শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৭

বিষাদ বসুধা

পত্রিকায় মোহিনীর একটি ছবি ছাপা হয়েছে। ছবির সঙ্গে বড় হেডলাইনে খবর। অবহেলিত মানুষের পাশে মোহিনী। খবরটি দেখে মোহিনী খুবই বিব্রত। পত্রিকা হাতে নিয়ে তিনি বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। মোহিনী যেন একটা পাথরের মূর্তি। তিনি মনে মনে বলেন, কে করল এই কাজটা? কেন করল? যে করেছে সে নিশ্চয়ই আমার ভালো চায় না। নিশ্চয়ই কোনো স্বার্থের জন্য কাজটি করেছে। ছবি ছাপা হবে মন্ত্রী-এমপিদের; যারা রাজনীতি করেন। আমি তো রাজনীতি করি না। রাজনীতির ধারেকাছেও যাই না। আমার ছবি কেন পত্রিকায় ছাপা হবে?

মোহিনীর ভাবনা মিলিয়ে যেতে না যেতেই তার মোবাইল ফোনের রিং বাজে। এই সাত সকালে কে ফোন করল? ফোন ধরতে ইচ্ছা করছিল না তার। দুতিনবার রিং বাজার পর তিনি ফোন কেটে দিয়ে নিজের কক্ষের দিকে যান। টেবিলের উপর পত্রিকা ছুড়ে ফেলে তিনি খাটের উপর বসেন। খবরটি নিয়ে ভাবেন।

আসলে আত্মপ্রচার মোহিনী পছন্দ করেন না। ভালোও লাগে না। তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও পত্রিকায় খবরটি এসেছে। তার অফিসের লোকরাও জানত না, মোহিনী এতো এতো মানুষকে সহায়তা করেছে। পত্রিকায় খবর দেখে অনেকের চোখ কপালে ওঠে। মনে মনে গর্ববোধ করে। অনেকে মোহিনীর অফিসে এসে আবার অনেকে টেলিফোনে তাকে ধন্যবাদ জানায়। এতেও মোহিনী বিব্রত হয়। এটা অবশ্য মোহিনীর ধাতে সওয়ার না। সইবেও না কোনোদিন। কারণ, তার বাপ-দাদার চরিত্রও এমনই। তারাও আত্মপ্রচার একদম পছন্দ করতেন না কিংবা করেন না। মোহিনীর দাদাকে বলা হতো দাতা হাতেমতাই। কারণ তিনি দুই হাতে মানুষকে বিলাতেন। নিজের বা পরিবারের সুখ-শান্তির কথা তিনি ভাবতেন না। তার কথা, যতক্ষণ পর্যন্ত হাতে টাকা থাকবে ততক্ষণ বিলিয়ে যাও। একজন দানবীর হওয়া সত্ত্বেও তিনি তা কাউকে বলতেন না। গোপন রাখতেন। এক হাতে বিলালে অন্য হাত তা জানতে পারত না। পবিত্র কোরআনে নাকি মহান সৃষ্টিকর্তা এরকম নির্দেশনাই তার বান্দাকে দিয়েছেন।

মোহিনীর বাবাও সেই অভ্যাস পেয়েছেন। তিনিও দুই হাতে মানুষকে বিলান। সেই রক্ত মোহিনীর শরীরে বহমান। কাজেই ধাতে সইবে কেন?

