শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক

“নো, থ্যাঙ্কস, আমি কিছুই খাব না, পেট ভর্তি হয়ে আছে।“ কৌশলে অনুরোধটা নাকচ করলেন মজিদ ভাট। আসলে তাদের খেতে মানা। বাইরের কোনোকিছু তারা খেতে পারবেন না। তারা হাড়ে হাড়ে জানেন তাদের ছায়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ায় মৃত্যু। প্রশিক্ষণের সময় তাদের বলে দেওয়া হয়, মানুষ তো দূরের কথা দেয়ালকেও সন্দেহের তালিকায় রাখতে হবে। গুপ্তচরদের কাছে কোনো কিছুই সন্দেহের বাইরে নয়। একটা কলাগাছও শত্রু হয়ে উঠতে পারে। ‘বিশ্বাস’ নামক বস্তুটাকে মন থেকে ঝেরে ফেলতে হবে। কখনো কখনো নিজের মনেও ফোটাতে হবে সন্দেহের সূঁচ। ব্যাপারটার কিছু আঁচ পেয়ে জুনাইদ আর চাপাচাপি করলেন না। আতিফের দিকে চোখ ইশারা করাতে, আতিফ গ্লাসদুটো ট্রে তে করে রান্নাঘরে নিয়ে গেল। একটা মিষ্টি গন্ধ চারপাশ থেকে ভেসে আসছে। সকালের টাটকা গন্ধ। ফুল যেমন ফোটার পর পরই একটা টাটকা গন্ধ ছড়ায়, একটা দিনও রাতের গর্ভ থেকে বের হওয়ার সময় একটা গন্ধ ছড়ায়। এ গন্ধ সে গন্ধ। দিন ফোটার গন্ধ। গন্ধটা ঘরের চারপাশকে মাতিয়ে দিচ্ছে। তারপর অরণ্যে ঘেরা বাড়ি। বনানী ফুলের গন্ধ রোদের সঙ্গে মিশে চরাচরকে আরও মাতোয়ারা করে দিচ্ছে। আতিফ রান্নাঘর থেকে ফিরে এলে, মেজর জেনারেল জুনাইদ মোল্লা মজিদ ভাটকে বললেন, “হুজুর, এবার আপনার কথা পাড়ুন।“
“জি” বলে, লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট বলতে শুরু করলেন, “দ্যাখো, আতিফ, তোমার সম্বন্ধে আমরা অনেক শুনেছি, তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং এর মেধাবী ছাত্র, একধারে সাহসী অন্যধারে বুদ্ধির মারপ্যাচ ভালোই পার। তা ছাড়া তোমার অভিজ্ঞতাও প্রচুর। যাকে বলে ঠেকে শেখা, সেটা তোমার আছে। তোমার কুটিল ব্রেন আমাদের খুউব কাজে লাগবে। দ্যাখো, আসল অস্ত্র তো ব্রেন, তাই না? ব্রেন ঠিকভাবে খাটাতে পারলে, পৃথিবীর যেকোনো কাজে জেতা যায়। সে যুদ্ধই হোক আর খেলাই হোক। ব্রেনে ধার না থাকলে, কিছুই করা যাবে না। ভোঁতা ব্রেন দিয়ে একটা পুকুরও জয় করা যায় না। আমরা জানি, গোটা নেপিদ শহর তোমার হাতের তালুর মতো চেনা। তাই আমাদের পরবর্তী ‘অ্যাটাক’ এর মাস্টারমাইন্ড তোমাকেই হতে হবে।“
“মাপ করবেন, ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না।“ মাথা খুঁটে আতিফ।
“ব্যাপারটা পানির মতো সহজ, আতিফ।“ বললেন জুনাইদ মোল্লা। আতিফ জুনাইদের দিকে চোখ ঘোরাতে, জুনাইদ বললেন, “আইএসআই’এর এ পর্যন্ত যতগুলো অ্যাকশন সংঘটিত হয়েছে, তার সব চেয়ে বড় ‘অ্যাকশন’ সংঘটিত হতে যাচ্ছে এবার। সঙ্গে থাকছি আমরা, ‘রোহিঙ্গা জেহাদি ফৌজ’। অর্থ, প্ল্যানিং ও ব্লুপ্রিন্ট আইএসআই এর। ফিল্ডে কাজ করব আমরা।“
“সে তো বুঝতে পারলাম, হুজুর, কিন্তু প্ল্যানিং টা কী?” কপালের ভাঁজ সরু করল আতিফ।

“প্ল্যানিং টার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’।“ স্যুটকেসটার কয়রা চেনটা ঘ্যাঁচ করে খুলতে খুলতে বললেন মজিদ ভাট। চতুর মজিদ ভাটের আইএসআই’ উইংসে ব্যাপক নামডাক। বিগত আট বছর ধরে আইএসআইএর কোরগ্রুপের মেম্বার। ইতোপূর্বে আফগানিস্তান ও ভারতে কাজ করেছেন। আইএসআই-এ যোগদানের পূর্বে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ছিলেন। দাপুটে সেনা অফিসার। করাচি সেনা অ্যাকাডেমিতে এখনো তার নাম শুনলে সবাই ‘সেলাম’ ঠুকেন। ভারতে থাকার সময় চতুরতার সাথে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র) এর একটা ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বানচাল করে দিয়েছিলেন। ষড়যন্ত্রটা ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টর দিয়ে ‘সারজিক্যাল অ্যাটাক’ করে পাকিস্তানি সেনাছাউনি ধ্বংস করে দেওয়া। গোপন তথ্য পাচারের মধ্য দিয়ে পুরো পরিকল্পনাটাই ভেস্তে দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট। এর ফলে আইএসআই ডিপার্টমেন্টে তার প্রমোশনও হয়। তিনি ‘ফিল্ড এজেন্ট’ থেকে ‘ফিল্ড অফিসার’ এ উন্নিত হন। আইএসআই-এর কোরগ্রুপের মেম্বার হন। চেনটা খুলে, স্যুটকেসের ভেতর থেকে খড়মড় করে একগুচ্ছ কাগজের বান্ডিল বের করে মজিদ ভাট চোখ টান করে বললেন, “মিয়ানমারের ওপর আমাদের সব থেকে বড় অ্যাকশন। একাজেই ওরা টের পাবে, ওদের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। মৃত্যুর বদলা হবে মৃত্যু। লাশের বদলা লাশ।“

আতিফ আর নবী দুজন দুজনের দিকে মুখ চাওয়াচায়ি করল। চোখের ইশারায় আতিফ জানতে চায়ল, অ্যাকশনটা কী? নবী ঘাড় নড়াল, কিছুই বুঝতে পারছি না। লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট একটা সাদা রঙের কাগজের ওপর নীল কালি দিয়ে কী সব আঁকিবুঁকি আঁকা স্কেচ বের করে বললেন, “এটা চিনতে পারছ, আতিফ?” আতিফ মাথা ঝুঁকে চোখদুটোকে কাগজের আঁকিবুঁকির মধ্যে পুরে দিল, নাহ, ঠিক বোঝা যাচ্ছে না! তবে এটুকু আন্দাজ করা যাচ্ছে যে, কোনো একটা বিল্ডিং-এর স্কেচ। আতিফ ঘাড় এদিক ওদিক করে বলল, “নাহ, চিনতে পারছি না।“ মজিদ ভাট স্কেচের ওপর আঙুল রেখে স্তরের পর স্তর আঁকা একটা টাওয়ারের স্কেচ নির্দেশ করে জিজ্ঞেস করলেন, “এটা চিনতে পারছ?” আতিফ ভালো করে চোখের জরিপ করে দেখল, একটা প্যাগোডার স্কেচ।

“এটা একটা প্যাগোডার স্কেচ, সেটা বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু কোথায়, কী, সেসব কিচ্ছু বুঝতে পারা যাচ্ছে না।“ কথাটা বলেই আতিফ ভাবল, লোকটা আমাকে এসব কেন দেখাচ্ছেন! এসব দেখিয়ে তিনি কী করতে চায়ছেন! কিছু বলা নেই কহা নেই, হুট করে একটা কাগজ বের করে তার ওপর আঁকা একটা বিল্ডিং-এর স্কেচ কেন দেখাচ্ছেন! ভোর থেকে এমনিতেই মনটা খারাপ। আব্বাদের খোঁজটা পাওয়ার পর থেকে মনটা নাফ নদীতেই পড়ে আছে। সবসময় মনটা গাহাচ্ছে, আব্বাদের কী হয় কী হয়! সবকজন না খেয়ে মারা গেলে, বংশটা নির্বংশ হয়ে যাবে! আমার আর কী ভরসা! এই আছি এই নেই! হৃদয় কুরে কুরে কাটে আতিফের। এতক্ষণ ধরে মনের মধ্যে উসখুস করতে থাকা কথাটা এবার পেড়েই বসল আতিফ, “স্মাইলিং ইব্রাহিম অ্যাকশনটা কী, একটু খুলে বললে ভালো হয়।“
“অত উতলা হচ্ছ কেন আতিফ, সব খুলে বলা হবে, সব খুলে বলার জন্যেই তো আমাদের এখানে এই সাতসকালে আসা।“ ঠোঁটে একটা রহস্যমাখা হাসি মাখিয়ে বললেন মেজর জুনাইদ। জুনাইদের কথা শেষ হতে না হতেই মজিদ ভাট জুনাইদের কথার সঙ্গে জুড়ে দিলেন, “স্মাইলিং ইব্রাহিম হলো মিয়ানমারের উপর সব থেকে বড়সড় অ্যাটাক, রাজধানী নেপিদে অবস্থিত মায়ানমারের পার্লামেন্টে আক্রমণ। নয়জনের আত্মঘাতী টিম থাকবে। তিনজন সুযোগ বুঝে পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকে যাবে, তিনজন বাইরে থাকবে আর বাকি তিনজন পার্লামেন্ট লাগোয়া এলাকায় টহল দেবে। সুযোগ বুঝে প্যাগোডাটাকেও উড়িয়ে দিতে হবে। পুরো মিশনটা আমাদের এক ক্যাপ্টেন কো-অরডিনেট করবেন। তিনি নেপিদের এক নামি হোটেলে গোপন আস্তানা গেড়ে থাকবেন। কাজ সফল করে পালাবার পথ না পেলে নিজেকে আত্মঘাতী বোম দিয়ে উড়িয়ে দিতে হবে। কোনোভাবেই ধরা পড়া চলবে না।“

চোখ মুখ ‘থ’ করে শুনছে আতিফ। মনে মনে বলছে, সে তো মরতে হবেই, এতদিন গাড়ি গাড়ি টাকা খরচ করে কোরবানির খাসির মতো করে পুষেছেন, এবার তো কোরবানি হতে হবেই। মজিদ ভাট এবার আতিফের দিকে তাকিয়ে বুকের সিনা ফুলিয়ে বললেন, “আমরা ঠিক করেছি, প্রথম তিনজনের টিমের তুমি থাকবে ক্যাপ্টেন। তোমার নেতৃত্বেই বাকি দুজন পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকবে।“
“কিন্তু… ।“ কাঁচুমাচু করে আতিফ। জুনাইদ চোখ ঘুরিয়ে বলে উঠলেন, “কোনো সমস্যা, আতিফ?” আতিফ মনের কথাটা গিলে নিয়ে বলল, “না, সেরকম কিছু না।“ নবী চেয়ার ছেড়ে উঠে বলল, “লুকোচ্ছিস ক্যানে আতিফ, মনের কথাটা খুলে বলে ফেল।“

লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট রিমলেস চশমার ওপর দিয়ে এমুখ ওমুখ চাওয়াচায়ি করেন। মনের কথা! কথা খুলে বলবে! কিছুই বুঝে উঠতে পারেন না ভাটসাহেব। তবে তার গোয়েন্দা মন আন্দাজ করে, আতিফ কিছু একটা ব্যাড় বাঁধানোর চেষ্টা করবে। হয় বাড়ির অজুহাত না হয় পেটের অসুখ। এসব তো কম চরালাম না! এসব চরিয়ে চরিয়েই বুড়ো হয়ে গেলাম। এদের ধাত দেখলেই অসুখ চেনা যায়।
“হুজুর আতিফ আজ সকালে……।“ নবী কথাটা বলতে শুরু করলেই, “এই নবী, তুই চুপ করবি?” ধমকে থামিয়ে দিল আতিফ। নবী আতিফের ধমকের ভাষা বুঝতে পেরে কথাটাকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলল, “আতিফ আজ পুরো কোরআন শরিফ ‘খতম’(তিরিশ পারা পাঠ সম্পূর্ণ করা ) দিয়েছে।“
“মাসআল্লাহ!” উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন মেজর জেনারেল জুনাইদ মোল্লা। মজিদ ভাট, জুনাইদ মোল্লার মতো অত উৎফুল্ল না হয়ে ঠোঁটে হাসি মাখিয়ে বললেন, “এ তো খুব ভালো ব্যাপার। এখন থেকে তুমি কোরআন পড়া মানুষ। আল্লাহর অন্যতম নেকবান্দা।“
ব্যাপারটা যে একেবারে ডাহা মিথ্যে তা নয়, আতিফ এমনিতেই প্রত্যেক ভোরে কোরআন তেলওয়াত করে। তার ‘খতম’ দেওয়াটা দিন সাতেক আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু এখানে নবী প্রথমদিকে সেকথা বলতে চায়নি, সে বলতে চেয়েছিল, আতিফের আব্বা-মা, ভাইয়েদের খোঁজ পাওয়ার কথা। আতিফ যে এই কটা দিন অন্য কোনো কাজে যেতে পারবে না, সে নয়াপাড়া ক্যাম্প হয়ে নাফ নদীতে যাবে, সেকথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু আতিফের ধমকের ইশারায় নবী তার ভুলটা বুঝতে পারে। জুনাইদ মোল্লা বা মজিদ ভাটরা যদি কোনোভাবে জানতে পারেন, আতিফ ‘অ্যাটাক’এর আগে তার বাপ-মায়ের খোঁজে চলে যাবে, তাহলে তার গদ্দন থাকবে না। আর জে এফ কোনোমতেই তার মতো সাহসী ও বুদ্ধিমান শিক্ষিত মুজাহিদকে হাতছাড়া করবে না। এমনিতেই একা একা বাইরে বেরোনো নিষেধ, তার ওপর নয়াপাড়া হয়ে নাফ নদীতে যাওয়া! আকাশ কুসুম কল্পনা! আতিফ তো এখন আর শুধু জাফর আলির ছেলে নয়, নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধুও নয়, আতিফ এখন ভুরি ভুরি গোপন তথ্য আর ষড়যন্ত্র ঠেসে পুরা একটা জীবন্ত ফাইল। হেঁটে চলে বেরোনো কম্পিউটার! আর জে এফ, আইএসআই আর আইএসআইএস-এর ভেতরের কথা জানা মানুষ। সুতরাং সে কোনোভাবে শত্রুর হাতে পড়ে গেলে অনেক গোপন তথ্য লিক হয়ে যাবে! মুজাহিদদের ‘মুজাহিদজীবন’ থেকে জীবন্ত বেরোনোর কোনো পথ থাকে না। নজরে রাখার জন্যে, একজন মুজাহিদের পেছনে আরেকজন মুজাহিদকে গোয়েন্দার মতো লাগানো থাকে।

“এই প্ল্যানিংটার এখনো মাস তিনেক সময় আছে। তার আগে নিজেদের তৈরি করতে হবে। আর জে এফএর একটা টিম সামনের সপ্তাহেই নেপিদ যাবে। ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী তারা লোকেশন ঠিক করে আসবে। এই টিমে তোমাকেও যেতে হবে।“ চোখ থেকে চশমাটা খুলে দাগ পড়া চোখে তাকিয়ে বললেন মজিদ ভাট।
“আমাকে!” আঁতকে ওঠার মতো করে বলল আতিফ। তারপর পরক্ষণেই গলার স্বর নামিয়ে বলল, “ও আচ্ছা।“ মনের উপকূলে আছড়ে পড়ল দুশ্চিন্তার ঢেউ, সামনের সপ্তাহ মানে তো হাতে মাত্র চারদিন বাকি! এই চারদিনের মধ্যে কী করে লুকিয়ে নাফ নদী ঘুরে আসব? নবীও তো আমার সঙ্গে যেতে পারবে না, ও বালুখালি আক্রমণের কমান্ডার। সেটাও তো একদিন পর। এখান থেকে নয়াপাড়া যেতে পাঁচ ঘণ্টাও লাগবে না, কিন্তু সেখান থেকে নাফ নদীতে নেমে নৌকো করে আব্বাদের খোঁজ পাওয়াটা তো আর পাঁচ ঘণ্টায় হবে না? কত ঘণ্টা না কয়দিন লাগবে তার ঠিক ঠিকানা নেই। আবার দুদিনের বেশি এই ট্রেনিং অ্যাকাডেমি ছেড়ে আত্মগোপন করে থাকাও যাবে না। নবী থাকলে না হয় ও আরও এক-আধটা দিন ম্যানেজ করে নিতে পারত, কিন্তু এই গেরোতে ও তো অ্যাকাডেমিতে থাকবে না! ও তো কুরবানির ডোর গলায় পরেই নিয়েছে! শুধু জিলহজের চাঁদ উঠতে বাকি। যেনতেন প্রকারে আব্বাদের ডাঙায় উঠিয়ে দিয়ে আসতে পারলেই হলো, আর চিন্তা নেই, আব্বা মারা গেলে কবরের মাটি তখন ঠিকই পেয়ে যাবে। আব্বার স্বপ্নটাও সত্য হবে। তখন আমি বাঁচি আর মরি, কোনো চিন্তা নেই। দেশের জন্যে হাসিমুখে শহীদ হয়ে যাব।

চলবে...

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad

বিএনপির আরও ৭৫ নেতা বহিষ্কার

ফাইল ছবি

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে এসব নেতাদের নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় দলটি।

প্রেমিকার আত্মহত্যা, শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও বেছে নিলেন সে পথ

নিহত সিফাত। ছবি: সংগৃহীত

প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে ১৯ দিন পর প্রেমিক সিফাত (১৯) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে নরসিংদীর শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

মৃত্যুর আগে এক দীর্ঘ ফেসবুকে স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারও সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন একসঙ্গে থাকতে পারি। আমার শেষ ইচ্ছা তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না, এমনকি আমার কোনো ভাই-ব্রাদার বা বন্ধুও দায়ী না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি কেউ বাঁচিয়েও নেয় আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করব। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা কইরো না। বেঁচে থেকে আর কি হবে, যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নেই।’

সিফাত লিখেছেন, ‘তানহা আমারে কথা দিছিলো যদি বাঁচি তো একসঙ্গে বাঁচমু আর যদি মরতে হয় তো একসঙ্গে মরমু। আমি তানহারে এই কথাটাই দিছিলাম। কিন্তু একটা চরিত্রহীন জানোয়ার আমাদের সুখে থাকতে দিল না। ওদের অত্যাচারে তানহা আত্মহত্যা করল। এক প্রকার তারা তানহারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করল। জানোয়ারের পরিবারকেই আমি খুনি বলে দাবি করি। আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে জানোয়ারের পরিবার স্বাধীনভাবে চলবে, ওদের কোনো সাজা হবে না। আর অন্যদিকে আমার তানহা শেষ, আমি অর্ধেক শেষ আমার পরিবারও শেষ। আমি আর কষ্ট সহ্য করতে পারছি না (প্রমাণ হয়ে যাক দুজন দুজনকে কতটা ভালোবাসতাম) আর আমি চরিত্রহীন জানোয়ারের পরিবারের সঠিক বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এমন সাজা দেওয়া হোক অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন এমন না হয়। আর যেন কারও প্রাণ না ঝরে। কেউ যেন ব্ল‍্যাকমেইলের শিকার না হয়। আমার শেষ একটাই ইচ্ছে- আমরা দুজনে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলাম, বাস্তবে তা হলো না। তাই আমার মৃত্যুর পর তানহার কবরের পাশে যেন আমার কবর দেওয়া হয়। আমি আঙ্গুররে মারছি শুধু একটা কারণে, হেয় তানহার হাতে ধরছিল। তানহারে খারাপ প্রস্তাব দিছিল। আমি সহ্য করতে পারি নাই। তাই হেরে কোবাইছি। আমরা প্রেম করছি এটাই কি অপরাধ ছিল। আমাদের জীবন শেষ করে দিল। ভালো থাকুক আঙ্গুর আর আঙ্গুরের পরিবার।’

সিফাতের বাবা ইব্রাহিম জানান, প্রতিবেশী চাচাতো বোন খলিলের মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। গত ৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার সময় তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে ফেলে একই এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)। এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে। পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে কুপিয়ে আহত করে। মারামারির বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। লোকলজ্জায় গত ৬ এপ্রিল রাতে তানহা নিজ ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এসব বিষয়ে গ্রামীণ সালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিস দরবারে আমাকে ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো। এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।

শিবপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

দুই বিভাগে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস

ছবি: সংগৃহীত

সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। অপেক্ষা শুধু স্বস্তির বৃষ্টির। এমন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, এসময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ করতে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলাসমূহের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সর্বশেষ সংবাদ

বিএনপির আরও ৭৫ নেতা বহিষ্কার
প্রেমিকার আত্মহত্যা, শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও বেছে নিলেন সে পথ
দুই বিভাগে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
অভিষেকেই শূন্য রানে ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন রোহমালিয়া
ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে অস্ত্র ত্যাগ করবে হামাস
দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না: ওবায়দুল কাদের
কয়েক মিনিটের দেরিতে বিসিএসের স্বপ্ন ভঙ্গ ২০ পরীক্ষার্থীর
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা
আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩
মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরছে দুই প্রবাসীর লাশ
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা চলছে
পরিবারের অমতে বিয়ে, স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী