শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আসাদের জীবন দানের মধ্য দিয়েই ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান

২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদের ৫৪তম শাহাদাত দিবস। আমরা আজ আর আমাদের অতীত ইতিহাস স্মরণ করতে চাই না। আমরা ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নিয়েও চিন্তিত না। আমরা শুধুমাত্র বর্তমানকে নিয়েই সুখে থাকতে চাই। আমরা ভুলে যেতে বসেছি আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের মহানায়কদের? যাদের রক্তের সিঁড়ি বেয়েই আজকের বাংলাদেশ। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানের পথ ধরে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার এ পথ পরিক্রমায় ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান একটি মাইলফলক।

রাজধানী শেরেবাংলা নগর পেরিয়ে মোহাম্মদপুরের প্রবেশ দ্বারে রয়েছে একটি বিশাল তোরণ, যা ‘আসাদ গেট’ নামেই পরিচিত। ‘আসাদ গেট’ নামটি শোনেনি বর্তমান প্রজন্মের কাছে এমন মানুষ পাওয়া দুর্লভ। কিন্তু তাদের অনেকেই জানেন না শহীদ আসাদ কে? কেনই বা এ গেটটির নামকরণ? ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদ স্মরণে নির্মিত আসাদ গেইটও আজ মলিন হয়ে গেছে।

শহীদ আসাদ। একটি প্রেরণা, একটি সংগ্রাম আর একটি আদর্শের নাম। যার পুরো নাম আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। শহীদ আসাদের নাম জনগণের স্বাধীনতা, জাতীয় মুক্তি, গণতন্ত্র, শোষণমুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পতাকায় উজ্জ্বল হয়ে লিপিবদ্ধ। ষাট দশকে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসন, জাতিগত বৈষম্য ও নিপীড়ন এবং শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার সংগ্রামে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে আসাদ শহীদ হবার ঘটনা বাংলার সংগ্রামী মানুষের প্রাণে জাগিয়েছিল অমিত সাহস ও প্রচণ্ড শক্তি।

গণতন্ত্র আর স্বদেশ মুক্তির লড়াইয়ে আসাদ এক সাহসী পথপ্রদর্শক। অন্যদিকে আসাদ আন্দোলন ও সংগ্রামের প্রেরণার উৎস। আমরা আজকে যখন শহীদ আসাদের কথা স্মরণ করি, তখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণঅভ্যুত্থানের কথা মনে পড়ে। সেদিন শহীদ আসাদের রক্তমাখা শার্ট ছুঁয়ে শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সেই চেতনা জনগণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের সংগ্রামে প্রেরণা যোগায়। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লিখতে গেলে আসাদকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। বর্তমান প্রজন্মকে স্বদেশ মুক্তি আর গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের কথা জানতে হলে আসাদকে পড়তে হবে, জানতে হবে। কারণ স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতিপর্বে আসাদ একটি বিরল প্রতিবাদী আর সংগ্রামের নাম। তার স্বপ্ন ছিল জনগণতন্ত্র। যা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শহীদ আসাদ স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলার স্বপ্ন দেখতেন। ‘৫২ থেকে ৬৯-এর মধ্যে রাজনীতির ধারা আরও স্পষ্ট হয়েছে, মানুষের চেতনা আরও তীব্র হয়েছে, মানুষের আকাঙ্ক্ষা আরও পরিচ্ছন্ন হয়েছে।

আসাদ শহীদ হওয়ার কিছুদিন আগেও কৃষক আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের হাতে চরমভাবে মার খেয়েছিলেন। সত্যিকার অর্থে তিনি ছিলেন অসম্ভব সাহসী ও চরিত্রবান বিপ্লবী। শহীদ আসাদ ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) কর্মী ছিলেন। নেতৃস্থানীয় পদেও ছিলেন। আসাদ মনেপ্রাণে বিপ্লবকে ধারণ করতেন। মার্ক্সবাদে বিশ্বাস করতেন সৎ, নিষ্ঠাবান এ মানুষটি। একই সঙ্গে তিনি বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন, আবার একই সঙ্গে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন কৃষক সংগঠনও করতেন। আসাদের জন্ম ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর গ্রামে। আসাদের কর্মজীবনের ইতিহাস খুব দীর্ঘ নয়।

আসাদের যে স্বপ্ন, জনগণের যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তার সমস্ত কিছুর মধ্যেই গণতান্ত্রিক পূর্ববঙ্গের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এত বছর পর যখন শহীদ আসাদকে আমরা স্মরণ করি তখন প্রশ্ন জাগে আসাদের স্বপ্ন কি সফল হয়েছে? আদাসের স্বপ্নের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রতো আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আসাদের আত্মত্যাগ ছিল শোষণ মুক্তির প্রেরণা। যতদিন শোষণ থাকবে, বঞ্চনা থাকবে, নিপীড়ন থাকবে, ততদিন মৃত্যুঞ্জয়ী আসাদ থাকবে মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে এক সাহসী পথপ্রদর্শক হয়ে।

