শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪

ওয়াদি এল হিতামের সরাইখানা থেকে বেরিয়ে আমরা গাড়িতে উঠতে যাব এই সময় রানা ভাই বললেন, ‘দাঁড়ান, মরু বেদুঈনের সাজ পোশাকে একটা ছবি তুলে নিই। আমি ভাবছিলাম এই ধু ধু মরুভূমিতে কোথায় বেদুঈনের পোশাক আর কোথায়ই বা পোশাক বদলের মেকআপ রুম! জোব্বার ব্যবস্থা না হলেও বাসুনি মুহূর্তের মধ্যে রানা ভাইয়ের মাথায় পাগড়ি পরিয়ে দিলে আমি পটাপট বেশ কয়েকটা ছবি তুলে ল্যান্ডক্রুজারে উঠে বসলাম। এবারের গন্তব্য ম্যাজিক লেক। আবার ব্যাগ-পাইপে নাগিনের বাজনা বাজিয়ে এঁকেবেঁকে বালির সমুদ্রে চালক তার বাহন ছুটিয়ে এগোচ্ছে। এবারে মুহূর্তেই ঊর্ধ্বলোক থেকে ঝাঁকুনি দিয়ে নিচে নামিয়ে আনার কসরত না থাকায় গাড়ির ভেতরে মুড়ি মশলা মাখানোর মতো যথেষ্ট ঝাঁকাঝাঁকি থাকলেও হাড়হাড্ডি ভাঙার আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু বাসুনি তার এই আপাত ভালোমানুষির আড়ালে আসল শয়তানির চেহারাটা লুকিয়ে রেখেছিল। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ মিনিট ধরে দুপাশে অসংখ্য দৃষ্টি নন্দন বালির ভাস্কর্য পেছনে ফেলে মরু সমুদ্র পেরিয়ে আমরা এগোতে থাকি। হঠাৎ করেই দুপাশের বালির পাহাড়গুলো আকারে ছোট হতে হতে একসময় সমতল ভূমিতে মিলিয়ে গেল। যতদূর চোখ যায় বালুময় প্রান্তর বিস্তৃত হতে হতে দিগন্তে মিলিয়ে গেছে। বাঁ দিকে তাকালে মনে হয়ে বহুদূরে চিকচিক করছে জলের আভাস। হয়তো মরীচিকা কিংবা সত্যিই কোনো জলের উৎসের দিকে যাচ্ছি আমরা। বাসুনি বামে না ঘুরিয়ে ডান দিকে গাড়ি ঘোরালে চোখে পড়ে বালির বাঁধ খাড়া পাহাড়ের উপরের দিকে উঠে গেছে। এই বাঁধের ওপারে কী আছে তখনো তা অজানা।

মোহামেদ সাদেক বলল, ‘সিটবেল্ট বাধা না থাকলে বেঁধে নাও আর শক্ত করে ধরে বসো।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘হোয়াট ইজ গোয়িং টু হ্যাপেন?’
‘উই আর গোয়িং টু ক্লায়িম্ব দ্য স্যান্ড হিল!’
‘ওহ মাই গড! তুমি বরং পাহাড়ে ওঠার আগে আমাকে নামিয়ে দাও।’
রানা ভাই বললেন,‘আমিও নামতে চাই, তবে ছবি তোলার জন্য।’
হেনার ভয় ডর একটু কম, সে গাড়ি থেকে নামতে রাজি নয়। রানা ভাইয়ের মতো আমিও বললাম, ‘খাড়া পাহাড়ে ওঠার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধরে রাখার জন্যে নেমে যাওয়াও ভালো।’ আমি আর রানা ভাই নেমে যাবার পরে ডেজার্ট ডেভিল বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অনায়াসে খাড়া পাহাড়ে উঠে গেল। আমি অবাক হয়ে হা করে দৃশ্যটা দেখতে দেখতে ক্যামেরার শাটার টিপতেই ভুলে গেলাম।

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

বাঁধের উপর থেকে সাদেক চিৎকার করে বলল, ‘তোমরা নিচেই থাকো, আমরা তোমাদের তুলে নিতে আসছি।’ গাড়িটা যখন নিচে নামছে তখন আর ভুল হলো না। এবারে নেমে আসার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধারণ করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আবারও গাড়ি খাড়া পাড় বেয়ে সোজা উপরে উঠে গেল। না এবারে আর তেমন ভয় পাইনি। বাঁধের মতো বালির পাহাড়ের অপরিসর চূড়ায় উঠে গাড়ি থামলে আমরা নেমে গেলাম। খাড়া পাড় বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত হয়ে ক্রমশ নিচের দিকে নেমে গেছে। এখন অনেক দূরে তাকালে সত্যিই জলাভূমি দেখা যায়, চোখে পড়ে জলের ছোঁয়ায় প্রাণ পাওয়া লতাগুল্মের ঝোপঝাড়।

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

আমাদের উপস্থিতির সাড়া পেয়ে নিচে থেকে কয়েকজন কিশোর দূর থেকে ছুটে আসতে থাকে। মরুভূমির তপ্ত বালু পায়ে মাড়িয়ে শিগগিরই তারা খাড়া পাড় বেয়ে উপরে উঠে আসে। তাদের সবারই হাতে ঝুলছে ছোট ছোট পাথর দিয়ে গাঁথা মালা। তারা আমাদের ঘিরে ধরে আরবি ভাষায় যে নিবেদন করে তাতে আমার মনে হয় চারজন কিশোর প্রায় একই সুরে কোরআন থেকে কোনো আয়াত উচ্চারণ করছে। না, তারা একেবারেই বিরক্ত করেনি, কেবল সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে তাদের প্রোডাক্ট সেল করার চেষ্টা করেছে। মালা না কিনলেও ওদের একেবারে নিরাশ করেননি রানা ভাই। দুই একজনের আপত্তি সত্ত্বেও সবার হাতে ইজিপ্টশিয়ান পাউন্ডের ছোট একটা করে নোট ধরিয়ে দিয়েছেন।

আমি মুগ্ধ চোখে সামনে পেছনে ঘুরে দেখছি। নিচে দুপাড়ের বালুচরের মাঝখানে খালের মতো এঁকেবেঁকে যে ভূখণ্ড বহুদূর চলে গেছে সেখানে জন্ম নিয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ জলজ উদ্ভিদ। কালচে সবুজ শ্যাওলা, জলাভূমির ঘাসের মতো গাছপালা লতাগুল্মের এক অপূর্ব দৃশ্যপট প্রকৃতি নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছে ধূসর মরুর প্রান্তর জুড়ে। অপসির বালির পাহাড়ের মাথায় ছড়িয়ে আছে নানা ধরনের পাথরের টুকরো। হেনা পাথরের টুকরো হাতে তুলে নিয়ে কাছে থেকে দেখে আবার ছড়িয়ে দিচ্ছে। রানা ভাই কিশোর ফেরিয়ালাদের সাথে কোন ভাষায় কথা বলে গল্প জমিয়েছেন আল্লা মালুম। তবে এই সুন্দর পাহাড় চূড়ার অবস্থান দীর্ঘ হলো না। বাসুনি বালি পাহাড়ের অপ্রশস্ত শীর্ষে তার গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এলো পথের শেষ প্রান্তে। এখানে নেমে যাবার পরে মরুভূমির রূপ দেখে আরও একবার বলতে হলো, ‘আহ কী সুন্দর!’

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

আল ফাইয়ুমের ওয়াদি এল হিতামের মরূদ্যানে এই অসামান্য জলাধার বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের আলোর তারতম্যের সাথে সাথে রঙ বদলায়। সেই কারণেই এই হ্রদের নাম ম্যাজিক লেক।

মোহামেদ সাদেক আগেই বলেছিল, মিশরের সবচেয়ে সুন্দর হ্রদগুলোর মধ্যেও সম্ভবত সবচেয়ে সুন্দর এই ম্যাজিক লেক। নিজের চোখে না দেখলে সেই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা কখনোই সম্ভব নয়। চারিদিকে বাদামি বালির টিলা দিয়ে ঘেরা নীল স্বচ্ছ জলের এই সরোবর শুধু চোখে দেখেই যে প্রশান্তি জাগে তার কোনো তুলনা নেই। আর যদি টলটলে পানিতে নেমে সাঁতার কেটে আসা যেত! আঁকাবাঁকা প্রায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হ্রদে সাঁতার কাটতে কোনো মানা নেই। লেকের পাড়ে বাধা রঙিন নৌকা দেখে বোঝায় যায় ভ্রমণবিলাসী পর্যটকের জন্যে এখানে নৌবহারের ব্যবস্থা করেই রাখা হয়েছে।

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

উড়িষ্যার তপ্তপানি প্রসবনের মতো ম্যাজিক লেকের পানিতে বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতির ফলে আর্থারাইটিসের ব্যথা উপশমে বেশ কাজ করে বলে মনে করা হয়। আমাদের সবারই যে বয়স, তাতে প্রায় প্রত্যেকেই আর্থারাইটিসের ব্যথা সয়ে পাহাড়-সাগর-মরুর বাধা অতিক্রম করে চলেছি। সময় থাকলে সত্যিই ঝাঁপ দিয়ে পড়তাম ম্যাজিক লেকের পানিতে। সাদেক আরও একটা লোভনীয় তথ্য দিলে আমার মনে হলো এই একদিনের মরু অভিযান নেহায়েতই বুড়ি ছুঁয়ে যাবার মতো। সাদেকের ভাষ্য অনুসারে ম্যাজিক লেকের সূর্যাস্ত পৃথিবীর সুন্দরতম সূর্যাস্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। সূর্য অস্ত যাবার পরে লেকের পাড়ে তাঁবু টানিয়ে ক্যাম্প করে থাকার ব্যবস্থা আছে, খাবার জন্যে বার-বি-কিউ এবং এরপর নিঃসীম বালির সমুদ্রে শুয়ে আকাশের গ্রহ নক্ষত্র দেখেই নির্ঘুম সারারাত কাটিয়ে দেওয়া যায়। আমাদের সৌভাগ্যের সীমানা ততটা সম্প্রসারিত নয় বলে এই অসামান্য হ্রদের পাড়ে তাঁবুতে রাত্রিবাসের কোনো সুযোগ কখনো হবে না, আর কখনোই ফিরে আসা হবে না ওয়াদি এল হিতামের ম্যাজিক লেকে। কিন্তু নিজের চোখে যেটুকু দেখেছি তাই বা কম কিসে! আমরা সমুদ্রের বালুকা বেলায় পায়ের ছাপ ফেলে হেঁটে যাই, এখানে মরু পাহাড়ের বালির বিছানায় আমরা আমাদের পদচিহ্ন রেখে গেলাম।

ম্যাজিক লেকের একাংশ

ম্যাজিক লেকের একাংশ

দুপুর হয়ে আসছে, কিন্তু এই বিরান প্রান্তরে দুপুরের খাবার জুটবে কোথায়! আমাদের ভাবনাটা বোধ হয় পড়ে ফেলেছিল অভিজ্ঞ ট্যুর গাইড মোহামেদ সাদেক। গাড়ি চলতে শুরু করলে সে জানাল আমরা ওয়াদি এল রায়ানের ওয়াটার ফলস হয়ে কুমারদের গ্রাম তিউনিসে লাঞ্চ করব। ওয়াটার ফলস মানে জলপ্রপাত! এই আদিগন্ত ছড়িয়ে থাকা মরুভূমিতে গভীর হ্রদ এবং অগভীর জলাধারসহ জলযোগের ব্যবস্থা তো কম দেখলাম না। কিন্তু সত্যিকারের জলপ্রপাত!

আরও মিনিট কুড়ি পরে আমরা যেখানে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম সেখানে চারিদিকের রুক্ষ প্রকৃতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু খেজুর গাছ। বাঁ দিকের পার্কিংয়ে ছোট বড় অনেকগুলো গাড়ি দেখে বোঝা যায় এখানে টুরিস্ট সমাগম নেহায়েত কম নয়। পার্কিংলটের পাশেই বেশ কিছু উট এবং তাদের মালিক শুয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। মোহামেদ সাদেককে অনুসরণ করে রানা ভাই লম্বা পা ফেলে আগে চলে গেলে আমি একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম। পুরো এলাকায় বাঁধানো চত্বরের ডান দিকে গোটা কয়েক রেস্তোরাঁ, বাঁ দিকে একটা মসজিদ। মসজিদের ওপারে আরও একটি খিলান গম্বুজওয়ালা ভবন, সম্ভবত নিরাপত্তাবাহিনী দপ্তর। ভবনের মাথায় অনেকগুলো গম্বুজের সবগুলোতেই ছোট ছোট খোপ কাটা দেখে মনে হয় কবুতরের বাসা। ঘরগুলোর দেয়াল থেকে গম্বুজ সবকিছুই দেখে মনে হয় মাটির তৈরি আর কবুতরের খোপগুলো আসলে প্রকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

মাটির মসজিদের মাথায় এখানেও আজান প্রচারের জন্য দুদিকে মুখ করে দুটি মাইক বাধা। সামনেই মাটি, কাঠ, খেজুর পাতা এবং বাঁশ-বেত-কাপড়ের তৈরি স্যুভেনিয়ার সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় চারু ও কারুশিল্পীরা। অবাক লাগল, নানা ধরনের ঝুড়ি, ব্যাগ, টুপি, মালা, ফুলদানির পাশাপাশি হাতি, ঘোড়া, উট ছাড়াও মানুষের প্রতিরূপ পুতুলও সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

সৃষ্টিশীল লোকজ শিল্পীর কাজে বাধা দেওয়ার কেউ না থাকতে পারে, কিন্তু মসজিদের সামনে মূর্তির পশরা সাজিয়ে বসা হয়তো অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্টের মতো দেশেই সম্ভব। ওয়াদি এল রায়ান উপত্যকার ১৭৬০ বর্গ কিলোমিটারের বিস্তৃত এলাকার একশ তেরো বর্গ কিলোমিটার জলাধার। নীল নদের চল্লিশ কিলোমিটার পশ্চিমে এই জলপ্রপাত। আসলে রায়ান এলাকার মরূদ্যানে ফসল ফলাবার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যে সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল তারই প্রত্যক্ষ প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে এই জলপ্রপাত। নীল নদ থেকে আপার লেক এবং লোয়ার লেক নামে দুই স্তরের যে দীর্ঘ খাল খনন করা হয়েছিল তারই উপরের স্তরের পানি নেমে এসেছে ওয়াদি এল রায়ানে। প্রপাতের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি মেলে দিলে চোখে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত খাল। এটিই সেচ প্রকল্পের প্রধান সংরক্ষিত জলের রিজার্ভার। এর পানিতে শুধু জমির ফসল নয়, জলপ্রপাত এবং ঝরনাগুলোর আশেপাশে বড় বড় টিলার নিম্নাঞ্চলে জন্মায় বহুবর্ষজীবী নানা উদ্ভিদ।

এখানে জলাভূমি ঘিরে তেরো প্রজাতির পাখির বসবাস। এ ছাড়া প্রতি বছর প্রায় পঁচিশ ধরনের পরিযায়ী পাখি রায়ানের জলাধারগুলো মুখর করে তোলে। সরু শিংওয়ালা হরিণের মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীসহ আরও বারোটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর শেষ বংশধরেরাও এই মরূদ্যানে নিশ্চিন্ত তাদের জায়গা করে নিয়েছে।

রায়ান জলপ্রপাত

রায়ান জলপ্রপাত

মিশরের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়িয়ে অবিরাম ধারায় ঝরতে থাকা পানির প্রবাহ নিজের চোখে দেখার আগে আমার বিশ্বাসই হতে চায়নি এখানে সত্যিই কোনো ওয়াটার ফলসের অস্তিত্ব আছে! আমাদের দেখা পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের বড় বড় ওয়াটার ফলসের সাথে তুলনায় রায়ানের এই ক্ষুদ্র জলপ্রপাতটি হয়তো কিছুই নয়। তবুও উপরের স্তর থেকে ঝরে পড়া পানি সরু খালের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঊষর বালু মাটিতে ফসলের সম্ভাবনা জাগিয়ে বয়ে চলেছে অনেক দূরে। তাই বিস্মিত পর্যটকের দল রায়ান ফলস ঘিরে দাঁড়িয়ে তাদের উচ্ছ্বাস এবং বিস্ময় প্রকাশ করে চলেছেন। তাদের কথায় চাপা পড়ে গেছে রায়ানের বিরতিহীন ঝরে পড়া জলের শব্দ। আমরা কিছুক্ষণ জলপ্রপাতের কাছে দাঁড়িয়ে ফিরে চললাম। চত্বরের বাইরে একসারি খেজুর গাছের ছায়ায় বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অপেক্ষা করছে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>> 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসজি/ 

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ

ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

রাত পোহালেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এরইমধ্যে ডিপজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন সাদিয়া মির্জা নামে এক অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ভিডিও প্রমাণসহ এমন অভিযোগ করেন সাদিয়া মির্জা নামক এক প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডিপজলকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। এদিকে সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বর্তমান নির্বাচন কমিশনার খসরু।

এছাড়াও যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা নিপুণ আক্তারের।

এ নিয়ে মিশা-ডিপজল প্যানেলের চিত্রনায়ক আলেকজান্ডার বোকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমরা এমনটি আভাস পেয়েছি নির্বাচনের আগেই একটি পক্ষ নির্বাচন বাঞ্চালের চেষ্টা করবে। তবে আমরা চাইবো সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। এমন অভিযোগ আমরা অন্য প্যানেল থেকেও অনেক পেয়েছি কিন্তু তাতে আমরা গুরুত্ব দেইনি।

তিনি আরও বলেন, ডিপজল ভাই মহৎ মানুষ এমনিতেই দানবীর, সবাইকে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন। এটা নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে বিষয়টি সুখকর হবে না।

তবে এ বিষয় নিয়ে কলি-নিপুণ প্যানেলের কেউ মুখ খোলেননি। কথা বলতে চাননি মিশা-ডিপজল পরিষদের অন্য সদস্যরাও।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন উপলেক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং- জুয়ারোধ, চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন এবং সর্বাধিক ওয়ারেন্ট তামিল লক্ষ্য পূরণ করাসহ ভালো কাজের বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহসান উল্লাহ্। তিনি জেলার ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ নিয়ে জেলার মধ্যে চতুর্থবারের মতো সেরা ওসি নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসাথে ভূঞাপুর থানাও শ্রেষ্ঠ হয়েছে এবং থানার এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৯ জন ক্রেস্ট সম্মাননা পেয়েছেন। তার এই অর্জনে উপজেলার সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক সংগঠনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত মাসের কল্যাণ সভায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় ওসি আহসান উল্লাহ্’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট (পুরস্কার) তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার (বিপিএম) (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। এতে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন থানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয় (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিয়ে, ইভটিজিংরোধ ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারসহ বিশেষ অবদানের জন্য চতুর্থ বার আমাকে শ্রেষ্ঠ ওসি ও ভূঞাপুর থানাকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।

ওসি আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন- ভূঞাপুর থানার কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য এবং উপজেলার সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ভূঞাপুর থানার এমন এক সাফল্যময় গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সকলের। তাছাড়া জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও থানা নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। ভূঞাপুর থানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো কিছু করতে ভূঞাপুর উপজেলাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাপশন: সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্।

দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি

সড়ক দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

দেশে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফরিদপুরে ঈদের পরদিন সড়কে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ঝালকাঠিতে সড়কে প্রাণ ঝরে আরও ১৪ জনের। গত তিন মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে প্রাণ যাচ্ছে ঝরছে ১৬ জনের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৩০টি। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২০ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৭টি, এতে মৃত্যু হয়েছে ৪০৪ জনের আর আহত হয়েছেন ৫১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬৯টি। এতে মারা গেছেন ৫২৩ জন আরও আহত হয়েছেন ৭২২ জন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে হয় ৬২৪টি। এতে আহত হন ৬৮৪ জন। মারা গেছেন ৫৫০ জন। এপ্রিল মাসের ১৬ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি আর মৃত্যু হয়েছে ২৮৪ জনের। গড়ে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যু হচ্ছে ১৬ জনেরও বেশি।

গত ৩ মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যার সংখ্যা ৫৫৪টি, আর এতে মৃত্যু ৫০৪ জনের। আর সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু চট্টগ্রাম বিভাগে।

বিআরটিএ বলছে, গেল বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু দুটোই এবছর প্রথম তিন মাসে বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি: রিজভী
বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়ল, কমল খোলা তেলের
মুস্তাফিজের বদলে ইংল্যান্ড পেসারকে দলে নিল চেন্নাই!
যে কারণে দুবাইয়ে এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যা
গায়েব হয়ে গেল জোভান-মাহির ফেসবুক ফ্যানপেজ!
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট: চীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি হারালেন ২৮ কর্মী
আইপিএল থেকে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল