৪০ রোহিঙ্গাকে সাগরে ফেলে দিল ভারত! জাতিসংঘের তীব্র উদ্বেগ (ভিডিও)

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে আটক করা ৪০ জন রোহিঙ্গাকে সাগরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের দাবি, তাদের চোখ বেঁধে আন্দামান সাগরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে জাহাজ থেকে সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়। এই ভয়াবহ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস শুক্রবার (১৬ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপিকে (AP) দেওয়া এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারত মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম জোরদার করেছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতের স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বরাতে জানা যায়, গত ৬ মে নয়াদিল্লি থেকে একদল রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। এরপর ৪০ জনকে চোখ বেঁধে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে তাদের তানিনথারি উপকূলের দিকে পাঠানো হয়।
জাহাজ নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছালে রোহিঙ্গাদের লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয় এবং সাঁতরে মিয়ানমারের উপকূলে পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ (PUCL) জানায়, সাগরে ফেলে দেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিশোর, বৃদ্ধ এবং একজন ক্যানসার রোগীও ছিলেন। ভাগ্য ভালো থাকায় তারা সবাই জীবিত অবস্থায় মিয়ানমারের উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন। তাদের অনেকে ভারতীয় সেনাদের নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছেন।
মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, “রোহিঙ্গাদের জাহাজ থেকে সাগরে ফেলে দেওয়ার ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এটি আন্তর্জাতিক শরণার্থী ও মানবিক আইনের পরিপন্থী। আমি ভারত সরকারের কাছে এর পূর্ণ ব্যাখ্যা ও জবাবদিহিতা দাবি করছি।”
জাতিসংঘের হিসেবে ভারতে বর্তমানে ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন। তবে ভারত সরকার তাদেরকে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, বরং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগও তুলে আসছে দেশটি।
এ ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগে, ভারতের গুজরাট থেকে ৭৮ জনকে ধরে এনে সুন্দরবনের বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গত ১০ মে তাদের উদ্ধার করে বিজিবি। ওইসব রোহিঙ্গাদেরও দিনভর না খাইয়ে রাখা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
