শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Dhaka Prokash

৩০ ডিসেম্বর যুগপৎ ঐক্যের জানান দিতে চায় বিএনপি

অবিলম্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি।

একইদিনে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে সরকারবিরোধী সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন ঢাকা ও রংপুরে গণমিছিল করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বড় ধরনের জমায়েত করে গণমিছিল সফলে দফায় দফায় বৈঠক করছেন দায়িত্বশীল নেতারা।

রাজধানীর বিভিন্ন স্পট থেকে বের করা হবে গণমিছিল। গণমিছিল কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি প্রায় প্রতিদিনই যৌথসভা, সমন্বয় সভা ও প্রস্তুতি সভা করছে। একইভাবে দলের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও পৃথকভাবে প্রস্তুতি সভা করেছে।

ঢাকায় গণমিছিলে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে লিয়াজোঁ কমিটি। নেতারা আশা করছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হবে না।

বিএনপির নেতারা বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ এ আন্দোলনে সাড়া দিচ্ছে। এ সরকারকে বিদায় করতে মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। এখানে বিএনপি একা নয়, সাধারণ মানুষও এই সরকারের অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তাই সবাই এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায়। চলমান আন্দোলনে বিএনপিই নেতৃত্ব দেবে। সেই কাজটাই এখন চলছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, নানা প্রতিকূলতা, মামলা-হামলা মোকাবিলা করে সরকারবিরোধী ‘বৃহৎ আন্দোলন’ গড়ে তোলার পথে হাঁটছে বিএনপি। সব দলকে সাথে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে চাপে রেখে প্রধানত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করতে চায় দলটি।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ঢাকায় গণমিছিল নয়াপল্টন থেকে শুরু হবে। আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাবে দেশের মানুষ।

বিএনপির গণমিছিলের রুট প্রকাশ

আগামী ৩০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঢাকায় অনুষ্ঠেয় গণমিছিলের রুট প্রকাশ করেছে বিএনপি। গণমিছিল শুরু হবে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে। এরপর কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর-মালিবাগ-মৌচাক-মগবাজার হয়ে বাংলামোটর গিয়ে শেষ হবে। ওইদিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত গণমিছিল হবে। এ বিষয়ে অবহিত করতে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে যাবে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে সরকার পতনে ১০ দফা ও ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওইদিন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন থাকায় ঢাকার কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তন করে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে রংপুরেও তা স্থগিত করে ঢাকার সঙ্গে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ কর্মসূচিতে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোও মাঠে নামার ঘোষণা দেয়। এদিকে ৩০ ডিসেম্বরের পর কোনো ধরনের কর্মসূচি দেবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে নেয়নি বিএনপি।

এদিকে ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশে এককভাবে বড় শোডাউনের পর এবার যুগপৎভাবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই কর্মসূচি সফল করার ঘোষণাও দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। ১০ দফা দাবিতে ওই দিন ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৩০ ডিসেম্বর ‘কালো দিবস’ হিসেবে গত কয়েক বছর ধরে পালন করে আসছে বিএনপি। এবার ওই দিন গণমিছিল থাকায়, এ দিবসটি আলাদা গুরুত্ব বহন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

নিজ নিজ দলের ব্যানারে এক এবং অভিন্ন দাবি নিয়ে মাঠে নামবেন বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপে ঐকমত্য প্রকাশ করা দলগুলো। অনানুষ্ঠানিকভাবে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটের অন্যতম বড় দল জামায়াতে ইসলামীও। সব দল মাঠে নামার প্রস্তুতি নেওয়ায় ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীতে গণমিছিলকে কেন্দ্র করে বড় শোডাউনেরই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এ দাবিতে ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা ছাড়া সারা দেশে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি পালন করে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল। কর্মসূচি পালনকালে বিভিন্ন জেলায় বাধার মুখে পড়ে দলটি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষও ঘটে। পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ছাড়া, বিভিন্ন জেলায় হামলায় শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

১২ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা যুগপৎভাবে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল করব। ২২ ডিসেম্বর যেদিন ১২ দলীয় জোটের ঘোষণা হয় সেদিনই আমরা জানিয়েছি ৩০ ডিসেম্বর বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্ক এলাকায় আমরা অবস্থান নেব।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২৪ ডিসেম্বর পুলিশ সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় বাধা দিয়েছে। পঞ্চগড়ে বিএনপির আবদুর রশিদকে গুলি করে হত্যা করেছে। তবুও কিন্তু গণমিছিল ঠেকাতে পারেনি। ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায়ও গণমিছিল সফল হবে। সফলতা দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে জনগণ বিদায় করবে। বিএনপির আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়ে রাজপথে নেমেছে। সরকার এতে ভীত হয়ে হামলা-মামলা-গ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু এতে বিএনপি একটুও পিছু হটবে না।

বিএনপি নয়াপল্টনে, ১২ দলীয় জোট বিজয়নগরে, সাতদলীয় জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটি-এলডিপি পূর্ব পান্থপথ থেকে গণমিছিল বের করবে। এ ছাড়া, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা দুটি স্পটে মিছিল করবে।

এদিকে বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটের শরিকদের নিয়ে ইতোমধ্যে আত্মপ্রকাশ হয়েছে ১২ দলীয় জোট। তবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির নেতৃত্বে ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা ঐক্যজোট’ নামে আরও একটি জোটের আগামীকাল আত্মপ্রকাশ করার কথা রয়েছে। এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, অন্তত ১০টি রাজনৈতিক দল নিয়ে হবে এ জোট। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে। আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকব। শুক্রবার রাজধানীর একটি স্পট থেকে গণমিছিল বের করব। স্পটের নাম সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হবে।

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের সমন্বয় সাত সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। কমিটির সদস্যরা হলেন-দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটি

গণতন্ত্র মঞ্চ সাত সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটির গঠন করেছে বলে জানান জোটের অন্যতম শরিক ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। কমিটির সদস্যরা হলেন-জেএসডির সভাপতি আসম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

এলডিপির লিয়াজোঁ কমিটি

লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করেছে কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিও (এলডিপি)। এতে দলের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদকে আহ্বায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলমকে সদস্য সচিব করা হয়। সেই সঙ্গে প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নিয়ামুল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল ও অ্যাডভোকেট মাহবুব মোর্শেদকে করা হয়েছে সদস্য। জামায়াত ইসলামীর একজন দায়িত্বশীল নেতা ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামতে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ঢাকাপ্রকাশ কে জানান, বিএনপির শান্তিপূর্ণ গণমিছিলে গুলি চালানো হয়েছে। তেল-গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে বিএনপির কর্মসূচিতে গুলি চালিয়ে এর আগে ১৫ জন নেতা-কর্মীকে খুন করা হয়েছে।

এমএএইচ/এমএমএ/

Header Ad

আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত

কোটা আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের হাতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক তুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেকদিন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসে। সেই সময় ভিসি স্যার আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি স্যারকে বলেছিলাম আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। ভিসি স্যার আশ্বস্ত করেছেন। প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন।

এ ছাড়া পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন বলেও জানায় আবু সাঈদের পরিবার।

মকবুল হোসেন আরও বলেন, আমার কলিজার টুকরা ছিল আবু সাঈদ। তার প্রাইভেট পড়ানোর (টিউশনের) জমানো টাকায় আমার সংসার চলতো। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোনো সান্ত্বনা নেই। বাবা হয়ে সবচেয়ে ভারী কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়া।

এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ভিসি মহোদয়ের নির্দেশে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় যোগাযোগ রাখছে। ভিসি স্যার নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজকে সাড়ে সাত লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড়ে কোটা সংস্কারে দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মিছিলের সম্মুখে থেকে বুক পেতে দেওয়া আবু সাঈদ নিহত হন। এ ঘটনার পর আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে গোটা জেলাজুড়ে। নিহত আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে ২০৯টি। নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ২০৯টি মামলায় ২৩৫৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সারাদেশে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। অভিযানে ঢাকায় ৬৩ ও ঢাকার বাইরে ২০৩ জনসহ মোট ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

এদিকে আজ নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত অনেকবার গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা বা দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পুলিশের কারণে তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য তারা এবার পুলিশকেই টার্গেট করেছে।

যারা পুলিশকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, স্বপ্নের মেট্রোরেলসহ সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালিয়েছে। যারা এসবের নেতৃত্ব দিয়েছে, অর্থ আদান-প্রদান করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তারা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’

বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেছেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা শতকরা পাঁচ ভাগ রেখেছে। এটি মুক্তিযোদ্ধারা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু পরিষ্কার হওয়া দরকার, বাকি পদে কাদের নেওয়া হবে। আমরা বাকি ৯৫ শতাংশ কোটা নিয়ে আদালতের সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় বোঝাপড়া করব।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নরসিংদীর পাঁচদোনায় সম্প্রতি দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন পরিদর্শন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনাসভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এই পাঁচদোনা মোড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। স্মৃতিধন্য এই স্থানে নির্মাণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। দুঃখের বিষয়, সেই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সেই হামলা চালানো হয়েছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী ও বিএনপির ক্যাডাররা মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সেই গর্বের ধন আজ পরাজিত শক্তির কাছে আক্রান্ত হচ্ছে।

এসময় তিনি রাজাকারদের তালিকা প্রস্তুত করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, কোটার বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মতামত গ্রহণের জন্যও আদালতকে অনুরোধ জানানো হবে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সেটিও আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, যারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে, তারা কখনো ছাত্র হতে পারে না। বিএনপি, জামায়াত ও রাজাকারের দল এ নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। তাদের কার্যকলাপে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে যারা আঘাত করেছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি বিএনপি, জামায়াত, শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডার।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান খান, নরসিংদী সদর আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরো, পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক চেয়ারম্যান হেলাল মোর্শেদ প্রমুখ।

সর্বশেষ সংবাদ

আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭
‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’
কোটা আন্দোলনে নিহত রুদ্রের নামে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকের নামকরণ
সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
এক সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৬ কোটি টাকা লোকসান
পাকিস্তানের ইসলামাবাদ-পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি
রিমান্ড শেষে কারাগারে নুরুল হক নুর
ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই সরকারের: মির্জা ফখরুল
নরসিংদী কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার
বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে হারিয়ে নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত
মোবাইল ইন্টারনেট কবে চালু হবে, জানাল বিটিআরসি
পুলিশকে দুর্বল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ: ডিবি হারুন
মৃত্যুর দিনক্ষণ গোপন রাখা হয়েছে যে কারণে
অলিম্পিক উদ্বোধনের আগেই প্যারিসে উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ হামলা
তারেক রহমানের নির্দেশেই রাষ্ট্রের ওপর হামলা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপানো হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
‘বাংলাদেশে ছাত্র-ছাত্রীদের রক্ত ঝরছে’, মমতাকে কড়া বার্তা দিল্লির
বাজারে সরবরাহ বাড়লেও সবজির দামে এখনো অস্বস্তি