র করলে খুব সামান্য পরিমাণই হতো এবং সেটা দিয়েই পাঁচ সদস্যের সংসার চলত। সংসারের টাকা পয়সার দেখভাল করতেন নানি এবং পরে জ্যাক তার সম্পর্কে প্রথমত যে ধারণাটা পেয়েছে সেটা হলো, তিনি কৃপণ। যে বাতাস আমাদের বাঁচিয়ে রাখে সে বাতাস প্রসঙ্গে আমরা যতখানি কৃপণ তার চেয়ে মনে হয় তিনি বেশি কৃপণ ছিলেন না।

ছোটদের কাপড়-চোপড় নানি নিজে কিনতেন। জ্যাকের মা কাজ থেকে বাড়ি ফিরতেন দিনের শেষ ভাগে। তার মায়ের কাছে যা শুনতেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতেন। তার মায়ের শক্তি দেখে বিমূঢ়ও হতেন এবং তার কাছেই তার নিজের রোজগার সবকিছুই বুঝে দিতেন। কাজেই জ্যাকের ছেলেবেলার সবটা সময় জুড়েই যেসব রেইনকোট পড়তে হয়েছে সেগুলো তার শরীরিক আকারের চেয়ে অনেক বড় থাকত। এখানে নানির যুক্তি ছিল প্রকৃতি নির্ভর, মানে ছোট জ্যাক বড় হতে থাকবে এবং যেহেতু রেইনকোটটা অনেক দিন ব্যবহার করতে হবে, জ্যাক বড় হয়ে গেলেও একই রেইনকোট তাকে মানিয়ে যাবে। পনের বছর বয়সের আগ পর্যন্ত জ্যাক খুব একটা দ্রুত বাড়েনি এবং রেইনকোটের মধ্যে জ্যাক বড় হয়ে ওঠার আগেই সেটা ছিড়ে গেছে।

পরবর্তীটা যখন কেনা হতো তখনও ওই মিতব্যয়িতার নীতিতেই কেনা হতো। আর জ্যাকের ক্লাসমেটরা তার লম্বা পোশাক নিয়ে দুষ্টুমি করলে তার কোমরের পাশে রেইনকোটটা ফুলিয়ে ওপরের দিকে তোলা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকত না। কারণ তাতে রেইনকোটের হাস্যকর চেহারায় খানিকটা মানানসই ভাব ফুটে উঠত। অবশ্য স্কুলের ওই সব লজ্জার ঘটনাগুলো সে দ্রুতই ভুলে যেত ক্লাসে ঢুকলে। সেখানে জ্যাকের মর্যাদা সবার ওপরে থাকত। এছাড়া খেলার মাঠেও ছিল তার রাজত্ব: সে খুব ভালো ফুটবল খেলতে পারত। কিন্তু সেখানেও আনন্দের বিপরীতে আরেক সমস্যা ছিল: ফুটবল মাঠে ছিল সিমেন্টের গ্রাউন্ড; ক্লাসের বিরতিতে ফুটবল খেললে তার জুতার তলা ক্ষয়ে যেত বলে নানি নিষেধ করে দিয়েছিলেন এই খেলা। নাতির জন্য তিনি নিজে শক্ত তলাঅলা জুতা কিনে দিয়েছিলেন। আশা করেছিলেন, ওই জুতা অমর হয়ে থাকবে। জুতার আয়ু বাড়ানোর জন্য তলায় মোচাকৃতির বিরাট পেরেক লাগানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তাতে জুতার আয়ু দ্বিগুণ হওয়ার কথা। পেরেক ক্ষয় হয়ে গেলে তারপর জুতার তলা ক্ষয়ে যাবে। তাতে নানির আরেক সুবিধা হয়েছিল: তিনি জ্যাককে ফুটবল খেলতে নিষেধ করেছিলেন; তার নিষেধাজ্ঞা জ্যাক কতখানি অমান্য করল তাও ধরা সহজ হয়ে গেল।

