মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫ | ৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

দেশ নিয়ে আমাদের যেভাবে ভাবতে হবে

ক্ষুদিরাম বসু একজন ভারতীয়-বাঙালি বিপ্লবী কিশোর যিনি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। মাতা-পিতাহীন শিশুটি বাঙ্গালী মায়ের পরিচয়ে বেড়ে ওঠেন। এই দেশের মাটিই ছিলো তার মা। নির্দিষ্ট ভূ-খন্ড নয় বরং সমগ্র ভারতবর্ষকে ছেলেটি নিজের সম্পদ বলে মনে করতেন। এদেশের সকল মানুষকে নিয়েই ছিলো তার পরিবার। তাইতো কিশোর বয়সেই তার ভূ-খন্ড ও পরিবারকে ইংরেজ বাহিনীর শোষণ পীড়ন থেকে রক্ষা করতে হাতে অস্ত্র তুলে নেন। সাড়া ফেলেছেন ব্রিটিশ মহলে। এমনকি ব্রিটিশদের ঘুমও হারাম করেছেন। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন বয়সে ফাঁসির কাষ্ঠ বরণ করেন।

আমরা ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের গল্প জানি। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করলেও ব্যক্তি সুখকে বরণ না করে তিনি সমগ্র বাঙ্গালীর সুখ বরণ করতে চেয়েছেন। জ্বলে উঠেছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আমরা তিতুমীরের গল্প জানি। তিতুমীরের গল্প ও সাহসিকতার বয়ান তুলতে গিয়ে মুখে ফেনা তুলি। আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলার গল্প পড়তে পড়তে চোখে ছানি পেলেছি। মীর জাফরের নামটিকে গালি হিসেবে গ্রহণ করেছি। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে আদর্শ হিসেবে পেশ করি। তাজ উদ্দিন আহমদ, কামারুজ্জামান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও মনসুর আলীর গল্প শোনাই এবং তাদেরকে শ্রদ্ধা করি। আবার খন্দকার মোস্তাকের নাম শুনলেই মুখে থুতু পেলি মন ভরে ঘৃণা করি। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কথা বলি। বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে উচ্চতর গবেষণা করি। চেতনায় বুদ হয়ে যাই।মুখে মুখে বাংলা মায়ের জন্য জীবন বিলাই। বক্তব্য দিতে গেলে জ্ঞান হারিয়ে পেলি। কে কার থেকে বেশি চেতনাময়ী বক্তব্য উপস্থাপন করবো সে প্রতিযোগিতায় নেমে যাই।

দেশকে ভালোবাসা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। দেশ চেতনা আমাদের হৃদয়ের গভীরে সুপ্ত থাকে। দেশের ক্লান্তি, দুঃখ-দুর্দশা, দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে আমরা দেশের জন্য টান অনুভব করি। সে টান থেকেই ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার আন্দোলনে দেশের লাখো তরুণ অকাতরে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে। মনীষী জ্যাকসন বলেছেন, ‘যে মায়ের সন্তান দেশের জন্যে জীবন দিয়েছে, তার মাতৃত্বের গৌরব চির ভাস্বর। দেশপ্রেম থাকা চাই বৈদেশিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্যে। ইতিহাস বার বার এটাই প্রমাণ করেছে যে, দেশপ্রেমিক জাতি শত্রুর কাছে কখনও পরাজিত হয় না। সে জাতির অন্তরে জ্বলতে থাকে দেশপ্রেমের আগুন অনির্বাণ শিখার ন্যায়। সারা পৃথিবীর মায়া-মমতা, স্নেহ সব একত্রিত করলেও যেমন মায়ের অকৃত্রিম স্নেহের সঙ্গে তুলনা করা যায় না তেমনি সারা পৃথিবীর ঐশ্বর্য-বৈভব ও সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজ দেশের কোনো তুলনা হতে পারে না। কবি তার কাব্যে, দেশকর্মী তার সমাজসেবায়, গায়ক তার গানে, শিল্পী তার ছবিতে, বৈজ্ঞানিক তার বিজ্ঞান চর্চায়, শিক্ষক তার একনিষ্ঠ শিক্ষকতায় দেশপ্রেমের পরিচয় প্রদান করতে পারেন। কবি বলেছেন, ‘তুমি দেশকে যথার্থ ভালবাস তার চরম পরীক্ষা, তুমি দেশের জন্য মরতে পার কি-না।’ আমার দেশের ছেলেরা যুগে যুগে জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা এদেশকে যথার্থ ভালোবাসে। তাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে তারা তৃপ্তির সহিত জীবন দিয়েছে।তাদের ভাবনা ছিলো আমার জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে এদেশে আর কাউকে আমার মত জীবন দিতে হবে না। মা-বোন ধর্ষিতা হওয়ার পরও হেরে যায়নি। তাদের ভাবনা ছিলো আমার ধর্ষিতা হওয়ার বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে এদেশে আর কাউকে ধর্ষিতা হতে হবেনা। বিধবার চিন্তা ছিলো আমার পর আর কাউকে বিধবা হতে হবেনা।

