শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৯

যারা যুদ্ধ করেছিল

লুকোতে চাইলেও সব কথা লুকনো যায় না। সাকিবের লিঙ্গ কর্তনের কথা রাতারাতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তারা এই ঘটনা নিয়ে নানা রসিকতা করতে থাকে। আর যারা পাকিস্তানপন্থী তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ফজলুর রহমানের মতো ডাক সাইটের মুসলিম লীগার শান্তি কমিটির নেতাকেও মুক্তিবাহিনী ছাড় দেয়নি। বাকিরাতো চুনোপুটি। তারা এর আগে একটু আধটু মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু বললেও এই ঘটনার পর তারা মুখে কুলুপ এঁটেছে।

লজ্জা শরমে সাকিব বাড়ির বাইরে যায় না। একা একা যাওয়াও সমস্যা। যারা জন্মান্ধ তাদের পথঘাট চিনতে সমস্যা হয় না। তারা পথের নমুনা হৃদয় দিয়ে অনুমান করতে পারে। সাকিব অন্ধ হয়েছে সদ্য। তাকে অন্ধ করেছে মুক্তিবাহিনী। এই লজ্জায়ও সে ঘর থেকে বেরিয়ে কারও সামনে মুখ দেখাতে পারছে না।

সাকিব বাইরে যাচ্ছে না বটে কিন্তু গ্রামবাসির কৌতূহল অবদমন করবে কে? খবর পেয়ে তারা দলে দলে ছুটে আসছে। সাকিবকে ঘিরে তাদের নানা জিজ্ঞাসা। সাকিব নিরব নিঃস্তব্ধ। ঘরে গিয়ে মুখ ঢেকে শুয়ে থাকে। গ্রামবাসি তা সত্ত্বেও ঘরে গিয়ে সাকিবের পাশে বসে। কেউ কেউ সহানুভূতি জানায়। কেউ মুচকি হেসে পরিহাসমূলক কথা বলে।

‘ফজলু চাচাকে তখনই কইছিলাম, ‘মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে বাড়াবাড়ি না করতে। চাচা আমার কথা শুনলো না। উল্টা আমারে আরও নানা ভয় দেখাইলো। এখন কেবা হইল। গরীবের কথা বাসি অইলে ফলে।’

একজন যুবক রহস্য করে বললো, ‘তুইতো নাটকের ডায়লগ ঝাড়া শুরু করলি?’
আরেকজন যুবক থামিয়ে বললো, ‘তোরা কি শুরু করলি? সাকিব ভাইয়ের সর্বনাশ আর তোগো পৌষ মাস।’
‘এটাওতো তুই নাটকের ডায়লগ কইলি।’ চাপা হাসির শব্দ শোনা গেল তারপর।

সাকিবের বুক ফেটে কান্না আসছিল। বার বার মনে হচ্ছিল এটা তার পাপের ফল। আজ যারা তাকে নিয়ে মজা করছে এটা তার প্রাপ্য। নিজেই সে দুর্ভোগ কপালে তুলে নিয়েছে। বন্ধুর বোনকে বাঁচানোর নামে সে যা করেছে এটা খুবই জঘন্য কাজ। পরিণামের কথাটা আগে ভাবা উচিত ছিল। এখন কেঁদে আর কি হবে? এখন আমি নপুংসক। খোজা। বিয়ে করার যোগ্যতা হারিয়েছি। সন্তানের মুখ দেখার সুযোগ হবে না। লোকজনের সামনে মুখই বা কি করে দেখাবো? তার উপর জ্যান্ত মরা হয়ে বেঁচে থাকতে হবে। পৃথিবীর আলো দেখতে পাবো না। এ জীবন রাখার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো।