এরপরও জ্যাক মাঠে ফুটবল খেললে পেরেকের নাল তার অবাধ্য হয়ে ক্ষয়ে যেত। বাড়ি ফিরে প্রতিদিন জ্যাককে নানির কাছে হাজিরা দিতে হতো। তখন কাসান্ড্রা, তার নানি, সাধারণত রান্নাঘরে কালো হাঁড়িপাতিলগুলোর ওপর তার কৃর্তত্ব ফলাতে ব্যস্ত থাকতেন। নাল পরানোর সময় ঘোড়ার পা যেমন ওপরের দিকে তোলা থাকে সেভাবে জ্যাক হাঁটু মুড়ে জুতার তলা ওপরের দিকে তুলে নানিকে দেখাত। অবশ্য বন্ধুদের ডাক এবং প্রিয় খেলার লোভ তাকে টানতই। তখন অসম্ভব সদ্গুণ অবলম্বন না করে বরং পাপকে ঢাকার চেষ্টাই করত সে: স্কুল থেকে ফেরার পথে খানিকটা সময় ব্যয় করে কাদামাটির ভেতর জুতার তলা ঘষে নিতো যাতে পেরেকের ক্ষয়ে যাওয়া মাথা না দেখা যায়। কখনও কখনও এই চেষ্টা সফলও হতো। কিন্তু এক সময় পেরেকের ক্ষয়ে যাওয়া মাথা বের হয়েই যেত, কিংবা খোদ জুতার তলাটাই নষ্ট হয়ে যেত, কিংবা সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজিক বিষয়ও ঘটে যেত–খেলার সময় মাঠের মাটিতে কষে লাথি চালালে অথবা গাছপালা রক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত লোহার বেষ্টনীতে লাথি মারলে জুতার নিচের তলা থেকে ওপরের তলা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। সে রকম ঘটনার দিনে দড়ি কিংবা সুতা দিয়ে জুতা বেঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরত জ্যাক।

ওইসব রাতে চামড়ার চাবুক ছিল অনিবার্য। কান্নারত জ্যাককে মা শুধু একটা সান্ত্বনাই দিতে পারতেন, জানিস তো জুতোগুলো কত দামি। আরেকটু সচেতন হতে পারিস না? মা কোনোদিন তার সন্তানদের গায়ে হাত তুলতেন না। পরের দিন জ্যাককে মোটা কাপড়ের তৈরি দড়ি দিয়ে বানানো তলাঅলা জুতা পরিয়ে জুতা মেরামতকারীর কাছে নিয়ে যাওয়া হতো। দুতিন দিন পর তার সেই জুতা ফেরত পেত সে, নতুন নাল পরানো অবস্থায়। আরেকবার তাকে পিচ্ছিল নড়বড়ে তলার ওপরে ভারসাম্য রক্ষার অনুশীলন করতে হতো।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

টাঙ্গাইলে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন দুই ভাই

বজ্রপাতে নিহত দুই ভাই। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মাঠে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আফজাল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা রংপুর জেলার উপজেলার চকদফরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তারা সম্পর্কে আপন খালাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে থেকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতো। শনিবার (১৮ মে) ভোরে বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ী গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে তারা ৬ জন শ্রমিক ধান কাটছিল। এসময় বৃষ্টি শুরু হলে ধান ক্ষেত থেকে দৌড়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় আফজাল ও আমীরের ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়।

বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন জানান, সকালে কয়েকজন শ্রমিক হযরত আলীর ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এসময় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি সাথে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরো চারজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কালিহাতী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহাদাত হুসাইন জানান, ওই দুই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর জেনেছি। তাদের আর্থিক সহযোগিতা করাসহ মরদেহ স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মেসি-বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায়

লিওনেল মেসি এবং সেই ঐতিহাসিক ন্যাপকিন। ছবি: সংগৃহীত

লিওনেল মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার প্রথম চুক্তি হয়েছিল যে ন্যাপকিন পেপারে, সেটা অবশেষে বিক্রি হলো নিলামে। ধারণা করা হয়েছিল এর দাম ৬ উঠতে পারে লাখ ৩৫ হাজার ডলার পর্যন্ত।