অনেকেই আছেন সামান্য সহায়তা করতে গিয়ে বিশাল ঢাকঢোল পেটান। সহায়তা দেওয়ার আগ থেকে শুরু হয়। টানা এক সপ্তাহ দুই সপ্তাহ চলতে থাকে। আত্মপ্রচার কাহাকে বলে তা তারা বুঝিয়ে দেন। ভাবখানা এমন যেন না জানি কি করে ফেলছেন। অথচ তাদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি সহায়তা করেও অনেকে কাউকে তা বলেন না। বরং বলতে লজ্জাবোধ করেন। মোহিনী এমনিতেই প্রচারবিমুখ মানুষ। তার ওপর আবার নিজের দান-খয়রাতের কথা অন্য জানাবে! মোটেই না।

মোহিনীর মোবাইলে আবার রিং বাজে। তিনি মনে মনে বিরক্ত হন। কে আবার ফোন করেছে? কেন বার বার ফোন করছে? মোহিনী মোবাইল হাতে নিয়ে দেখেন। নম্বরটা অচেনা। তিনি আবার ফোন কেটে দেন। তিনি বুঝতে পারছেন তার মেজাজটা তিরিক্ষি হয়ে আছে। এসময় ফোন ধরা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাই তিনি ফোন ধরা থেকে বিরত থাকেন। তিনি ফোনটা হাত থেকে টেবিলের ওপর রাখতে যাবেন এমন সময় ম্যাসেজ আসার টোন পান। তিনি ম্যাসেজ খুলে দেখেন, আসিফের ম্যাসেজ। সে-ই বার বার তাকে ফোন দিচ্ছে। মোহিনী নিজেই ওই নম্বরে ফোন দেন। আসিফ ফোন ধরেই বলেন, সরি তোমাকে সাত-সকালে বিরক্ত করলাম।
না না। বিরক্ত কেন বলছ?
কয়েকবার ফোন দিলাম তো! তুমি ধরোনি। তাই ভাবলাম তুমি বিরক্ত হচ্ছ কি না।
এটা যে তোমার নম্বর সেটাই তো জানি না।
ওহ! তোমাকে এই নম্বরটা দেইনি না?
না তো!
তোমার ওপর একটা লেখা পড়লাম। ভীষণ ভালো লাগল। এটা জানানোর জন্যই তোমাকে ফোন দিয়েছি।
কোথায় পড়েছ?
প্রথম আলোতে।
তাই নাকি?
হুম।
কি লিখেছে?
তুমি পড়ে দেখ। খুব ভালো লিখেছে। সত্যিই খুব ভালো লিখেছে। আমি তোমাকে কতবার বললাম, তুমি যে মানুষকে সহায়তা করছ এটা নিয়ে একটা লেখা ছাপি। তুমি বললে না। আত্মপ্রচার তুমি পছন্দ করো না। আমি নিজেও অবশ্য জানি। তুমি পছন্দ করো না বলে আমি খুব বেশি চাপ দিইনি।
কাজটা কে করল বলতে পার?
আমি জেনে দিতে পারব। তুমি জানতে চাও?
হুম। জানতে চাই। যে করেছে সে হয়ত না জেনেই করেছে।
জেনে করুক আর না জেনে করুক; কাজটা যে খুব ভালো করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

মোহিনী কোনো কথা বলেন না। তিনি চুপ করে আছেন। মোহিনী কোনো কথা বলছেন না দেখে আসিফ আহমেদ বললেন, কি ব্যাপার! কিছু বলছ না যে! তোমার ওপর আমরা একটা আর্টিকেল করে দিই?
না না। কোনো দরকার নেই। এটা বাবা দেখলে ভীষণ রাগ করবেন। তাকে যে কি করে সামলাবো সেটা নিয়ে ভাবছি।
হুম। উনিও তো আত্মপ্রচার একদম পছন্দ করেন না।
হ্যাঁ। আমার চেয়ে কিন্তু বাবা অনেক বেশি সহায়তা করছেন। অথচ কেউ জানেও না। আসলে বাবা জানতে দেন না। আমারটা দেখলে উনি কি ভাববেন কে জানে?
তুমি তো আর নিজে করাওনি! তুমি এটাই তাকে বলে দেবে।
হুম। তারপর তোমার কথা বলো। কেমন আছ?
আর বোলো না। আয়-রোজগার একেবারেই কমে গেছে। বেসরকারি বিজ্ঞাপন একেবারেই নেই। কিছু সরকারি বিজ্ঞাপন পাচ্ছি। তার টাকা কবে পাওয়া যাবে তার কোনো ঠিক নেই। এদিকে ঠিকমতো বেতন দিতে পারছি না।
সে কী! বেতন দিতে পারছ না মানে? এতো বড় প্রতিষ্ঠান! আর তোমরা বেতন দিতে পারছ না? এটা কেউ বিশ্বাস করবে?
সেটাই তো কথা। মানুষ ভাবে, আমরা না জানি কত সুখে আছি। বড় কোম্পানিতে চাকরি করি। টাকা পয়সার কোনো অভাব নেই। যত বড় ঝড় আসুক তা সামাল দেওয়া কোনো ব্যাপার না। অথচ আলোর নিচে যে অন্ধকার তা কেউ বুঝতে চায় না। আরও সমস্যা কি জানো?
কি?
বেসরকারি বিজ্ঞাপনদাতারা বলে, এতোবড় কোম্পানির পত্রিকা! আমরা কেন বিজ্ঞাপন দেব? ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন থেকে আমরা বঞ্চিত। ব্যাংকগুলোর বিজ্ঞাপন পাই না। কারণ, আমাদের মূল প্রতিষ্ঠান প্রায় সবগুলো ব্যাংক থেকেই ঋণ নিয়ে বসে আছে। কত যে ঝামেলায় আছি তা যদি বুঝতে?
তাই বলে এই সময় বেতন না দিলে..মোহিনী আমতা আমতা করে বললেন।
সে কথাই তো তোমাকে বলছি। এরা কতই বা বেতন পায়। অথচ আমরা ঠিকমতো বেতন দিতে পারছি না। সবার মধ্যে দুশ্চিন্তা ভর করেছে। কারো মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।
তোমার চেয়ারম্যানকে বলো, বেতনের টাকাটা অন্তত দিক। তোমরা তো মূল প্রতিষ্ঠানের অনেক বিজ্ঞাপনও ছাপো। তাই না?
হ্যাঁ। কিন্তু সেই টাকা চাওয়া যাবে না। বুঝতে পারছ? সেই টাকা চাইতে গেলেই দোষ।
এখন তো একটা বিপদের সময়। তুমি বুঝিয়ে বললে নিশ্চয়ই দেবে।
আসিফ আহমেদ বললেন, তুমি কি ভেবেছ আমি বলিনি? অনেকবার বলেছি। চেয়ারম্যান বললেন, এক পয়সাও আমি দিতে পারব না। আমি দেবো কোত্থেকে? বরং এই পত্রিকা করে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। কেন যে জেদের বশে পত্রিকা করতে গেলাম! অথচ এই পত্রিকার কারণে যে তারা টিকে আছে সে কথা বেমালুম ভুলে গেছে।
কি আর করবে? ধৈর্য ধরো। এছাড়া আর কি বলব?
ধৈর্য কত ধরা যায়? ধৈর্যেরও তো একটা সীমা আছে। সরি, তোমাকে অনেক কথা বলে ফেললাম মোহিনী। কিছু মনে কোরো না।
না না! কি বলো! শোনো, আমাদের কাছে বিজ্ঞাপনের কোনো টাকা পাওনা থাকলে আমাকে বোলো। আমি দিয়ে দেব।
আসিফ আহমেদ সন্তুষ্টির সঙ্গে বললেন, ধন্যবাদ মোহিনী। অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থেকো। সাবধানে থেকো।
হুম। সাবধানে তো থাকতেই হবে। তা না হলে সবকিছু যে ওলোটপালোট হয়ে যাবে। তুমিও ভালো থেকো। ধন্যবাদ।

মোহিনী টেলিফোন রেখে আবার পত্রিকাটা হাতে নেন। প্রতিবেদনটা ভালো করে দেখেন। এরমধ্যেই রহিমাবিবি হন্তদন্ত হয়ে মোহিনীর কক্ষে ঢুকে বলল, আপামনি, আপামনি! আপনারে খালু ডাকতাছে?
মোহিনী রহিমাবিবির দিকে তাকিয়ে রইলেন। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর তিনি বললেন, বাবা কি করছেন রে?
নাশতা করতেছেন। আপনারে ডাকতেছেন।
মা কোথায়?
খালাম্মাও নাশতা করতেছেন।
ও। আচ্ছা যাচ্ছি।
রহিমাবিবি চলে যায়। মোহিনী ভাবেন, বাবা কি পত্রিকাটা দেখেছেন? আমার নিউজটা তার কি চোখে পড়েছে? এ বিষয়ে বাবা আমাকে কিছু বলতে পারেন। নিশ্চয়ই বলতে পারেন। তা বলুন। আমি তো নিজের থেকে নিউজটা করাইনি। ওরা নিজেরাই করেছে। আমি জানিও না। এ কথাই বাবাকে বলব।
মোহিনী খাবার ঘরে পা রেখেই বললেন, শুভ সকাল বাবা। কেমন আছো?
শুভ সকাল। আমি ভালো আছি মা। তুমি কেমন আছো? ঘুম হয়েছে তো?
হ্যাঁ বাবা। হয়েছে। ভালো ঘুম হয়েছে। বাবা, আজ একটা কাণ্ড ঘটে গেছে।
মোহসীন আহমেদ মুখের খাবার এপাশ ওপাশ করে গিলে ফেললেন। কি ঘটেছে মা?
ও তুমি দেখনি!
দেখেছি। তুমি কি কাণ্ড ঘটেছে সেটা আগে বলো!
বাবা, প্রথম আলো পত্রিকায় আমাকে নিয়ে একটা ফিচার লিখেছে। এটা দেখেছ?
হুম। দেখলাম। তুমি করিয়েছ নাকি?
না না বাবা! আমি কেন করাতে যাব? পড়ে কি তোমার তাই মনে হয়েছে?
না। তা মনে হয়নি।
আনোয়ারা বেগম বললেন, কি লিখেছে রে?
মোহসীন আহমেদ বললেন, ওকে নিয়ে পত্রিকায় একটা ফিচার করেছে। বেশ ভালো লিখেছে। ওর মানবিক কাজের স্বীকৃতি দিয়েছে আর কি!
তাই নাকি! দেখিনি তো! আজকের পত্রিকায়?
মোহিনী বললেন, হ্যাঁ মা। ওরা নিজেরাই করেছে। আমার সঙ্গে কথাও বলেনি।
মোহসীন আহমেদ বললেন, আমি জানতাম, তুমি নিজের থেকে এটা করাবে না। করাতে পার না। আফটারঅল, তুমি আমার মেয়ে।
এই! শুধু আমার মেয়ে কেন বললে? আমি কি মানবিক নই?
সরি সরি। আমাদের মেয়ে।
ঠিক বলেছ বাবা। আমি সব সময়ই সে বিষয়ে সতর্ক। আমি নিজেও আত্মপ্রচার পছন্দ করি না। অনেকেই আমার সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছে। আমাকে অনুরোধ করেছে। আমার এক বন্ধু আছে পত্রিকার সম্পাদক।
তোমার বন্ধু সম্পাদক!
হ্যাঁ বাবা।
কে সে?
আসিফ আহমেদ।
ও তাই নাকি! ও তো খুব ভালো ছেলে! খুবই ভালো সাংবাদিক।
হ্যাঁ বাবা। ভীষণ সৎ।
ও কি বলে? মোহসীন আহমেদ জানতে চাইলেন।
মোহিনী বললেন, আমাকে নিয়ে একটা লেখা লেখাতে চেয়েছিল। আমি রাজি হইনি।
ধন্যবাদ। তারপর, তোমার ব্যবসার কি অবস্থা?
চলছে বাবা। বাইরের কিছু অর্ডার পেন্ডিং আছে। অসুবিধা হবে না আশা করছি।
বেশ বেশ।
বাবা, আমার কাজকর্ম ঠিক আছে তো?
হ্যা মা। একদম ঠিক আছে। ঠিক না থাকলে বলতাম।
ধন্যবাদ বাবা।
মোহিনী পত্রিকাটা তোর কাছে আছে?
হ্যাঁ মা। আমি তোমাকে দেখাচ্ছি।

