বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ | ১২ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

গ্রন্থহীন লেখক কবি গোপেন্দ্রনাথ সরকার

গোপেন্দ্রনাথ সরকার গল্প-প্রবন্ধ লিখলেও মূলত তিনি কবি। ‘প্রবাসী’, ‘ভারতবর্ষ’, ‘মানসী’, ‘ভারতী’, ‘বসুমতী’, ‘পূর্বাশা’ থেকে শুরু করে শিশু কিশোরদের বার্তা ‘মৌচাক’, ‘সন্দেশ’ অর্থাৎ সেকালের প্রায় সব প্রধান পত্রপত্রিকাতেই তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশ পেত। অপ্রকাশিত লেখার সংখ্যাও ছিল প্রচুর। কিন্তু বিস্ময়কর বিয়ষ হলো, শেষপর্যন্ত তিনি ছিলেন গ্রন্থহীন লেখক। ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষের অখণ্ড বাংলায় অর্থাৎ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া মহকুমার নওপাড়া থানার খয়েরপুর গ্রামে ৩০ ডিসেম্বর ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে গোপেন্দ্রনাথ সরকার জন্মগ্রহণ করেন। এখন অবশ্য নওপাড়া থানা হিসেবে পরিচিত নয়, শিমুলিয়া বা খয়েরপুরের মতোই মিরপুর উপজেলারই একটি গ্রাম মাত্র। পিতা কালিদাস ও মাতা মানদাসুন্দরী। গোপেন্দ্রনাথ ছিলেন পিতা-মাতার চতুর্থ সন্তান। খুব অল্প বয়সে তিনি পিতৃহারা হন।

গোপেন্দ্রনাথের প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শুরু হয় গ্রামে যদু পণ্ডিতের পাঠশালায়। মিরপুরের আমলা সদরপুর হাইস্কুল থেকে ১৯০৯ সালে দ্বিতীয় বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করেন। উল্লেখ্য, ঐ বছরই ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় সর্বশেষ প্রবেশিকা পরীক্ষা। অর্থাভাবে গোপেন্দ্রনাথের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এরপর বলতে গেলে আর তেমন এগোয়নি। প্রায় তিন দশক পরে গোপেন্দ্রনাথ সংস্কৃত ভাষাসাহিত্যে আবার পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৫ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত বঙ্গীয় সংস্কৃত পরিষদ-‘সংস্কৃত ও পালিতে’ আদ্য, মধ্য ও উপাধি পরীক্ষা পরিচালনা করত। গোপেন্দ্রনাথ তারই অধিভুক্ত ভেড়ামারার চণ্ডীপুরের পণ্ডিত রাধারমণ বেদান্তভূষণের সংস্কৃত টোলে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে ১৯৩৭ ও ১৯৩৮ সালে বঙ্গীয় সংস্কৃত শিক্ষা পরিষদের সংস্কৃত সাহিত্য বিষয়ে যথাক্রমে আদ্য ও মধ্যতীর্থ পর্যায়ে উত্তীর্ণ হন, কিন্তু শেষ পরীক্ষা কাব্যতীর্থে অবতীর্ণ হননি। তাঁর নামে ছাপানো এক প্যাডে পরিচয় লেখা রয়েছে ‘(অনুত্তীর্ণ) কাব্যতীর্থ’।

