শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৭

নেই দেশের নাগরিক

ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং করে অনবরত ফুটতে থাকা যন্ত্রণার সূঁচ। যত সময় যাচ্ছে তত খিটখিটে হয়ে উঠছে মতি। কোনো কথাই আর হজম হচ্ছে না। আসলে চাল-চুলোহীন মানুষগুলো বোধ হয় এরকমই হয়। প্রেমের ফুলও এদের কাছে কাঁটা বলে মনে হয়। ভালোবাসার বাঁশির সুর যুদ্ধের সাইরেনের মতো বাজে। আদরের চুম্বনকে মনে হয়, বিষাক্ত সাপের ছোবল। তবুও তো শুকনো তামাটে হৃদয়ে গোলাপের পাপড়ি ফোটায় এই বিনিপয়সার প্রেম, ভাঙা হাড়ে বাজায় ভালোবাসার বাঁশি। মরমিয়া জীবন ভালোবাসার ঘর বাঁধে এই হাভাতের সংসারেই। কিন্তু সেসব যেন আজ মিছে। বড্ড অসত্য। নদী ফুলে ফেঁপে উঠতেই এদিক ওদিক থেকে হৈহুল্লোর করে চিৎকার চেঁচামেচি ভেসে এল। নৌকোগুলো উথালপাথাল করে দুলে উঠতেই, বিভিন্ন নৌকোর ভেতরের বাচ্চাকাচ্চা, মেয়ে-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কেঁদে উঠল। কান্নার রোল শুনে মনে হচ্ছে, যেন নাফ নদীর সাতসকালে জান ছাড়ছে! নৌকো দুলতে থাকায় সাকিবেরও ঘুম ভেঙে গেল। সে নৌকোটাকে হেংলেপেংলে দুলতে দেখে ডুকরে উঠল, ‘মা, তাড়াতাড়ি বাড়ি চল, আমরা পানিতে ডুবে যাব!’ আরিফা ছেলেকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে নিল, ‘চুপ কর বাপ, জোয়ারটা থামলেই বাড়ি ফিরে যাব। চুপ চুপ, এখন কাঁদতে নেই, নদীতে কাঁদলে নদীও কাঁদে, আর নদী কাঁদলে আল্লাহর গজব নেমে আসে!’

আরিফা ছেলেকে ভয় দেখায়। আল্লাহর গজবের ভয়। নৌকো ডুবে যাওয়ার ভয়। সাকিব কি আর গজব টজব বোঝে? তার কাছে এখন গজবও যা জুজুও তাই। সে আঁচলের ভেতরে ফুঁপিয়ে বলতে থাকল, ‘আমি বাড়ি যাব, বাড়ি যাব, আমাকে এক্ষুনি বাড়ি নিয়ে চল।’

‘বাড়ি যাব তো, আজকেই যাব, এখন চুপ, দেখতে পাচ্ছিস ন্যা, নদী ফুঁসে উঠছে! ঢেউটা একটু থিতাক, ঠিক বাড়ি চলে যাব।’

‘না, তুমি যাবে না, সেই রাত থেকেই বলছ, বাড়ি যাচ্ছি যাচ্ছি, কিন্তু কই যাচ্ছ? এত দেরি হচ্ছে কেন? আমাদের বাড়ি তো অনেক দূর নয়?’
‘এই চুপ কর তো? দেখতে পাচ্ছিস ন্যা এখন আপদ।’ ধমকে উঠল আরিফা।
‘ম্যা’ করে কেঁদে উঠল সাকিব। ‘কী হল?’ চেঁচিয়ে উঠল মতি। ‘কই, কিচ্ছু না।’ কথাটাকে আড়াল করল আরিফা।

