বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪

ওয়াদি এল হিতামের সরাইখানা থেকে বেরিয়ে আমরা গাড়িতে উঠতে যাব এই সময় রানা ভাই বললেন, ‘দাঁড়ান, মরু বেদুঈনের সাজ পোশাকে একটা ছবি তুলে নিই। আমি ভাবছিলাম এই ধু ধু মরুভূমিতে কোথায় বেদুঈনের পোশাক আর কোথায়ই বা পোশাক বদলের মেকআপ রুম! জোব্বার ব্যবস্থা না হলেও বাসুনি মুহূর্তের মধ্যে রানা ভাইয়ের মাথায় পাগড়ি পরিয়ে দিলে আমি পটাপট বেশ কয়েকটা ছবি তুলে ল্যান্ডক্রুজারে উঠে বসলাম। এবারের গন্তব্য ম্যাজিক লেক। আবার ব্যাগ-পাইপে নাগিনের বাজনা বাজিয়ে এঁকেবেঁকে বালির সমুদ্রে চালক তার বাহন ছুটিয়ে এগোচ্ছে। এবারে মুহূর্তেই ঊর্ধ্বলোক থেকে ঝাঁকুনি দিয়ে নিচে নামিয়ে আনার কসরত না থাকায় গাড়ির ভেতরে মুড়ি মশলা মাখানোর মতো যথেষ্ট ঝাঁকাঝাঁকি থাকলেও হাড়হাড্ডি ভাঙার আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু বাসুনি তার এই আপাত ভালোমানুষির আড়ালে আসল শয়তানির চেহারাটা লুকিয়ে রেখেছিল। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ মিনিট ধরে দুপাশে অসংখ্য দৃষ্টি নন্দন বালির ভাস্কর্য পেছনে ফেলে মরু সমুদ্র পেরিয়ে আমরা এগোতে থাকি। হঠাৎ করেই দুপাশের বালির পাহাড়গুলো আকারে ছোট হতে হতে একসময় সমতল ভূমিতে মিলিয়ে গেল। যতদূর চোখ যায় বালুময় প্রান্তর বিস্তৃত হতে হতে দিগন্তে মিলিয়ে গেছে। বাঁ দিকে তাকালে মনে হয়ে বহুদূরে চিকচিক করছে জলের আভাস। হয়তো মরীচিকা কিংবা সত্যিই কোনো জলের উৎসের দিকে যাচ্ছি আমরা। বাসুনি বামে না ঘুরিয়ে ডান দিকে গাড়ি ঘোরালে চোখে পড়ে বালির বাঁধ খাড়া পাহাড়ের উপরের দিকে উঠে গেছে। এই বাঁধের ওপারে কী আছে তখনো তা অজানা।

মোহামেদ সাদেক বলল, ‘সিটবেল্ট বাধা না থাকলে বেঁধে নাও আর শক্ত করে ধরে বসো।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘হোয়াট ইজ গোয়িং টু হ্যাপেন?’
‘উই আর গোয়িং টু ক্লায়িম্ব দ্য স্যান্ড হিল!’
‘ওহ মাই গড! তুমি বরং পাহাড়ে ওঠার আগে আমাকে নামিয়ে দাও।’
রানা ভাই বললেন,‘আমিও নামতে চাই, তবে ছবি তোলার জন্য।’
হেনার ভয় ডর একটু কম, সে গাড়ি থেকে নামতে রাজি নয়। রানা ভাইয়ের মতো আমিও বললাম, ‘খাড়া পাহাড়ে ওঠার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধরে রাখার জন্যে নেমে যাওয়াও ভালো।’ আমি আর রানা ভাই নেমে যাবার পরে ডেজার্ট ডেভিল বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অনায়াসে খাড়া পাহাড়ে উঠে গেল। আমি অবাক হয়ে হা করে দৃশ্যটা দেখতে দেখতে ক্যামেরার শাটার টিপতেই ভুলে গেলাম।

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

বাঁধের উপর থেকে সাদেক চিৎকার করে বলল, ‘তোমরা নিচেই থাকো, আমরা তোমাদের তুলে নিতে আসছি।’ গাড়িটা যখন নিচে নামছে তখন আর ভুল হলো না। এবারে নেমে আসার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধারণ করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আবারও গাড়ি খাড়া পাড় বেয়ে সোজা উপরে উঠে গেল। না এবারে আর তেমন ভয় পাইনি। বাঁধের মতো বালির পাহাড়ের অপরিসর চূড়ায় উঠে গাড়ি থামলে আমরা নেমে গেলাম। খাড়া পাড় বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত হয়ে ক্রমশ নিচের দিকে নেমে গেছে। এখন অনেক দূরে তাকালে সত্যিই জলাভূমি দেখা যায়, চোখে পড়ে জলের ছোঁয়ায় প্রাণ পাওয়া লতাগুল্মের ঝোপঝাড়।

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

আমাদের উপস্থিতির সাড়া পেয়ে নিচে থেকে কয়েকজন কিশোর দূর থেকে ছুটে আসতে থাকে। মরুভূমির তপ্ত বালু পায়ে মাড়িয়ে শিগগিরই তারা খাড়া পাড় বেয়ে উপরে উঠে আসে। তাদের সবারই হাতে ঝুলছে ছোট ছোট পাথর দিয়ে গাঁথা মালা। তারা আমাদের ঘিরে ধরে আরবি ভাষায় যে নিবেদন করে তাতে আমার মনে হয় চারজন কিশোর প্রায় একই সুরে কোরআন থেকে কোনো আয়াত উচ্চারণ করছে। না, তারা একেবারেই বিরক্ত করেনি, কেবল সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে তাদের প্রোডাক্ট সেল করার চেষ্টা করেছে। মালা না কিনলেও ওদের একেবারে নিরাশ করেননি রানা ভাই। দুই একজনের আপত্তি সত্ত্বেও সবার হাতে ইজিপ্টশিয়ান পাউন্ডের ছোট একটা করে নোট ধরিয়ে দিয়েছেন।

আমি মুগ্ধ চোখে সামনে পেছনে ঘুরে দেখছি। নিচে দুপাড়ের বালুচরের মাঝখানে খালের মতো এঁকেবেঁকে যে ভূখণ্ড বহুদূর চলে গেছে সেখানে জন্ম নিয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ জলজ উদ্ভিদ। কালচে সবুজ শ্যাওলা, জলাভূমির ঘাসের মতো গাছপালা লতাগুল্মের এক অপূর্ব দৃশ্যপট প্রকৃতি নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছে ধূসর মরুর প্রান্তর জুড়ে। অপসির বালির পাহাড়ের মাথায় ছড়িয়ে আছে নানা ধরনের পাথরের টুকরো। হেনা পাথরের টুকরো হাতে তুলে নিয়ে কাছে থেকে দেখে আবার ছড়িয়ে দিচ্ছে। রানা ভাই কিশোর ফেরিয়ালাদের সাথে কোন ভাষায় কথা বলে গল্প জমিয়েছেন আল্লা মালুম। তবে এই সুন্দর পাহাড় চূড়ার অবস্থান দীর্ঘ হলো না। বাসুনি বালি পাহাড়ের অপ্রশস্ত শীর্ষে তার গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এলো পথের শেষ প্রান্তে। এখানে নেমে যাবার পরে মরুভূমির রূপ দেখে আরও একবার বলতে হলো, ‘আহ কী সুন্দর!’

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

আল ফাইয়ুমের ওয়াদি এল হিতামের মরূদ্যানে এই অসামান্য জলাধার বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের আলোর তারতম্যের সাথে সাথে রঙ বদলায়। সেই কারণেই এই হ্রদের নাম ম্যাজিক লেক।

মোহামেদ সাদেক আগেই বলেছিল, মিশরের সবচেয়ে সুন্দর হ্রদগুলোর মধ্যেও সম্ভবত সবচেয়ে সুন্দর এই ম্যাজিক লেক। নিজের চোখে না দেখলে সেই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা কখনোই সম্ভব নয়। চারিদিকে বাদামি বালির টিলা দিয়ে ঘেরা নীল স্বচ্ছ জলের এই সরোবর শুধু চোখে দেখেই যে প্রশান্তি জাগে তার কোনো তুলনা নেই। আর যদি টলটলে পানিতে নেমে সাঁতার কেটে আসা যেত! আঁকাবাঁকা প্রায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হ্রদে সাঁতার কাটতে কোনো মানা নেই। লেকের পাড়ে বাধা রঙিন নৌকা দেখে বোঝায় যায় ভ্রমণবিলাসী পর্যটকের জন্যে এখানে নৌবহারের ব্যবস্থা করেই রাখা হয়েছে।

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

উড়িষ্যার তপ্তপানি প্রসবনের মতো ম্যাজিক লেকের পানিতে বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতির ফলে আর্থারাইটিসের ব্যথা উপশমে বেশ কাজ করে বলে মনে করা হয়। আমাদের সবারই যে বয়স, তাতে প্রায় প্রত্যেকেই আর্থারাইটিসের ব্যথা সয়ে পাহাড়-সাগর-মরুর বাধা অতিক্রম করে চলেছি। সময় থাকলে সত্যিই ঝাঁপ দিয়ে পড়তাম ম্যাজিক লেকের পানিতে। সাদেক আরও একটা লোভনীয় তথ্য দিলে আমার মনে হলো এই একদিনের মরু অভিযান নেহায়েতই বুড়ি ছুঁয়ে যাবার মতো। সাদেকের ভাষ্য অনুসারে ম্যাজিক লেকের সূর্যাস্ত পৃথিবীর সুন্দরতম সূর্যাস্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। সূর্য অস্ত যাবার পরে লেকের পাড়ে তাঁবু টানিয়ে ক্যাম্প করে থাকার ব্যবস্থা আছে, খাবার জন্যে বার-বি-কিউ এবং এরপর নিঃসীম বালির সমুদ্রে শুয়ে আকাশের গ্রহ নক্ষত্র দেখেই নির্ঘুম সারারাত কাটিয়ে দেওয়া যায়। আমাদের সৌভাগ্যের সীমানা ততটা সম্প্রসারিত নয় বলে এই অসামান্য হ্রদের পাড়ে তাঁবুতে রাত্রিবাসের কোনো সুযোগ কখনো হবে না, আর কখনোই ফিরে আসা হবে না ওয়াদি এল হিতামের ম্যাজিক লেকে। কিন্তু নিজের চোখে যেটুকু দেখেছি তাই বা কম কিসে! আমরা সমুদ্রের বালুকা বেলায় পায়ের ছাপ ফেলে হেঁটে যাই, এখানে মরু পাহাড়ের বালির বিছানায় আমরা আমাদের পদচিহ্ন রেখে গেলাম।

ম্যাজিক লেকের একাংশ

ম্যাজিক লেকের একাংশ

দুপুর হয়ে আসছে, কিন্তু এই বিরান প্রান্তরে দুপুরের খাবার জুটবে কোথায়! আমাদের ভাবনাটা বোধ হয় পড়ে ফেলেছিল অভিজ্ঞ ট্যুর গাইড মোহামেদ সাদেক। গাড়ি চলতে শুরু করলে সে জানাল আমরা ওয়াদি এল রায়ানের ওয়াটার ফলস হয়ে কুমারদের গ্রাম তিউনিসে লাঞ্চ করব। ওয়াটার ফলস মানে জলপ্রপাত! এই আদিগন্ত ছড়িয়ে থাকা মরুভূমিতে গভীর হ্রদ এবং অগভীর জলাধারসহ জলযোগের ব্যবস্থা তো কম দেখলাম না। কিন্তু সত্যিকারের জলপ্রপাত!

আরও মিনিট কুড়ি পরে আমরা যেখানে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম সেখানে চারিদিকের রুক্ষ প্রকৃতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু খেজুর গাছ। বাঁ দিকের পার্কিংয়ে ছোট বড় অনেকগুলো গাড়ি দেখে বোঝা যায় এখানে টুরিস্ট সমাগম নেহায়েত কম নয়। পার্কিংলটের পাশেই বেশ কিছু উট এবং তাদের মালিক শুয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। মোহামেদ সাদেককে অনুসরণ করে রানা ভাই লম্বা পা ফেলে আগে চলে গেলে আমি একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম। পুরো এলাকায় বাঁধানো চত্বরের ডান দিকে গোটা কয়েক রেস্তোরাঁ, বাঁ দিকে একটা মসজিদ। মসজিদের ওপারে আরও একটি খিলান গম্বুজওয়ালা ভবন, সম্ভবত নিরাপত্তাবাহিনী দপ্তর। ভবনের মাথায় অনেকগুলো গম্বুজের সবগুলোতেই ছোট ছোট খোপ কাটা দেখে মনে হয় কবুতরের বাসা। ঘরগুলোর দেয়াল থেকে গম্বুজ সবকিছুই দেখে মনে হয় মাটির তৈরি আর কবুতরের খোপগুলো আসলে প্রকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

মাটির মসজিদের মাথায় এখানেও আজান প্রচারের জন্য দুদিকে মুখ করে দুটি মাইক বাধা। সামনেই মাটি, কাঠ, খেজুর পাতা এবং বাঁশ-বেত-কাপড়ের তৈরি স্যুভেনিয়ার সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় চারু ও কারুশিল্পীরা। অবাক লাগল, নানা ধরনের ঝুড়ি, ব্যাগ, টুপি, মালা, ফুলদানির পাশাপাশি হাতি, ঘোড়া, উট ছাড়াও মানুষের প্রতিরূপ পুতুলও সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

সৃষ্টিশীল লোকজ শিল্পীর কাজে বাধা দেওয়ার কেউ না থাকতে পারে, কিন্তু মসজিদের সামনে মূর্তির পশরা সাজিয়ে বসা হয়তো অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্টের মতো দেশেই সম্ভব। ওয়াদি এল রায়ান উপত্যকার ১৭৬০ বর্গ কিলোমিটারের বিস্তৃত এলাকার একশ তেরো বর্গ কিলোমিটার জলাধার। নীল নদের চল্লিশ কিলোমিটার পশ্চিমে এই জলপ্রপাত। আসলে রায়ান এলাকার মরূদ্যানে ফসল ফলাবার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যে সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল তারই প্রত্যক্ষ প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে এই জলপ্রপাত। নীল নদ থেকে আপার লেক এবং লোয়ার লেক নামে দুই স্তরের যে দীর্ঘ খাল খনন করা হয়েছিল তারই উপরের স্তরের পানি নেমে এসেছে ওয়াদি এল রায়ানে। প্রপাতের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি মেলে দিলে চোখে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত খাল। এটিই সেচ প্রকল্পের প্রধান সংরক্ষিত জলের রিজার্ভার। এর পানিতে শুধু জমির ফসল নয়, জলপ্রপাত এবং ঝরনাগুলোর আশেপাশে বড় বড় টিলার নিম্নাঞ্চলে জন্মায় বহুবর্ষজীবী নানা উদ্ভিদ।

এখানে জলাভূমি ঘিরে তেরো প্রজাতির পাখির বসবাস। এ ছাড়া প্রতি বছর প্রায় পঁচিশ ধরনের পরিযায়ী পাখি রায়ানের জলাধারগুলো মুখর করে তোলে। সরু শিংওয়ালা হরিণের মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীসহ আরও বারোটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর শেষ বংশধরেরাও এই মরূদ্যানে নিশ্চিন্ত তাদের জায়গা করে নিয়েছে।

রায়ান জলপ্রপাত

রায়ান জলপ্রপাত

মিশরের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়িয়ে অবিরাম ধারায় ঝরতে থাকা পানির প্রবাহ নিজের চোখে দেখার আগে আমার বিশ্বাসই হতে চায়নি এখানে সত্যিই কোনো ওয়াটার ফলসের অস্তিত্ব আছে! আমাদের দেখা পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের বড় বড় ওয়াটার ফলসের সাথে তুলনায় রায়ানের এই ক্ষুদ্র জলপ্রপাতটি হয়তো কিছুই নয়। তবুও উপরের স্তর থেকে ঝরে পড়া পানি সরু খালের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঊষর বালু মাটিতে ফসলের সম্ভাবনা জাগিয়ে বয়ে চলেছে অনেক দূরে। তাই বিস্মিত পর্যটকের দল রায়ান ফলস ঘিরে দাঁড়িয়ে তাদের উচ্ছ্বাস এবং বিস্ময় প্রকাশ করে চলেছেন। তাদের কথায় চাপা পড়ে গেছে রায়ানের বিরতিহীন ঝরে পড়া জলের শব্দ। আমরা কিছুক্ষণ জলপ্রপাতের কাছে দাঁড়িয়ে ফিরে চললাম। চত্বরের বাইরে একসারি খেজুর গাছের ছায়ায় বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অপেক্ষা করছে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>> 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসজি/ 

Header Ad

বেঁকে যাওয়া রেললাইনে কচুরিপানা থেরাপি

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র তাপদাহে গাজীপুরে বেঁকে যাওয়া রেলপথ মেরামতে কচুরিপানা, কাঁদা ও পানি থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ইস্ট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবু জাফর বলেছেন, সোমবার দুপুরে তীব্র তাপদাহে গাজীপুরের কালীগঞ্জে আড়িখোলা এলাকায় প্রায় ১৫ফুট পরিমাণ রেলপথ বেঁকে যায়।

এতে ওই পথে ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পরে মেরামত করে প্রায় এক ঘন্টা পর আবার ট্রেন চলাচল শুরু করে।

তিনি বলেন, রেলপথে তাপমাত্রা ৫০ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা তার উপরে উঠলে রেলপথ বেঁকে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। সেদিন সেখানকার রেললাইনে তাপমাত্রা ৫৫ডিগ্রি'র মতো ছিল। তাই ঢাকা-নরসিংদী রেলরুটের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়িখোলা এলাকায় রেল লাইন বেঁকে যায়।

এ ধরনের বেঁকে যাওয়া রেলপথ ঠিক করতে প্রথমেই রেলপথ ঠান্ডা করা দরকার হয়। একাজে ব্যবহারে সেখানে বরফ না পাওয়ায় বিকল্প হিসেবে জলাশয় থেকে কচুরিপানা, কাঁদা ও ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ কচুরিপানা বা কাঁদা দীর্ঘ সময় পানি/ঠান্ডা অবস্থা ধারণ করে রাখতে পারে। গাজীপুরেও ওইসব প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে।

উচ্চতাপ থাকা অবস্থায় রেললাইন চাপ প্রয়োগ করলে তা আরো বেঁকে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। আর রেল লাইন ঠান্ডা হলে তা অনেকটাই আগের অবস্থায় চলে যায়। পরে প্রয়োজন হলে চাপ প্রয়োগ করে বাকি অংশ ঠিক করা সম্ভব হয়। উচ্চ তাপমাত্রা থেকে তাপমাত্রা ৩০/৩২ ডিগ্রিতে নেমে আসার পর চাপ প্রয়োগ করা হয়। গাজীপুরেও এ থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল রুটের আড়িখোলা স্টেশনের অদূরে (পশ্চিম দিকে) চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়ি নামকস্থানের রেললাইন বেঁকে যায়। বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার দিলীপ চন্দ্র দাস।

স্টেশন মাস্টার দিলীপ চন্দ্র দাস বলেন, তীব্র গরমে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল রুটের আড়িখোলা স্টেশনের অদূরে (পশ্চিম দিকে) চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়ি নামকস্থানে অন্তত ১৫ ফুট রেললাইন বেঁকে যায়।

বিষয়টি জানার পর রেলওয়ে প্রকৌশলীদের পরামর্শে রেলপথে পানি, কচুরিপানা ও কাঁদা মাটি দিয়ে বেঁকে যাওয়া অংশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে তা মেরামত করা হয়। মেরামতের পর দুটি ট্রেন ঘটনাস্থল দিয়ে ধীর গতিতে গন্তব্যে চলে গেছে। ডাবল লাইনের অন্য লাইন দিয়ে রেল চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের অধীনে কর্মরত কি-ম্যান (দড়িপাড়া-বড়নগর) মো. বাদশা মিয়া বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে। পরে আড়িখোলা-পূবাইল স্টেশনের মাঝখানে চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়ি নামকস্থানে টহলরত রেলওয়ে কর্মচারীরা রেলপথ বাঁকা দেখতে পান। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে, তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেন। এসময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আড়িখোলা রেলওয়ে স্ট্রেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, পানি, কচুরিপানা ও কাঁদা মাটি দিয়ে বেঁকে যাওয়া অংশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর ওই ট্রেনটি ধীর গতিতে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিকেল ৪টার দিকে তিতাস কমিউটার নামের আরও একটি ট্রেন ধীর গতিতে বেঁকে যাওয়া স্থান অতিক্রম করে।

এবারের আইপিএলে কি আউট হবেন না ধোনি?

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন সেই ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলেই। বয়সটাও এখন ৪৩ ছুঁই ছুঁই। ব্যাট হাতে দেখা যায় শুধু আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। প্রতিবার দলের নেতৃত্বে থাকলেও এবার চেন্নাইকে নেতৃত্বও দিচ্ছেন না, দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের হাতে। ব্যাটসম্যান হিসেবেও নিজের ভূমিকা বদলেছেন। উইকেটে আসেন হাতে গোনা কিছু বল বাকি থাকতে। এসেই ঝড় তোলেন।

যখনই ক্রিজে আসেন, চার-ছক্কা মেরে রানের গতি বাড়িয়ে দেন। এই নতুন ভূমিকাতেও মহেন্দ্র সিং ধোনি পুরোপুরি সফল। মজার ব্যাপার হলো, এমন ‘হাইরিস্ক গেম’ খেলেও ধোনি এবারের আইপিএলে এখন পর্যন্ত আউট হননি।

ধোনি এবারের আইপিএলে এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন ৯টি, ব্যাটিং করেছেন ৭ ইনিংসে। ৭ ইনিংস ব্যাট করে খুব বেশি বল খেলেননি—৩৭টি। এই ৩৭ বলে রান করেছেন ৯৬, স্ট্রাইকরেট—২৫৯.৪৫। ছক্কা মেরেছেন ৮টি, চার ৯টি। বল খেলার সংখ্যাটা অবশ্যই খুব বেশি নয়। তবে মনে রাখতে হবে ধোনি এই ৩৭ বলের প্রায় প্রতিটিতেই খেলেছেন বাউন্ডারির জন্য। সে ক্ষেত্রে আউট হওয়ার ঝুঁকি থাকে আরও বেশি।

ধোনি কয়েকটি বলের জন্য ক্রিজে এসে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন, এমন উদাহরণও আছে। এই যেমন গত ১৪ এপ্রিল ‘আইপিএল ক্লাসিকো’য় মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে।

ইনিংসের ২০তম ওভারে উইকেট এসে ৪ বলে ৩ ছক্কায় করেন ২০ রান। সেই ম্যাচটি চেন্নাই শেষ পর্যন্ত ২০ রানেই জেতে। এরপরের ম্যাচেই লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে করেন ৯ বলে ২৮ রান।

সেদিন অবশ্য ম্যাচটি জিততে পারেনি চেন্নাই। তবে ম্যাচের শেষ ওভারে যেভাবে ১০১ মিটারের ছক্কা মেরেছিলেন ধোনি, তাতে তাঁর বয়সটা আসলেই ৪২ কি না, তা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ জেগেছিল! ধোনি এরপর আরও দুই ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন। এই ২ ম্যাচ মিলিয়ে খেলার সুযোগ হয়েছে মাত্র ৩ বল, তাতেই দুটি চার মেরেছেন।

গত মৌসুম থেকেই মূলত ধোনি চেন্নাইয়ের ইনিংসের একদম শেষভাগে ব্যাটিংয়ে নামতে শুরু করেন। গত আইপিএলে ১২ ইনিংসে বল খেলেছিলেন মাত্র ৫৭টি, রান করেছিলেন ১০৪। এবারও নিশ্চয় আরও কিছু বল খেলবেন ধোনি।

ফিনিশার হিসেবে ধোনি এমনিতেই কিংবদন্তি। তবে তাঁর ম্যাচ শেষ করার নিজস্ব একটা ধরন ছিল। শুরুতে কিছু সময় নিতে পছন্দ করতেন। এরপর শেষে গিয়ে সেটা পুষিয়ে দিতেন। তবে এখন ধোনি জানেন, সেই সুযোগটা তিনি পাবেন না। শরীরটাও হয়তো সায় দেবে না। তাই নতুন ভূমিকা বেছে নিয়েছেন। আর কীভাবে সেই ভূমিকায় সফল হতে হয়, সেটার প্রমাণ তো ম্যাচের পর ম্যাচ করেই যাচ্ছেন।

 

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রধান পাঁচ ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং সহযোগিতার পাশাপাশি এর বাইরে কোনো বিষয়ে আগ্রহী কিনা-মতামত জানতে চেয়েছে ওয়াশিংটন।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকায় অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব (দ্বিপাক্ষিক-পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সভায় অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাঁচটি প্রধান ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণে দুই দেশের চলমান অংশীদারিত্বের আরও ব্যাপ্ত করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের পাঁচটি ক্ষেত্র এবং এর বাইরে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে মতামত জানতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) অনুরোধ করেছে।

ঢাকার এক দায়িত্বশীল কূটনীতিক বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি লিখেছেন, সেখানে বলা আছে, দেশটির কোন কোন খাতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতাম, সেগুলোর ব্যাপ্তি আরও কীভাবে বাড়ানো যায় তা আলোচনা হয়েছে। এটা আসলে নতুন কিছু না। আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেসব এনগেজমেন্ট আছে সেগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে বা নতুন করে কোনো বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা—সেগুলো আমরা আলোচনা করি বা কোনো কনসার্ন থাকলে সেটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো।

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের পাঁচটি খাত সম্পর্কে এ কূটনীতিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছে, তার মধ্যে একটি অর্থনৈতিক যোগাযোগ বাড়ানো, পরিবেশগত সুরক্ষা বা জলবায়ু পরিবর্তন; এক্ষেত্রে প্রযুক্তি হস্তান্তর বা বিনিয়োগের বিষয় রয়েছে। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা সহযোগিতা—এটার মধ্যে এন্টি টেরোরিজম অ্যাসিসটেন্ট রয়েছে; পুলিশ-র‌্যাবের তহবিল রয়েছে, সমুদ্র নিরাপত্তার সংক্রান্ত অংশীদারত্ব ইস্যু রয়েছে। তারপর মানবিক সহায়তা বিষয় রয়েছে, যা মধ্যে রোহিঙ্গাদের সহায়তার বিষয় যুক্ত। এছাড়া রাইটস ইস্যুস আছে; এর মধ্যে মানবাধিকার, গণতন্ত্র বা লেবার রাইটস ইস্যু আছে।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ সরব অবস্থানে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভোট শেষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ওয়াশিংটন জানায়, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ভোট নিয়ে নিজেদের অনঢ় অবস্থানের জানান দিলেও বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশের কথা জানান খোদ ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির ‘আলোচিত’ রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনে একই বার্তা দেন।

তবে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিতে। চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তার সরকার।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাইডেনের চিঠির পর ওই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করেন তার (মার্কিন প্রেসিডেন্টের) বিশেষ সহকারী ও দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লাউবাখেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। ওই প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার ছিলেন। আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রথম সফর ছিল।

ওই সফরে এইলিন লাউবাখেরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৈঠক শেষে ড. হাছান জানিয়েছিলেন, তারাও (যুক্তরাষ্ট্র) চায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় এবং আমরাও চাই একটি নতুন সম্পর্ক। যেহেতু দুদেশেরই সদিচ্ছা আছে, সুতরাং এই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, গভীরতর ও উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের উভয় দেশ উপকৃত হবে।

অন্যদিকে, বাইডেনের বিশেষ সহকারী জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করছেন।

বাইডেনের সেই চিঠির প্রতিউত্তরের একটি কপি এইলিন লাউবাখেরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এছাড়া ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান হোয়াইট হাউজে ওই চিঠির মূল কপি পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এক বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আগামী দিনে দুই দেশের মধ্যকার অংশীদারত্ব এবং দুই দেশের নাগরিকদের সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রত্যাশা করে।

সবশেষ, চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্ব এক‌টি প্রতি‌নি‌ধিদল নিয়ে ঢাকা সফর করে গেছেন।

মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মো শহীদুল হক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবাস্তয়নে যে সব রাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন সেসব রাষ্ট্রসমূহের সমর্থন আদায়ে কাজ করছে তারা। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই সিরিয়াস বিষয়। এই কৌশলে এবং একইসঙ্গে চীনকে প্রতিহত করতে বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

গত বছরের (২০২৩) মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়। সেখানে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতে দেশটির অব্যাহত নজরদারির কথা বলা হয়। পরবর্তী সময়ে অব্যাহতভাবে দেশটি নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করতে দেখা গেছে।

৭ জানুয়ারির ভোটে ২২৩টি আসনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ।

গত ১৭ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সেদিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের পারস্পরিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে আগামী মাসগুলোতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি।

সর্বশেষ সংবাদ

বেঁকে যাওয়া রেললাইনে কচুরিপানা থেরাপি
এবারের আইপিএলে কি আউট হবেন না ধোনি?
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র
মানুষ আজ ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত: মির্জা ফখরুল
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার
নওগাঁয় মাঠে ধান কাটতে গিয়ে গরমে কৃষকের মৃত্যু
আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রী
মে দিবসের কর্মসূচিতে এসে গরমে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু
টাঙ্গাইলে সেনা সদস্য পরিচয়ে প্রতারণা
ভারতের নির্বাচনি প্রস্তুতি দেখার আমন্ত্রণ পেল আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সর্বদা: খাদ্যমন্ত্রী
পুলিশ হেফাজতে সালমান খানের বাড়িতে হামলার অস্ত্রদাতার আত্মহত্যা
দুই মাস পর ইলিশ ধরতে নেমেছেন জেলেরা
গরমে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাচ্ছেন? হতে পারে বড় বিপদ
নিজ এলাকায় জানাজায় গিয়ে মোবাইল হারালেন ধর্মমন্ত্রী
মানুষের মস্তিষ্কের আকার বড় হচ্ছে!
শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‍্যাব কর্মকর্তা
বিমানের খাবার নিয়ে অসন্তোষ প্রধানমন্ত্রী, দুইদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ
ছাত্রলীগ নেতাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে
শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না: রিজভী