গোপেন্দ্রনাথের বর্ণময় কর্মজীবনে বিচিত্র পেশা ও বহুল কর্মস্থল ছিল বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে। কর্মজীবন শুরু হয় আমলার চ্যারিটেবল ডিসপেনসারিতে ডা. নৃসিংহ মুখোপাধ্যায় এর কম্পাউণ্ডার হিসেবে। এরপর কলকাতার খিদিরপুর ডকইয়ার্ডের হেডক্লার্ক মি. লয়ার্ডের অধীনে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কেরানি গিরি। পরবর্তিতে প্রেসিডেন্সি ও বর্ধমান বিভাগের অধীনে ডাক বিভাগের কুষ্টিয়া বাজার পোস্ট অফিসে পোস্টমাস্টারের দায়িত্ব পালন করেন কিছুদিন। এরপর কয়েক বছর রেলওয়ে বিভাগে চাকুরি করেন। পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের সময় রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ার কর্নেল হারভিঙের অধীনে করণিকের কাজ করেছেন। দিনাজপুরে বেঙ্গল-নাগপুর রেল সেকশনে যোগ দিয়ে বিহার ও উড়িষ্যার বিভিন্ন স্টেশনে রেল স্থাপনের কাজে চিফ ইঞ্জিনিয়ার সি এস নেপিয়ারের অধীনে চাকুরি করেন। গোপেন্দ্রনাথ সহজাতভাবে ছিলেন অস্থিরচিত্ত। সবমিলিয়ে তার এসব চাকুরি যেমন স্থায়ী ছিল না, তেমনি তিনিও একস্থানে স্থির থাকতে পারতেন না। অফিসের চাকুরি থেকে শুরু করে জীবিকা অর্জনের জন্যে গৃহশিক্ষকতার পথও বেছে নিয়েছিলেন কোন এক সময়। বর্তমান রাজবাড়ি জেলার পাংশার দুর্গাপুরের জমিদার বাড়িতে, কলকাতায় কয়লাঘাটের রেল ইঞ্জিনিয়ার কে বি রায়ের বাসায় ছাত্র পড়িয়েছেন কিছুকাল। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি শিক্ষকই হয়েছিলেন। শিক্ষকতা পেশায় তিনি আমলা সদরপুর হাইস্কুল, কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, রংপুরের সাদুল্লাপুর মাইনর স্কুল, দিনাজপুরের (বর্তমান ভারতভুক্ত, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর) কালিয়াগঞ্জ মিলনময়ী বালিকা মাইনর স্কুল, নাটোরের বাসুদেবপুর শ্রীশচন্দ্র বিদ্যানিকেতন, কুষ্টিয়ার চারুলতা বালিকা মাইনর স্কুল, কুষ্টিয়া হাইস্কুল এবং শেষে চাঁদ সুলতানা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। গোপেন্দ্রনাথের পেশা ও নেশা উভয়টিতেই ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে শিক্ষককাল ছিল এক সুবর্ণ সময়। এটি ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে পাঠ করে শিশু রবীন্দ্রনাথের মনে শিক্ষক হওয়ার সাধ জেগেছিল। সহকর্মীদের মধ্যে বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেশ হৃদ্যতা জন্মেছিল। তাঁর সাথেই বিভিন্ন সাহিত্যিকের সান্নিধ্যে কিংবা বিখ্যাত সব সাহিত্যসভায় যেতেন। তাদের মধ্যে পরিচয় ঘটে প্রাবন্ধিক গুরুদাস বন্দোপাধ্যায়, পণ্ডিত বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ, কবি শেখর কালিদাস রায়, কবি চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, কবি গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ এমদাদ আলী প্রমুখের সাথে।

গোপেন্দ্রনাথ সরকারের শ্রদ্ধানিবেদন করতে গিয়ে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, গবেষক ড. আবুল আহসান চৌধুরী বলেছিলেন: “শ্রীযুক্ত গোপেন্দ্রনাথ সরকার আজীবন শিক্ষাব্রতী। দীর্ঘ ৬০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এর পাশাপাশি নীরবে সাহিত্যচর্চাও করেছেন। তাঁর কবিখ্যাতিও জুটেছিল একসময়। শ্রাবণ ১৩২৯ মাসিক প্রবাসী পত্রিকায় তাঁরই লেখা ‘রণরঙ্গ’ কবিতার কিছু অংশ:

আজি গগনে গগনে ঘন-গরজনে রণঝঞ্ঝা বাজে,তড়িৎ মেঘে অসির ফলক ঝলকে জলদ মাঝে।ভূমিতলে আজি জীমুতমন্দ্রে বাজিল তুমুল রণ,কাঁপিল বিশ্ব, কি ঘোর দৃশ্য, ভয়াতুর জীবগণ।মহা ব্যোম ঘিরি’ নিকষকৃষ্ণ নীরধর নিনাদিল,বাত্যাতাড়িত ধুলায় অন্ধ-ধরা আঁখি নিমীলিল।বিহগ কুলায়ে আশ্রয় নিল, নরনারী নিল ঘরে,জননীর ক্রোড়ে লুকাইল শিশু বিপুল শঙ্কা ভরে।...