‘এই ঘোর দুর্যোগে তুমি আবার ছেলে শাসন করছ নাকি?’ চোখ গরম করল মতি। আরিফা খেঁকিয়ে উঠল, ‘তুমি তোমার কাজ করো তো, এদিকে কান দিও না।’ তারপর নাকে-মুখে আঁচল গুঁজে ফুঁপিয়ে উঠল। আর কত কাঁদবে আরিফা! কেঁদে কেঁদে তার চোখ লাল হয়ে গেছে। চোখের নিচে পড়েছে কালির দাগ। একসময়ের মোমের মতো নরম গালে আজ অশ্রুর দড়কচড়া! চোখের কোটরে জমা থাকা দুঃখের অশ্রু ছেকে বের করলে মনে হয় নাফ নদীকেও হারাবে। তার হয়ত স্বামী আছে, ছেলে আছে, শশুর আছেন, শাশুড়ি আছেন, কিন্তু এ কি আর সেই থাকা? এ তো থেকেও নেই। এর কি আর কোনো ভরসা আছে? এই আছে এই নেই দশা। কখন কামানের একটা গোলা এসে সবকটা জান ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাবে! এ জীবন তো ঠুনকো। কচুর পাতার টলমলে জলের মতো। যে জীবন পাথরে ভাস্কর্য আঁকে, যে জীবন মনের দেওয়ালে আঁকে প্রেমের মূর্তি, এ জীবন তো সে জীবন নয়? এ জীবন সমুদ্রের উপকূলে আঁকা বালির আঁকিবুঁকি, একটা স্রোত এলেই ধুয়ে মুছে শেষ। না থাকবে তার পায়ের চিহ্ন, না থাকবে নিশ্বাসের গন্ধ।

নুহু দ্বিতীয় নৌকোটায় বৈঠা টানা লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘আপনি বিড়ি খান? খেলে একটা দেবেন তো।’ নুহুকে বিড়ি চাইতে দেখে মতি চোখ কটমট করে তাকাল। ‘খাই, কিন্তু এখন! এই দুর্যোগে বিড়ি!’ লোকটি বিস্ময় ভরা চোখে তাকালো। ‘না, মনটা খুঁত খুঁত করছে, তাই আর কি।’ হাত কচলালো নুহু।

‘এই গাধা, এখন তোর বিড়ি ফুঁকতে মন খুঁত খুঁত করছে! পানিতে খোল ভরে গেল, দেখতে পাচ্ছিস ন্যা। ছেকে ফেলবি না ডুবে মরবি?’ তিড়বিড় করে উঠল মতি। যেন পারলে ছোট ভাইটাকে এক গাদন দেয়। নুহুর মুখে কোনো কথা নেই। বিস্ফোরিত চোখে জলে উপচে পড়া নৌকোর খোলের পানে তাকিয়ে রইল। মতি তাকে এভাবে মূর্তির মতো তাকিয়ে থাকতে দেখে কী সব বিড়বিড় করল, তারপর বাজখায় গলায় বলল, ‘তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবি না ছেকে ফেলবি?’ কোনো কথা বলল না নুহু। পাছাটাকে পায়ের ভরে ঠেলা দিয়ে খাড়া হয়ে উঠে দাঁড়াল। পাটাতনের ওপর উপুড় করা একটা লোহার তারের ঝুড়ি থেকে টিনের ছেকনিটা নিয়ে জল জমা খোলটার কাছে গেল। পিঠ কুঁজো করে ছুক ছুক করে জল ছেকে নদীতে ফেলতে লাগল। ছেকে ফেলা জলের গায়ে হলুদ রোদ পড়ে যেন মনে হচ্ছে গমের সোনালী শীষ। জলটা নদীর যেখানে ছলাৎ করে আছড়ে পড়ছে, সেই ঘূর্ণন জায়গাটাও টাটকা রোদ মেখে টোল পড়া গালের মতো লাগছে। জলের মিহি ঢেউ অতি ধীরে ধীরে সাদা ফ্যানার মধ্যে নিজেকে মিলিয়ে দিচ্ছে। ঢেউ-এর জল উপচে খোলে ঢুকে পড়েছে। আরিফা মুড়ির ডামটা বাক্সটার দিকে সরিয়ে রাখল। তাড়াহুড়োই সেরকম তো কিছুই আনতে পারেনি। মুড়ির ডামটা দাওয়ার তাকে রাখা ছিল। বেরোনোর সময় মতি বগলে পুরে ছুটে এসেছিল। দু-হাতের মতো লম্বা ডাম। সাদা রঙের ডামটায় কেজি তিনেক মুড়ি ধরে। কানা অবধি মুড়ি ভর্তি ছিল না। গলার নিচ অবধি পুরা ছিল। আমন ধানের চাড়ে ভাঁজা ঘড্ডি মুড়ি। যা ছিল সেখান থেকেই গত রাতে সবাই দু-একমুঠ করে মুখে দিয়ে জল খেয়েছিল। আপাতত মাথার চালা না লাগুক, গায়ের পোশাক না লাগুক, পেটের খোরাক তো লাগবে? আর সবাই কথা শুনলেও পেট কিন্তু কোনো কথাই শুনবে না। নুহু যতই হুঁশবুদ্ধি কম ওয়ালা লোক হোক, সে কিন্তু বুদ্ধি করে একটা কাজের কাজ করেছিল, হুটপাট করে বেরোনোর সময় বারান্দায় রাখা চালের বস্তাটা মাথায় করে থপথপ করে পালিয়ে এসেছিল।

ফুঁসতে থাকা নদীর ফনা থেকে ধীরে ধীরে বিষ নেমে যেতে লাগল। নদীর উন্মত্ত রূপ যেন কারো স্পর্শ পেয়ে হঠাৎ কোমল হতে লাগল। জোয়ার থেমে গেছে। যেন এতক্ষণ ধরে পোয়াতি নদী সন্তান প্রসব করল। ঝাঁকানি কুঁকানি দিয়ে অবশেষে পৃথিবী শুনল প্রসব হওয়া শিশুর প্রথম কান্না। প্রথম আর্তনাদ। তারপর শুধুই খুশি আর খুশি। নুহু দ্বিতীয় নৌকোর লোকটাকে আবার বলল, ‘কই, বিড়িটা দেন। একটান দিই।’ লোকটি আর অবাক চোখে তাকাল না। বিস্ময়ভরা চোখ দিয়ে আর জরিপও করল না নুহুকে। মনে মনে আর ভাবলও না, লোকটার ভড়ং দেখে তো আর পারি ন্যা, নৌকো ডুবতে বসেছে আর ও কিনা এখন বিড়ি ফুঁকবে! লোকটা লুঙ্গির গিঁট থেকে বিড়ির প্যাকেটটা বের করল। আসলে তারও এবার নেশাটা চেপে বসেছে। মনটা বিড়ি বিড়ি করছে। একটা বিড়ি নুহুকে দিয়ে আরেকটা নিজের মুখে পুরে বলল, ‘ধরান।’ নুহু তার লুঙ্গির ভাঁজ থেকে গ্যাসলাইটারটা বের করে ‘খচ’ করে জ্বালালো। ‘দপ’ করে আগুনের হলদে শীখাটা জ্বলে উঠল। নুহু বিড়িটার মুখে একটা জোরে ফুঁ দিয়ে আগুনের শীখায় ঠেকালো। আলতো করে আগুন লাগিয়েই মুখে পুরে দিল। জোরে মারল টান। বিড়ির মুখের আগুনটা কামারশালার হাপরের মতো গনগন করে উঠল। টান দিয়েই ছেড়ে দিল নুহু। একলাদা ধোঁয়া নাক মুখ দিয়ে হেচিয়ে পেঁচিয়ে বেরল। সাদা ধোঁয়ায় পিঠ ঠেকিয়ে নেচে উঠছে সুখ। বিড়ির পুকটিটা মুখে পুরেই মুখটা বাড়ালো লোকটার মুখে লাগানো বিড়িটার দিকে। আগুনের স্পর্শ পেয়ে পড়পড় করে ধরে গেল লোকটার মুখের বিড়িটা। লোকটা একবার সুখটান দিতেই বিড়ির মুখটা গনগনিয়ে উঠল। নুহু বলল, ‘বিড়িটা তো দারুন! বেশ ধক আছে।’
‘হ্যাঁ, ‘লুই তাং বিড়ি’। আমাদের ওখানকার নামকরা বিড়ি। ফাতংজার বাজারে একদামে বিক্কিরি হয়। বৌদ্ধপাড়ার লুই তাং কে তার বিড়ির জন্যেই সবাই একনামে চেনে। বিড়ির ব্যবসা করে পয়সা কামালেও লোকটা এখনো নিজের হাতে বিড়ি বাঁধে। ওটা নাকি তার জীবনের পয়া।’ দুজনেই সুখটান দেয়। রোদ মেখে সাদা ধোঁয়া আউড়িবাউড়ি পাকিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। ধোঁয়ার মধ্যে মুখ লুকিয়ে উড়ে যাচ্ছে ক্লান্তি। অবসাদ। ধীরে ধীরে জোয়ার থিতু হল। উথলে ওঠা স্রোত মিহি হয়ে নদীর বুকে মুখ গুঁজল। নৌকোটা নয়াপাড়ার অনেকটা কাছে চলে এসেছে। সূর্য গড়ান গাছের আড়ালে। দিগন্ত ফুঁড়ে পুব আকাশে গড়ান গাছের মটকা ডালে কাঁসার থালার মতো ঝুলে আছে। যেন গাছে উঠলেই হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে। আর নীলাকাশের প্রলম্বিত ছায়া নদীর তলপেটে কোমর বেঁকিয়ে ডুবে আছে। নদীর মিহি স্রোতে পশমের তুলোর মতো আরও মিহি করে দুলছে। দিগন্তটাকে আজ হাতে খড়ির ধ্যাবড়ানো স্কেচ নয়, পিকাসোর আঁকা ক্যানভাস বলে মনে হচ্ছে। এই রঙিন দিগন্তেই একটু একটু করে মিশে যাচ্ছে একটা আসমান ছোঁয়া চিল। পৌষ মাঘ মাসের শীত না হলেও, একেবারে ঘোর সকালে বাতাসে ফিনফিনে কুয়াশা থাকে। সেই কুয়াশার চাদর কেটে চরাচর হলুদ হয়ে উঠছে। কিছুটা এগিয়ে গিয়েই মতিরা দেখে, নয়াপাড়ায় ঢোকার মুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক নৌকো! নৌকোর পাল দেখে কোটরে ঢোকা চোখ বিস্ফোরিত হয় মতির। বলে, ‘কী ব্যাপার এখানে এত নৌকো নোঙর গেড়েছে!’
‘মনে হচ্ছে, ঘাটে ঢুকতে দিচ্ছে না।’ নুহুর চোখ ঝোড়ো আলোতে ঘোমটার মতো খুলে গেল। ইয়াসিন মাস্টার চোখমুখ পাংসে করে বলে উঠলেন, ‘ব্যাপার মনে হয় ভালো নয়! এখানে এসেও মনে হয় লাভ হল না। বি জি বি মনে হয় এখানেও পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে।’নুহু নৌকোর মাথায় গিয়ে খাড়া হয়ে হাঁক পারল, ‘কী হয়েছে গো? সবাই খুঁটি মেরে দাঁড়িয়ে আছ কেন?’ কেউ কোনো উত্তর না দেওয়াই, নুহু আরও জোরে গলা ছাড়ল, ‘কী হয়েছে গো? সমস্যা কী?’
‘পাড়ে উঠতে দিচ্ছে না!’ একজন মাঝবয়সের লোক হাঁড়া গলায় বলল। আরেকজন লোক বলল, ‘এখানেও ল্যাফড়া।’ নুহুদের নৌকোদুটো থ মেরে গেল। চর থেকে হতাশার দমকা বাতাস শত শত নৌকোর খোল দিয়ে হেঁটে আসছে। যেটুকু আশা-ভরসা জিইয়ে রেখে এতদূর এসে নোঙর গাড়ার কথা, সেসব গমের ভুষির মতো উড়ে যাচ্ছে। মতি নুহুদের কাছে নয়াপাড়া মানে তো বঙ্গোপসাগরের পলল জমে গড়ে ওঠা কয়েক বিঘে জমি নয়, বালিনুড়ির এক ছটাক উঁচু ঢিবিও নয়, নয়াপাড়া মানে একটা দেশ, একটা ঠিকানা, এই হাড়-মাংসের জীবনের একটা চালাহীন চুলোহীন দুদণ্ডের ঠাঁই। মতির কপালে ছোপ ছোপ ঘাম। নুহুর মুখ শুকিয়ে আমের চাঁচি। আরিফার আঁচলে ঢুকে পড়ছে ভেজা চোখ, কলিজা থেকে একটু একটু করে ছিঁড়েছুড়ে নৌকোর খোলে বেরিয়ে আসছে জান। ইয়াসিন মাস্টার দুহাত মাথায় দিয়ে ধপ করে নৌকোর পাটাতনে বসে পড়লেন। যেন আর সামনে যাওয়ার কোন ফুরসত নেই। মৃত্যুর সীমান্তে এসে আটকা পড়ে গেছেন। সম্মুখে হাঁ করে দাঁড়িয়ে গেছে মৃত্যুর কবর। জীবনের ফিতের দৈর্ঘ্য যেন এখানেই শেষ। বিজিবির সাফ কথা তারা আর বোঝা টানতে পারছেন না। বাংলাদেশ সরকার সাফ সাফ বলে দিয়েছে, এর তো একটা লিমিট আছে নাকি? রাতদিন গরু মহিষের পালের মতো হুড়হুড় করে লোক চলে আসছে! পুরো রাখাইনটাই যদি উঠে চলে আসে, সে ভার নেওয়ার ক্ষমতা কি আমাদের আছে? আমরাও তো একটা দরিদ্র দেশ। খাঁটি খাই কোনরকমে চলে যায়। এটা নিয়ে রাষ্ট্রসংঘকেই ভাবতে হবে। আন্তর্জাতিক মঞ্চ নাগ গলাক। তানাহলে তো আমাদের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়ে যাচ্ছে! এ যে পরকে জায়গা দিতে গিয়ে নিজেদের গাঁ উজার হয়ে যাবে? একটা মানুষ মানে তো আর কয়েক পল নিশ্বাস-প্রশ্বাস নয়? একটা মানুষ মানে, কিছুটা মাটি, তিনবেলা না হোক দুবেলা পেটের খোরাক, মাথার ওপর একটা চালা, হাগামুতার জায়গা, পরনের কাপড়চোপড়। সেসব ফকেটিয়ে পাব কোথায়? গরু-ছাগল না হোক জবাই করে খাওয়া যায়, কিন্তু মানুষকে তো তার বাঁচার হায়াত দিতে হবে। বিজিবি-র কড়া হুঁশিয়ারি, আপনারা আপনাদের দেশে ফিরে যান, এখানে ঢোকার চেষ্টা করবেন না। লুকিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে কিন্তু গুলি খেয়ে মরতে হবে। হাজার হাজার মানুষ হাউমাউ করে কাঁদছেন, ‘আল্লাহর দোহায়, আমাদেরকে একটু জায়গা দিন। আমাদের কিচ্ছু নেই। আমরা সব হারিয়ে নিঃস্ব। জমিজমা, বসতভিটে, পশুপাখি সব ফেলে এসেছি। সহায় সম্বলহীন আমাদের বাঁচার আর কোনো পথ নেই। আমাদের থাকা বলতে গেলে, আল্লাহর দেওয়া এই সাড়ে তিন হাত শরীরটুকুই কোনোরকমে বেঁচে আছে। সেটাও ফাড়ার সুতোয় ঝুলছে।‘

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

চিন্তাও করিনি মাত্র ১৬ ভোটে হারবো: নিপুণ

চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়া হলো না চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের। বহুল আলোচিত এ পদে ডিপজলের কাছে মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন নিপুণ।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতৃত্বে মিশা-ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

এ সময় সাংবাদিকদের নিপুণ বলেন, ‘ডিপজল ভাইয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৬ ভোটে হারবো সেটা আমি চিন্তাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম ডিপজল সাহেবের সঙ্গে আমি যখন দাঁড়াবো, খুব বেশি হলে ৫০টা ভোট পাবো।’

এই নায়িকা বলেন, ‘আমার ২৬টা ভোট নষ্ট হয়েছে, ২০৯টি ভোট আমি পেয়েছি। যেখানে ডিপজল ভাই পেয়েছেন ২২৫টি ভোট। শিল্পী সমিতির ভাই-বোনেরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তারা আমাকে ভালোবাসেন। আমাকে এত সম্মান দেওয়ার জন্যে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

নিপুণ-মাহমুদ কলি। ছবি: সংগৃহীত

 

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে মন্তব্য করে নিপুণ আরও বলেন, ‘প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই ২০২৪-২৬ নির্বাচন যারা পরিচালনা করেছেন তাদের। আমার মনে হয় আমার টার্মে থেকে আমি খুব সুন্দর একটি নির্বাচন পরিচালনা করেছি।’

এদিকে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, ডিপজলের পক্ষে ভোট পড়েছে ২২৫টি। অন্যদিকে নিপুন আক্তার পেয়েছেন ২০৯ ভোট। মাত্র ১৬ ভোট কম পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে দূরে পড়ে রইলেন নায়িকা। অন্যদিকে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর পেয়েছেন ২৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মাহমুদ কলি। তিনি পেয়েছেন ১৭০ ভোট।

এ নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেল নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করেছে। মাহমুদ কলি-নিপুণ প্যানেল থেকে জয়লাভ করেছে মাত্র তিনজন।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় অভিনেতা ডা. এজাজের (অভিনেতা ও চিকিৎসক এজাজুল ইসলাম) ভোট প্রদানের মাধ্যমে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ শেষ হয় বিকেল ৫টায়। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত

সিরিয়ায় আইএসের হামলা। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পৃথক দু’টি হামলায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ২৮ জন সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবসারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে শনিবার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হোমসে সেনাসদস্যদের বহনকারী একটি বাসকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলা আইএসের বন্দুকধারীরা। এতে ওই বাসের মোট ২২ জন যাত্রীর সবাই নিহত হন।

নিহত এই সেনাসদস্যদের সবাই সিরীয় সশস্ত্র বাহিনীর কুদস ব্রিগেডের সদস্য। এই ব্রিগেডটির যোদ্ধারা সবাই জাতিগতভাবে ফিলিস্তিনি এবং সাম্প্রতিক গত কয়েক বছর ধরে দামেস্কের প্রধান মিত্র মস্কো নিয়মিত কুদস ব্রিগেডকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা প্রদান করছে।

একই দিন সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর আলবু কামালের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ৬ সিরীয় সেনা কে হত্যা করেছে আইএস বন্দুকধারীরা।

তবে, সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমে দুই ঘটনার কোনোটিই প্রকাশ করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে আইএসের উত্থান ঘটে সিরিয়া এবং ইরাকে। দুই দেশের বিশাল ভূখণ্ড দখল করে নিজেদের পৃথক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল আন্তর্জাতিক এই ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী।

তবে ২০১৫ সালে রুশ বিমানবাহিনী আইএস অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে অভিযান শুরুর পর থেকে এই গোষ্ঠীটির দৌরাত্ম্য কমতে থাকে। ২০১৪ সালে যে পরিমাণ ভূখণ্ড দখলে নিয়েছিল আইএস, বর্তমানে তার মাত্র এক পঞ্চমাংশ কোনো রকমে টিকিয়ে রাখতে পেরেছে এই গোষ্ঠীটি।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে, চলছে গণনা। ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এখনও চলছে গণনার কাজ।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।

পাঁচ মাস পর ৯টি লোহার দানবাক্স থেকে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এখন মেঝেতে ঢেলে চলছে গণনা কার্যক্রম। গণনায় ৯৮ জন মাদরাসার ছাত্র, ৯ জন শিক্ষক, ৭০ জন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ১০ জন আনসার সদস্য অংশগ্রহণ করেছেন।

দিনভর গণনা শেষে সন্ধ্যায় দানের পরিমাণ জানা যাবে। দানবাক্স থেকে টাকা ছাড়াও স্বর্ণ, রুপা, রিয়েল, রিংগিত, ডলার পাওয়া গেছে। প্রতি তিন মাস পরপর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হলেও এবার রমজান মাসের কারণে পাঁচ মাস পর খোলা হয়েছে।

এর আগে, গত ৯ ডিসেম্বর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। সে সময় ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এসব বস্তা থেকে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়ায় যায়। এর আগে কখনো এত টাকা পাওয়া যায়নি। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে গণনা শেষ হয় রাত সাড়ে ১০টায়। গণনায় অংশ নেয় প্রায় ২০০ জনের একটি দল। টানা প্রায় ১৫ ঘণ্টা গণনা শেষে টাকার পরিমাণ জানা যায়।

তখন গণনায় ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ১৩০ জন শিক্ষার্থী, ৬০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা, ১০ জন শিক্ষক এবং ১০ জন আনসার সদস্য অংশগ্রহণ করেছিলেন।

কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। আর সে কারণে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষজন এখানে দান করে থাকেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতারণার বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান মসজিদটির খতিব মাওলানা আশারফ উদ্দিন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাগলা মসজিদের নাম ব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে দানের টাকা পৌঁছে দেওয়া, মসজিদের উন্নয়নের জন্য দান করার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষদের সতর্ক থাকতে হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

চিন্তাও করিনি মাত্র ১৬ ভোটে হারবো: নিপুণ
সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতৃত্বে মিশা-ডিপজল
২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০
পালিয়ে আসা ২৮৫ সেনা সদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত নেবে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ল বাস, প্রকৌশলী নিহত
১০ হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক লুৎফুলকে শোকজ করল আওয়ামী লীগ
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে