রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

ওয়াদি এল রায়ান থেকে তিউনিস ভিলেজের দূরত্ব ত্রিশ কিলোমিটার। হাতের ডাইনে দীর্ঘ কারুন হ্রদ এবং মাঝে মাঝে মরুদ্যান আর বাঁ দিকে বহুদূর বিস্তৃত মরুভূমি পেছনে ফেলে আমরা এগোতে থাকি। 

এক সময় মরুদ্যান ছাড়িয়ে আবারো কিছু দূর ধু ধু মরুপ্রান্তর পেরিয়ে যাবার পরে দেখা দেয় জনপদের চিহ্ন। দুপাশে একটি মরু মফস্বলের চেহারা স্পষ্ট হতে থাকে। একদিকে সুদৃশ্য মসজিদ এবং অন্যদিকে কয়েকটি দোকান বাঁয়ে রেখে আমরা প্রায় জনশূন্য একটা ছোট শহরের মতো এলাকায় ঢুকে পড়ি। পথের পাশে গাড়ি মেরামতের দোকান এবং রেস্তোরাঁর সাইন বোর্ড দেখে বুঝতে পারি এটিই তিউনিস গ্রাম। নামে গ্রাম হলেও এটি যে আসলেই মরুদ্যানের ছোট শহর তা বুঝতে বাকি থাকে না। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসুনি যে রেস্তোরাঁর সামনে এসে দাঁড়াল তার নাম নিউ তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে! এতোক্ষণ তো ভাবছিলাম গ্রামের নামে শহর! এখন দেখা গেল পুরো একটা দেশের নামই নিয়ে নিয়েছে এই গ্রাম! 

            তিউনিসের বন্ধ রেস্তোরাঁ

রেস্তোরাঁর বাইরে থেকে দরজা কপাট বন্ধ দেখেই সন্দেহ হয়েছিল, তারপরেও মোহামেদ সাদেক খোঁজ নিতে গাড়ি থেকে নেমে গেল। একটু পরে এসে জানাল দুবছর আগে করোনা মহামারির শুরুতে বন্ধ যাওয়া তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে আর চালু হয়নি। পরপর আরও গোটা দুই সরাইখানার বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে করাঘাত করেও কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। 

ওমর খৈয়াম সম্ভবত এই রকম পরিস্থিতিতেই লিখেছিলেন ‘ভোরের পাখি শিস দিয়ে যেই উঠলো চারিধারে/পান্থশালার দ্বারে দাঁড়িয়ে ছিল যারা, বলল হেঁকে তারা/দুয়ার খোলো দুয়ার খোলো ভাই, সময় যে আর নাই।’ 
আমাদের এখানে ভোরের পাখি ডাক দেয়নি বরং দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও খাদ্যের অন্বেষণে পান্থশালা থেকে পান্থশালায় ঘুরে বেড়ালেও কেউ দরজা খোলেনি। 

         মৃৎ পাত্রের কারখানায়

তিউনিস কুমোরদের গ্রাম নামেই পরিচিত। কাজেই এখানে এসে মৃৎশিল্পের কর্মকাণ্ডের অন্তত একটি নমুনা না দেখে, শিল্পীদের নির্মাণ শৈলীর সাথে একটু পরিচিত না হয়ে ফিরে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। অতএব নেমে গেলাম সাদেকের নির্দেশনা অনুসারে। ভেতরে প্রবেশ করে বুঝলাম আমাদের কুমোর পাড়া, পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা যেমন মাটি ছেনে, চাক ঘুরিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে লাল টুকটুকে হাড়ি পাতিল কিংবা কালো কলস তৈরি করে তার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি খুব বড় না হলেও মাঝারি আকারের সিরামিকের কারখানা। ভেতরে হাতে নকশা কেটে তৈজসপত্র তৈরির কাজ চলছে, এখানেও আগুনে পুড়ে নতুন রূপ লাবণ্যে ঝলসে উঠছে মাটির পাত্র! কিন্তু নির্মিত পেয়ালা-পিরিচ, থালা-বাসন যতোই ঝকঝক করুক বাইরের দিকে শো-রুমে দাঁড়িয়ে থাকা বিরস বদন বালিকাকে দেখে অনুমান করা যায় বেচা কেনা তেমন নেই।   

        আল মালাকের উদ্যানে     

তিউনিস গ্রামের পথে দু পাশের বর্ণহীন বাড়িগুলোর মধ্যে চোখে পড়ে দুই একটি সুদৃশ্য বাড়ি, কোনো কোনো বাড়ির দেয়াল থেকে ঝুলছে সবুজ লতাপাতাসহ ফুলের ঝাড়। মাঝে মাঝে দু চারটি সাজানো দোকান আর পথে দু চারজন বিদেশি পর্যটক। রংপুরের সতরঞ্চির মতো রঙিন সতরঞ্চি সাজিয়ে একটা দোকানে বসে আছে বিষন্ন কিশোর। সেই দোকানের সামনে দাঁড়াতেই একটু উৎসাহিত হয়েছিল ছেলেটি। কিন্তুতাকে হতাশ করেই আমরা এগোতে থাকি। শেষ পর্যন্ত বাসুনি বেশ কিছুটা সামনে এগিয়ে গাড়ি নিয়ে যেখানে সটান ঢুকে গেল তার চেহারা দেখেই বলে দেয়া যায় এটি একটি উচুঁ মানসম্পন্ন রিসোর্ট কাম রেস্টুরেন্ট। প্রবেশ পথে আল মালাক নামের হোটেলের সাইনবোর্ড পছন্দ হলো না। কিন্তুপাথরে বাঁধানো পথ দিয়ে হেঁটে দুপাশের সবুজ গাছপালা এবং সারি সারি রঙিন ফুলের ঝোপঝাড় পেরিয়ে যেখানে পৌঁছলাম মরুদ্যানে তেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ আশা করিনি।

       কাতরানি ক্যাম্প

চারিদিকে দীর্ঘ সবুজ গাছের বেস্টনি দেওয়া মাঠের একদিকে সুইমিং পুল এবং অন্যদিকে ছোট ছোট আবাসিক কুটির। এশিয়া ইওরোপের যে কোনো দেশের বিলাসবহুল হোটেলে সামনে পেছনে খোলা মাঠের চারিদিকে বাগানে ফুটে থাকা ফুলের সমারোহ দেখে অবাক হবার কিছু থাকে না। কিন্তুএখানে এই দিকচিহ্নহীন মরুপ্রান্তরের এক চিলতে মরুদ্যানে পুষ্প পাতার অভাবনীয় দৃশ্য কেবলই আমাদের বিস্মিত করে। ঘাসের সবুজ গালিচায় এক একটি টেবিল ঘিরে পেতে রাখা কয়েক সেট গার্ডেন চেয়ারের তিনটি দখল করে বসে পড়লাম। শুরু হলো মোহামেদ সাদেকের সাথে রেস্তোরাঁর পরিবেশকের কথপোকথন। আমি এরই মধ্যে মাঠের আর এক প্রান্তে চমৎকার প্রক্ষালন কক্ষ থেকে হাত মুখ ধুয়ে রীতিমতো তরতাজা হয়ে ফিরে এসেছি। মরুর দেশে তরু পল্লবে ঘেরা উদ্যানে বসে বিকেলের মৃদুমন্দ হাওয়া মন্দ লাগছিল না। কিন্তু সাদেকের কথা শুনে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ! খাবারের মূল্যের কথা বাদ দিলাম, একদিন না হয় একটু বেহিসাবী হওয়া গেল, কিন্তু সময়ের মূল্য পরিশোধ করবে কে! খাবার তৈরি হয়ে টেবিলে পরিবেশনের জন্যে মাত্র দেড় ঘণ্টা সময় চেয়েছে আল মালাক! 

            তাঁবু রাত্রি যাপন

মালাকের কথা শুনে মোহামেদ সাদেক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল, ’এখান থেকে আধা ঘণ্টার দূরত্বে বেদুঈনদের একটা ক্যাম্প আছে কাতরানিতে। সেখানে ফোনে খবর দিয়ে খাবার তৈরি করতে বলে দিই, আমাদের পৌঁছাতে যে সময় লাগবে তার মধ্যে আশা করা যায় লাঞ্চ রেডি হয়ে যাবে।’ সাদেকের কথায় তথাস্তু বলে উঠে পড়লাম। মাঝখান থেকে তিউনিসের চমৎকার গ্রামে প্রায় অকল্পনীয় একটি রিসোর্টের অবিশ্বাস্য বাথরুম বিনামূল্যে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা হলো! গাড়িতে উঠবার আগেই সাদেক তার নির্দেশনা দিয়ে নিশ্চিত হলো। বিকেল সাড়ে তিনটা বাজলেও ক্ষুৎ পিপাসায় কাতর হয়ে গেছি তা বলা যাবে না, তবে কাতরানি পৌঁছে খাবার না পেলে হয়তো সত্যিই কাতরানি শুরু হয়ে যাবে, তাই এই সতর্কতা। 

          কাতরানিতে ক্যাম্প ফায়ার

বিকেলের সূর্যের তেজ কমে যাবার সাথে সাথে বাসুনির তেজও কিছুটা কমে এসেছে মনে হলো। তাই চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আঁকাবাঁকা পথে না ছুটে সে পিচঢালা সোজা পথ ধরে প্রায় পঁচিশ মিনিট চলার পরে ডাইনে ঘুরে গেল। এখানে আবার সেই বালির মধ্যে দুপাশে পাথরের টুকরো বসানো পথের নিশানা। বালির উঁচু নিচু টিলা এবং ভাস্কর্য পেরিয়ে মিনিট পাঁচেক পরে যেখানে পৌঁছলাম সেটি যে আসলেই বেদুঈনের পান্থশালা তা কাউকে বলে দিতে হয় না। এখানে বাঁধানো সড়ক নেই, সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই, ইট পাথরের ঘর দরজা নেই। চারিদিকে বালির সমুদ্রের মধ্যে সারি সারি সাদা তাঁবু আর কাঠ বাঁশের তৈরি কিছু অস্থায়ী চালাঘর। বসার ব্যবস্থা  ফালি করে কাটা দীর্ঘ কাঠের বেঞ্চে। মরুভূমিতে নিশি যাপনের জন্যে তাঁবুতে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা তো আছেই।

          কাতরানির মরু কুটির

এ ছাড়াও ইচ্ছে করলে বালির পাহাড়ের গায়ে খোড়লের ভেতরে রাত কাটানো যায়। সম্ভবত ‘নাইট লাইফ’ উদযাপনের জন্যে বালির উঠানে মাঝখানে আগুন জ্বালাবার ব্যবস্থাসহ বৃত্তাকারে সতরঞ্চি পেতে আসর সাজানো আছে। উদর পূর্তির পাশাপাশি নৈশ্যভোজে উদর নৃত্যের ব্যবস্থা আছে কিনা তা অবশ্য তখনো জানতে পারিনি।   আমরা বালির আঙ্গিনা জুড়ে পেতে রাখার কাঠের লম্বা বেঞ্চে বসে পড়লাম। মোহামেদ সাদেক কিছুক্ষণ পরেই এসে জানালো খাবার তৈরি হচ্ছে। বুঝলাম ফোনে আধা ঘণ্টা বললেও আরো খানিকটার সময় দিতে হবে। অপেক্ষার সময়টা চারিদিকে ঘুরে ফিরে কাটানো যায়। বিরান বালুর মাঠেও দেখলাম পাশাপাশি গোটা দুই দোলনা ঝুলছে। একটাতে বোরকা পরা তরুণীকে দোল দিচ্ছে জুব্বাধারী এক তরুণ। চমৎকার দৃশ্যটি দেখে মনে হলো মিশরীয় ইসলামে তাহলে দোলনায় দোল খাওয়া হারাম নয়! কিছুদিন আগে এক হুজুরের ওয়াজে শুনেছিলাম ’দোলনা হচ্ছে শ্রী কৃষ্ণ ও রাধার লীলা খেলা, ইসলামে দোলনা দোলানোর কোনো জ্ঞান নাই!’ এরা বাংলাদেশি ইসলামে আরও কতো কিছু যে নিষিদ্ধ করবে আল্লাহই জানে। হেনাকে বললাম, ‘যাও কিছুক্ষণ দোলনায় দোল খেয়ে এসো।’ সে বললো, ‘দেখছো না ওখানে এখন হুজুরদের দোলে দোদুল ঝুলে ঝুলনা চলছে।’ বললাম, ‘একটা তো খালি আছে।’ হেনা বললো, ‘এখন আর দোল খেতে চাই না, খাবার খেতে চাই।’খাবার খেতে চাইলেই তো হয় না, এই পাণ্ডব বর্জিত ধু ধু বালুর চরে কে আমাদের জন্যে খাবার নিয়ে বসে আছে! আমরা দুজন চারিপাশটা ঘুরে দেখতে বেরোলাম।

        বালি পাহাড়ের কোটরে বিছানা-বালিশ

রানা ভাই যথারীতি এই বেদুঈন ক্যাম্পের সামান্য ইংরেজি জানা কর্মচারিকে পাকড়াও করে আলাপ শুরু করেছেন। তাঁবুগুলোকে পেছনে ফেলে ডান পাশে বালির টিলাগুলো রেখে সামনে এগিয়ে গেলেই ছড়িয়ে আছে দীর্ঘ জলাধার কারুন হ্রদ। কিন্তুশান্ত স্বচ্ছ এই হ্রদের আশেপাশে কোথাও কোনো সবুজ গাছ পালার ছিটে ফোঁটাও নেই। বিচিত্র ভাস্কর্যের মতো দেখতে লাইম স্টোনের পাহাড় কেটে কোথাও কোথাও সিঁড়ি চলে গেছে অনেক উপরে। আবার কোথায় নরম বালু মাটির সিঁড়িগুলোকে আটকে রাখার জন্যে ধাপে ধাপে বসিয়ে দেয়া হয়েছে খেজুর গাছের গুড়ি। এইসব সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখালাম সতরঞ্চি এবং বিছানা বালিশ পাতা  একেকটি আবাসিক কক্ষ। লতাপাতা, বাঁশ কিংবা কাঠ খড় দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে নাম দেয়া যায় ‘মরু কুটির’ আর পাহাড়ের খোলের ঘরগুলো ‘গুহাগৃহ!’  আমরা ‘মরু কুটির’ ‘গুহাগৃহ’, মরু কুটিরের বহিরাবরণের আদলে তৈরি প্রাক্ষলণ কক্ষ এবং তাঁবু বাসের ব্যবস্থা সরে জমিনে দেখে এসে যখন টেবিলে বসলাম তখনও খাবারের খবর নেই। 

            বেদুঈনের তাঁবুতে বিলম্বিত লাঞ্চ

রানা ভাই এরই মধ্যে কাতরানি ক্যাম্পের কিছু তথ্য যোগাড় করে ফেলেছেন। আল ফাইয়ুম শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে লেক কারুনের তীর ঘেষে কয়েক একর জায়গা সরকারের কাছে থেকে লিজ নিয়ে এই তাঁবু বাসের আয়োজন। উচুঁ নিচু পাহাড়ের সারিতে সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গের উচ্চতা সাড়ে তিনশ মিটার। মরুভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশে হাইকিং, ট্রেকিংয়ের জন্যেও অনেকেই, বিশেষ করে তরুণ ব্যাক-প্যাকাররা চলে আসে এখানে। এখানে পাহাড়ের মাথায় সোলার প্যানেল লাগিয়ে সীমিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই, তবে টয়লেট বাথরুম যথেষ্ট আধুনিক এবং প্রবহমান পানির ব্যবস্থাও আছে। তাঁবু অথবা পাহাড়ের খোলে দুজনে রাত্রি যাপনের জন্যে গুণতে হবে ৩০ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার। ট্যুরিস্ট সিজনে বিপুল সংখ্যক পর্যটক উন্মুক্ত বালিয়াড়িতে ক্যাম্প ফায়ারে মেতে ওঠে আর অনেকেই আসে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে তারা ভরা আকাশ দেখতে। 

গল্পে আড্ডায় সময় কাটালেও আমাদের দৃষ্টি ছিল কখন কিচেন থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে! অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, হাত মুখ ধুয়ে আমাদের খাবারের খুপরিতে আসন নেওয়ার খবর এল। অবাক হয়ে দেখলাম মরুভূমিতে ভোজনের আয়োজন যেমনই হোক, বেসিনের উপরে ট্যাপ ঘুরিয়ে হাত ধোবার ব্যবস্থা আছে। বাড়তি হিসাবে বেসিনের উপরে আয়নায় নিজের চেহারাটাও একবার দেখে নেওয়া গেল। পাহাড়ের খোলে সতরঞ্চি পেতে মাঝখানে সামান্য উচ্চতার একটা টেবিল রেখে জাপানি কায়দায় পরিবেশিত হলো মিশরীয় খাবার। কে জানে মরু অঞ্চলের পরিবেশন রীতিও জাপানিদের মতো কিনা! পরিবেশন পদ্ধতি যাই হোক, খিচুড়ির মতো হলদে রঙের ভাত, গ্রিলড চিকেন, আধা সেদ্ধ আলুর তৈরি সবজি এবং টমেটো শশার সালাদের মধ্যে উঁকি দেওয়া ধনেপাতা দেখে মনে হলো বিলম্বিত লাঞ্চটা নেহায়েত মন্দ হবে না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই দর্শনধারী দ্বিপ্রাহরিক আহার দেখতে যেমনই হোক, খেতে ততোটা সুস্বাদু মনে হয়নি। তবুও বিরানভূমিতে আমাদের প্রাণ রক্ষার আয়োজনের জন্যে কাতরানি ক্যাম্প ধন্যবাদ পেতেই পারে। 

আমরা যখন লাঞ্চ শুরু করেছি, ঘড়িতে তখন পৌনে পাঁচটা বাজে। অর্থাৎ এরা দেড় ঘণ্টা না হলেও সময় নিয়েছে সোয়া ঘণ্টা। কায়রোর পথে এগিয়ে আসার আধা ঘণ্টা এই পনের মিনিটের সাথে যোগ করলে আমাদের লভ্যাংশে আছে পুরো পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তবে সবচেয়ে বড় লাভ কাতরানির এই বেদুঈন ক্যাম্প। তিউনিসের আল মালাকে লাঞ্চ করে কায়রো ফিরে গেলে মরু প্রকৃতির মাঝখানে এই অসামান্য সৌন্দর্যের আবাসভূমি অদেখাই থেকে যেত। লাঞ্চ শেষে আমরা যখন গাড়িতে উঠতে যাচ্ছি তখন চারিদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে।  হঠাৎ করেই মাথার উপরে ঝরে পড়ল কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি। মোহামেদ সাদেক বলল, ‘এখানে প্রায় কখনোই বৃষ্টি হয় না। তোমরা নেহায়েত ভাগ্যবান!’ 

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad

এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ জানাল বোর্ড

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ৯ থেকে ১১ মের মধ্যে প্রকাশিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তপন কুমার সরকার বলেন, ‘ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ৯, ১০ ও ১১ মে-এই তিনটি তারিখের মধ্যে যে কোনো এক দিন ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ওপর।’

সাধারণত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়ে থাকে। সে হিসাবে, মে মাসের ১১ তারিখের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার কথা।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।

এবার সারা দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। দেশের ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় এ বছর মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। ছাত্র ১ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৬ জন। সারাদেশের ৯ হাজার ৬৭৯টি মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা ৭১৮টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা দেয়।

এছাড়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ২০২৪ সালে মোট পরীক্ষা দিয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৩১ জন, ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। সারা দেশের ২ হাজার ৮৭৭টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৭০৯টি কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিয়েছে।

গোবিন্দগঞ্জে চোরাবালিতে আটকে পড়া কিশোরকে উদ্ধার

চোরাবালিতে আটকে পড়া কিশোরকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ঠান্ডার পরশ নিতে চোরাবালিতে আটকে পড়া অপূর্ব বিশ্বাস নামের এক কিশোরকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গোবিন্দগঞ্জে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এলাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাকে উদ্ধার করে। অপূর্ব বিশ্বাস পৌর এলাকার বোয়লিয়া গ্রামের সুকুমার বিশ্বাসের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে তার সঙ্গীদের সাথে নিয়ে খেলার সময় নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে একটি পাইলিং কাদা পানিতে খেলা করছিল এসময় অপূর্ব বিপদজ্জনক ভাবে পাইলিংয়ের চোরাবালিতে আটকে যায়। এক পর্যায়ে সে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলে গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাকে চোরাবালি থেকে উদ্ধার করে।

গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের টিম লিটার আতিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উদ্ধার করা অপূর্ব বিশ্বাসকে সুস্থ করে তার পরিবারের কারে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চাকরি ছেড়ে বসের সামনে ঢোল বাজিয়ে নাচানাচি, ভিডিও ভাইরাল

ছবি: সংগৃহীত

কর্ম পরিবেশকে বিরক্তিকর উল্লেখ করে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ভারতের পুনের এক ব্যক্তি। বিক্রয় সহযোগী হিসেবে কাজ করা অঙ্কিত চাকরি ছেড়েই বসের সামনে ঢোল বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস করেন। এ ঘটনার দৃশ্য ভিডিও করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেন তারই বন্ধু জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর আনিশ বাগাত।

ওই কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, এ ধরনের ঘটনা সামনে আরও দেখা যাবে, কর্ম পরিবেশ দিন দিন অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে। কারণ কর্মপরিবেশ ভালো না হলে চাকরি করা কঠিন।

বাগাত বলেন, তিন বছর ধরে কর্মপরিবেশ নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন অঙ্কিত। ইনস্টাগ্রামে ওই ভিডিও শেয়ার করে অঙ্কিত বলেন, বসের কাছে আমার কোনো সম্মান ছিল না। মধ্যবিত্ত হওয়ায় বাধ্য হয়ে এতদিন চাকরি করতে হয়েছে।

অঙ্কিত তার অফিসের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বন্ধু বাগাতের সঙ্গে আলোচনা করেন। বাগাতই তাকে অফিসের বাইরে ঢোল বাজানোর পরামর্শ দেয়। যখন ওই অফিসের ম্যানেজার বাইরে বের হন তখনই অঙ্কিতের বন্ধুরা ঢোল বাজাতে শুরু করে। ম্যানেজার এ দৃশ্য দেখে রেগে গিয়ে তা বন্ধ করার নির্দেশ দেন।

 

 
 
 
View this post on Instagram

A post shared by Anish Bhagat (anishbhagatt)

হারাপ্পা ইনসাইডের ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মী বান্ধব বস এবং কর্মপরিবেশ ভালো না হলে অনেকে চাকরি ছেড়ে দেন। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বসের খারাপ ব্যবহারের কারণে প্রায় ৫৮ শতাংশ কর্মী চাকরি ছাড়েন।

সর্বশেষ সংবাদ

এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ জানাল বোর্ড
গোবিন্দগঞ্জে চোরাবালিতে আটকে পড়া কিশোরকে উদ্ধার
চাকরি ছেড়ে বসের সামনে ঢোল বাজিয়ে নাচানাচি, ভিডিও ভাইরাল
টাঙ্গাইলে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন, হিটস্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
৬০ বছর বয়সে সেরা সুন্দরীর খেতাব, কে এই আর্জেন্টাইন নারী?
গোবিন্দগঞ্জে দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
হজের প্রথম ফ্লাইট ৯ মে
স্বর্ণের দাম আরও কমলো
আজও দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা
মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবের পুরস্কার জিতল বাংলাদেশের সিনেমা
বনানীতে সড়কের মাঝে চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন
টাঙ্গাইলে ইসতিসকার নামাজ শেষে মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছিল তিন বিদেশি শক্তি: জিএম কাদের
উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে দেশ এখন মৃত্যু উপত্যকা: রিজভী
চিফ হিট অফিসার একটি টাকাও বেতন নেন না: মেয়র আতিক
বৃষ্টি নিয়ে সুখবর দিলো আবহাওয়া অফিস
বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল একই পরিবারের ৩ জনের
সরকারি স্কুল খুলছে রোববার, শ্রেণি কার্যক্রম চলবে যেভাবে
শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির আশায় নওগাঁয় ইসতিসকার নামাজ
জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে তিন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