কার্তিক ১৩২৭ ত্রৈমাসিক বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকায় গোপেন্দ্রনাথ সরকারের ‘সার্থক’ কবিতার কিছু অংশ:


আমি অধিক যতনে নূতন করিয়া বাঁধিনু বীণাটি সাহানায়,রচিনু কোমল কুসুম শয়ন সাজিনু কুসুম গহনায়।জ্যোৎস্না প্লাবন আকাশে মরতে করিয়া দিয়াছে একাকার,বহিছে মধুর মলয় বাতাস বহিয়া সুরভি অনিবার।মোহিনী রজনী সাজায়ে রেখেছে কাননে কত যে শত ফুল,নিখিল রাজার চরণ পুড়িবে তাই হাসি এত প্রেমাকুল।...

শিক্ষক ও কবি এই পরিচয়েই তিনি শ্রদ্ধেয় ও স্মরণার্হ। রুচির দুর্ভিক্ষ, মূল্যবোধের সমস্যা আর চরিত্রের সংকট আজ আমাদের জাতীয় চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। এই ক্রান্তিলগ্নে মৃদু কণ্ঠে হলেও, জ্ঞানতাপস শ্রীযুক্ত সরকারকে আজ তাঁর ৮৭তম জন্মজয়ন্তীতে আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করি।” আবদুর রশীদ চৌধুরী ঢাকার দৈনিক সংবাদে ‘কুষ্টিয়ার একজন অবহেলিত কবি ও শিক্ষকের কাহিনি’ (১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬) শীর্ষক প্রবন্ধে গোপেন্দ্রনাথের জীবন ও কবিতা নিয়ে যে আলোচনা করেছিলেন, সেটিই এককভাবে এই সাহিত্যিকের ওপর রচিত দীর্ঘতম এবং জাতীয় পর্যায়ের প্রকাশনায় মুদ্রিত একমাত্র লেখা। গোপেন্দ্রনাথ সরকারের পুত্র মিলন সরকারের মন্তব্য: জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত, অকালে পিতৃবিয়োগ, আত্মীয়-পরিজনের ক্রমাগত মৃত্যু, জ্ঞাতি ষড়যন্ত্র, দুর্দিনে স্বজন বিচ্ছিন্নতা, আর্থিক দীনতা সম্ভবত তাঁকে ব্যথিত, উদাসীন করে তুলেছিল। স্থান থেকে স্থানান্তরে, কর্ম থেকে কর্মান্তরে তাঁকে বিতাড়ন করেছে তাঁর অমোঘ বাস্তবতা। সার্বিকভাবে নির্জিত এই কবি তাই যেন সবকিছু থেকে হয়ে পড়েছিলেন বিভক্ত। সমগ্র জীবনে বৈপরীত্যের সাথে না বুঝে নিজেকে সংকুচিত করে নিয়ে অপমানাহত স্বেচ্ছানির্বাসিত হয়ে প্রাতিস্বিক বলয়ে আত্মসমর্পণ ছিল তাঁর স্বভাবজ, কবিতা তাঁর সেই প্রাতিস্বিকতার এক একটি নির্মোক। খণ্ডিত এবং গতানুগ, তবু তিনি কবি এবং আমাদের বাংলাকাব্যধারায় এক নি:সঙ্গ পদচারক। গোপেন্দ্রনাথ সরকার কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়ায় ১৪ ফেব্রæয়ারি ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।