আফসোস যে আদর্শ আজ আমাদের মুখে মুখে। আমরা আমাদের বীরাঙ্গনা মায়ের স্বপ্ন, শহীদ ভাইয়ের চেতনা, বিধবা মায়ের আকুতিময় চাহনির মূল্য দিতে পারিনি। কথায় আছে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও তা রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের আজ বহিঃশত্রু নেই। আমরা নিজেরাই আজ নিজেদের শত্রু। রক্ষক আজ ভক্ষক। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রুটিরুজির উপকরণে পরিণত। জনগণকে চেতনার বড়ি খাওয়াইয়া নিজেরা নিজের মত করে দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছি। সর্বত্র দুর্নীতি। সরকারি অফিসের পিয়ন থেকে সর্বোচ্চ কর্তা পর্যন্ত প্রায় সবার বিরুদ্ধে দুর্নতির অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নন। দুর্নীতির এতোই ছড়াছড়ি যে, খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখি নৈতিক অবক্ষয়, অপহরণ, ছিনতাই, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ নানান সমস্যা। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে যতই স্বপ্ন দেখাবার চেষ্টা করুক না কেন, আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও তার কোনো সুফল দেখিনি।

রাজনৈতিক দল গুলো পরস্পরকে দোষারোপ করে কাঁদা ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে দেশের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছেন। সত্যিকার অর্থে আমাদের মধ্যে দেশপ্রেমের বড়ই অভাব। এ কথায় কেহ বা মনোক্ষুন্ন হতে পারে, কেউবা বলতে পারে আমরা কি দেশকে ভালবাসি না? অবশ্যই আমরা সবাই দেশকে ভালবাসি। কিন্তু কিছু কিছু কুলাঙ্গার দেশের স্বার্থ থেকে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থটাকে অনেক বড় করে দেখে।যার ফলে দেশের আজ এই দুর্গতি।আমরা দেশটাকে নিজের করে ভাবতে ভুলে গেছি। দেশের মানুষকে নিজের আপন বংশের মানুষ মনে করতে ভুলে গেছি। নিজ পেটের ধান্ধায় সব ভুলে হিংস্র নেকড়ের রূপ ধারণ করেছি। আজ আমরা এতোই বেপরোয়া যে, যেন সুযোগ পেলে নিজ ভূখন্ডকে বিক্রি করে দিয়ে ইউরোপ আমেরিকায় গিয়ে অবস্থান নেই। নিজেকে নিজে ভালো রাখতে গিয়ে আমরা নিজেদের অস্তিত্বকে ভুলে গেছি। হারিয়ে পেলেছি মায়ের মমতার স্মৃতি। ভুলে যাই এদশের ধুলো-বালির মধ্যেই আমার অস্তিত্ব। আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হেবে। বাংলাকে নিজের মায়ের মত দেখতে হবে। জননী এবং জন্মভূমি আমাদের কাছে পরম শ্রদ্ধেয়া। জননী জন্মদাত্রী স্তন্যে-স্নেহে আমাদের লালন-পালন করে। আর জন্মভূমি আমাদের সবাইকে শস্যে ফলে অন্নে পানীয়ে পুষ্ট করে তোলে। তাই সেও আমাদের জননী। কবি গেয়ে ওঠেন, “তুমি মুখে তুলে দিলে, তুমি শীতল জলে জুড়াইলে, তুমি যে সকল সহা সকল বহা মাতার মাতা”। তাই জননীর কাছে আমাদের যেমন অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে অনুরুপ জন্মভূমির প্রতিও আমাদের সকলের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। আমাদেরকে সে কর্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। একটি দেশের মানোন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের জনতার উপর। দেশের নাগরিকের মধ্যে দেশ মাতার ভালোবাসা না থাকলে দেশ মাতা কখনো সাফল্যে ভরপুর হয়না। একটি দেশকে অগ্রযাত্রার দিকে ধাবিত করে দেশ মায়ের টান ও ভালোবাসায়। দেশ প্রেম একটি মানুষকে দেশের প্রতি আত্ম ত্যাগে উৎসাহিত করে। যদি কোন ব্যাক্তি তার দেশের প্রতি নিজেকে ঋনী না মনে করেন তাহলে তার সেই দেশের নাগরিক ও সে দেশের একজন সন্তান দাবি করাই বৃথা।কারন প্রতিটি মানুষের তার দেশের প্রতি সীমাহীন ঋন রয়েছে। আর তা কখনোই শোধ হবার নয়। দেশকে ভিন্ন দেশের নিকট মহিমান্বিত করে তোলার জন্য একমাত্র উপায় হলো স্বদেশে প্রেম। দেশপ্রেম হলো দেশের প্রতি ভালবাসা। কিন্তু আপনি আপনার দেশের জনগণকে ভালো না বেশে আপনার দেশকে ভালবাসতে পারবেন না। আমাদের শপথ করতে হবে না, তবে আমাদের একে অপরকে শক্তিশালী করতে হবে, আমাদের অবশ্যই সাধারণ সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে হবে, সবার ভালোর জন্য অমিল গুলো বাদ দিয়ে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে । আমাদেরকে আমাদের স্বরণীয় বরণীয় ব্যক্তিদের আত্মজীবনী শুধু লেখা পড়া ও বক্তৃতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের জীবনে তাদের চেতনা আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেশের উপকারে যিনি নিবেদিত প্রাণ তিনিই প্রকৃত নাগরিক। পক্ষান্তরে দেশপ্রেমহীন আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তি নিঃসন্দেহে অধমের সমান। সমাজ জীবনে প্রতিনিয়ত এহেন মূর্খের মত বিবেকবর্জিত অমানুষ দেখতেন বলেই হয়তো আমাদের পূর্বসুরি রাজনৈতিক নেতারা প্রথমে মানুষ হওয়ার কথাই বলতেন। কিন্তু পূর্বপুরুষদের মত আদর্শবান রাজনৈতিক নেতা আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। তাই তাঁদের মূল্যবান কথাগুলো স্মরণীয় ও বরণীয় বাণীতে পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই নিজেদেরকে যতই লেখক, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক বা সচেতন নাগরিক হিসাবে দাবি করি না কেন, আমাদের উচিত হবে আমাদের চিন্তা-চেতনায় সে সব ব্যক্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখা, তাঁদেরকে স্মরণ করা। দেশের রক্ষক হচ্ছেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা ও সামরিকে বাহিনীর সদস্যরা। তাদের প্রথম ও একমাত্র কাজই হলো দেশকে ভালোবাসা। দেশটাকে নিজের মায়ের মত করে শ্রদ্ধা করা। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বহুলাংশে তাদের কর্মজ্ঞান ভুলে পথভ্রষ্ট হয়ে আছেন। নেতারা দেশের স্বার্থ থেকে নিজের ও দলের স্বার্থকে বড় করে দেখছেন। যার প্রকৃত উদাহরণ ফুটে ওঠে হরতাল নামক ধ্বংসযঙ্গের মাধ্যমে। হরতাল অবরোধ দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক উপায় হলেও তারা নিজ দলের স্বার্থে রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করে দেশের সম্পদ বিনষ্টে একটুও কুণ্ঠাবোধ করেন না। তারা দলের স্বার্থ থেকে দেশে মাতার স্বার্থকে বড় করে দেখলে দেশে কোনো অরাজকতা থাকতো না। সবসময় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন হয় বলে সরকারি দল দাবি করলেও তারা যখন হেরে বিরোধী দল হয়ে যায় তখন কারচুপির অভিযোগ তুলেন। স্বাধীনতাত্তোর দেশের একটি নির্বাচনেও বিরোধী দল কর্তৃক সরকারি দলকে অভিনন্দন জানাতে দেখলাম না। আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে নতুন করে দেশপ্রেমের বীজ রোপন করতে হবে। রাজনীতিবিদদের সার্বিক কর্মকাণ্ডই উপরেই দেশের ভবিষ্যত নির্ভরশীল। তারা রাজনীতিকে ব্যবসা বা পেশা হিসাবে নয়, সেবা হিসাবে নিতে পারলেই দেশের বর্তমান ভয়াবহ অবস্থার অবসান হবে। দেশের মঙ্গলে দেশের সকল নাগরিকেরও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশকে প্রাণাধিক ভালবাসতে হবে এবং শুধু ভালবাসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা, দেশসেবায় ব্রত হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশপ্রেম নয় কোনো নিছক বিমূত আদর্শ, নয় কতগুলো প্রাণহীন শব্দের সমাহার। আমাদেরকে সোচ্চার কণ্ঠে বলতে হবে, জীবনকে ভালবাসি সত্য কিন্তু দেশের চেয়ে বেশি নয়।

