শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৯

যারা যুদ্ধ করেছিল

এর মধ্যে প্রচার হয়ে যায় ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন। মমিন খবরটি শুনেছে। কিন্তু তার তেমন প্রতিক্রিয়া নেই। আর দশটা দিনের মতো সে দুপুরে হলের ডাইনিংয়ে খেয়ে রুমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। সাকিব রুমে নেই। কোথায় গেছে বলে যায়নি। মমিন কিছুক্ষণ পর টিউশুনি করতে বেরোয়। ফুলার রোডে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে সে ইংরেজি পড়ায়। হল থেকে ছাত্রের বাসা হেঁটে গেলে ৫ মিনিটের পথ। গিয়ে সে জানতে পারে ছাত্র বাবার সঙ্গে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে গেছে। এই কথাটা শোনার পর তার মধ্যে ভীষণ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কী এমন ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু যার জন্য পিতাপুত্র একসঙ্গে সেই মিটিংয়ে গেছে। ভাবতে ভাবতে মমিন পথ হাঁটছে। ছাত্র গেছে বঙ্গবন্ধুর জনসভায় এই ব্যাপারটা তার ভাবনা থেকে সরছে না। ক্যাম্পাসে ফেরার পথে মমিন দেখল পিপঁড়ের লাইনের মতো মানুষ যাচ্ছে রেসকোর্স ময়দানে। তারও ভারী কৌতূহল হলো। সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকজনের মিছিল দেখছিল। লোকজনের চাপে মমিনকে পাবলিক ঠেলে নিয়ে গেল রেসকোর্স ময়দানের দিকে। ক্যাম্পাস লাগোয়া রেসকোর্স ময়দান। ময়দানে গিয়ে দেখে গিজগিজে ঠাসা মানুষ। দেখে মমিনের চোক্ষু চড়ক গাছ। এতো মানুষ কোত্থেকে এল। সবার হাতে লাঠি। সবার মুখে একটাই স্লোগান, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’
মমিন কোনোরকমে দাঁড়াবার জায়গা পেয়েছে ময়দানের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে। তার মাথা বরাবর মাইকের হর্ন বাঁধা। টাস টাস শব্দ এসে কানে বিঁধছে।

হঠাৎ স্লোগান পাল্টে গেল। মাইকে ভিন্ন স্লোগান শুরু হলো, ‘তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ শেখ শেখ মুজিব।’ মমিন খেয়াল করল সাদা ধবধবে পায়জামা পাঞ্জাবি, তার উপর হাতাকাটা কালো কোট পরে একজন লম্বা মানুষ মঞ্চে এসে উপস্থিত হলেন। তার উপস্থিতিতে মঞ্চের আবহ বদলে গেল। তিনি সোজা মাইকের সামনে এসে দাঁড়ালেন। তারপর অগ্নিঝরা কণ্ঠে শুরু করলেন, ‘ভাইয়েরা আমার...
মমিন বুঝতে পারল ইনি বঙ্গবন্ধু। কণ্ঠে যেন বাঘের গর্জন। বক্তৃতায় যেন আগুন ঝরছে। তাঁর এক একটি কথায় মমিনের গায়ের লোম শিউরে উঠছে। রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠছে। তিনি এসব কী বলছেন। বাঘের গর্জন শুনছে মমিন। যত শুনছে তত শরীরের রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠছে। তাঁর প্রতিটি কথায় জনতা জয় বাংলা বলে চেঁচিয়ে উঠছে। তার বক্তৃতা শেষ হয়েছে। মনুষ উত্তপ্ত স্লোগান দিয়ে চলে যাচ্ছে। মমিন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কোনো বোধশক্তি কাজ করছে না শরীরে। অবশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে।
রুমে এসে সটান শুয়ে পড়ে। মাথা আওলিয়ে গেছে। সমস্ত চেতনা ওলটপালট হয়ে গেছে। মাথা ঘুরছে যেন। রাতে একফোটা ঘুমোতে পারল না। বার বার শুধু বঙ্গবন্ধুর অগ্নিঝরা ভাষণের কথা মনে পড়ছিল। তাঁর কথাগুলো এখনো সমানতালে কানে বাজছে। কী শুনেছে সে। এমন করে আর কেউ তো কখনো বলেনি। সেই থেকে মমিনের জীবনের ধারা পাল্টে যায়। সে এখন প্রতিদিন মিছিলে যায়। বক্তৃতা শোনে। একদিন মিছিলের সঙ্গে যেতে যেতে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে চলে গেছে। মিছিলের আওয়াজ পেয়ে বঙ্গবন্ধু বারান্দায় এসে দাঁড়ালে মমিন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে তাঁকে দেখে। ইনি জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু। সেদিন রেসকোর্সে দূর থেকে ভালো করে দেখতে পারেনি। আজ সে কাছে গিয়ে পলকহীন দেখে।

সকালে নাস্তা করে মমিন পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে রাজনীতির বই পড়ে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ভাষণে বলেছে, ‘৫৪ সালে নির্বাচনে জিতেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই।’ সেই থেকে ৫৪ সালের ইতিহাস জানার আগ্রহ তৈরি হয় তার। সব সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে। পড়ে ৬ দফা। আরও পড়ে ছাত্রদের ১১ দফা। মমিনের নেশা পেয়ে গেছে। এর মধ্যে দেশে ইয়াহিয়া খান এসেছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করতে। খবরের কাগজে বড় হেডিং। সব পড়ে মমিন। নেতাদের আলোচনা ভেস্তে যায়। ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান চলে যায়। সেদিন রাতেই অপারেশন সার্চলাইট নামে গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তানি মিলিটারি। মধ্য রাত থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলি। অনেকের সঙ্গে মমিন হলের ছাদে উঠে দেখে চারদিকে আগুন জ্বলছে। জগন্নাথ হলে গোলাগুলি হচ্ছে। ছাত্ররা ওয়ালের উপর কাঁটাতারের বেড়া টপকিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। মমিনও অতি কষ্টে কাঁটাতারের বেড়া টপকাতে গিয়ে শরীরের কয়েক জায়গা ছুলে যায়। আর তখনই সে সিদ্ধান্ত নেয়, যেমন করেই হোক এই জানোয়ারদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
‘ওস্তাদ কইলেন না আপনি কেন যুদ্ধে আইছেন?’
মমিন এতোক্ষণ মাথা নামিয়ে অতীত ভাবছিল। মজনুর প্রশ্নে মুখ তুলে তাকায়। হাসে। হেসে বলে, ‘দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে এসেছি। ১৯৪৭ সালে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি সেটা আসল স্বাধীনতা না। সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য আমরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছি। এইবার হবে আমাদের সত্যিকারের স্বাধীনতা।’
‘সত্যি দেশ স্বাধীন হবে?’
‘অবশ্যই দেশ স্বাধীন হবে। এতে কি তোমার কোনো সন্দেহ আছে?’
মজনু কথা বলে না। মাথা নামিয়ে থাকে। বলে, একটা কথা কমু ওস্তাদ?’
‘তার আগে বল, স্বাধীনতা নিয়ে তোমার কোনো সন্দেহ আছে?’
‘আগে ছিল। এখন নাই।’
‘এইাবার বল কী বলতে চাও?’
মজনু গুছিয়ে বলে, ‘পশ্চিমাদের সাথে আমাদের গোলমালটা আসলে কী নিয়া? আমি ক্লিয়ার জানি না। নানা জনে নানা কথা বলে। আপনি আমারে একটু বুঝায়া কন।’
মমিন হেসে বলে, ‘বলব।’ এখন না। অন্য সময়, ঠিক আছে?’

সাকিবের মা আয়েশা বেগম রাত থেকে কিছুই খাচ্ছেন না। এতে বাড়ির সবাই দারুণ চিন্তিত। সাকিব মায়ের পাশে বসে স্যুপ খেতে সাহায্য করছে। বাবা ফজলুর রহমান রাত-দিন দেশ নিয়ে ব্যস্ত। আজ তার থানায় মেজর সাহেবের সঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জরুরি মিটিং। এলাকায় নাকি মুক্তিবাহিনীর আনাগোনা বেড়ে গেছে। হঠাৎ হঠাৎ তারা ক্যাম্প আক্রমণ করে বসে। সাথী স্যুপ খাওয়াতে গেলে সে ঝাঁকুনি দিয়ে স্যুপের বাটি ফেলে দেয়। তারপর সাকিব এসেছে খাওয়াতে। তার হাতের স্যুপও খাচ্ছে না আয়েশা বেগম। বাড়ির সবাই দারুণ উদ্বেগের মধ্যে আছে। রাত থেকে সে কিছুই মুখে তুলছে না। এভাবে অসুস্থ শরীরে না খেয়ে থাকলে তাকে বাঁচানো কঠিন হবে। দেশে যুদ্ধ লাগার পর থেকে ভালো ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। থানা সদরে যারা ভালো ডাক্তার ছিল তারা মিলিটারির ভয়ে অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে। ফজলুর রহমানের চেনা একজন নামকরা ডাক্তার সেই মাঝেমধ্যে এসে আয়েশা বেগমকে দেখে যান। তিনিও রোগ ধরতে পারছেন না। অথচ দিন দিন আয়েশা বেগম শুকিয়ে পাটখড়ি হয়ে যাচ্ছেন। ডাক্তার তাকে নিয়ম বেঁধে খেতে বলেছেন। কিন্তু কাল রাত থেকে তিনি কিছুই মুখে তুলছেন না।
দুপুর পর ফজলুর রহমান থানা সদর থেকে বাড়ি ফিরলেন। ফিরেই স্ত্রী আয়েশা বেগমের পাশে এসে দাঁড়ালেন। বললেন, ‘এখন কেমন লাগছে সাকিবের মা?’
‘আমার ভালো-মন্দের খবর নেওয়ার দরকার নাই।’ তার কণ্ঠ ভীষণ কর্কশ শোনাল। মনে হলো তিনি স্বামীর উপর ভীষণ রেগে আছেন।
ফজলুর রহমান আয়েশা বেগমের পাশে বসে একটা হাত টেনে নিলেন নিজের হাতের মধ্যে।
আয়েশা বেগম মুখ ঘুরিয়ে নিলেন।
‘কী হয়েছে? তুমি এমন করছ কেন?’ আয়েশা বেগম ইশারায় সবাইকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে ইশারা করলেন। সবাই বেরিয়ে গেলে স্বামীকে বললেন, ‘ছেলেকে বিয়ে দিয়ে দেন। ঘরে পাপ কাজ হচ্ছে।’
‘কী পাপ হচ্ছে?’ ফজলুর রহমান জিজ্ঞেস করলেন।
আয়েশা বেগম চিবিয়ে বললেন, ‘কী পাপ হচ্ছে আপনি জানেন না? ঘরে ছেলে অন্য মেয়ের সঙ্গে জ্বেনা করছে। আর আপনি দেখেও না দেখার ভান করছেন। আবার বলছেন কী পাপ হচ্ছে?’
ফজলুর রহমান আমতা আমতা করে বললেন, ‘শোন, ঘটনাটা আমিও প্রথম প্রথম খারাপ ভাবছিলাম। কিন্তু যখন সাকিবের মুখে আসল কথা শুনলাম তখন আর রাগ করতে পারি নাই।’
‘কী বলেছে সাকিব?’
‘আমি সাকিবের বন্ধু নজরুলের কাছে গিয়া এই ব্যাপারটা সাকিবকে বোঝানোর কথা বলেছিলাম। সাকিব যা বলেছে তাতে আর সাকিবকে দোষ দেওয়া ঠিক হবে না।’
‘সাকিব কী কইছে সেই কথা কন।’
‘সাকিব বলেছে, রাজাকাররা সাথীকে মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়া যাইতে চাইছিল। মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়া গেলে সাথীর কী অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখেছ? তা ছাড়া সাকিব যা করছে তা মোটেও দোষের না। যুদ্ধের সময় এমন করার নিয়ম আছে।’
আয়েশা বেগম রেগে বললেন, ‘রাখেন আপনার নিয়ম। আপনি কি ওই নিয়ম ধুইয়া পানি খাইবেন? ছেলে কবুল ছাড়া একটি পর নারীকে নিয়ে একই ঘরে রাত কাটাচ্ছে সেটা দোষ না? আপনি ওই মেয়ের সাথে সাকিবের বিয়া দিয়া দেন। তারপর ওরা যা ইচ্ছা তাই করুক। না হলে এই বাড়ির কোনো কিছু আমি স্পর্শ করব না।’
‘এতে সমস্যা কোথায় আমি বুঝতে পারছি না। ওই মেয়েটা মালে গণিমত। শত্রু পক্ষের সম্পত্তি। ওকে আমরা যুদ্ধে গণিমতের মাল হিসাবে অধিকার করেছি। ওরা মুশরিকদের সঙ্গে হাত মিলাইছে। ওরা আমাদের যুদ্ধ বন্দিনি দাসী। ওদের দাসী হিসেবে সহবত করা জায়েজ। তোমার ছেলে মোটেও পাপ করছে না।’
‘এ কথা আপনি কই পাইলেন?’
‘এটা হাদীসের কথা। নবী মোহাম্মদ [স.] যুদ্ধ বন্দিনিদের তার সাহাবাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন।’

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৮

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

এসএন

Header Ad

থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা

ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান তিনি। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এসময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারী ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক নথিতে স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার থাই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর করছেন।

আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত

ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের কাহারোলে পেট্রোল পাম্পে আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় জনতার হামলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুই সদস্য আহত হয়েছেন এবং পানিবাহী একটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আহতরা হলেন- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের রেজাউল করিম ও গাড়িচালক মোতালেব হোসেন। আহতদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৮টার দিকে দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কের কাহারোল উপজেলার দশমাইল এলাকায় আরিফ ফিলিং স্টেশনে লরি থেকে রিজার্ভ ট্যাংকে পেট্রোল নামানোর সময় আগুন লাগে। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।

আগুন ছড়িয়ে পড়ায় আরও ২টি ট্যাংকে আগুন লেগে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে কাহারোল উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গেলেও মহাসড়কে প্রচণ্ড যানজটে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে দেরি করে। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সেখানে থাকা ২৫ থেকে ৩০ জন ব্যক্তি লোহার অ্যাঙ্গেল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে পানি বহনকারী ট্রাকের ইন্সপেক্টর ও চালকসহ দুই সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়।

খবর পেয়ে কাহারোলের ইউএনও আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি জানান, লরি থেকে পেট্রোল নামানোর সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ারম্যানদের ওপর হামলা চালানোয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩

ছবি: সংগৃহীত

পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদেরকে সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার মৃত জান বক্সের ছেলে ও অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, সুজানগর দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম এবং বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের মৃত শুশীল চক্রবতীর্র ছেলে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবতী। ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবতী 

সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসেন। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান। পরে ওই অডিট কর্মকর্তারা সাঁথিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত ওই তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আদালতে প্রেরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাৎ ও অন্যান্য বিষয়ে দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সর্বশেষ সংবাদ

থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা
আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩
মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরছে দুই প্রবাসীর লাশ
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা চলছে
পরিবারের অমতে বিয়ে, স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু