মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ | ৬ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন

বর্তমানে বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাড়ে ১২ লাখ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করছে। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বাংলাদেশ এই বোঝা টেনে চলছে যা শেষ হওয়া জরুরি। এর আগে দু’বার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের অনীহা ও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে দাতাসংস্থা ও দেশগুলোর ত্রাণ তহবিলে চাপ পড়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্যের পরিমাণ কমে এসেছে এবং তা আগামীতে আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সহায়তা কমে গেলে বাংলাদেশের একার পক্ষে এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতিও দিনদিন খারাপ হচ্ছে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে রোহিঙ্গাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সংঘটিত নানা ধরনের অপরাধ বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকির সৃষ্টি করছে এবং ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যয় বাড়ছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ ফেলছে। বাংলাদেশ সরকার বন্ধু রাষ্ট্র এবং দাতাসংস্থাগুলোর কাছে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে যা এখনো পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্যোগী হয়ে মিয়ানমার গত ৮-৯ মার্চ সেদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ ৮ দেশের ১১ জন কূটনীতিককে মিয়ানমারের মংডু ও সিতওয়ে শহরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত অর্ন্তবর্তীকালীন ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে যায়। এরপর, ১৫ মার্চ মিয়ানমারের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করে। ১৮ এপ্রিল কুনমিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তৃতীয় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই বৈঠকের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ প্রত্যাবাসন উপযোগী কি না তা দেখার জন্য ২০ জন রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি গত ৫ মে সেখানে যায়। রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মংডু শহরের আশপাশের ১৫টি গ্রাম, পুনর্বাসনকেন্দ্র, ট্রানজিট কেন্দ্রসহ নানা অবকাঠামো দেখানো হয়েছে। তাদের সাথে যাওয়া শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানায় যে, তারা মংডু শহর ও গ্রামে গিয়ে সেখানকার রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেছে, সেখানকার পরিবেশ অনেক ভালো। মংডু শহরে রোহিঙ্গারা অবাধে ঘুরছে ও কাজকর্মে ব্যস্ত রয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আশাবাদী। রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে তাদের সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখাতে এই সফরের ব্যবস্থা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল মে মাসে বাংলাদেশ সফরে আসবে। সেসময় প্রতিনিধিদলটি প্রত্যাবাসন নিয়ে আস্থা বাড়াতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। সবকিছু ঠিকমত চললে মে মাসে ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গার প্রথম দলটি নিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় চীন ও মিয়ানমার। এ বছর আরও ৫ ধাপে প্রতিবারে ১ হাজার ২০০ জন করে ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পাইলট প্রকল্প নির্বিঘ্নে বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যাবাসন ও অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে আসিয়ান, ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবে বলে জানা যায়। বর্তমান প্রত্যাবাসন উদ্যোগ ও সম্ভাব্য ছয় হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামী ডিসেম্বরে আরেকটা বৈঠক হবে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চীন কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চীনের বিশেষ দূত দেং সি জুন মিয়ানমার সফর করে। গত ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিবের সাথে দেখা করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানায় যে, চীন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘অবিচলভাবে মধ্যস্থতা’র কাজ করছে এবং প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান। চীনের রাষ্ট্রদূত আশা করে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি টেকসই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং তা হওয়া উচিত। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলছেন যে, গত পাঁচ-ছয় মাসে মিয়ানমার পক্ষের ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে, এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত হবে বলে আশা করা যায়। ৪ মে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আরও বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চায়।

রাখাইনের পরিস্থিতি বুঝতে হলে রোহিঙ্গাদেরকে এই প্রত্যাবাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো প্রয়োজন নচেৎ এই সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে যা কারো কাম্য নয়। অনির্দিষ্টকাল বাংলাদেশে থেকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে মিয়ানমারের সুযোগ সুবিধা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা বাস্তবসম্মত হবে না— কারণ গত ছয় বছরে তা সম্ভব হয়নি। রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তাদের অধিকার আদায়ের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। রাখাইনদের সাথে মিলেমিশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যুগ যুগ ধরে বসবাস করতে হবে তাই তাদেরকে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। মংডুতে রোহিঙ্গাদের স্বাধীন ব্যবসা–বাণিজ্য এবং মডেল ভিলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের সচেতন করা গেলে প্রত্যাবাসনে তাদের আগ্রহ বাড়বে বলে আশা করা যায়।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরার পর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, আসিয়ান বা বাংলাদেশের বন্ধু কোনো রাষ্ট্রের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে কি না কিংবা তাদের ভূমিকা কী হবে সে বিষয়ে সুষ্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। আসিয়ান মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য একটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার কাজ করছে। এর মাধ্যমে কতজন মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন, কোথায় এবং কি সাহায্যের প্রয়োজন তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদেরকেও এই উদ্যোগের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এই প্রেক্ষিতে দাতাগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা স্বার্থরক্ষায় কর্মরত সংস্থাগুলো ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে তারা এই কার্যক্রমে সহায়তা করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ চলমান এই দীর্ঘমেয়াদী মানবিক সংকট উত্তরণে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে। সবদিক বিবেচনা করে পরিবারভিত্তিক এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে আত্মবিশ্বাস যোগাবে এবং একটা আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এই চলমান উদ্যোগে জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে সাথে নেওয়া না হলেও জাপানের সাথে মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় জাপান প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত এই মানবিক উদ্যোগে পশ্চিমা বিশ্বের মুখপাত্র হিসেবে সমন্বয়কের কাজ করতে পারে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার পর প্রথম দলের মিয়ানমারে অবস্থানকালীন কী সমস্যা হচ্ছে সেটা জেনে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইনের জনগনের সাথে রোহিঙ্গাদের সুসম্পর্ক স্থাপন ও সহবস্থান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে কাজ করতে হবে। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সরকার, রাখাইনের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর রোহিঙ্গাদের প্রতি যে কট্টর মনোভাব ও বিরূপ ধারণা ছিল গত ছয় বছরে তা কিছুটা হলেও ইতিবাচক হয়েছে যা আরাকান আর্মি ও এন ইউ জি’র বক্তব্য থেকে জানা যায়। রাতারাতি এই মনোভাব পরিবর্তন সম্ভব না তবে ইতিবাচক দিকে তা চলমান থাকলে একদিন তা বদলে যাবেই।

ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদেরকে আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ চলমান রাখবে বলে জানিয়েছে যা তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে রখাইনের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে। রাখাইনের আর্থিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেখানে কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি হবে, অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এলে এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজমান বৈরি মনোভাব কমে যাবে। এই পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি করতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা জরুরি। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে দাতাগোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রথম দিকে আরাকানে তাদের এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে হবে। আশা করা যায় যে, মিয়ানমার সরকার ও আরাকানের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সেখানে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে তারা তাদের চুক্তি নবায়ন করে কিংবা নতুন করে চুক্তি করে মানবিক সাহায্য প্রদান অব্যাহত রাখবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে যার যার অবস্থানে থেকে এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে সর্বতোভাবে চেষ্টা করতে হবে।

পাইলট প্রকল্পটি যেভাবে শুরু হয়েছে সেই পথ অনুসরণ করে এই প্রক্রিয়া যেন সফলতার মুখ দেখে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় তাদের নিজ বাসভূমে ফিরে যেতে পারে তার জন্য সকল পক্ষকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। বৈশ্বিক এই সংকট বৈশ্বিকভাবে মোকাবিলা করা হোক এবং বাংলাদেশকে এই সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্য সবার আন্তরিক সমর্থন প্রয়োজন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসান মো. শামসুদ্দীন: মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

আরএ/

Header Ad

হাফ ভাড়া না নেওয়ায় ৩০ বাস আটকেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ভিআইপি পরিবহনের বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা ৩০টি বাস আটক করেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী সাবিত, যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের ছাত্র, অভিযোগ করেছেন যে তিনি বাসে উঠার পর হাফ ভাড়া নিয়ে বাসের হেল্পারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বাস থেকে নামার সময় হেল্পার তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, ফলে তার দুই পা কেটে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে হয়।

আহত সাবিত জানান, "আমি আজিমপুর থেকে কলেজে আসার জন্য ভিআইপি বাসে উঠি। নামার সময় হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় তারা আমার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, যার ফলে আমি পা ও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হই।"

অপরদিকে, আটক বাস চালকরা জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী কোনো ঘটনার কারণে এসব বাস আটক করা হয়েছে। লিটন নামের এক চালক বলেন, "কোন বাসের সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে সেটা আমি জানি না। তবে, শুনেছি কলেজের এক ছাত্রকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে হেল্পার। তাই আমাদের বাসগুলো আটক করেছে।"

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং নিউমার্কেট থানাকে জানিয়েছি। থানার কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি দেখছে। তবে শিক্ষার্থীদের নিজেদের হাতে বিচার তুলে নেওয়া উচিত নয়।"

বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে স্থানীয় নিউমার্কেট থানার পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আটক বাসগুলো নিয়ে যায় মালিকপক্ষ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

Header Ad

ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের অবসান ঘটেছে, ঘোষণা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘকাল ধরে চলমান ভারত ও চীনের সীমান্ত সমস্যা অবশেষে মিটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটেছে, কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি উন্নতির পথে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এবং আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপির রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) সংক্রান্ত এলাকায় 'টহল বন্দোবস্ত' এবং সেনা মোতায়েনের বিষয়ে যে অচলাবস্থা ছিল, তা সমাধান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। তাঁর এই সফরের প্রেক্ষিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বলেন, "গত কয়েক সপ্তাহে ভারত ও চীনের কূটনীতিক এবং সামরিক মধ্যস্থতাকারীরা বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনার ফলস্বরূপ, সীমান্তে বিরোধের বিষয়গুলো সমাধান হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, দুই দেশ এখন 'পরবর্তী উদ্যোগ' নিতে শুরু করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এই চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, "২০২০ সালের আগে সীমান্তে যে ধরনের টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হত, তা আবারও শুরু হবে।"

যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চুক্তির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে জয়শঙ্কর বলেছেন, "২০২০ সালের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছি, যার মাধ্যমে আমি বলতে পারি যে চীনের সঙ্গে সীমান্তে বিরোধের অবসান ঘটেছে।"

অতীতে, ভারত সরকার জানিয়েছিল যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি তখনই ফিরে আসবে, যখন চীন তাদের সেনা সরিয়ে নেবে। চীনের সেনা মোতায়েনের জবাবে ভারতও ওই এলাকায় সেনা মোতায়েন করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিকস সম্মেলন শুরুর এক দিন আগে এই ঘোষণায় মোদি ও শি জিনপিংয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মোদি ও শি'র দেখা হয়েছে ১৪ বার, কিন্তু ২০২২ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘাতের পর মাত্র দুইবার তারা সাক্ষাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লি জিয়ান জানিয়েছেন, "ভারত-চীন সীমান্তের বিরোধিতাপূর্ণ বিষয়গুলো সমাধানে দুই দেশ একমত হয়েছে।"

Header Ad

টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গেটে তালা দিল গ্রাহকরা

ছবি: সংগৃহীত

টাকা না পাওয়ায় চাঁদপুরের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) শাখায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত ব্যাংকটিতে টাকা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকরা জড়ো হন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লেনদেন বন্ধ রাখলে উত্তেজিত গ্রাহকরা প্রবেশদ্বারে তালা লাগিয়ে দেন।

পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়। চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া উপস্থিত হয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

চাঁদপুর জেলা শাখায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ২২ হাজার গ্রাহক রয়েছে, কিন্তু বর্তমানে ১০০ জন গ্রাহকেরও টাকা দিতে পারছে না ব্যাংক। জেলার অন্যান্য শাখাগুলোর পরিস্থিতিও একই রকম। ব্যাংকের টাকা সংকটের কারণে গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী সেবা পাচ্ছেন না, যা তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকটির লেনদেনে জটিলতা শুরু হয় এবং তা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বর্তমানে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে টাকার সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো সেবা দিতে পারছে না।

অনেক গ্রাহক জানান, দুই সপ্তাহ ধরে টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে এসে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রতিবারই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের পরবর্তী সপ্তাহে আসার পরামর্শ দেন, কিন্তু টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয় না। আজকের দিনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংকের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মাহবুব আলম জানান, রোববার ও সোমবার সীমিত আকারে লেনদেন চলছিল, তবে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। আজ সম্পূর্ণ লেনদেন বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা তালা মেরেছেন। তিনি আরও জানান, প্রধান কার্যালয় থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে, যা দিয়ে আপাতত গ্রাহকদের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া সম্ভব হবে।

ওসি মো. বাহার মিয়া বলেন, "ব্যাংকে ভিড় জমেছে এবং গ্রাহকরা তাদের টাকা পাচ্ছেন না, এমন খবর পেয়ে আমরা টহল পার্টি পাঠাই। পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে কিছু টাকার ব্যবস্থা করি। আশা করছি, আপাতত গ্রাহকদের শান্ত করা যাবে।"

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাফ ভাড়া না নেওয়ায় ৩০ বাস আটকেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা
ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের অবসান ঘটেছে, ঘোষণা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গেটে তালা দিল গ্রাহকরা
২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম
আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ শিশু মুসা উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলো
বিরামপুরে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
১৭ প্রতিষ্ঠানসহ সালমান পরিবারের নথি তলবে ৭০ সংস্থায় চিঠি
আন্ডারপাসের দাবিতে ঢাকা-যমুনা সেতু মহাসড়ক অবরোধ, যানবাহনের দীর্ঘলাইন
নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুলল
এসআই অব্যাহতির পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ক্ষমা চেয়ে আদালতে ব্যারিস্টার সুমন বললেন, ‘আমি খুব সরি স্যার’
ফেসবুক লাইভে মিথ্যা আতঙ্ক ছড়ালেন সাদিয়া আয়মান
পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন ১৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
১৬ বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি করেছেন শাজাহান খান
নারায়ণগঞ্জে আসামির ছুরিকাঘাতে পুলিশ সদস্য আহত
ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৫৭ বাংলাদেশি
সারদায় পুলিশের ২৫০ ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গনজমায়েতের ডাক
৩৬৯ দিন পর অবশেষে মাঠে ফিরলেন নেইমার