তবে বিক্রির বেলায় দেখা গেল প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার ন্যাপকিন পেপারটি নিলামে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা) বিক্রি হয়েছে। নিলামে ন্যাপকিন পেপারের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩ লাখ ডলার।

লিওনেল মেসি এবং সেই ঐতিহাসিক ন্যাপকিন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ নিলাম হাউস বোনহামসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিলামে ন্যাপকিন পেপারের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩ লাখ ডলার। ধারণা চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে এই নেপকিন পেপারটি।

আর্জেন্টাইন এজেন্ট হোরাশিও গ্যাগিওলি প্রথমে মেসির নাম সুপারিশ করেছিলেন। তার উপস্থিতিতে ন্যাপকিন পেপারে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। বোনহামস জানিয়েছে, ন্যাপকিন পেপারটি গ্যাগিওলির কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি নিলামে যে দামে বিক্রি হয়েছে, সেখান থেকে একটি অংশ অনলাইন নিলামের প্রশাসনিক ফি হিসেবে দিতে হবে—এটি ‘ক্রেতার প্রিমিয়াম’।

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

ঐতিহাসিক সেই ন্যাপকিন পেপার। বার্সার সঙ্গে মেসির প্রথম চুক্তিপত্র হিসেবে এই ন্যাপকিন পেপারকে বিবেচনা করা হয়।

১৩ বছর বয়সী মেসি এই ন্যাপকিন পেপারে বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে ট্রায়ালের জন্য পরিবারের সঙ্গে বার্সেলোনায় যান মেসি। সঙ্গে ছিলেন দুই আর্জেন্টাইন প্রতিনিধি ফাবিয়ান সোলদিনি ও মার্তিন মনতেরো এবং গাজ্জোলি। ট্রায়ালে সবাইকে চমকে দেন মেসি। তাই চুক্তির আশা নিয়ে রোসারিওতে ফেরে তার পরিবার।

সেই সময়ের বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান গাসপার্ত অবশ্য হরমোনজনিত সমস্যায় ভোগা ১৩ বছর বয়সী একটি ছেলের সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেছিলেন। তাকে রাজি করানোর জন্য বার্সেলোনার তখনকার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লো রেক্সাসকে চাপ দেন গাজ্জোলি ও মিনগেলা। শেষ পর্যন্ত চুক্তির কথা লেখা হয়েছিল ওই ন্যাপকিন পেপারে।

এবার রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন

ছবি: সংগৃহীত

কারওয়ান বাজারে একটি হোটেলের পঞ্চম তলায় আগুন লাগার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শাখায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট কাজ করছে।

আজ (শনিবার) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ধোলাইখালে একটি চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ জানা যায়নি‌। এছাড়া আগুনে হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন দুই ভাই
মেসি-বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায়
এবার রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন
কারওয়ান বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি-বাতাসে রাজধানীতে স্বস্তি
সাতক্ষীরায় ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের, আহত ১১
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
ভাঙা হাত নিয়েই ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’ মাতালেন ঐশ্বরিয়া
ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস, কমবে তাপপ্রবাহ
আচরণবিধি লঙ্ঘন: আ.লীগ নেতাকে জরিমানা, ৭ ডেগ খিচুড়ি জব্দ
সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
যমজ ২ বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
গাজায় দীর্ঘমেয়াদে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হামাস
কেএনএফের নারী শাখার সমন্বয়ক আকিম বম গ্রেপ্তার
সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা : ওবায়দুল কাদের
দুধ দিয়ে গোসল করানো হলো মুক্ত নাবিক সাব্বিরকে, পরিবারে বইছে খুশির জোয়ার
ট্যুরিস্ট ভিসায় ৩ দিন ভারত ভ্রমণ করতে পারবেন না বাংলাদেশীরা
গোবিন্দগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক গ্রেফতার
গাজীপুরের কালীগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চালকসহ দুইজনের মৃত্যু