ধর্ম

ইসলামে মানবতার গুরুত্ব


ঢাকাপ্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ :২৯ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৪৮ এএম

ইসলামে মানবতার গুরুত্ব
ছবি- সংগৃহীত

সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। তবে মানুষ হয়ে জন্ম নিলেই সৃষ্টির সেরা হওয়া যায় না। মানবিক গুণাবলিগুলো ভেতরে ধারণ করতে হয়। সব ধর্মেই মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। মানুষের ধর্ম, বর্ণ, গন্তব্য আলাদা হলেও সবাই, একই প্রাণ থেকে জন্ম নিয়েছে বলে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে।

সুরা নিসার আয়াত-১-এ বলা হয়েছে, ‘হে মানবজাতি, তোমাদের রবকে ভয় কর। যিনি তোমাদের এক প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা থেকে সৃষ্টি করছেন তারই স্ত্রীকে। এরপর উভয় থেকে অসংখ্য পুরুষ ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন’।

কুরআন শরিফে মানবতা ও মানুষের কল্যাণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। হজরত মুহাম্মাদ (সা.) -এর জীবন ও তার কর্মের মধ্যে মানবতা ও সামাজিক কল্যাণের বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে।

কুরআন শরিফে নির্দেশিত নিয়মাবলী ও হজরত মুহম্মদের জীবনযাত্রা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অনুসরণীয়। ইসলাম ধর্ম সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ের জন্য কুরআন ও নবীর জীবনের ওপর নির্ভর করতে হবে।

ইসলাম ধর্মে সামাজিক কল্যাণে উৎসাহিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একজন মানুষ নিজেকে সামাজিক কল্যাণে যুক্ত না করলে তার ধর্মীয় জীবনকে অপূর্ণ বলে ধরে নেওয়া হয়। আত্নীয়-স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্য নিজের সম্পদ ব্যয় করার কথা ইসলামে বলা হয়েছে।

হাদিসে কুদসিতে (পবিত্র হাদিস) বলা হয়েছে, “আল্লাহ, হাশরের দিন, সেসব মানুষের ওপর অসন্তুষ্ট হবেন, যারা অসুস্থ রোগীদের সেবা করেনি এবং যারা ক্ষুধার্তদের খাবার দেননি।” এই হাদিসের মাধ্যমে মানব সমাজকে অন্যের প্রয়োজনের সময় সাড়া দেওয়ার বাধ্যবাধকতার বিষয়টিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ধর্ম নিয়ে হানাহানি চলছে বিশ্বজুড়ে। ধমীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও সংখ্যালঘু নির্যাতন কোনো ধর্মেই সমর্থনযোগ্য নয়। ইসলাম ধর্মে সংখ্যালঘু নির্যাতন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

একটি হাদিসে মুহম্মদ (সা.) বলেন, “প্রতিবেশীর ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক না কেন, ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের তাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে যথাসাধ্য বিনয় আচরণ করতে হবে। তাদের অসুবিধা হতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না।“

পবিত্র কুরআনেও প্রতিবেশীর দৈনন্দিন প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পবিত্র হাদিস শরিফে মুহাম্মাদ (স.) বলেন, ”যে ব্যক্তি পেট ভরে খান, আর পাশেই তার প্রতিবেশী না খেয়ে থাকেন, তিনি মুমিন নন।”

মুহাম্মদ (সা.) বলেন, “সাবধান! যদি কোনো মুসলিম কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে তার অধিকার খর্ব করেন, কষ্ট দেন এবং তার কোনো বস্তু জোর করে নিয়ে নেন, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার পক্ষে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ উত্থাপন করব (আবূ দাঊদ: ৩০৫২)।”

এসএন