শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Dhaka Prokash

যৌথ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা কতটা শিক্ষার্থীবান্ধব

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোটং-২০২২’ প্রকাশিত হয়েছে ৩ জানুয়ারি। শিক্ষামন্ত্রী, মাউশি ও নায়েমের ডিজিসহ দেশের শিক্ষা সেক্টরের বিশেষজ্ঞসহ কিছুসংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষাবিষয়ক এনজিও প্রতিনিধিদল ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ইউনেস্কো জেম রিপোর্টের পরিচালক ম্যানোস আন্তোনিনিস।

গবেষণার বাংলাদেশ পর্ব নিয়ে কথা বলেন ব্রাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপটমেন্টের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদ। ইন্টারেক্টিভ সেশন পরিচালনা ও সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানটিতে আমারও থাকার সুযোগ হয়েছিল আর তাই শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বেশকিছু বিষয় সরাসরি আলোচনায় অংশ নেওয়া ও অনেকের বক্তব্য শ্রবণ করতে পেরেছি। অনুষ্ঠানটি হয়েছে সোনারগাঁও প্যান প্যাসিফিক হোটেলে।

ইউনেস্কো বলছে, করোনা মহামারির পর বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় শিক্ষার ব্যয় বেড়েছে, ফলে অনেক পরিবার সন্তানের শিক্ষার খরচ জোগাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। প্রাইভেট টিউশন, শিক্ষা উপকরণসহ শিক্ষাসংক্রান্ত খরচগুলো সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একই। ফলে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিতে এটি অনেক পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে শিক্ষাখাতে বেসরকারি খাতের আধিপত্য বেশি থাকাকে পরিবারভিত্তিক শিক্ষাব্যয় বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে বেসরকারি খাতের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল বাংলাদেশ। মাউশির ডিজি অবশ্য বাংলাদেশে শিক্ষার বেসরকারি খাত কথাটি পুনঃসংজ্ঞায়নের কথা বলেছেন।

তিনি বলতে চাচ্ছেন এমপিও-র মাধ্যমে শিক্ষকদের পুরো বেতন দিচ্ছে সরকার, বিদ্যালয় ভবন তৈরি করে দিচ্ছে সরকার, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিচ্ছে সরকার এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টিউশন ফি নেওয়া হয় সেটিও শিক্ষকদের বাকি চাহিদা মেটাতে বিদ্যালয় রেখে দিচ্ছে। তাহলে এই বিদ্যালয়গুলোকে আমরা বেসরকারি বলব কি না প্রশ্ন রেখেছেন ডিজি।

বক্তাদের কেউ কেই বলেছেন প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে শিক্ষায় কমিউনিটির অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে এবং প্রাথমিক শিক্ষা এক মানহীন শিক্ষায় পরিণত হয়েছে যার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগরা প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা রাষ্ট্র পরিচালিত বিদ্যালয়ের পরিবর্তে বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। জেম রিপোর্টেও চলে এসেছে যে, বাংলাদেশের প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার একটা বড় অংশ এখনো কিন্ডারগার্টেন ও ইংরেজি মাধ্যম প্রতিষ্ঠানের দখলে। প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যাপক জাতীয়করণের পরও প্রায় এক-চতুর্থাংশ শিশু পাঠদান নিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে।

মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থীই পড়ছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বিদ্যালয়ে। আর উচ্চশিক্ষায় এক-তৃতীয়াংশের বেশি ডিগ্রি দিচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সব মিলিয়ে দেশের শিক্ষাখাত এখনো অনেকাংশেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠাননির্ভর। সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান সন্তোষজনক নয় বলায় শিক্ষামন্ত্রী একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেছেন যে, এবার দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের মাধ্যমিক একটি অংশের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে বেসরকারি পর্যায়ে আসন সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ২৫ হাজার ৭৮০। ভর্তির আবেদন পড়েছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার। আর সরকারিতে আসন সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৯০৭ জন, সেখানে আবেদন পড়েছে ৫ লাখ ৩৪ হাজার। তার মানে বেশি শিক্ষার্থী ও বেশি অভিভাবক সরকারি বিদ্যালয়ে তাদের বাচ্চাদের পড়াতে চাচ্ছেন। এটি অবশ্য মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, প্রাথমিকে নয়।

ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বিষয়টির উপর চমৎকার এক মন্তব্য করে বলেছেন, এটি দুটি মেসেজ বহন করে। এক, সরকারি বিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আগ্রহ বেশি, বিশ্বাস বেশি কারণ সরকারিতে শিক্ষার মান ভালো। তার মানে হচ্ছে, দেশে সরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচগুণ বাড়াতে হবে, যেটি সরকার করছে না। অন্য আর একটি মেসেজ বহন করে, সেটি হচ্ছে এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ের দিকে শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের আগ্রহ কম। তাহলে রাষ্ট্র এখানে যে অর্থ ব্যয় করছে সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ।

জেম রিপোর্টের মূল উপস্থাপক বাংলাদেশ অংশের মূল উপস্থাপক ড. মনজুর আহমদ বলেছেন, সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে যে শিক্ষা অর্থাৎ এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান বিষয়টিকে পূর্ণ অর্থবহ করতে হবে। এখানে আমিসহ আরও কেউ কেউ একই মন্তব্য করেছেন এবং একমত পোষণ করেছেন।

আলোচনায় উঠে আসে যে, কেজরিওয়াল দিল্লির শিক্ষার চেহারা বদলে দিয়েছেন। এখন সেখানে ৯০ ভাগ শিক্ষার্থীর রাষ্ট্র পরিচালিত বিদ্যালয়ে যায়। পুরো শিক্ষার্থীবান্ধব করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সেভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মনিটরিং করা হচ্ছে ঠিকমতো। এই ইতিহাস আমাদের জানা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাশেদা কে চৌধুরী ক্যাম্পের নির্বাহী পরিচালক। মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত টয়লেটের ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের জন্য চমৎকার টয়লেট, ছিমছাম বিদ্যালয়, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হয়েছে দিল্লির সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে। আর একটি করা সম্ভব হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণের কারণে।

ড. মনজুর আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের মতো এত বিশাল বহরের শিক্ষাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা প্রয়োজন জেলা পর্যায় থেকেই। সবকিছু কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারণে শিক্ষার অগ্রগতি ও মান ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোথাও শিক্ষার দুটি মন্ত্রণালয় নেই, শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, রিলে রেসের মতো, প্রাথমিক একটি পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষা সমাপ্ত করে আর একটি স্তরের হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, এটি একেবারে বিচিছন্নভাবে ঘটছে না।

দক্ষিণ এশিয়ায় সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য অভিভাবকরা বেসরকারি স্কুলকে প্রাধান্য দেন। মূলত ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ও উচ্চতার শ্রেণির প্রতীক হিসেবে তারা এস স্কুল প্রাধান্য দেন। ফলে বাড়ছে এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।বাংলাদেশেও বাড়ছে এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। তবে, মাধ্যমিক শিক্ষায় এ প্রবণতা বেশি। আমাদের দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৯৪শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি স্কুলে পড়াশুনা করে। সরকারি স্কুলের তুলনায় এনজিও পরিচালিত স্কুলে খরচ তিনগুণ বেশি, বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনগুলোতে ৯ গুণ বেশি। বেসরকারি পর্যায়ে দেশের প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীর হার ৫৫ শতাংশ, প্রাথমিক পর্যায়ে ২৪ শতাংশ, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৪ শতাংশ এবং উচ্চ শিক্ষায় ৩৬ শতাংশ।

২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত শিক্ষকদের পরিবারগুলোর জন্য ব্যয় গ্রামীণ এলাকায় ২৮-৫৪ শতাংশ, শহরাঞ্চলে তা ৪৮-৬৭ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে ২০১৭-১৮ সালে ভারতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়াশুনা করেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানের ক্ষেত্রে পরিবারগুলোকে ঋণ করতে হয়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ছয় শতাংশ পরিবার বিদ্যালয়ের ফি মেটাতে ঋণ করে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণ করে বেসরকারি পলিটেকনিক পড়াশুনা ও খরচ মেটায়। ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দিতে সরকারি ঋণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তিনির্ভর লেখাপড়ার আগ্রহ বাড়ছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নথিভুক্ত না থাকায় শিক্ষার্থীরা নির্বাচিত কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য উপবৃত্তি পায় না। এ প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা বিভিন্ন ধরনের ফির উপর বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও আমরা পিছিয়ে আছি। ভুটানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্বিগুণ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ। তাদের শিক্ষানীতিতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক ছাতার নিচে নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।

আলোচনায় উঠে আসে যে, সরকারি ও বেসরকারি যৌথ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার অনন্য মডেল হচ্ছে এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়। সেটিকে কীভাবে আরও অর্থবহ ও কার্যকারী করা যায় সেটি দেখতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও প্রাইভেট কোচিং আছে তবে এ খাতে বাংলাদেশের অভিভাবকদের ব্যয় করতে হয় সবচেয়ে বেশি। এ হার এখানে ৬৭ শতাংশ। আর গ্রামীণ এলাকায় ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে হয়। শ্রীলংকায় শহরে ৬৫ শতাংশ, গ্রামে ৬২ শতাংশ, পাকিস্তানে সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ৪৫ শতাংশ এবং ভারতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ে।
পাকিস্তানে শিক্ষাব্যয়ের ৫৭ শতাংশ ব্যয় করে পরিবার, বাংলাদেশে এটি ৭১ শতাংশ। আমাদের শিক্ষাকে বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য এবং শিক্ষাকে আনন্দময় করার ও প্রাইভেট কোচিং বন্ধ করার জন্য নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছে; যেখানে পরীক্ষার পরিবর্তে শিখন-কার্যক্রমকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ শিক্ষাক্রম অনুসারে শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ণ করবেন শিক্ষকরা। তবে, এগুলো সবই আশার কথা। নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা কম থাকলেও প্রাইভেট কোচিং বন্ধ হবে কি না সেই বিষয়টি নিয়ে যৌক্তিক কারণেই অনেক অভিভাবক সন্দিহান। কারণ বিদ্যালয়ে ৮০ থেকে ৯০ জন শিক্ষার্থীদের জন্য একজন শিক্ষক আর ক্লাসের সময়কাল ৪০-৪৫মিনিট। ফলে ক্লাসরুমে পাঠদান কতটা শেষ করা যাবে সেটিও প্রশ্নসাপেক্ষ।

একজন শিক্ষক কতজন শিক্ষার্থীর দিকে সরাসরি নজর দিতে পারবেন সেটিও প্রশ্নসাপেক্ষ। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ যেভাবে হচ্ছে সেখানেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে অনেক কিছুই বোঝা সম্ভব হয় না শ্রেণিকক্ষে, তাই প্রাইভেট পড়তেই হয়। এ বিষয়গুলো কীভাবে অ্যাড্রেস করা হবে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষকদের নিজ উদ্যোগে অনেক কিছু শিখতে হবে এবং জানতে হবে তা না হলে শিক্ষার বিদ্যমান সমস্যা খুব একটা সমাধান হবে বলে মনে হচ্ছে না। এ ধরনের গবেষণার ফল আমাদের সেনসেটাইজ করে, কিন্তু সমাধান আমাদেরই বের করতে হবে।

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

এসএন

Header Ad

ডিবি হেফাজতে নাহিদসহ কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবিতে নেওয়া ওই তিন সমন্বয়ক হলেন- নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

নাহিদ, আসিফ ও আবু বাকের তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে এই তিনজনকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে।

গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, নাহিদ হাসপাতালের সপ্তম তলার ৭০৩ নম্বর কক্ষে আর আসিফ তৃতীয় তলার ৩১১ নম্বর কক্ষে ভর্তি ছিলেন। নাহিদের সঙ্গে তার স্ত্রী আর আসিফের সঙ্গে বাকের ছিলেন।

আগামীকাল চালু হতে পারে মোবাইল ইন্টারনেট

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। ফলে ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন কয়েক কোটি মানুষ। বিপাকে পড়েছেন এসব ইউজাররা। যদিও দিন দুয়েক আগে চালু করা হয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা কম। সীমিত পরিসরে চালু হওয়া এই ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের সুবিধা অনেকেরই নেই।

এদিকে মোবাইল ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে গত সপ্তাহে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছিলেন, রবি-সোমবারের মধ্যেই চালু হবে কাঙ্ক্ষিত মোবাইল ইন্টারনেট।

প্রতিমন্ত্রী পলক আশ্বাস দিয়েছেন, রবি সোমবারের মধ্যেই দেশে পুরোদমে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হবে।

তবে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা যাবে কি না সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

এদিকে দেশে ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি করতে গুগলের ক্যাশ সার্ভার চালুর জন্য আইআইজি অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন (বিটিআরসি)।

জানা গেছে, দেশের আইন ও সরকারের নির্দেশনা না মানায় বন্ধ থাকবে মেটার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। তবে যদি ফেসবুক সরকারের নির্দেশনা মানার নিশ্চয়তা দেয়, তখনই এটি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

এর আগে, পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৩ জুলাই রাতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। কূটনীতিক পাড়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, ফ্রিল্যান্সিং ও প্রযুক্তি এবং রফতানিমুখী খাত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ সেবা চালু করা হয়। এরপর বুধবার (২৪ জুলাই) রাত থেকে বাসা-বাড়িতেও ইন্টারনেট সেবা মিলছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

'আমাকে নিয়ম শেখানোর দরকার নেই, ওরাই শিখে নিক'

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে কলকাতায় গত ২১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে অশান্তির জেরে কেউ পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় চাইলে তাকে ফেরাবে না রাজ্য সরকার।

মমতার এমন মন্তব্যে আপত্তিও জানিয়েছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সে কথা স্বীকারও করে নেওয়া হয়েছে। দিল্লি পৌঁছে অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলাদেশের প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবহিত। আমি সাতবারের সাংসদ ছিলাম, দুবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি আমি অন্যদের থেকে ভালো জানি। আমাকে শেখানোর দরকার নেই। বরং সঠিক নিয়মগুলো ওরাই শিখে নিক।

একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশ নিয়ে কোনও কথা বলতে পারি না। যা বলার ভারত সরকার বলবে। তবে বাংলাদেশের কোনও অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজা খটখটায় তাহলে আমি তাদের আশ্রয় নিশ্চয়ই দেবো। কারণ রাষ্ট্রপুঞ্জেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, উদ্বাস্তু হলে তাকে পাশের এলাকা সম্মান জানাবে। বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যেন কোনও প্ররোচনা, উত্তেজনাতে না যাই। ছাত্রছাত্রীদের তাজা প্রাণ চলে যাচ্ছে, তার প্রতি আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আপত্তি জানায়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এই ধরনের মন্তব্যে বিভ্রান্তি বাড়বে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জওসওয়াল জানিয়ে দেন, অন্য কোনও রাষ্ট্র সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন।

সর্বশেষ সংবাদ

ডিবি হেফাজতে নাহিদসহ কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক
আগামীকাল চালু হতে পারে মোবাইল ইন্টারনেট
'আমাকে নিয়ম শেখানোর দরকার নেই, ওরাই শিখে নিক'
‘দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা’
দুর্নীতির দায়ে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেপ্তার
আজও ঢাকাসহ চার জেলায় কারফিউ শিথিল
আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭
‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’
কোটা আন্দোলনে নিহত রুদ্রের নামে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকের নামকরণ
সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
এক সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৬ কোটি টাকা লোকসান
পাকিস্তানের ইসলামাবাদ-পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি
রিমান্ড শেষে কারাগারে নুরুল হক নুর
ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই সরকারের: মির্জা ফখরুল
নরসিংদী কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার
বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে হারিয়ে নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত
মোবাইল ইন্টারনেট কবে চালু হবে, জানাল বিটিআরসি
পুলিশকে দুর্বল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ: ডিবি হারুন
মৃত্যুর দিনক্ষণ গোপন রাখা হয়েছে যে কারণে