লেখক: ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক 

Header Ad
Header Ad

প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি

এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল এক লাখ টাকা’—এমন শিরোনামে দুদকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গত ২৪ জুন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) আক্তার হোসেন বলেছেন, হাসনাত আবদুল্লাহ যখন প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবেন কী ঘটেছে, তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন; যে তিনি ভুল করেছেন। দুদক কর্মকর্তাদের নামে যারা ফোন দিয়েছিল, তারা ছিল প্রতারক। সেসব প্রতারকদের ধরতে দুদকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, যে বিষয়টি হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পেজে তুলে এনেছেন, সে বিষয়টির ওপর দুদক অনুসন্ধান করছে। এছাড়াও এ বিষয়ে অনুসন্ধানের আরও অনেক দিক আসবে। তবে হাসনাত আবদুল্লাহ একটা দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে ভেরিফাই না করে এ ধরনের তথ্য ছড়ালে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিষ্ঠান যাতে বিতর্কিত না হয়, নিশ্চয়ই সবাই সহযোগিতা করবো।

আক্তার হোসেন বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে একটা এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানের পরপরই যে চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, এনফোর্সমেন্ট অভিযানে তার নাম এসেছে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু দুদক থেকে যখন অভিযানের তথ্য গণমাধ্যমে দেওয়া হয়, তখন তার নাম দেওয়া হয়নি। তিনি অন্যভাবে নাকি জেনেছেন। তাকেও এই অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তিনি দুদকের কাছে বার বার অভিযোগ করছিলেন। এখন কেন তিনি প্রতারকের ফাঁদে পড়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়েই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদকের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।

এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করে দুদক বলে, একটি প্রতারক চক্র দুদকের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। যার সঙ্গে কমিশনের কোনো কর্মকর্তা জড়িত নন। ইতিমধ্যে কমিশন বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

এর আগে, ২৪ জুন রাতে নিজের ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, 'স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা।' ওই স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করা হয়, 'আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে।'

তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা দাবি করা হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার ও একজন উপপরিচালকের পরিচয়ে। মাহমুদাকে বলা হয়, 'আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।'

বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ ঘটনায় দুদকের কোনো কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা নেই।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত

বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথমে একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

পরে বিকেল ৪টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফার্স্ট কনসার্ন্স (বিওয়াইএফসি)-এর আয়োজনে একটি আলোচনা সভা ও খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমশের আলী মন্ডল, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী, একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম এবং বিরামপুর প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক শাহ্ আলম মন্ডল।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিওয়াইএফসি'র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সম্রাট বেপারী। আলোচনা সভায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন এবং মাদকবিরোধী সচেতনতা বিষয়ে মতামত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

আলোচনা শেষে বিওয়াইএফসি’র পক্ষ থেকে উপজেলার ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খেলার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি ও তরুণ সমাজকে খেলাধুলা ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।

Header Ad
Header Ad

এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের

সারোয়ার তুষার ও নীলা ইসরাফিল। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেত্রী নীলা ইসরাফিল পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সরোয়ার তুষার বারবার তাকে ভিডিও কলে কথা বলতে এবং ব্যক্তিগত ছবি পাঠাতে চাপ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এনসিপি গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া অভিযোগপত্র নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন নীলা ইসরাফিল। অভিযোগপত্রে তিনি নিজেকে এনসিপির সদস্য এবং ধানমন্ডি থানার প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

নীলা ইসরাফিলের অভিযোগ, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তার প্রাক্তন স্বামীর দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়ে শারীরিক, মানসিক এবং সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে মানবিক সহায়তা দেন সরোয়ার তুষার। পরে রাজনৈতিক যোগাযোগের এই সম্পর্ককে সরোয়ার তুষার ব্যক্তিগত ও অনৈতিক রূপ, যৌন হয়রানি করতে উদ্যত হন। 

এ ঘটনায় চারটি সুস্পষ্ট অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছেন নীলা ইসরাফিল। সেগুলো হলো-

১. নৈশকালীন ব্যক্তিগত ও আপত্তিকর আলাপ:

তিনি (সরোয়ার তুষার) প্রায়ই রাতের বেলা কল করে বলেন, ‘রাজনীতি নিয়ে কথা ভালো লাগে না, তোমার কণ্ঠে ভালো লাগে প্রতিবাদের স্লোগান’, ‘তোমার ঠোঁট সুন্দর’, ‘একটা সুন্দর ছবি পাঠাও’— এ ধরনের মন্তব্য বারবার আমাকে অস্বস্তি ও অপমানের মধ্যে ফেলেছে।

২. ভিডিও কলে কথা বলার চাপ ও ব্যক্তিগত ছবি চাওয়া:

আমি বারবার অনুরোধ করেছি পেশাদারির সীমা রক্ষা করতে। এরপরও তিনি (সরোয়ার তুষার) বারবার ব্যক্তিগত আলাপের দিকে আলোকপাত করেন। ছবি চাইতেন এবং ভিডিও কলে কথা বলতে চাইতেন।

৩. ডিবি অফিসারের কাছে আমার সম্পর্কে মিথ্যা দাবি:

তিনি (তুষার) বলেন— ‘তোমার বিষয়ে ডিবি অফিসার আমাকে প্রশ্ন করলে আমি বলেছি, তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড।’ একজন রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে এ ধরনের ভ্রান্ত তথ্য প্রদান চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং আমার সামাজিক মর্যাদাকে হেয় করার শামিল।

৪. ফোনালাপ রেকর্ড ও প্রচারের ঘটনা:

আমি যখন বুঝতে পারি, এই রাজনৈতিক সম্পর্ক আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ও মানসিকভাবে নিঃশেষ করছে, তখন ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে তুষারের সঙ্গে কয়েকটি ফোনালাপ রেকর্ড করি। 

১৬ জুন সেই রেকর্ডের একটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তুষার আমাকে চাপ দিতে থাকেন যেন আমি ফেসবুকে বলি, তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। 

আমি তখন দ্বিতীয় ও তৃতীয় ফোনালাপও রেকর্ড করি এবং এগুলো কিছু মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকের মাধ্যমে প্রচারে সম্মতি দিই। কেননা, সেইগুলো উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানিমূলক, এবং যৌন হয়রানিমূলক অপরাধ করে তা প্রকাশ করা থেকে বিরত করবার চেষ্টাও হয়েছিল অবিরত।

অভিযোগপত্রের শেষে নীলা লিখেছেন, আমি এই অভিযোগ করেছি দীর্ঘ আত্মসংযমের পর, অনেক চিন্তা ও মানসিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। আমি দলীয়ভাবে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি এবং বিশ্বাস করি, সত্যের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে এনসিপি একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে, যেখানে নারী কর্মী কেবল ভুক্তভোগী নয়, বরং সম্মানিত ও নিরাপদ রাজনৈতিক অংশীদার।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার
৪৩ দিন পর নগর ভবনে এলেন ডিএসসিসি প্রশাসক, পেলেন অভ্যর্থনা
ভেঙেই গেল জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা কেটি পেরির সংসার!
সব সরকারি ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
জেলার সব প্রতিষ্ঠানে ডোপ টেস্টের ঘোষণা দিলেন ডিসি
রংপুরে চিকিৎসা অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতালকে ২ লাখ জরিমানা
টাঙ্গুয়ার হাওরে গাঁজা সেবন দায়ে ৫ পর্যটকের কারাদণ্ড
৮৩ লাখ মাদকাসক্ত দেশে, গাঁজা সেবনকারী সবচেয়ে বেশি
নতুন গিলাফে আবৃত পবিত্র কাবা শরিফ
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়ালের ৩ দিনের রিমান্ড
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এইচএসসি পরীক্ষা চলছে: শিক্ষা উপদেষ্টা
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৫১ হাজার ৬১৫ বাংলাদেশি, মৃত ৩৮