মোহসীন আহমেদ দরাজ গলায় রহিমাবিবিকে ডাকলেন। রহিমাবিবি, রহিমাবিবি! আজকের পত্রিকাটা নিয়ে আয় তো!
রহিমাবিবি পত্রিকা নিয়ে দৌড়ে খাবার ঘরে এসে মোহসীন আহমেদের হাতে পত্রিকা দেয়। তিনি মোহিনীকে নিয়ে লেখা প্রতিবেদনটি বের করে আনোয়ারা বেগমের হাতে এগিয়ে দেন। তিনি গভীর মনোযোগে পড়তে শুরু করেন। মোহিনী চায়ের কাপ হাতে নিয়ে নিজের কক্ষের দিকে এগিয়ে যান।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আরএ/

 

 

 

Header Ad

‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা

অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার মুকুটে যুক্ত হলো নতুন পালক। সম্প্রতি দিল্লির মর্যাদাপূর্ণ ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতেছেন এই অভিনেত্রী।

টালিউড সিনেমা ‘ও অভাগী’র জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার ঘরে তোলেন মিথিলা। এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নিজেই এই পুরস্কারপ্রাপ্তির তথ্য জানিয়েছেন। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্যও লিখেছেন তিনি।

অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিও বার্তায় মিথিলা বলেন, আমি খুবই খুশি এবং আপ্লুত। এজন্য আমাদের পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী, প্রযোজক ড. প্রবীর ভৌমিক এবং আমাদের গোটা টিমকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।

গত ২৯ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা হলে মুক্তি পায় ছবিটি। কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে এটি নির্মাণ করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। চিত্রনাট্যও তাঁরই লেখা।

মুক্তির পরই দর্শকদের মধ্যে আলাদা উন্মাদনা তৈরি করে এই সিনেমা। এতে মিথিলা ছাড়াও অভিনয় করেছেন সুব্রত দত্ত, দেবযানী চ্যাটার্জি, ঈশান মজুমদার, সায়ান ঘোষ, সৌরভ হালদার প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, দিল্লিতে সম্প্রতি বসেছিল ১৪তম দাদাসাহেব ফালকে আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি মিথিলা। তাঁর জায়গায় পুরস্কার গ্রহণ করেছেন পরিচালক ও প্রযোজক অনির্বাণ চক্রবর্তী।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার আলু ঘাটি উৎসব। আলু ও গরুর মাংস দিয়ে প্রস্তুত করা আলু ঘাঁটি বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খাবার। বগুড়া জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইভেন্ট, বাচ্চাদের খেলাধুলা, সুইমিং, আলু ঘাটি ভোজ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যাফেল ড্র এর আয়োজন করা হয়।

আলু ঘাঁটির এই উৎসবে বগুড়ার অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, দুদকের পরিচালক বেনজির আহমেদসহ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নানা পেশায় নিয়োজিত বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশ নেন।

বগুড়া জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল করিম পলাশ বলেন , আলু ঘাটি উৎসবের মাধ্যমে বগুড়া জেলার মানুষের মেলবন্ধন তৈরি করা ছিল উদ্দেশ্য।

অনুষ্ঠান থেকে ‘আলু ঘাটি’কে জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান সংগঠনটির সদস্য সচিব শাহাদাত স্বপন।

উৎসব মঞ্চে আরো বক্তব্য দেন-বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ রাগিবুল আহসান রিপু, সংসদ সদস্য মো. মোস্তফা আলম নান্নু, সংসদ সদস্য খান মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য বৃহত্তর বগুড়া সমিতির সভাপতি শিল্পপতি মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের উপসচিব আল আমিন পারভেজ, নড়াইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কবির উদ্দিন প্রামানিক, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিশনাল এসপি ফজলুল করিম প্রমুখ।

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী আলু ঘাঁটি একদিন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হবে বলে প্রত্যাশা করেন বগুড়ার সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য বক্তারা।

 

টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত

উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আসা পাগলা কুকুরের আক্রমণের শিকার আহত রোগীরা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে একটি পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ২২ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (০৪ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার মাটিকাটা, চিতুলিয়াপাড়া, গোবিন্দাসী ও নিকলা নয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- উপজেলার কাগমারী পাড়ার মিজানুর রহমানের শিশু ছেলে তৌফিক, গোলাবাড়ী গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আলিফা, নিকলা নয়াপাড়ার আজহারের ছেলে আম্বিয়া, নূরুল ইসলামের ছেলে জামাল হোসেন, গোবিন্দাসী গ্রামের রফিকের শিশু ছেলে শামিউল, মহিউদ্দিনের ছেলে সুজন মন্ডল, চিতুলিয়াপাড়ার গ্রামের মোখলেছ মিয়ার শিশু মেয়ে মনিজা খাতুন, নাজমুল হুদার শিশু ছেলে সাফওয়াল ইসলাম, শাহজাহানের স্ত্রী হোসনে আরা, ভালকুটিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের শিশু ছেলে বায়েজিদ ইসলাম। অন্যদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

জানা যায়, আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল, নিকরাইল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নেন। এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে কুকুরে কামড়ানো ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় বাইরে থেকে রোগীদের ভ্যাকসিন কিনে আনতে হচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আসা পাগলা কুকুরের আক্রমণের শিকার আহত শিশু রোগী। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ 

কুকুরের আক্রমণের শিকার সুজন মন্ডল জানান, সকালে বাড়ির পাশে চড়ানো আমার ছাগলকে আক্রমণ করে অনবরত কামড়াতে থাকলে আমি এগিয়ে গেলে কুকুরটি লাফ দিয়ে এসে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কামড়াতে থাকে। কুকুরটি মানুষ ও পশু দেখলেই ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান বলেন, হাসপাতালে কিছুদিন আগেও কুকুড়ে কামড়ানো ভ্যাকসিন সরবারহ ছিল। ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যাওয়ায় রোগীদের ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হয়নি। আশা করছি দ্রুত ভ্যাকসিন সরবাহ করতে পারব।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিন্তে আখতার বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনের উপর আক্রমণ করা ওই পাগলা কুকুরটিকে দ্রুত ধরার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে শুনেছি গোবিন্দাসী খেয়াঘাট এলাকায় স্থানীয়রা কুকুরটি মেরে ফেলেছে।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবাহ না থাকার বিষয়টির ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব
টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছর কারাদণ্ড
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা
দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেলেন শাকিব খান
সুন্দরবনের গহীনে ভয়াবহ আগুন, ছড়িয়েছে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে
স্কুলে দেরি করে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
আইপিএলের প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে কারা?
আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করল মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য
যারা সরকার পরিচালনা করেন তারা সবাই ফেরেশতা নয়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
খাবারে নেশা দ্রব্য মিশিয়ে শিক্ষকের বাসায় চুরি
একজন টেনিস খেলোয়াড় তৈরি করব, যার জন্য দেশবাসী গর্ববোধ করবে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
বাজারে আসছে মেসির হাইড্রেশন পানীয়
ভুয়া দলিল দেখিয়ে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নেয় চক্রটি
রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-ঢাকা রুটে দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন উদ্বোধন
বাড়ি ফিরলেই বিয়ে, হিটস্ট্রোকে প্রাণ গেল আশিকের
অতিরিক্ত গরমে স্কুলগামী শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়
নোয়াখালীতে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষ, সেনা সদস্যসহ নিহত ৪
‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