পেনশন ও নিয়োগপত্রের দুই শর্ত প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি রাজধানীর রেল ভবনে রেলওয়ে মহাপরিচালকের সঙ্গে সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি-দাওয়া পূরণে বারবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতদিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও তারা আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সুরাহা করছে না। তারা বারবার সময় চাইছে। আমরা মহাপরিচালকের সঙ্গে সভায় আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে তারা যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে ২৮ তারিখ সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু হবে।
মো. মজিবুর রহমান বলেন, রেলের রানিং স্টাফদের মধ্যে রয়েছেন লোকোমাস্টার (এলএম), সহকারী লোকোমাস্টার (এএলএম) এবং সাব-লোকোমাস্টার (এসএলএম)। ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে ১৫-১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। সেজন্য তাদের দেওয়া হয় বিশেষ আর্থিক সুবিধা, যাকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয় মাইলেজ। মাইলেজ রানিং স্টাফদের বেতনেরই অংশ।
মাইলেজের হিসাব হলো, প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক বেসিকের সমপরিমাণ টাকা বেশি পাবেন। ৮ ঘণ্টায় এক দিনের কর্মদিন ধরলে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে কাজ দাঁড়ায় আড়াই বা দুই-তিন মাসের সমপরিমাণ। তাদের বেতনও সেভাবেই দেওয়া হয়। এ ছাড়া মূল বেতনের হিসাবে অবসরকালীন ভাতা যা হয় তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করে। এরপর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ ধারাবাহিকভাবে আমরা আন্দোলন করে আসছি।
অন্যদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্মঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ করতে হয় বলে অনেক রানিং স্টাফ চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। রানিং স্টাফ পদে এতে ২ হাজার ২৩৫ জন কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও এখন ১ হাজার ১৩৫ জন কাজ করছেন। এতে রানিং স্টাফরা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছেন না।
অবশ্য এর আগেও মাইলেজের দাবিতে রেলের রানিং স্টাফরা আংশিক কর্মবিরতি পালন করেছেন। এতে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় শুরু হয়, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। চলতি ডিসেম্বর মাসে রানিং স্টাফদের কর্মসূচিতে বেশ কয়েকটি মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে। এবার দেশব্যাপী সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
কোটি বাঙালির প্রিয় সংগীতশিল্পী মনির খান শোকাহত। তার বাবা মো. মাহবুব আলী খান মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে ৯৯ বছর বয়সে মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাই রাজিউন)। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ঝিনাইদহে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মদনপুর গ্রামে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এ শোকাবহ মুহূর্তে একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। জানাজার মাঠ থেকে চুরি হয়ে যায় শিল্পী মনির খানের আইফোন এবং তার ছেলের মোবাইল ফোন। গায়ক মনির খান নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাহবুব আলী খানকে পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রিয় বাবা হারানোর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি মনির খান, এমন অবস্থাতেই চুরির এই ঘটনা তার জন্য দুঃখজনক।
মনির খানের জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। ১৯৯৬ সালে তার *তোমার কোন দোষ নেই* অ্যালবামটি প্রকাশের পরই তিনি সংগীতপ্রেমীদের মন জয় করেন। তার কণ্ঠে প্রায় সব গানই শ্রোতাদের হৃদয়ে দাগ কাটে, বিশেষ করে 'তোমার কোন দোষ নেই' গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এরপর থেকে একের পর এক হিট অ্যালবাম এবং সিনেমার গান উপহার দিয়েছেন তিনি।
এ পর্যন্ত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে একক অ্যালবাম এবং তিন শতাধিক দ্বৈত ও মিশ্র অ্যালবামে গান গেয়েছেন মনির খান। তার সুরেলা কণ্ঠে গাওয়া গানগুলো বাংলা ভাষাভাষী শ্রোতাদের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। 'অঞ্জনা' খ্যাত এই শিল্পী তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছেন।
বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেল 'মনির খান' ও 'এমকে মিউজিক 24' থেকে নিয়মিত নতুন গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন তিনি, যা তার ভক্তদের কাছে অত্যন্ত প্রশংসিত হচ্ছে।
মোবাইল ফোন ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর নতুন করে আরোপিত কর প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে গ্রাহকদের জন্য ইন্টারনেট খরচ অপরিবর্তিত থাকছে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এনবিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম গড়ে তোলা এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইল সিম/রিম ব্যবহারের সেবা ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি এনবিআর মোবাইল সেবায় অতিরিক্ত ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছিল।
এই কর কার্যকর হলে মোবাইল সেবায় ১০০ টাকার রিচার্জে কর বেড়ে ৫৬ টাকার বেশি হয়ে যেত এবং ব্রডব্যান্ড সেবায় ৫০০ টাকার সংযোগের জন্য গ্রাহকদের অতিরিক্ত ৭৭ টাকা গুনতে হতো। গ্রাহকদের আপত্তি এবং ডিজিটাইজেশনের গতি ধরে রাখতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে সংশ্লিষ্ট মহল।