এদিকে সাকিব অর্ন্তজ্বালায় দগ্ধ হচ্ছে অন্যদিকে সাকিবকে দেখতে আসা প্রতিবেশীদের মজার রসিকতার কমতি হচ্ছে না। তারা দুখির সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ না করে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করছে। কদিন আগেও এমন করার সাহস তাদের ছিল না। মুক্তিবাহিনী সাকিবের বাপকে হত্যা এবং সাকিবকে অন্ধ আর খোজা করার পর প্রতিবেশীরা এতটা সাহস পেয়েছে। ফজলুর রহমান শান্তি কমিটির নেতা হওয়াতে প্রতিবেশীরা ছিল হুমকির মুখে। এদের মধ্যে যারা স্বাধীনতাকামী তারা ফজলুর রহমানের শান্তি কমিটিতে যোগ দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। একের পর এক তার বিতর্কিত কাজ তারা কোনোভাবেই সমর্থন করতে পারছিল না। তারা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। সেই সুযোগ এমনভাবে হাতে নাতে ফলে যাবে তারাও আশা করতে পারেনি। তাই চাপা আনন্দ তারা চেপে রাখতে পারছে না।
সাকিবের প্রতিবেশী আফজাল হোসেন তারা মামাতো ফুপাতো ভাই। এক সঙ্গে লেখাপড়া করেছে। কলেজে পড়ার সময় প্রেম করে বিয়ে করার পর আর লেখাপড়া করা হয়নি। এখন জুটমিলে জুনিয়র অ্যাকাউন্ট অফিসার পদে চাকরি করে। ২৫ মার্চের পর কিছুদিন মিলে যায়নি। তারপর পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হলে মামা ফজলুর রহমানের কথা মতো চাকরিতে জয়েন করে। আজই কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছে। এসেই সাকিব এবং ফজলু মামার কাহিনি শুনে দেরি না করে অমনি ছুটে এসেছে সাকিবকে দেখতে। আফজাল এসেই সাকিবের গা ঘেষে বসে। গায়ে হাত বুলায়।

সাকিব জিজ্ঞেস করে, ‘কে?’
আফজাল বলে, ‘আমি আফজাল।’ আফজালকে দেখে অনেকে উঠে চলে যায়। যারা থাকে তারাও আর রঙ্গরসের কথা বলে না। চাপা হাসিও বন্ধ হয়ে যায়।

আফজাল জিজ্ঞেস করে, ‘কিভাবে এমন হলো?’
সাকিব কিছু বলে না। লম্বা করে শ্বাস ফেলে।
আফজাল বলে, ‘মামা শান্তি কমিটি করছে তাকে ধরছে ঠিকআছে। কিন্তু তোকে? তোর জীবনটা এমন করে বরবাদ করলো কেন? তুই কি করেছিস?’ সাকিব এবার শব্দ করে কেঁদে ফেলে।
আফজাল আবার জিজ্ঞেস করে, ‘তুই কি কাউকে চিনতে পেরেছিস?’
‘চিনে লাভ কি? তাদের তুই কিছু করতে পারবি? শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনী তাদের কিছু করতে পারছে না, তুই সেখানে কি করবি?’
আফজাল বলে, ‘কিছু করতে পারি আর না পারি অন্তত চিনে রাখতাম।’
‘চেনার দরকার নেই। বাপের দেওয়া জানটা আর হারানোর কাম নাই।’
‘চিনা থাকলে তুই নাম ক।’
‘বললাম না বাপের দেওয়া জানটা আর হারানোর কাম নাই।’
‘তুই না বলছিলি মুক্তিবাহিনী এক সপ্তাহের মধ্যে হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে। পাকিস্তানি মিলিটারির সামনে পুচকে মুক্তিবাহিনীরা দাঁড়াতেই পারবে না।’
‘তখন বুঝতে পারিনিরে। পরে বুঝছি শালারা এক একটা ধাইনা মরিচ। পোদ ভরা ঝাল।’
‘মামাকে কোথায় মেরেছে? তার লাশ পাওয়া গেছে?’
‘না।’
‘মামাকে আমি না করছিলাম। মামা হুনলো না। কিন্তু একটা জিনিস আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না, তোকে তারা নিয়া গেল ক্যা? ওরাতো বাপের শাস্তি পোলাকে দেয় না।’

সাকিব জবাব দেয় না। এইসময় বড় ঘর থেকে দুজন মহিলার উচ্চস্বরে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। আফজাল সচকিত হয়ে সেইদিকে তাকায়। প্রতিবেশী যারা এসেছিল তারা এই ফাঁকে উঠে চলে যায়। আফজাল উঠে বড় ঘরের দিকে যায়। গিয়ে দেখে সাকিবের ছোটখালা আর খালাতো বোন পপি এসেছে। দুই গ্রাম পরেই তাদের বাড়ি। বোনের দুঃখের কাহিনি শুনে থাকতে পারেনি। বিপদের মধ্যেই ছুটে এসেছে। দুই বোন গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। এই দৃশ্য দেখে আফজালেরও চোখ ভিজে আসে।

ছোট খালা বলে. ‘এইসময় দুলাভাইয়ের বাড়িতে থাকার কি দরকার ছিল? সময় খারাপ দুলাভাই বুঝতে পারেনি?’
‘আমিও বারে বারে সাবধান করেছি। আমার কথা কানেই তোলেনি। উল্টা আমাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়েছে।’
ছোটখালা বলে, ‘সাকিবকে দিয়ে বলাতে পারতিস।’
আয়েশা বেগম ক্রুব্ধ কণ্ঠে বলে, ‘বাপ-বেটা সমান হইছিল। তোর দুলাভাইকে মাইরা ফেলছে তাও আমি মানতে পারতাম। আমার আদরের ছোয়ালটাকে ওরা জ্যান্ত মরা করছে। ওরা সাকিবের দুই চোখ তুইলা দিছে। ছোয়াল আমার জনমের মতো অন্ধ হয়া গেছে।’ এই কথা শুনে পপির শরীর কেঁপে ওঠে। সাকিব ভাই অন্ধ তাহলে তার কি হবে? তাদের যে অদম্য প্রেম। সেই প্রেমের কি হবে? ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে পপি।

ছোটখালা জিজ্ঞেস করে, ‘সাকিবের চোখ তুলছে ক্যা?’
‘সে কথা আর জিগাইস না। মধ্যপাড়ার মমিন গেছে মুক্তিবাহিনীতে। সাকিব ওর বোন সাথীকে ধইরা নিয়া আইসা এই বাড়িতে রাখতো। রাইতে একসাথে থাকতো। আমি বারে বারে না করছি। বলছি এটা ঘোর অন্যায়, মহাপাপ। এই পাপ আল্লাহ কোনোদিন মাফ করবে না। তারা বাপ-বেটা মিলা আমারে বুঝায়, সাথীর ভাই পাকিস্তান ভাঙার লাইগা ভারতের হিন্দুদের সাথে হাত মিলাইছে। সেই কারণে সাথী নাকি এখন শত্রুর বোন, গণিমতের মাল। তাকে ভোগ করার কথা নাকি হাদীসে আছে।’

ছোটখালা মিন মিন করে বলে, ‘আছেতো। হাদীস কোরআনে এ সব কথা উল্লেখ আছে।’
‘এইটা কোন কথা হইল?’ আয়েশা বেগম আবারও কান্না গলায় ফুঁপিয়ে ওঠে। সব হারিয়ে মানুষ যেমন দিশেহারা হয়ে পড়ে আয়েশা বেগমও তেমনি দিশেহারা হয়ে কথার তাল হারিয়ে ফেলেছে। সে কি বলছে নিজেই বুঝতে পারছে না। তার যেন স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পেয়েছে। কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না এ সব তার মাথায় কাজ করছে না। সে রাগতঃ বলে উঠলো, ‘বোনকে গণিমতের মাল বানানোর প্রতিশোধ নিতে একরাতে সাথীর ভাই দলবল নিয়া এসে আমার ছেলে আর ওর বাপকে ধরে নিয়ে যায়। তোর দুলাভাইকে জবাই করে। তার লাশটা পর্যন্ত পাই নাই। আর সাকিবকে অন্ধ কইরা...... ’

আয়েশা বেগমর কথা শেষ হয় না। টিনের ঘরের ছাদ কাঁপিয়ে ও...বাবাগো বলে শব্দ করে কেঁদে ওঠে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘ছোয়াল আমার জন্মের নুলা হইছে। তাকে আমি বিয়াও করাইতে পারমু না।’
‘ক্যা?’ ছোটখালা বিষ্ময়ে জিজ্ঞেস করে।
‘ওরা সাকিবরে খোজা বানায়া দিছে।’
‘সর্বনাশ! এই কথা মাইনষের কাছে কওয়া যাইবো? বুবু তুমি চুপ করো।’
‘আমি চুপ করলে কি ঘটনা থেমে থাকবে?’

মুহূর্তে পপির কান্না বিপরীতমুখী হয়ে ওঠে। এ কি শুনছে সে। সাকিব ভেতরে ভেতরে এতোটা শয়তান। পপি ঘুণাক্ষরেও ধারণা করতে পারেনি। সাকিব মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী এটাও পপি মানতে পারেনি। সাকিবকে চিঠি লিখে সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে অনুরোধ করেছিল। একবার ভেবেছিল তাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বিরুদ্ধ মত সে বদলিয়ে দেবে। তাকে যুদ্ধে পাঠাবে। অন্তত জামাতের সমর্থক পিতার পাপ খানিকটা পুত্র কাধে নিয়ে পিতার শাস্তি খানিকটা হাল্কা করতে পারে। তাছাড়া একজন যুবক হিসেবে দেশের স্বাধীনতার জন্য শত্রুর মুখোমুখি বুক চিতিয়ে না দাঁড়ালে কিসের সে দেশের সে দেশের সন্তান? কোথায় তার দেশ প্রেম? যেখানে পাকিস্তানিরা এদেশের নারীদের নির্বিচারে ধর্ষণ করছে। এমন ঘটনা শুনে একজন যুবক কিভাবে ঘরে বসে থাকতে পারে? তাহলে সে কিসের পুরুষ?
পপি এখন যা শুনছে তাতে আর কষ্ট হচ্ছে না। মনে হচ্ছে সাকিব তার কাজের উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে।

পপি পায়ে পায়ে সাকিবের ঘরে যায় নিঃশব্দে। সাকিব মাথার নিচে হাত দিয়ে উদাসভাবে শুয়ে আছে। তার দুচোখে ব্যান্ডেজ। চোখের ঘা পুরোপুরি ঠিক হয়নি। ব্যথা বেদনা এখনো সাকিবকে ঘুমোতে দেয় না। পপি নিঃশব্দে ঢুকলেও সাকিব বুঝতে পারে তার ঘরে কে যেন ঢুকেছে। সাকিব অনুস্বরে জিজ্ঞেস করে, ‘কে?’
‘আমি।’ পপি জবাব দেয়।
‘তুমি কখন এলে?’
‘অনেকক্ষণ।’
সাকিব হতাশ কণ্ঠে বলে, ‘পপি, কি চেয়েছিলাম আর কি হলো?’
পপি আকস্মিক জিজ্ঞেস করে, ‘সাথী কে?’

সাকিব সহজভাবে জবাব দিতে থাকে। পপি ভেবেছিল সাথীর প্রশ্নে সাকিব নির্বাক হয়ে যাবে। সাকিব করে উল্টোটি। জীবনে সবই হারিয়ে গেছে এখন আর ভনিতা করে কি লাভ? জবাবে সাকিব বলে, ‘মধ্যপাড়ার আমার বন্ধু মমিনের ছোটবোন সাথী। কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ে। আর কিছু?’
‘না। আর কি বলবো? বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।’ পপি নিরুত্তাপ কণ্ঠে বলে।

সাকিব দম নিয়ে হতাশ কণ্ঠে বলে, ‘আমাদের সম্পর্কের কথা ভুলে যাও পপি। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
‘ক্ষমা না করে উপায় কি? তুমিতো তোমার কর্মফল পেয়ে গেছ। অথচ আমি তোমাকে চেয়েছিলাম দেশপ্রেমিক বীর যোদ্ধা হিসেবে। তোমাকে সে কথা চিঠিতে লিখেছিলাম। তুমি কানে তোলনি। উল্টো তুমি রাজাকারের পক্ষ নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছ। তুমি যা করেছ সেটা তোমার ব্যাপার। তুমি ভুলে যেতে না বললেও আমি ঠিকই ভুলে যেতাম। অন্তত ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। কারণ পলাশীর যুদ্ধের আড়াইশো বছর পরও মানুষ মীরজাফরকে ঘৃণা করে। কেন করে জানো, দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার জন্য।’

কথাগুলো ঝড়ের গতিতে বলে পপি আর দেরি করে না। দ্রুত বেরিয়ে যায়।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৮

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব- ১৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব- ১৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৪

Header Ad

‘দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা’

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়ে আগের মতো ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এমন সহিংসতা চালানো হয়েছে ।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর বিচার দেশবাসীর কাছে চাই। আন্দোলনের নামে এতোগুলো পরিবারের ক্ষতি হলো এর দায়িত্ব্য কার? আহতদের চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা করবে সরকার।’

বিস্তারিত আসছে......

দুর্নীতির দায়ে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির দায়ে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী দিমিত্রি বুলগাকভকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)। রুশ সংবাদমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

দিমিত্রি বুলকাভ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রসদ বিভাগের প্রধান ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পদচ্যুত করা হয় তাকে। তারপর তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ইন্টারফ্যাক্সকে জানিয়েছেন এফএসবির এক কর্মকর্তা।

বস্তুত, দিমিত্রি বুলগাকভের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ গত বেশ কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারিগুলোর মধ্যে একটি। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল রুশ প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী তিমুর ইভানভের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাকে পদচ্যুত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিমুর ইভানভ সাবেক রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

তারপর থেকে এ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৫ জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সর্বশেষ গ্রেপ্তার হলেন বুলগাকভ। তার গ্রেপ্তারের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা ও সামরিক খাতকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে সরকার বদ্ধ পরিকর।

৬৯ বছর বয়সী বুলগাকভ রুশ সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের একজন ছিলেন। সেনাবাহিনীতে তার বেশ প্রভাব ছিল। সামরিক খাতে অবদানের জন্য বেশ কিছু পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। রাশিয়ার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘হিরো অব রাশিয়া’-ও পেয়েছেন তিনি।

 

আজও ঢাকাসহ চার জেলায় কারফিউ শিথিল

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় আজ শনিবারও সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (৯ ঘণ্টা) কারফিউ শিথিল থাকবে।।

গতকাল শুক্রবারও এসব এলাকায় ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার ধানমন্ডির বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে ছুটির দুই দিন ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল রাখার ঘোষণা দেন। এর আগে ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যান্য জেলায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বয় করে কারফিউ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও তিনি জানান।

গত বৃহস্পতিবার ও গত বুধবার ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়। একই দিনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। এখনো বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। এরপর ধাপে ধাপে কারফিউ শিথিল করছে সরকার।

গত সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ২০৯ জন নিহত হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা’
দুর্নীতির দায়ে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেপ্তার
আজও ঢাকাসহ চার জেলায় কারফিউ শিথিল
আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭
‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’
কোটা আন্দোলনে নিহত রুদ্রের নামে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকের নামকরণ
সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
এক সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৬ কোটি টাকা লোকসান
পাকিস্তানের ইসলামাবাদ-পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি
রিমান্ড শেষে কারাগারে নুরুল হক নুর
ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই সরকারের: মির্জা ফখরুল
নরসিংদী কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার
বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে হারিয়ে নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত
মোবাইল ইন্টারনেট কবে চালু হবে, জানাল বিটিআরসি
পুলিশকে দুর্বল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ: ডিবি হারুন
মৃত্যুর দিনক্ষণ গোপন রাখা হয়েছে যে কারণে
অলিম্পিক উদ্বোধনের আগেই প্যারিসে উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ হামলা
তারেক রহমানের নির্দেশেই রাষ্ট্রের ওপর হামলা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি