শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

পর্ব-১৮

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। করোনাকালীন সংকট কীভাবে মোকাবিলা করা যায়? লোক ছাঁটাইয়ের মতো বেদনাদায়ক সিদ্ধান্ত এড়িয়ে কীভাবে ব্যয় সংকোচন করা যায়, পত্রিকাটির আয় বাড়ানোর উপায়গুলো কী কী? এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকের শুরুতেই আসিফ আহমেদ বললেন, আমরা সবাইকে নিয়ে দীর্ঘদিন একসঙ্গে অনেক সংকট মোকাবিলা করেছি।

নানা চড়াই-উৎরাই পার হয়ে একটা ভালো অবস্থান তৈরি করেছি। সেই মুহূর্তে বড় আঘাত এসেছে আমাদের ওপর। এ পরিস্থিতিতে আমাদের টিকে থাকাই বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ সবাইকে নিয়ে মোকাবিলা করতে চাই। আমরা কোনো কর্মীকে হারাতে চাই না। ভয়ঙ্কর এই সংকটের মধ্যে কাউকে ঢেলে দিতে চাই না। প্রয়োজনে আমরা কম খাব; কিন্তু সবাই একসঙ্গে থাকব। বিজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান এখানে আছে। আমরা সবাই জানি, মার্কেটে আমাদের অনেক টাকা পড়ে আছে। সরকারি বিজ্ঞাপনের টাকাও আমরা তুলতে পারছি না। কী করলে মার্কেট থেকে টাকা তোলা যাবে সেই সিদ্ধান্ত আজকে নিতে হবে। আমরা যদি পাঁচ ছয় কোটি টাকাও তুলতে পারি তাহলে বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব। সবার মতামতের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমি শুরুতেই বিজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান নূরুজ্জামানকে বলতে বলছি।

নূরুজ্জামান সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলল, আমরা শুনেছি কর্তৃপক্ষ লোক ছাঁটাইয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। আমরা কাউকে হারাতে চাই না। আমরা সবাইকে নিয়েই চলতে চাই। আমি বিজ্ঞাপনের লোক। আমি বুঝি, টাকা না হলে কোনো কথাই টিকবে না। মার্কেট থেকে টাকা আনতে না পারলে এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে কর্তৃপক্ষের কারণে অনেক বাড়তি খরচ হয়। তারা এমন কিছু লোক দিয়ে রেখেছে যার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রেসে লোকবল অনেক বেশি। সেখানকার বেতন দিতে হয় আমাদের। কেন বাড়তি খরচ আমাদের ফান্ড থেকে যাবে? যাহোক, কথা না বাড়িয়ে আমি মার্কেট থেকে টাকা তোলার বিষয়ে কথা বলছি।

বেসরকারি বিজ্ঞাপন বাবদ মার্কেটে প্রায় বিশ কোটি টাকা এবং সরকারি বিজ্ঞাপন বাবদ আঠারো কোটি টাকা পড়ে আছে। আমরা বেসরকারি বিজ্ঞাপনের টাকা এই মুহূর্তে সেভাবে পাব না। পাব যা সেটা খুব বেশি না। সবাই অফিস বন্ধ করে বাসায় অলস সময় কাটাচ্ছে। তারা মনে করছে, এই মুহূর্তে জীবন বাঁচিয়ে রাখা অনেক বেশি জরুরি। আমাদের মতো তারা কেউ বাইরে যাচ্ছে না। সরকারি অফিস-আদালতও প্রায় বন্ধ বলা চলে। একজন আসে তো আরেক জন আসে না। সরকারি বিজ্ঞাপনের টাকা তুলতে অনেকের সই সাবুত নিতে হয়। একজনের সই হলে আরেক জনেরটা পাওয়া যায় না। আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে আমরা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারি। সরকার নির্দেশ না দিলে এ মুহূর্তে বিজ্ঞাপনের টাকা পাওয়া কঠিন। তাহলে উপায় কী? টাকা ছাড়া বেতন দিব কীভাবে? আসিফ আহমেদ বললেন।

নূরুজ্জামান সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। বেতন তো দিতে হবে। বেতন না দিলে সহকর্মীরা চলবে কীভাবে? অনেকেই আমার কাছে বলে, ভাই বেতন কবে হবে? এতে সত্যিই খুব বিব্রত লাগে। কারণ, তাদের প্রশ্নের জবাব কী? টাকা না পেলে কোথা থেকে বেতন দেবেন? তবে আমি একটা প্রস্তাব রাখছি। সেটা হচ্ছে, আর দুই মাস পর তো ঈদ! তখন আমরা বেশ কিছু টাকা তুলে আনতে পারব। হাতে পায়ে ধরে হলেও আনব। আপনি গেল মাসের বেতনটা যদি আনতে পারেন; তাহলে খুব ভালো হয়। আপনি চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেন না! উনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন। আর খরচ কমানোর বিষয়ে বলব, লোক ছাঁটাই না করে পঞ্চাশ হাজারের ওপরে যাদের বেতন; তাদের দশ শতাংশ বেতন কমানো যেতে পারে।

আসিফ আহমেদ বললেন, আমি চেয়ারম্যান সাহেবকে ইতিমধ্যে দুতিনবার বলেছি। উনি শুধু বলেন, দেখি কী করা যায়। নূরুজ্জামান আবারও বলল, আরেকটা কাজ করা যায়। সরকারি বিজ্ঞাপনের টাকা যাতে দ্রুত ছাড় করে সেজন্য লেখালেখি করা যায়। তাহলে হয়তো সরকারের টনক নড়বে। সরকার গার্মেন্টস শিল্পকে প্রণোদনা দিচ্ছে। অথচ গণমাধ্যমের লোকরা না খেয়ে মরছে। প্রণোদনা তো সবার আগে দরকার সাংবাদিকদের। গণমাধ্যমের জন্য প্রণোদনা তো নয়ই সরকারি বিজ্ঞাপনের টাকাও দিচ্ছে না। বোঝাই যাচ্ছে সরকার কী করতে চাচ্ছে। সরকার আসলে গণমাধ্যমকে গলা টিকে মারতে চাচ্ছে। করোনাকে একটা সুযোগ হিসেবে নিয়েছে।

উপসম্পাদক মামুন রশিদ বলল, আমরা কর্তৃপক্ষকে এত বছর সাপোর্ট দিয়েছি। যখন যা বলেছে করেছি। এখন আমাদের বিপদের সময়। এ সময় আমাদেরকে সাপোর্ট দেবে না? এটা কি করে হয়? তাদের স্বার্থে কতভাবে আমাদেরকে ব্যবহার করেছে। এই পত্রিকা দিয়ে তারা কি না করেছে? রীতিমতো ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। এখন যদি তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকে তাহলে হবে? আমরা না হয় এধার ওধার করে চলতে পারি। কিন্তু যারা কম বেতন পায় তারা চলে কীভাবে?

বাণিজ্য সম্পাদক রাশেদ ইকবাল বলল, আমার মনে হয়, নূরুজ্জামান ভাই একটা তালিকা করেন। বেসরকারি বিজ্ঞাপনের টাকা কাদের কাছ থেকে পাওয়া সহজ হবে। প্রয়োজনে সম্পাদক কথা বলবেন। আমরাও কথা বলতে পারি। ধরাধরি না করলে টাকা পাওয়া যাবে না। কাকে ধরলে কাজ হবে সেটা বলেন। আর সরকারি বিজ্ঞাপনের জন্য তথ্যমন্ত্রীকে ভালো করে ধরা যায়। আবার রিপোর্টও করা যায়। তাহলে বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসবে। তিনি যদি সরাসরি নির্দেশ দেন তাহলে কাজ হবে।

সহকারী সম্পাদক ইলিয়াস আলী বলল, আসিফ ভাই খরচ কমানোর বিষয়ে কথা বলেছেন। আমরা কি সে বিষয়ে আলোচনা করতে পারি? খরচ কমানোর বিষয়ে আমার কিছু প্রস্তাব আছে। উপসম্পাদক রিশিত খান বলল। আসিফ আহমেদ বলল, কী প্রস্তাব বলো না!

রিশিত খান বলল, বাসায় যে সৌজন্য পত্রিকা দেওয়া হয় তা আপাতত বন্ধ রাখা যেতে পারে। ব্যক্তিগত গাড়ি যারা পাচ্ছে তাদের ফুয়েল অফিস থেকে দেওয়া হয়। সেটাও আপাতত বন্ধ রাখা যায়। আর নূরুজ্জামান সাহেব বেতন কমানোর বিষয়ে যেটা বললেন, তাতে আমি একমত। লোক ছাঁটাই না করে বেতন কমানো যেতে পারে। আমরা কম খাব। কিন্তু লোক ছাঁটাই করা যাবে না।

রাকিব নোট করেছ তো? আসিফ আহমেদ বলল।
রাকিব বলল, জি স্যার।
আর কারও কিছু বলার আছে?
চিফ রিপোর্টার জামিল আহমেদ হাত উঁচু করে বলল, আমি কিছু বলতে চাই।
বলো বলো। সম্পাদক বললেন।
জামিল বলল, অফিসের কাগজ সাশ্রয় করার জন্য ইনহাউস প্রিন্টিং বন্ধ রাখা যেতে পারে। রিপোর্টগুলো আমরা প্রিন্ট না দিয়ে সার্ভারে রেখেও কাজটা করতে পারি। তাতে মাসে লক্ষাধিক টাকা সাশ্রয় হবে। তা ছাড়া স্টেশনারি কেনা বাবদ খরচ কেমন হয় তা যাচাই করা যেতে পারে। আমার মনে হয় সেখানে খরচ কমানোর সুযোগ আছে।
আসিফ আহমেদ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, আমরা অনেকগুলো পয়েন্ট পেয়েছি। এগুলো নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

বৈঠকে শেষ হতে না হতেই তিন-চার জন সংবাদকর্মী সম্পাদকের কক্ষে এলো। তারা বিনয়ের সঙ্গে বলল, আমাদের বেতন দেরি হচ্ছে বলে সংসারে নানা রকম ঝামেলা হচ্ছে। আমাদের অনেকের ঘরে বাজার নেই। ধারকর্জ করে কত চলা যায়? এখন সবারই তো টানাটানি অবস্থা। আসিফ তাদেরকে ধৈর্য ধরতে বললেন। আর বললেন, মার্কেট থেকে কোনো টাকা পাচ্ছি না। যখনই পাওয়া যাবে, সেই টাকা দিয়ে তোমাদের বেতন আগে দেওয়া হবে। চিন্তা করো না।

আসিফ নিজের পকেট থেকে এক হাজার টাকা করে চারজনকে চার হাজার টাকা দিলেন। আপাতত চলো। এই টাকা আমাকে ফেরত দিতে হবে না। সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো আসিফের দিকে। দুয়েক জন বিস্ময়ের সঙ্গে বলল, আসিফ ভাই আপনার পকেট থেকে..!

আসিফ আহমেদ বললেন, কোনো অসুবিধা নেই। আপাতত চলো।
সংবাদকর্মীরা আর দাঁড়াল না। এর মধ্যে বৈঠকেও শেষ হয়েছে। বিভাগীয় প্রধানরা চলে যাওয়ার মুহূর্তে আবারও বলল, যা কিছুই করেন, লোক ছাঁটাই কিছুতেই মানা যাবে না। আসিফ আহমেদ মাথা নেড়ে তাদের কথায় সায় দিলেন।

আসিফ আহমেদ খরচ কমানোর কিছু খাত বের করলেন। তাতে দেখা গেল প্রায় চল্লিশ লাখ টাকার মতো খরচ কমে। তিনি মনে মনে খুবই পুলকিত বোধ করলেন। কষ্টের মধ্যেও এক ধরনের সান্ত্বনা খুঁজে পেলেন। তিনি মনে মনে ভাবলেন, যাক বিপদের দিনে অন্তত লোক ছাঁটাইয়ের মতো অনাকাঙিক্ষত সিদ্ধান্ত নিতে হবে না। তিনি ছুটে গেলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহবাজ খানের কাছে। তার কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি উত্থাপন করলেন। সবকিছু দেখার পর শাহবাজ খান বললেন, এসব করে কিছুই হবে না। লোক ছাঁটাই ছাড়া সামাল দেওয়া যাবে না। এখন কী মাস? মে তো?

আসিফ আহমেদ মাথা নেড়ে বললেন, হ্যাঁ মে শুরু হলো। ডিসেম্বরের আগে কিছুই ঠিক হবে না। আরও সাত মাস টানা সম্ভব না। একেবারেই সম্ভব না। আপনি ছাঁটাইয়ের তালিকা বানান। খুব দ্রুত তালিকা বানান। ছাঁটাইয়ের তালিকা! না না! লোক ছাঁটাই করা যাবে না! এই মুহূর্তে লোক ছাঁটাই করলে খুব সমালোচনা হবে। মানুষে খারাপ বলবে। আমি অন্যভাবে ছাঁটাই করব। কেউ বুঝতে পারবে না। শোনেন, কে কী বলল ওসব নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। কাউকে পরোয়াও করি না। পত্রিকা প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। এত লোক দিয়ে আমি কী করব?
করোনার পর লোক দরকার হবে না? হবে। তখনকারটা তখন দেখব। আপনাকে যা বলছি তা করেন। আপনি তালিকা বানান। এখন যান। তালিকা নিয়ে পরশুদিন আসেন। হঠাৎ শাহবাজ খানের বদলে যাওয়া চেহারা দেখে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন আসিফ। কিছুক্ষণ পর তিনি নিজের অফিসের দিকে রওয়ানা হন।

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন:

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

 

Header Ad

কাল থেকে বাড়তি ভাড়ায় চড়তে হবে ট্রেনে, কোন রুটে ভাড়া কত

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা থেকে ট্রেনে গাজীপুরে যেতে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীদের যত টাকা ভাড়া গুণতে হয়, এরচেয়ে পঞ্চগড়, খুলনা বা চট্টগ্রাম যেতে কম ভাড়া লাগত। কারণ, বাংলাদেশ রেলওয়ে এতদিন বেশি দূরত্বের টিকিট ছাড় দিয়ে বিক্রি করত। শনিবার (৪ মে) থেকে রেলযাত্রায় এই রেয়াতি সুবিধা উঠে যাচ্ছে। নতুন দামে টিকিট কেটে ক্ষোভ ঝেড়েছেন দূরের যাত্রীরা।

এক যাত্রী ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘বর্তমানে সব কিছুর দাম বাড়ছে। মানুষের ওপর জুলুম হচ্ছে। আবার এদিকে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের হাতে চলে যায়। সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পায় না। আরেক যাত্রী বলেন, ‘ট্রেনের যাত্রীসেবা তো অনেক দূরের বিষয়। কোনোরকম গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেই আমরা খুশি।’

অতীতের নিয়ম অনুযায়ী, ১০১ থেকে আড়াই শ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২৫ শতাংশ এবং এর বেশি দূরত্বের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় পেতেন রেলের যাত্রীরা। সেই বিধান উঠে যাওয়ায় বর্তমানে গন্তব্যভেদে ২০ টাকা থেকে দেড় শ টাকা পর্যন্ত শোভন চেয়ারের টিকিটের দাম বেড়েছে। এসি চেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩০০ এবং কেবিনের ভাড়া বেড়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।

রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘রেলের লোকসান কমাতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যথায় রেলসেবার মান উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে হচ্ছে। এই সুবিধা প্রত্যাহারের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটির প্রভাব সকল যাত্রীদের ওপর পড়বে।’

দূরত্ব ও সেকশনভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহার করায় ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। শনিবার (৪ মে) থেকে কার্যকর হবে এটি। কাল থেকে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে ট্রেনে ছাড় কমায় গুনতে হবে বেশি ভাড়া।

দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধায় ৩২ বছর ধরে মূল ভাড়ায় ১০১-২৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ২৫১-৪০০ কিলোমিটারে ২৫ শতাংশ ও ৪০১ কিলোমিটার বা এর বেশি দূরত্বের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর্থিক চাপ ও লোকসান কমাতে এখন এ সুবিধা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সরকারের যাত্রীসেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি।

এর পাশাপাশি ট্রেনে অতিরিক্ত সংযোজিত কোচ ও আবেদনের মাধ্যমে রিজার্ভ করা আসনের ভাড়াও বাড়ানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে রিজারভেশন চার্জের ভিত্তিতে অতিরিক্ত সংযোজিত কোচ ও আবেদনের মাধ্যমে রিজার্ভ করা নন-এসি কোচের আসনে ব্যয় বাড়ছে মূল ভাড়ার ২০ শতাংশ এবং এসি কোচের আসনের বাড়ছে ৩০ শতাংশ।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অপারেশন বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি এরই মধ্যে সারা দেশে স্টেশন-টু-স্টেশন রেয়াত সুবিধা বাদ দিয়ে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবের ভিত্তিতে ১ হাজার ৩৪টি স্টেশন-টু-স্টেশনে নির্ধারিত নতুন ভাড়ায় এরই মধ্যে রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগের মাধ্যমে অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।

সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন তালিকা অনুযায়ী আগামীকাল শনিবার (৪ মে) থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৩৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৪০৫ টাকা ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির আসনের ভাড়া ৬৫৬ থেকে বেড়ে হবে ৭৭৭ টাকা। ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ১৫০ ও ২৮৮ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ১৬০ ও ৩০৫ টাকা।

ঢাকা-রাজশাহী রুটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৩৪০ ও ৬৫৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৪০৫ ও ৭৭১ টাকা। ঢাকা-নোয়াখালী রুটে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২৭৫ ও ৫২৪ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৩১০ ও ৫৯৩ টাকা।

ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৩২০ ও ৬১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৩৭৫ ও ৭১৯ টাকা। ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুটে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২২০ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭২ টাকা।

ঢাকা-খুলনা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০০ ও ৯৫৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২৫ ও ১১৯৬ টাকা। ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা।

ঢাকা-রংপুর রুটে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা। ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪২৫ ও ৮১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৫১২ ও ৯৭৫ টাকা।

ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫১০ ও ৯৭২ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৪৫ ও ১২৩৭ টাকা। ঢাকা-চিলাহাটি রুটে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪৯৫ ও ৯৪৯ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২০ ও ১১৮৫ টাকা।

ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪৮০ ও ৯২০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬০০ ও ১১৫০ টাকা। ঢাকা-ভূঞাপুর রুটে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২৬০ ও ৪৯৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৯৫ ও ৫৭০ টাকা।

ঢাকা-দেওয়াগঞ্জ রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২২৫ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭৬ টাকা। এছাড়া শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার বাদে সব আন্তঃনগর ট্রেনে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে এসি সিট ও বার্থ এবং প্রথম শ্রেণির সিট ও বার্থ আসনের ভাড়াও আনুপাতিক হারে বাড়বে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘মোট ভাড়ার ওপর রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রভাব পড়বে। কিন্তু নীতি নির্ধারকরা বলার চেষ্টা করছেন রেলের ভাড়া বাড়ছে না। আসলে রেলের ভাড়া বাড়ছে। এর প্রভাব সাধারণ জনগণের ওপর পড়বে।’

সবসময় আস্থা রাখায় ধোনিকে ধন্যবাদ জানালেন মোস্তাফিজ

ছবি: সংগৃহীত

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে মাঠ মাতিয়ে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। স্বপ্নের মতো আইপিএল শেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের এই পেসার।

শুক্রবার নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করে ধোনি বন্দনা করেন মুস্তাফিজ।

ধোনির সঙ্গে ছবি দিয়ে মুস্তাফিজ লেখেন, ‘সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ মাহি (ধোনি) ভাই। আপনার মতো কিংবদন্তির সঙ্গে একই ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করে নেওয়াটা ছিল বিশেষ এক অনুভূতি। সবসময় আমার প্রতি আস্থা রাখার জন্য ধন্যবাদ। আপনার মূল্যবান পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ, আমি সেগুলো মনে রাখব। আপনার সঙ্গে শিগগিরই আবারও খেলতে এবং দেখা করতে মুখিয়ে আছি।’

এর আগে বিদায় বেলায় মুস্তাফিজকে নিজের অটোগ্রাফ সম্বলিত একটি জার্সি উপহার দেন ধোনি। যেখানে লেখা ছিল, ‘মুস্তাফিজের প্রতি ভালোবাসা।’

এবারের আসরে চেন্নাইকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না ধোনি। যদিও উইকেটের পেছন থেকে ঠিকই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মুস্তাফিজকে। তাই বাঁহাতি এই পেসারের সফলতার পেছনে তার অবদান অনস্বীকার্য। সেই কৃতার্থই ফেসবুকের মাধ্যমে জ্ঞাপন করলেন মুস্তাফিজ।

বিসিবির দেওয়া অনাপত্তিপত্র অনুযায়ী, গত ১ মে পর্যন্ত চেন্নাইয়ের হয়ে খেলেন মুস্তাফিজ। ৯ ম্যাচ খেলে ১৪ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। তার বিদায় নিয়ে আগেই মন খারাপের কথা জানিয়েছেন চেন্নাইয়ের হেড কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং ও ব্যাটিং কোচ মাইক হাসি।

জিম্বাবুয়ে সিরিজের কারণেই মাঝপথে আইপিএলকে বিদায় জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে আসেন মুস্তাফিজ।

সুষ্ঠু ভোটের আয়োজনে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রয়েছে : ইসি রাশেদা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীকে দায়িত্বশীল এজেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোটের আয়োজন সম্পন্ন করতে চাইলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের অবশ্যই প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্বশীল এজেন্ট দিতে হবে, যিনি ভোট কেন্দ্রে প্রার্থীর পক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট কেন্দ্রে অনেক সময় অনিয়ম হলেও প্রমাণের অভাবে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। এক্ষেত্রে এজেন্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

আজ শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের শহীদ এম, মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারন নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে আয়োজিত মত বিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।


এজেন্ট নিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এজেন্টরাই প্রতিটি কেন্দ্রে অন্যায়–অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করবেন। এজেন্ট শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করবেন এবং প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ফলাফলের তালিকা হাতে নিয়ে তবে কেন্দ্র ত্যাগ করবেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, যাঁরা নির্বাচনী আইন মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আইনি ব্যবস্থা নেবে। প্রভাবশালীরা নির্বাচনে কোনো রকম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না। এখন পর্যন্ত অনেকের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবিরের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক আনিসুর রহমান ও রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।

সর্বশেষ সংবাদ

কাল থেকে বাড়তি ভাড়ায় চড়তে হবে ট্রেনে, কোন রুটে ভাড়া কত
সবসময় আস্থা রাখায় ধোনিকে ধন্যবাদ জানালেন মোস্তাফিজ
সুষ্ঠু ভোটের আয়োজনে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রয়েছে : ইসি রাশেদা
টাঙ্গাইলে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ
গণতন্ত্রের জন্য লড়াইকারীদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে : রিজভী
সরকারকে যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারা নিজেরাই চাপে আছে : ওবায়দুল কাদের
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ২ হাজার
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন পুলিশ কর্মকর্তা
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার
যেসব অভিযোগে ১১১০ দিন কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক
শনিবার যেসব জেলার স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা বন্ধ থাকবে
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি!
নওগাঁয় আ.লীগ নেতার প্রচারে যাওয়া ছাত্রদলের ২ নেতাকে শোকজ
বলিউডের ছবিতে গাইলেন আসিফ আকবর
যাত্রীবাহী বাস উল্টে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ২০
১০ টাকায় টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
এসএসসির ফল প্রকাশ ১২ মে
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ
কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক
রোমাকে হারিয়ে ইউরোপার ফাইনালে এক পা লেভারকুসেনের