পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না: বিক্রম মিশ্রি

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের মধ্যস্থতা ছিল না বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণভাবে দ্বিপাক্ষিক, যেখানে তৃতীয় কোনো পক্ষ জড়িত ছিল না।
মঙ্গলবার (২০ মে) পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডন, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস ও পিটিআই–এর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিক্রম মিশ্রি সোমবার (১৯ মে) ভারতের সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বলেন, "যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাকিস্তানের দিক থেকেই এসেছে, এতে কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বা সংস্থার মধ্যস্থতা ছিল না।"
তবে এর আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতিতে তাঁর প্রশাসনের ‘মূল ভূমিকা’ ছিল। এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁর এই ভূমিকায় প্রকাশ্যে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন।
গত মাসে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল নয়াদিল্লি। পাল্টা জবাবে ভারত সামরিক হামলা চালালে, পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে। ওই সময়েই যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা করেছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প।
তবে সংসদীয় বৈঠকে এ নিয়ে ভারত সরকারের ‘নীরবতা’ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। একাধিক সংসদ সদস্য জানতে চান, কেন ভারত সরকার ট্রাম্পের দাবি স্পষ্টভাবে খণ্ডন করেনি। তারা বলেন, ট্রাম্প অন্তত সাতবার প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা করেছেন।
ইন্ডিয়া টুডে জানায়, এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিলেও বিক্রম মিশ্রি পরিষ্কার করে বলেন, নয়াদিল্লির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত আলোচনা থাকলেও, কোনো প্রকার মধ্যস্থতা হয়নি। তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে ভারতের নিজস্ব কূটনৈতিক নীতির আলোকে গৃহীত হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ট্রাম্প তার মন্তব্য দিয়েছেন মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, কোনো সরকারি কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার না করেই। তাই ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই বক্তব্যের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি।
বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আরও জানান, ভারত ‘নিকট ভবিষ্যতে’ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা দেখছে না। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন সম্ভব নয়।