 

লেখক
মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা
প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।
ইমেইল-tohaarafat1998@gmail.com
মোবাইল-01781704368

 

Header Ad
Header Ad

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বলিউড ইনফ্লুয়েন্সার ওরি আটক

বলিউড ইনফ্লুয়েন্সার ওরি। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অন্দরে সব তারতার সঙ্গে দেখা যায় জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েনসার ওরিকে। এমনকী আম্বানি পরিবারের সঙ্গেও রয়েছে তার দারুণ সখ্য। জনপ্রিয় এই বলি ইনফ্লুয়েনসারকে আটক করা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে।

বৈষ্ণোদেবী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মদ্যপান করায় তাকে আটক করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। জানা গেছে, জায়গাটিকে হিন্দু ধর্মের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে মান্যতা দেওয়ায় সেখানে আমিষ খাবার ও মদ্যপানের ব্যাপারে নিষেধ রয়েছে। সেই নিয়মই লঙ্ঘন করেন ওরি।

কাটরা থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যেখানে ওরি-সহ তার সাত বন্ধু দর্শন সিং, পার্থ রায়না, ঋত্বিক সিং, রাশি দত্ত, রক্ষিতা ভোগল, শাগুন কোহলি এবং রুশ নাগরিক আরজামাস্কিনাকে অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ লঙ্ঘন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বলিউড ইনফ্লুয়েন্সার ওরি। ছবি: সংগৃহীত

রিয়াসি পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, ‘ধর্মীয় স্থানে মদ্যপান বা মাদক সেবনের মতো কার্যকলাপে কেউ লিপ্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ওরির জীবনযাত্রা নিয়ে উৎসাহের অন্ত নেই নেটাপাড়ার বাসিন্দাদের। মাত্র তিন-চার বছরের মধ্যে নেটপ্রভাবী হয়ে উঠেছেন ওরি। আম্বানিদের বাড়ির বিয়ে হোক, কিংবা বলি নায়িকার সাধের অনুষ্ঠান, বলিউডের যে কোনো উদযাপনে তার উপস্থিতি অবধারিত।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার, আলোচনায় থাকছে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে প্রথম দফার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টা থেকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠকটি হবে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। ঈদের আগে ২৪ মার্চ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলবে। সম্ভাব্যতার ভিত্তিতে আগামী সপ্তাহে আরও দুটি দলের সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৫টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। এদিন জাতীয় গণফ্রন্ট ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) তাদের মতামত জমা দেয়। এছাড়া বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল তাদের পূর্ণাঙ্গ মতামত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জমা দেবে বলে কমিশন জানিয়েছে।

মতামত জমা দেওয়া বাকি ১৩টি দল হলো—লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং নাগরিক ঐক্য।

গত বছর সরকার সংবিধান, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি, পুলিশ এবং নির্বাচন সংস্কার বিষয়ে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। ফেব্রুয়ারি মাসে পাঁচটি কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ মতামত জমা দেয়। এরপর সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত সংগ্রহের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়।

পুলিশ সংস্কার বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত সংগ্রহের জন্য ১৬৬টি প্রশ্ন স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এই মতামত জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল ১৩ মার্চ।

সংলাপের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও প্রস্তাবনাগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।

Header Ad
Header Ad

গ্রামের মানুষকে নিজ হাতে ঈদ উপহার দিলেন হামজা

গ্রামের মানুষকে নিজ হাতে ঈদ উপহার দিলেন হামজা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নতুন সদস্য হামজা চৌধুরী। যার এখনও লাল-সবুজের জার্সিতে এখনও অভিষেক হয়নি, কিন্তু তার আগেই ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। সোমবার (১৭ মার্চ) বিকেলে তিনি তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার স্বানঘাটে পৌঁছালে সেখানে এক বিশাল উৎসবের আয়োজন হয়।

হামজার আগমনকে ঘিরে গ্রামের বাড়ি হয়ে ওঠে আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু। গ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ তার বাড়িতে আসতে শুরু করেন। অনেকটা যেন বিয়ে বাড়ির মতো পরিবেশ তৈরি হয়। সেখানে হামজা চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে ঈদ উপহার বিতরণ করেন, বিশেষত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মধ্যে। হলুদ খামে ভরা ঈদ উপহার নিজ হাতে তুলে দেন তিনি।

এদিন সকালে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান হামজা। তাকে বরণ করে নিতে সকাল থেকেই বিমানবন্দর এলাকায় উপচেপড়া ভিড় ছিল। পরে বিকালে তিনি হবিগঞ্জ জেলার স্নানঘাটে পৌঁছালে হাজার হাজার মানুষ ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেন।

হামজার আগমনে তার বাড়ি সাজানো হয়েছে বেশ বর্ণিলভাবে, এবং পুরো এলাকায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাড়ির প্রবেশপথসহ বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়, যেন তিনি যে পরিমাণ ভালোবাসা পেয়েছেন, সেটি প্রতিফলিত হয়। হামজার বাড়ির পাশেই একটি ছোট মঞ্চ তৈরি করা হয়, যেখানে তিনি অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন।

এ বিষয়ে হামজার চাচা দেওয়ান মাসুদ জানান, ২০১৪ সালে হামজা সর্বশেষ দেশে এসেছিলেন। ২০২২ সালে তার বিয়ে হলেও এরপর আর দেশে আসেননি। তবে এই সফরে তাদের আগমন ঘিরে পুরো জেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

হামজার বাবা দেওয়ান গোলাম মোর্শেদ বলেন, অনেকেই তাকে সংবর্ধনা দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তা বারণ করেছেন। রমজান মাসে দীর্ঘ সফর শেষে পরিবারের সদস্যদের জন্য ছোট একটি ইফতার আয়োজন করেছেন। এছাড়া তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসায় সকলের সম্মানে এই আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামী ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে খেলবে। এই ম্যাচ দিয়েই হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক ঘটাবেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বলিউড ইনফ্লুয়েন্সার ওরি আটক
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার, আলোচনায় থাকছে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব
গ্রামের মানুষকে নিজ হাতে ঈদ উপহার দিলেন হামজা
ছাত্রদের নতুন দলের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই: মাসুদ সাঈদী
সাদ্দাম-ইনানসহ ঢাবির বহিষ্কৃত ১২৮ ছাত্রলীগ নেতার নাম-পরিচয় প্রকাশ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক রাতে নিহত ৪০০ ছাড়াল, আহতের সংখ্যা ৬৬০
১৫ দিনের মধ্যে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পাকিস্তানের কল সেন্টারে জনতার তাণ্ডব, শত শত ল্যাপটপসহ ইলেকট্রনিক পণ্য লুট!
নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে দাঁড়িয়েই ট্রাফিক পুলিশদের ইফতারি (ভিডিও)
যমুনা রেলসেতুতে দুর্নীতি হলে খতিয়ে দেখা হবে: রেলপথ সচিব
এবার খলনায়ক হয়ে ফিরছেন শাহরুখ খান, থাকছেন আল্লু অর্জুন!
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর নতুন প্রধান মহিউল ইসলাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ৬
আপনি কি পরিবারের বড় সন্তান? আপনাকে অভিনন্দন!
টিসিবির জন্য রাইস ব্রান তেল ও মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত সরকারের
ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার
শেখ হাসিনা ও রেহানার পরিবারের ৩৯৪ কোটি টাকা জব্দ
ফেসবুক স্টোরি থেকেও আয়ের সুযোগ
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীনে একাধিক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন ফিরে পেলেন শফিক রেহমান