দেশে ছোঁয়াচে ‘স্ক্যাবিস’ সংক্রমণ বাড়ছে, জেনে নিন সঠিক চিকিৎসা

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে সম্প্রতি ‘স্ক্যাবিস’ বা খোসপাঁচড়া রোগের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি একটি ছোঁয়াচে ত্বকজনিত রোগ, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।
রোগটি শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং ঘনবসতিপূর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছড়ানোর প্রবণতা বেশি। প্রথমবার আক্রান্ত হলে উপসর্গ দেখা দিতে দুই থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে, কিন্তু দ্বিতীয়বার সংক্রমণে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষণ দেখা দেয়।
‘স্ক্যাবিস’ কীভাবে ছড়ায়?
স্ক্যাবিস, যাকে বাংলায় খোষপাচড়া বলা হয়, একটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে চর্মরোগ। এটি মূলত সারকোপটিস স্ক্যাবিয়া (Sarcoptes scabiei) নামক এক ধরনের পরজীবী জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে। রোগটির প্রধান লক্ষণ হলো তীব্র চুলকানি ও শরীরে গুটি গুটি র্যাশ হওয়া, যা সাধারণত কবজি, আঙুলের ফাঁক, কোমর এবং শরীরের অন্যান্য অংশে দেখা যায়। রাতে এই চুলকানির তীব্রতা বেড়ে যায়। স্ক্যাবিস সহজেই এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়ায়, বিশেষ করে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, বিছানার চাদর, গামছা বা তোয়ালে ব্যবহার করলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
স্ক্যাবিস সম্পূর্ণরূপে নিরাময়যোগ্য রোগ, তবে সঠিক চিকিৎসা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। চিকিৎসার জন্য যা করা উচিত:
ঔষধ ব্যবহার: প্রধান ওষুধ হলো পারমেথ্রিন ৫% মলম। এটি পুরো শরীরে মাখিয়ে ৮–১৪ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হয়। বিকল্প হিসেবে বেনজাইল বেঞ্জোয়েট লোশন বা আইভারমেকটিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয় (চিকিৎসকের পরামর্শে)।
পরিবারের সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া: একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের সবাইকেই চিকিৎসা নিতে হবে, যাতে রোগটি আবার না ছড়ায়।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: জামাকাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো উচিত।
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: চুলকানি বা ফুসকুড়ি দেখা দিলে দ্রুত চর্মবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে রোগ হলেও সঠিক পরিচ্ছন্নতা ও চিকিৎসার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ ও নিরাময় সম্ভব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার রোধ করা যেতে পারে।