কারণ আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন শাসকগোষ্টির অপশাসন আর ক্ষমতার লোভের কারণে বার বার বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে গণতন্ত্র। শাসকগোষ্ঠীর অপরাজনীতির সুযোগে প্রতিক্রিয়াশীল আর দেশবিরোধীরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। যে স্বপ্ন এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ দেখেছে, যার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই স্বপ্ন লাঞ্ছিত হয়েছে, প্রতিক্রিয়াশীলদের জয় হয়েছে। কাজেই মুক্তিকামী সমগ্র জাতি আসাদকে স্মরণ করে সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে। শহীদ আসাদ তাই সব সময় জনগণতান্ত্রিক বাংলা প্রতিষ্ঠার বার্তা নিয়ে আসেন। ধ্রুবতারার মতোই তিনি বেঁচে আছেন আমাদের হৃদয়ে। তাই তো শহীদ আসাদ উত্তাল ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় অর্জন। তাই একুশের মতো ঊনসত্তর বাঙালি জাতীয়তা বোধের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এক একটি শব্দের মধ্যে এসে পুঞ্জীভূত হয়েছে দেশ-জাতির চিন্তা-চেতনা, আশা-আকাঙ্ক্ষার যত অভিব্যক্তি।

বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম কেবল ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেই সীমিত নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। ৬৯এর গণঅভ্যুত্থান প্রকৃত অর্থে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সোপান রচনা করেছিল। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন বাঙালিকে ঘরমুখো করেছিল, আর ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সেই বাঙালিকে তার ঘরের ঠিকানা খুঁজে দিয়েছিল। স্বাধিকারের ঢিমেতাল আন্দোলন ঊনসত্তরের ২০ জানুয়ারি আসাদের মৃত্যুর পর সহসাই গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়। তাই আসাদকে গণ অভ্যুত্থানের নায়ক বলা হয়। ‘৬৯-এর ধারাবাহিকতায় একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও শহীদ আসাদের চেতনা কখনও ফুরাবার নয়।

৬৯এর গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের ‘লৌহমানব’ বলে কথিত আইয়ূব খানের একনায়কী শাসনের অবসান ঘটে, প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার ও পর্লামেন্টারি শাসনের পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিসহ অন্যান্য রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় সরকার। পূর্ববাংলার নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা, শ্রেণি শোষণমুক্ত ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের চেতনা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

৬৯এর প্রচন্ড গতিবেগই বস্তুত ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলে। এসকল বিচারে এটা নিঃসন্দেহে বলা চলে এদেশের মানুষের সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদবিরোধী সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ’৬৯ একটি বড় মাইলফলক।

আসাদ মনে করতেন আমাদের দেশে প্রচলিত গণতন্ত্র হলো শাসক শ্রেণির গণতন্ত্র। তার বিপরীতে কায়েম করতে হবে জনগণতন্ত্র। জনগণের এই গণতন্ত্র বিদ্যমান মুষ্টিমেয় শাসক শোষক শ্রেণির একাধিপত্য অবসান করে সত্যিকার অর্থেই জনগণের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবে।

ঐতিহাসিক ২০ জানুয়ারির সম্পর্কে প্রবীণ রাজনীতিক হায়দার আকবর খান রনো বলেন, ‘সেদিন ১৪৪ ধারা জারি করেছিল আইয়ুব খান সরকার। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যারা মিছিল নিয়ে বেরিয়েছিল, তাদের মধ্যে আসাদ ছিলেন। আমি সে মিছিলে ছিলাম না, কারণ তখন আমি তো আর ছাত্র নই। কিন্তু আমি জানতে পেরেছি, আমার ভাই হায়দার আনোয়ার খান জুনু আসাদের পাশেই সামনের সারিতে ছিল। অল্প কিছুদূর থেকে একটা জিপ থেকে মিছিল লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ, আসাদ শহীদ হন। আসাদ শহীদ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটা একটা পুরো অগ্নস্ফুিলিঙ্গ হয়ে উঠল। সারা দেশ যেন নড়ে উঠল, কেঁপে উঠল, জেগে উঠল। অর্জিত হলো বাঙালির নানা অর্জন।’

শহীদ আসাদ স্মরণে কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন কালজয়ী কবিতা ‘আসাদের শার্ট’। তাতে কবি লিখেছিলেন—‘আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা/সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;/আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা।’

২০ জানুয়ারি আসাদের জীবন দানের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল ঐতিহাসিক ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান। আসাদের রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। সারাদেশের জনগণ ক্ষিপ্ত হয়েছিল। তারই ধারাবহিকতায় বাঙালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ আর লাল সবুজের পতাকা। লাখ লাখ শহীদের মাঝে সে কারণেই আসাদ অনন্য। তাই প্রয়োজন আমাদের স্বাধীনতার মূল্য বোধ, শপথ নিতে হবে শহীদ আসাদসহ সব শহীদের স্বপ্ন ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার। আসাদের স্মৃতি ধরে রাখতে আসাদ গেটের সংস্কার ও শ্রীবৃদ্ধি তথা শহীদ আসাদের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ, জীবন সংগ্রামের তথ্য, প্রতিষ্ঠানের নামকরণ হয়ে উঠুক সর্বত্রই। আপামর জন সাধারণের এ দাবি সার্বজনীন। যাদের দ্বীপ শিখা হয়ে সামনে চলার পথ দেখায়। তেমনই এক বীর সৈনিক ছিলেন শহীদ আসাদ। ছিলেন নির্ভীক ও স্বাধীনতা প্রিয়। নিপীড়িত, বঞ্চিত, লাঞ্ছিত বাঙালী জাতির দীপ্ত আলোর মুক্ত আযাদী সংগ্রামের পথ প্রদর্শক ও স্বপ্ন দ্রষ্টা।

আসাদ তাই জনগণের মুক্তির প্রেরণা আর ঊনসত্তর মুক্তির দিশারী। তার শাহাদাত বার্ষিকীতে তাই গভীরতম শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

[লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন]

Header Ad
Header Ad

দুই দফা দাবি না মানলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের

বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন-ভাতা প্রদান এবং ব্লকপদ বিলুপ্ত করে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবিতে দুই দফা দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। দাবি না মানলে আগামী ৫ মে থেকে সারা দেশে কর্মবিরতির কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনের সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর বিচারকদের জন্য পৃথক পে-স্কেল এবং নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলেও সহায়ক কর্মচারীদের সেই স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অথচ তারা একই দপ্তরে বিচারকদের সঙ্গে কাজ করেন, কিন্তু বেতন-ভাতাদি পান জনপ্রশাসনের স্কেল অনুযায়ী।

তিনি অভিযোগ করেন, অনেক কর্মচারী ৩৮ থেকে ৪০ বছর ধরে একই পদে কর্মরত থাকলেও কোনো পদোন্নতি পাননি। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক ও বৈষম্যমূলক। সচিবালয়ের একজন অফিস সহায়ক যেমন পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হতে পারেন, তেমনি সুপ্রিম কোর্টে অফিস সহকারী ডেপুটি রেজিস্ট্রার পর্যন্ত পদোন্নতি পান, পুলিশের কনস্টেবলও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হতে পারেন। অথচ অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীরা শতভাগ বৈষম্যের শিকার।

রেজোয়ান খন্দকার বলেন, প্রধান বিচারপতি, আইন উপদেষ্টা ও আইন সচিবের কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরা হয়েছে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন দাবি যৌক্তিক বলে স্বীকার করলেও তাদের প্রতিবেদনে আমাদের বিষয়ে কোনো সুপারিশ রাখা হয়নি।

দাবি বাস্তবায়নে তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিদ্যমান জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের ১ম থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী ৭ম থেকে ১২তম গ্রেডভুক্ত করে সব ব্লকপদ বিলুপ্ত করে যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।

তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, আগামী ৫ মের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে সারা দেশের অধস্তন বিচার বিভাগের কর্মচারীরা ওই দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দুই ঘণ্টার সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে। এরপরও দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. ছালাউদ্দিন, সহসভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক তারিক আহাম্মেদ রিংকু এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা।

Header Ad
Header Ad

এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪০

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তৃতীয় সাধারণ সভায় দলের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি, সাংগঠনিক নীতিমালা ও কাঠামো সংস্কার নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জেলা ও উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স ৪০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি শৃঙ্খলাবিরোধী অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত ও শৃঙ্খলা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে অবস্থিত এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকেল ৩টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টাব্যাপী এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

সভা শেষে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অঞ্চলভিত্তিক সাংগঠনিক কাঠামো চূড়ান্তকরণ, সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়ন, গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচার দাবি এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং ভারতের ওয়াকফ বিলবিরোধী আন্দোলনে দমন-পীড়নের প্রতিবাদ ও দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে সরকারের প্রতি কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানায় দলটি।

দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রয়োজনীয় নীতিমালা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত কাঠামোয় দেশের ৬৪ জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটিতে ৩১ থেকে ৫১ জন এবং উপজেলা কমিটিতে ২১ থেকে ৪১ জন সদস্য থাকবে। উভয় পর্যায়ের আহ্বায়ক পদের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ন্যূনতম ৪০ বছর।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপরিসরে কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণের অভিযোগ ওঠায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি তদন্ত ও শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার ঘোষণা আসছে আগামী রবিবার।

এছাড়া বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা চলতি সপ্তাহেই একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানানো হয়।

Header Ad
Header Ad

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

"শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, প্রগতি"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওপেন হাউস ডে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিরামপুর থানা চত্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফত হুসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক, বিএনপির বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু, উপজেলা আমির হাফিজুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরণ আলম, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

পুলিশ সুপার মারুফত হুসাইন তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথমে আমি আমার পুলিশকে ঠিক করেছি। এখন আমাদের সামনের দিনগুলো ভালো প্রত্যাশা চাই। আমরা আমাদের সমাজে আর কোনো অপরাধ করতে দেব না এবং এই জেলাকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদকমুক্ত করব ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাই পারে সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে। তাই সবাইকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুই দফা দাবি না মানলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের
এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪০
দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত
পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার