বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

কারুন সংরক্ষিত এলাকা পার হবার মিনিট দশেক পরেই আবার একটা বিশাল পাথরে তৈরি তোরণের সামনে এসে দাঁড়াতে হলো। তোরণের বাঁ পাশে আরবিতে লেখা পরিচিতি ফলক পড়তে না পারলেও নিচে লেখা ‘প্রটেকটেড এরিয়া’ দেখে বোঝা গেল আমরা এখন মরুভূমির গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত অঞ্চলের ভেতরে ঢুকতে যাচ্ছি। এবারেও গেটে দ্বিগুণ অর্থাৎ দশ ঈজিপ্টশিয়ান পাউন্ড প্রবেশমূল্য পরিশোধ করতে হলো। এরপর তোরণ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে যাবার পরেই চোখে পড়ে একটি বিশাল প্রস্তর খণ্ডে লেখা ‘ওয়াদি এল রায়ান ন্যাশনাল পার্ক।’ মরুভূমিতে জাতীয় উদ্যান! তাহলে তো মরু অঞ্চলে বৃক্ষলতার যথাযথ সংরক্ষণের জন্য পর্যটকদের মূল্য পরিশোধ করাই কর্তব্য। কিন্তু মাইলের পর মাইল চলার পথে কোথাও উদ্যান তো দূরে থাক সবুজের ছিটেফোঁটাও নেই। 

দুপাশে এবং সামনে যতো দূর চোখ যায় কেবলই নিঃসীম বালির বিস্তৃত প্রান্তর। এতো দিন ধু ধু মরুভূমি বলে যা শুনে এসেছি এবারে মাঝখানে এক চিলতে পথ বাদ দিলে সেই ধু ধু মরুভূমি পাড়ি দিচ্ছি। বাসুনি সিডি প্লেয়ারে আরবি মিউজিক চালিয়ে দিয়েছে। প্রধানত ব্যাগ-পাইপে বাজানো সুরের সঙ্গে সিলভার ফ্লুট এবং পার্কাশন মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে খুব পরিচিত একটা মউিজিকের কাছাকাছি। কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারলাম এটি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি নাগিনের মিউজিকের মতো। সাপ খেলানোর মিউজিক বাজিয়ে বাসুনি সাপের মতো ডাইনে বাঁয়ে আচমকা টান দিয়ে এঁকে বেঁকে গাড়ি চালাচ্ছে। সোজা রাস্তা থাকতে বাসুনি কেন ডাইনে বাঁয়ে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে হঠাৎ হঠাৎ বালিতে উঠে পড়ছে বুঝতে পারছিলাম না। এরপর সে যখন রাস্তা ছেড়ে ছোট বড় বালির পাহাড় ডিঙ্গিয়ে তার ল্যান্ডক্রুজারকে একবার উপরে উঠিয়ে আবার পর মুহূর্তেই নিচে আছড়ে ফেলতে লাগলো তখন আর না বলেই পারলাম না, ‘হেই বাসুনি! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?’

          ওয়াদি এল রায়ান জাতীয় উদ্যান

বাসুনির ইংরেজি জ্ঞান আমার আরবি জ্ঞানের চেয়ে বেশি নয়। তবে সে একটা বিজয়ের হাসি দিয়ে বালির সমুদ্র থেকে গাড়ি রাস্তায় ফিরিয়ে অনলে রানা ভাই বললেন, ‘এটাই হচ্ছে ডেজার্স্ট অ্যাডভেঞ্চার।’ ভাবলাম, ‘আমাদের বেশি অ্যাডভেঞ্চারের দরকার নেই। মরুভূমি দর্শন শেষে হাড়-হাড্ডি সমেত প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারলেই বাঁচি।’
মোহামেদ সাদেক বলল, ‘বাসুনির আসল খেলা দেখতে এখনো দেরি আছে।’ কায়রো থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ওয়াদি আল হিতামের পথে প্রায় ঘণ্টাখানেক চলার পরে মরুভূমির ধু ধু প্রান্তরের বালিয়াড়ি ক্রমেই সংকুচিত হয়ে দুপাশে বালির পাহাড়ের রূপ নিতে শুরু করে। কোথা কোথাও এই সব বালির স্তূপের স্তরগুলো এমনভাবে সাজানো, মনে হয় কোনো স্থপতি নিপুন হাতে সৃষ্টি করেছেন এক একটি বালির ভাস্কর্য। পর পর সাজানো এইসব বালি পাহাড়ের ভেতর দিয়ে আরও অনেক দূর এগোবার পরে গাড়ির গতি কমিয়ে দেয় বাসুনি। চোখে পড়ে দুপাশের হলদে বাদামি পাহাড়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে গড়ে তোলা ছোট ছোট কুটির।

          মরুর বুকে মাটির কুটির

দেখে মনে হয় আমাদের দেশের উত্তরাঞ্চলের কাদা-মাটির তৈরি বাড়ি, কিন্তু এখানে সেই এঁটেল মাটি তো নেই। ঘরগুলো সম্ভবত তৈরি করা হয়েছে সিমেন্ট বালির আস্তর দিয়ে। ঘরের জানালা দরজাগুলোও সাধারণ আয়তকার বা বর্গাকার নয়, সেখানেও রয়েছে শিল্পীর হাতের ছোঁয়া। মরু প্রান্তরের পাহাড় ও বালির স্তূপের সঙ্গে রঙ ও ডিজাইন মিলিয়ে অসাধারণ এক স্থাপত্য নৈপুন্যের উদাহরণ এই কুটিরগুলো দেখে দীর্ঘ সময় মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকা যায়।একটি আমাদের ল্যান্ডক্রুজার থেমে যাবার পরেই কুটিরের ভেতর থেকে একজন বেরিয়ে এসে দু হাত বাড়িয়ে মোহামেদ সাদেককে স্বাগত জানায়। এই বিরান প্রান্তরে সাদেকের যে নিত্য আসা যাওয়া তাতে আর কোনো সন্দেহ থাকে না। আমরা গাড়ি থেকে নেমে আসার পরে আমাদেরও সাদর আমন্ত্রণ জানিয়ে ভেতরে বসতে বলে জোব্বা-পাগড়িধারীদের একজন। এখানে ঢুকেই বুঝতে পারি এটি একটি রেস্তোরাঁ! কয়েকটি লম্বা টেবিলে সামনে চায়ের কাপ রেখে আড্ডা দিচ্ছে বেশ কয়েকজন। জনবিরল বালিয়াড়িতেও মিশরীয়দের আড্ডায় কোনো কমতি নেই। বাইরে রোদ থাকলেও অসহনীয় কোনো গরম নেই, কিন্তু ভেতরটা বেশ ঠাণ্ডা। রানাভাই বসেই পড়েছিলেন। আমরা কিছুক্ষণ বসবো কিনা ভাবছিলাম, এ সময় সাদেক বলল, ‘আমরা বরং মিউজিয়াম ঘুরে, কিছুটা ট্রেকিং শেষ করে এসে বসতে পারি।’ 

          বালির স্থাপত্য

মাঝখানে কাঁকর বিছানো রাস্তার ওপারেই আরও একটি ‘কাদা-মাটির ঘর’। বড় আকারের বৃত্তাকার ঘরের মাঝখানে মসজিদের মতো গোলাকার ‘ডোম’ দেখে ভেবেছিলাম এটি হয়ত মসজিদ। কিন্তু না, এটিই মিশরের বহুল আলোচিত ‘ফসিল অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ মিউজিয়াম।’ মিউজিয়াম ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে পেছনে ফিরে দেখলাম, শুধু একটি রেস্তোরাঁ নয় ওপারে সামনে পেছনে বেশ কয়েকটি বিভিন্ন আকার আকৃতির সুদৃশ্য কুটির দাঁড়িয়ে আছে। এগুলোর কোনোটা পর্যটন বিভাগের দপ্তর আর কোনোটা নিরাপত্তারক্ষীদের আস্তানা। 

ওয়াদি আল হিতাম এলাকায় প্রবেশের আগে আরও একবার টিকেট কিনতে হয়েছিল এবং সেটিই মিউজিয়ামের প্রবেশপত্র। অতএব নতুন করে কোনো টিকেট না কিনেই সাদেককে অনুসরণ করে ভেতরে ঢুকে গেলাম। মূল ভবনের ঠিক পাশে আরও একটি বৃত্তকার কক্ষে গোটা পনের কুড়ি চেয়ার পাতা। আমরা বসতেই জাদুঘরের একমাত্র কর্মকর্তা একটি ভিডিও চালিয়ে দিলেন, সামনের পর্দায় ভেসে উঠলো ‘ফসিল অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ মিউজিয়ামের ইতিবৃত্ত। ২০১৬ সালে ইওনেস্কোর সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করেছে এই জাদুঘর। স্থানীয় আবহাওয়া, পরিবেশ এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখেই এর ডিজাইন করা হয়েছে। শুধু মিশরে নয় প্রাগৈতিহাসিক কালের কঙ্কাল এবং ফসিলের এই সংগ্রহশালা বিশ্বের অন্যতম বিশেষায়িত জাদুঘর। সাত আট মিনিটের ছোট্ট প্রামাণ্যচিত্রটি খুব আকর্ষণীয় কিছু না হলেও বেশ কিছু মজার তথ্য পাওয়া গেল। ‘হোয়েলস অব দ্য ডেজার্ট’ নামের একটি অংশে জানা গেল এক সময় পা বিশিষ্ট বিশাল তিমি মাছের বিচরণ ছিল এই এলাকায়। তিমিগুলো হয়ত লক্ষ কোটি বছরের বিবর্তনের ধাক্কা সামলাতে না পেরে পায়ে হেঁটে সমুদ্রে নেমে সাঁতার কাটতে চলে গেছে। তাহলে আমরা চার্লস ডারউইনের বিবর্তনের সূত্রকে কীভাবে অস্বীকার করব!

 তিন কোটি সত্তর লক্ষ বছর আগের তিমির কঙ্কাল

ডকুমেন্টারি শো শেষ হলে আমরা এলাম পাশের বড় বৃত্তাকার প্রদর্শনী কক্ষে। মাঝে বড় বৃত্তটি জুড়ে শুয়ে আছে তিন কোটি সত্তর লক্ষ বছর আগের  আঠারো মিটার লম্বা সেই পাওয়ালা তিমি। কেন্দ্রীয় বৃত্তটিকে ঘিরে পুরো ৩৬০ ডিগ্রি এলাকায় চক্রাকারে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন আকার আকৃতির র্যাক, কর্নার এবং ডিসপ্লে বোর্ড। কোথাও কাচের বাক্সে শোভা পাচ্ছে তিন থেকে পাঁচকোটি বছর আগের সামুদ্রিক নানা প্রাণীর কঙ্কাল, দাঁত বা হাড় গোড়ের অংশ বিশেষ। কোথাও দেয়ালের খাঁজে কাচে ঢাকা খোপে এক সারি দাঁত বের করে তাকিয়ে অছে প্রাগৈতিহাসিক চিতাবাঘ। আবার খোলা ডিসপ্লে টেবিলে সাজানো আছে গ্রানাইটের মতো হার্ডরক অথবা লাইমস্টোনের মতো সফ্ট রকের ছোট বড় টুকরো। অদ্যিকালে শুকনো গাছের গুড়িও প্রদর্শনযোগ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ধাতব স্ট্যান্ডে। কে জানে এই গাছের বয়সও হয়ত দেড় দুই কোটি বছর! জাদুঘরের আকারটি ছোট। তারপরেও তিরিশ থেকে পঞ্চাশ মিলিয়ন বছর আগের জীবাশ্ম এবং আরও লক্ষ কোটি বছর আগের সব নিদর্শন কাছে থেকে ছুঁয়ে দেখে ছবি তুলে বেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে চল্লিশ মিনিটের মতো।  

জাদুঘর থেকে বেরিয়ে একটু সামনে এগোতেই একটা বিপত্তি ঘটে গেল। হেনা বালির প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা নানা কিসিমের ভাঙাচোরা ঝিনুক, শামুক বা অন্যকোনো জলচর প্রাণীর দেহাবশেষের কয়েকটি টুকরো বেছে হাতে তুলে নিয়েছিল। ব্যাপারটা জাদুঘরের তত্ত্ববধায়কের চোখ এড়ায়নি। তিনি কোথায় থেকে যেনো ‘লা- লা’ করে ছুটে এসে হেনার হাত থেকে এক রকম জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে বালির উঠানে ছড়িয়ে দিলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় হেনা তো বটেই মোহামেদ সাদেক পর্যন্ত অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। সে বারবারই বলছিল, ‘লোকটা এমন আচরণ না করলেও পারত। সে ভদ্রভাবে বলতে পারত, এখানকার কোনো পাথর, ফসিল বা বালি এলাকার বাইরে নেওয়া নিষেধ, তাতে তো আমরা কেউই আপত্তি করতাম না।’ সাদেক নিজেই ঘটনার জন্যে এতাবার দুঃখ প্রকাশ করল যে, শেষ পর্যন্ত বলতে হলো, ‘যা হবার তা তো হয়েছে, চলো এবার পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়া যাক।’ যাকে নিয়ে এতো কথা হচ্ছিল ফিরে দেখলাম সেই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাদুঘরের প্রবেশ পথের পাশেই ‘আল্লাহু আকবর’ বলে দিব্যি নামাজে দাঁড়িয়ে গেছেন। 

মরুভূমির ধু ধু প্রান্তর জুড়ে বালির স্তূপ আর পাহাড়ের অপূর্ব প্রাকৃতির স্থাপত্য শৈলীর সৌন্দর্য নিজের চোখে দেখার জন্যে একটা পথ চলে গেছে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত। আসা যাওয়ায় অন্তত ঘণ্টা তিনেক সময় দিলে পুরোটা ধীরে সুস্থে দেখে আসা যায়। আমাদের হাতে সময় কম। তা ছাড়া দুপুরের সূর্য ক্রমেই মাথার উপরে উত্তাপ বাড়াতে শুরু করেছে, সেই তাপে পায়ের নিচের তেতে উঠছে বালি। কিন্তু তাই বলে মরু ট্রেকিং একেবারেই বাদ চলে যাবে তা হতে পারে না। দুপাশে পাথরের গোলক দিয়ে চিহ্নিত পথ ধরে হাঁটতে শুরু করলাম। পর্যটকদের চলাচলের কারণে মাঝের পথটুকু কিছুটা মসৃণ, এ ছাড়া আসলে পুরো পথের বাইরে বালির সাগরে ছড়িয়ে আছে কাঁকর আর ঝিনুকের শামুকের খোলের টুকরো। একটু দূরে দূরে বিচিত্র সাজের হলদে বাদামি পাহাড় কোথাও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, আবার কোথাও পাহড়ের শীর্ষে, শরীরের খোঁজে অথবা পায়ের কাছে বাতাসের কারুকাজ সারি সারি মূর্তিমান ভাস্কর্য সৃষ্টি করে পর পর সাজিয়ে রেখেছে। 

আমরা দুজন সামনে এগিয়ে গিয়েছিলাম, রানা ভাই কিছুটা পেছনে। পথটা ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠে বাঁ দিকে বাঁক নিয়েছে। দুজন তরুণ তরুণী, তরুণের কাঁধে একটি বছর দুয়েকের শিশু নিয়ে সাচ্ছন্দ্যে নেমে আসছে। ভাবছিলাম সামনে এগিয়ে নতুন কিছু দেখবার সম্ভাবনা কতোটা ওদের জিজ্ঞেস করবো। কিন্তু তার আগেই রানা ভাই চিৎকার করে ডাক দিলেন, ফিরতে হবে। দেড় ঘণ্টার পথের মাত্র কুড়ি-বাইশ মিনিট এগিয়ে ছিলাম। রানাভাইয়ের ডাকে কয়েকটা ছবি তুলে তাড়াতাড়িই ফিরে এলাম। রেস্তোরাঁয় তখন রীতিমতো আড্ডা চলছে। দুজন পুলিশ, আমাদের মোহামেদ সাদেকসহ তিনজন টুরিস্ট গাইড এবং একজন ড্রাইভার। পুলিশ এং টুরিস্ট গাইডদের সঙ্গে জমিয়ে ফেলতে রানা ভাইয়ের একটুও দেরি হলো না। আমি চা কফি কিছুই খেতে চাই না জানিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম। ’You are standing on the floor of an ancient sea.’ এই চমকপ্রদ কথাটি পড়ার পরে ‘ওয়াদি এল হাইতাম: ভ্যালি অব দ্য হোয়েলস ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের ছোট্ট কক্ষটির দেয়ালে সাঁটা পোস্টারগুলোতে একবার চোখ না বুলিয়ে পারা যায় না।’ আড়াই থেকে সাড়ে তিন কোটি বছর আগে পৃথিবীর বেশিরভাগ এলাকাই যখন জলমগ্ন ছিল সেই আদ্যিকালে বর্তমান মিশরের প্রায় পুরোটাই ছিল তেথিস সাগরের তলায়। আফ্রিকা মহাদেশের ভাঙনের বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হতে থাকে এই অঞ্চলে। জমতে থাকা পাললিক শিলার স্তরে স্তরে অগণিত সামুদ্রিক প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে এখানে গড়ে উঠেছে ফসিলের অপরিমেয় ভাণ্ডার!’ 

          সরাইখানায় জমাট আড্ডা

এক মুহূর্তের জন্যে মনে হলো আমার পায়ের তলা থেকে যদি পাললিক শিলায় গড়ে ওঠা ওয়াদি এল হাইতাম-এর মরুভূমি সরে যায় তাহলে সমুদ্রের পানিতে পড়তে হবে। আমি তাড়াতাড়ি মরুভূমির সরাইখানায় ফিরে যাই। সেখানে রানা ভাই তখন তুমুল আড্ডা জমিয়ে ফেলেছেন। আমাকে দেখে একজন টুরিস্ট গাইডদের বলে উঠলেন, ‘স্যার কেন ইউ গেজ মাই এজ?’ একটু চিন্তা করে বললাম, ‘পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন।’ সে হাসতে হাসতে উত্তর দিলেন, ‘নেক্সট ইয়ার আই উইল বি এইটটি!’

মরুভূমির জল-হাওয়া মিশরীয়দের তারুণ্য দীর্ঘায়িত করেছে এবং আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দিয়েছে সন্দেহ নেই! 

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad

জমি নিয়ে বিরোধ: স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ

নিহত রাজিব হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বাড়ির সীমানা জটিলতা ও গাছ থেকে বেল পাড়া নিয়ে প্রতিপক্ষের আঘাতে রাজিব হোসেন (৩৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নের পংভাদ্রা গ্রামে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। রাজিব একই ইউনিয়নের পংভাদ্রা বীর মুক্তিযোদ্ধার আলম মিয়ার ছেলে ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। এ ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে।

স্থানীয়রা জানায়, ভাদ্রা গ্রামের আজাহার ও রাজিবের মধ্যে জমির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ওই বিরোধের জের ধরে বিরোধপূর্ণ জমিতে একটি বেল গাছ থেকে বেল পাড়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

এরপর আজাহার ও তার পরিবারের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাজিবকে কোপাতে থাকে। এ সময় পরিবারের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদেরও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাজিবকে মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন বলেন, ভাদ্রা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. রাজিব আলম রাজিব একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। একই সাথে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ ঘটনায় নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এইচএম জসিম উদ্দিন জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা-ছুড়ি উদ্ধারসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

কক্সবাজারে হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগিরই নির্মাণ শুরু : সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার কমিউনিটি রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগামের (সিআরপি) আদলে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের জন্য কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ১৬০ একর জমি বন্দোবস্ত পাওয়া গেছে। উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন হয়।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে পুলিশে বর্তমান সরকারের বিগত তিন মেয়াদে ৮৩ হাজার ৫৭৭টি পদ বাড়ানো হয়েছে। স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব পদে জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ও অভিযান পরিচালনার জন্য এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরের জন্য দুটি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার সংযোজনের কার্যক্রম চলমান। পুলিশকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন ধরনের যুগোপযোগী আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। পূর্বে ব্যবহৃত পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেলের পরিবর্তে বর্তমানে ৭ পয়েন্ট ৬২ মিলিমিটার রাইফেল ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের ৭ পয়েন্ট ৬২/৯ এমএম পিস্তল, ৯ এমএম এসএমজি, পয়েন্ট ৪৫ ইঞ্চি এসএমজি, ১২ বোর শটগান, ৩৮ মিলিমিটার টিয়ারগ্যাস, গ্যাসগান/লঞ্চারসহ প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সরবারাহ করা হচ্ছে।’

গাইবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় পাওয়ার টিলার চালক নিহত

গাইবান্ধা সদর থানা। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর সড়কে পাথর বোঝায় ট্রাকের ধাক্কায় শিমুল মিয়া (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। নিহত যুবক পাওয়ার টিলার চালক ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা ১২ টার দিকে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার নাসিম রেজা নিলু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরআগে রাত ৩ টার দিকে গাইবান্ধা-সাদুল্লাপুর সড়কের খোলাবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত যুবকের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের আমবাগান গ্রামের বাসিন্দা। 

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার নাসিম রেজা নিলু জানান, নিজ গ্রাম থেকে নিহত যুবক পাওয়ার টিলারে আলু নিয়ে গাইবান্ধা জেলা শহরের দিকে আসছিল। পথে খোলাবাড়ি এলাকায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা ফুলছড়ির ভরতখালিগামী পাথর বোঝায় একটি ট্রাক পাওয়ার টিলারকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে শিমুল মিয়া পাওয়ার টিলার থেকে ছিটকে সড়কের ওপর পরে গিয়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।

সর্বশেষ সংবাদ

জমি নিয়ে বিরোধ: স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
কক্সবাজারে হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগিরই নির্মাণ শুরু : সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গাইবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় পাওয়ার টিলার চালক নিহত
আরেক দফা কমলো স্বর্ণের দাম
জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : সেতুমন্ত্রী
মে মাসে আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
জায়েদ খানের উপস্থাপনায় মঞ্চ মাতাবেন জেমস
আইপিএল থেকে কত টাকা পাচ্ছেন মুস্তাফিজ?
পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন দিলেন স্বামী
গণমাধ্যমের যে কোনো সমালোচনাকে সরকার স্বাগত জানায়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
কংগ্রেসকে পাকিস্তানের ‘মুরিদ’ বললেন নরেন্দ্র মোদি
দেশে নির্মাণ হচ্ছে স্বর্ণ কারখানা
টাঙ্গাইলে প্রতীক পেয়েই প্রার্থীদের প্রচারণা
ওমরাহ পালন করতে সস্ত্রীক ঢাকা ছাড়লেন মির্জা ফখরুল
সরকারি খাদ্য গুদামে হয়রানির অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে
রোনালদোর পর সিকান্দার রাজাও সংবাদ সম্মেলনে কোমল পানীয়র বোতল সরালেন
রাঙামাটিতে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৩ জনের
শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ
ঢাবির সিনেট সদস্য হলেন গাইবান্ধা-৫ আসনের এমপি মাহমুদ হাসান