সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মিত্র ১২ দলীয় জোটের নেতারা। তারা বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সোমবার (১৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই হুঁশিয়ারি দেন জোটের নেতারা। সভার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, "দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটেছে, কিন্তু এখনো গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।"
তিনি বলেন, "আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপস করবো না। যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। সে জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন।"
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, "২০০৭ সালেই খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দেন, পরে তারেক রহমান ২৭ দফা দেন, যা পরে ৩১ দফায় রূপ নেয়। আজকের কথিত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর অনেক কিছুই সেখানেই বলা হয়েছিল। আমরা যদি ক্ষমতায় যাই, এসব বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করি।"
তিনি বলেন, "আমরা চাই না কেউ একক ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করুক। তাই ক্ষমতার ভারসাম্য, সীমিত মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন—এসবই জরুরি।"
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, "অবিলম্বে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি না তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না। যদি কোনো আইনি বাধা থাকে, সরকার সেটা পরিষ্কারভাবে জানাক।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেললে তা মেনে নেওয়া হবে না।"
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, "নির্বাচন নিয়ে নতুন করে দাবি জানাতে হবে—এটা ভাবিনি। কিন্তু সরকার কার্যত একদলীয় শাসন কায়েম করছে। দেশে অস্থিরতা তৈরির পাঁয়তারা চলছে।"
তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার পরিকল্পনারও বিরোধিতা করেন এবং বলেন, "এভাবে একের পর এক সরকারি প্রতিষ্ঠান বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না।"
তিনি আরও বলেন, "অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। নইলে ডিসেম্বরের পর আপনাদের আর এক মুহূর্তও সহ্য করা হবে না। যেভাবে শেখ হাসিনাকে নামানো হয়েছে, সেভাবেই নতুন করে লড়াই হবে।"
এসময় নেতারা বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে এবং তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের বাধা দূর করতেও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান এবং কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ।