সারাবিশ্ব
ইন্দোনেশিয়ায় ইসলামিক স্কুল ধসে নিহত বেড়ে ৪৯, আহত শতাধিক
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা প্রদেশে একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুলের ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। আহত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৮ জন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে রোববার দুপুরের দিকে, পূর্ব জাভার সিদোয়ার্জো শহরের আল খোজিনি ইসলামিক জুনিয়র বোর্ডিং স্কুলে। দুর্ঘটনার সময় ভবনটিতে শতাধিক ছাত্র অবস্থান করছিল। আকস্মিক ধসে ছাত্ররা চাপা পড়ে যায় ধ্বংসস্তূপের নিচে। প্রাণ হারানোদের বেশিরভাগই কিশোর বয়সী।
দুর্যোগ সংস্থা বাসারনাস-এর পরিচালক ইউধি ব্রামান্তিও জানান, ধ্বংসস্তূপের প্রায় ৮০ শতাংশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে ভবনটির সঙ্গে লাগোয়া আরও একটি ভবনও ধসে পড়েছে। ফলে উদ্ধারকাজ জটিল হয়ে উঠেছে। নিখোঁজদের বেশিরভাগই ওই সংলগ্ন ভবনের নিচে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, স্কুল ভবনের ওপরতলায় নির্মাণকাজ চলছিল। সেই বাড়তি চাপ মূল কাঠামো সহ্য করতে পারেনি। দুর্বল ভিত্তির ওপর অতিরিক্ত ওজন পড়ে পুরো ভবনটি মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই বহু শিক্ষার্থী চাপা পড়ে যায়।
ইন্দোনেশিয়ার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে প্রায় ৪২ হাজার ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল রয়েছে। তবে দেশটির গণপূর্তমন্ত্রী ডোডি হ্যাংগোডো জানিয়েছেন, এদের মধ্যে মাত্র ৫০টির ভবনের যথাযথ নির্মাণ অনুমোদন (বিল্ডিং পারমিট) রয়েছে। আল খোজিনি স্কুলটির অনুমোদন ছিল কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এই দুর্ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনহারা পরিবারগুলো চোখের জলে ভাসছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এ ঘটনায় দেশটির শিক্ষা ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন নির্মম দুর্ঘটনা এড়ানো যায়, সে লক্ষ্যে দেশজুড়ে অনুমোদনবিহীন স্কুল ভবনগুলো পরিদর্শনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।